'সকলের সামনে কান ধরে দাঁড়িয়ে বল, এখন থেকে ইমাম আবু হানীফার আদর্শ অনুযায়ী জীবন-যাপন করব' (!)
আমি মুহাম্মাদ আব্দুস সালাম। বাগেরহাটের মোল্লাহাট থানার কোধলা গ্রামে আমার বাড়ী। ছোটবেলা থেকেই আমি মদীনাকে ভালবাসতাম। মসজিদে নববীর ছবি যেখানেই দেখতাম পলকহীন ভাবে তাকিয়ে থাকতাম। আর মনে মনে ভাবতাম বাস্তবে কি কখনও মদীনা দেখতে পাব? আলিয়া মাদরাসা হ'তে দাখিল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর পরিচয় হ'ল কাজদিয়া নিবাসী আকরাম মাষ্টারের বড় ছেলে মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইনের সঙ্গে। তারা ১১ ভাই সবাই চট্টগ্রাম হাটহাজারী মেখল মাদরাসার মুফতী ফয়যুল্লাহ ছাহেবের বাড়ীতে প্রতিষ্ঠিত মাদরাসায় পড়াশুনা করেন। মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন আমাকে পরামর্শ দিলেন উক্ত মাদরাসায় পড়ার জন্য এবং প্রতিশ্রুতি দিলেন ভর্তির সকল ব্যবস্থা তিনি করবেন। চলে গেলাম চট্টগ্রামে। ভর্তি হ'লাম মেখল মাদরাসায়। কাফিয়াতে পড়াকালীন আববা অসুস্থ হয়ে পড়েন। আববাকে দেখতে এলাম। কিছুদিন পর আববা আমাদেরকে ছেড়ে চির নিদ্রায় শায়িত হ'লেন। পড়াশুনা আর হ'ল না। আর্থিক অনটনের জন্য আয়ের পথ ধরতে হ'ল। যোগ দিলাম বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে।
১৯৯৬ সালে সম্মানের সাথে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী হ'তে অবসর গ্রহণ করি। এবার মদীনায় যাওয়ার পালা। আমার এক নিকটাত্মীয়ের কাছে টাকা জমা দিয়েছিলাম মদীনার ভিসার জন্য। তিনি আমার সম্পূর্ণ টাকা আত্মসাৎ করলেন। আমি সর্বশান্ত হয়ে গেলাম। ভাবলাম মদীনায় বুঝি আর যাওয়া হ'ল না। তবে আশা ছাড়িনি। ছেলেরা বড় হ'ল। ২ ছেলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগ দিল। আবার টাকা জমা দিলাম। আল্লাহপাক এবার কবুল করলেন। ২০০৮ সালের ৭ই জুন দুপুর একটায় সঊদী এয়ার লাইন্সে রিয়াদের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করলাম। রিয়াদ পৌঁছলাম। প্রায় ২ মাসের মতো রিয়াদে অবস্থান করার পর আকামা হাতে পেলাম।