What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

পুরুলিয়া জেলার বাগমুন্ডি থানার পুঁথিদাদু (1 Viewer)

নিজে স্কুলের গণ্ডিও পার হননি৷ অথচ পড়ান কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের৷ জ্ঞান যে প্রথাগত শিক্ষার ধার ধারে না, তার জলজ্যান্ত উদাহরণ তিনি৷ কেউ বলেন পুঁথিদাদু৷ কেউ বলেন চলমান এনসাইক্লোপিডিয়া৷ নিন্দুকে তো বইপাগলও বলে৷ পুরুলিয়ার বাঘমুণ্ডি থানার বুড়দা গ্রামের এই মানুষটাকে পুঁথিদাদু নামে এক ডাকে চেনেন ব্লকের প্রায় সকলেই৷ চিনবে না-ই বা কেন? সাহিত্য হোক বা ব্যাকরণ, দর্শন হোক অথবা সাধারণ জ্ঞান - পড়ুয়াদের মুশকিল আসান পুঁথিদাদু ও তাঁর গ্রন্থাগার৷
পেশায় কৃষক পুঁথিদাদুর কাছে পড়তে আসেন স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের ছাত্রছাত্রীরা৷ এহেন মানুষটির পড়াশোনা কিন্তু সপ্তম শ্রেণি অবধি৷ ছাত্রছাত্রীদের অনায়াস দক্ষতায় যখন সাহায্য করেন, তখন কে বলবে প্রথাগত ডিগ্রি নেই তাঁর? সম্পূর্ণ নিজের উদ্যোগে গড়ে তুলেছেন 'চৈতন্য গ্রন্থাগার'৷ বইয়ের সংখ্যা এক হাজারেরও বেশি৷ সেখানে গেলেই বই পড়তে পাওয়া যায় সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে৷ পড়াশোনায় সাহায্যের জন্য পুঁথিদাদু প্রস্ত্তত সবসময়৷ কোন বইয়ের কোন পাতায় কী লেখা রয়েছে, সবই নখদর্পণে তাঁর৷ টিউশনের পয়সা পুরোটাই প্রায় খরচ হয়ে যায় গ্রন্থাগারের পিছনে৷ নিজেই জানালেন ছোটবেলার কথা৷ মাত্র ১১ বছর বয়সে বাবা মারা গিয়েছিলেন৷ সংগ্রামের সেই শুরু৷ কিন্তু ভাঁটা পড়েনি বইপ্রীতিতে৷ অভাবে স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়৷ চেয়েচিন্তে বই আনতেন গুরুচরণ৷ মা ফুটিবালা নিরক্ষর হলেও বইয়ের কদর জানতেন৷ হতদরিদ্র পরিবারে ধান বিক্রির টাকায়
কেনা হত বই৷ স্কুলে যাওয়া বন্ধ হওয়ার বছর তিনেক পর ১৯৫৩ সালে নিজের বাড়িতে গ্রন্থাগার গড়ে তোলেন গুরুচরণ৷ নাম দেন চৈতন্য গ্রন্থাগার৷ চাষের কাজের পাশাপাশি চলতে থাকে বই সংগ্রহের কাজ৷ সেই সঙ্গে পড়াশোনা৷ একটু স্বাচ্ছন্দ্যের আশায় ছাত্রছাত্রীদের পড়াতে শুরু করেন৷ লোকমুখে খ্যাতি ছড়িয়ে পড়তে বেশি সময় লাগেনি৷ এখানেই শেষ নয়, সাহিত্যচর্চাও করেন গুরুচরণ৷ 'কোরক' নামে একটি কাব্যগ্রন্থও প্রকাশিত হয়েছে তাঁর৷ গুরুচরণের দুই ছেলেও চাষবাস করেই সংসার চালান৷ সংসারে টানাটানি থাকলে কি হবে, বাবাকে উত্‍সাহ জোগান তাঁরা৷ পুঁথিদাদুর বড় ছেলে শিবরাম গড়াই জানালেন, যতই দারিদ্র থাকুক, বাবাকে বাধা দেওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই৷ একমুখ খোঁচা খোঁচা দাঁড়ি৷ পরনে আধময়লা সাদা ধুতি৷ নিতান্তই সাধারণ চেহারার মানুষটার মতো এমন কত মানুষ যে এমন সাধনায় মেতে আছেন রাত্রিদিন। বই দিবসে তাঁদের প্রত্যেককে শ্রদ্ধা ❤️

(সংগৃহীত)

বিশ্ব বই দিবসের শুভেচ্ছা।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top