What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

কেন ঘুমাবেন, কতক্ষণ ঘুমাবেন (1 Viewer)

RCCTrDc.jpg


ভালো থাকার জন্য ভালো ঘুম হওয়া একান্ত প্রয়োজন। তবে অনেকেই আছেন, যাদের মোটেও ভালো ঘুম হয় না। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিদ্রা ফাউন্ডেশনের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, সেখানে বয়স্ক ব্যক্তিদের মধ্যে শতকরা ৬০ জনই সপ্তাহে দুই রাত বা তার বেশি সময় ঘুমজনিত সমস্যায় ভোগেন। শতকরা ৪০ জনের বেশি লোক মাসে অন্তত দুই দিন অতি দিবানিদ্রালুতায় আক্রান্ত হয়ে দৈনন্দিন কাজে বাধাগ্রস্ত হন। সপ্তাহে দুই দিন এ ধরনের সমস্যায় পড়েন, এমন আছেন শতকরা ২০ জন। যুক্তরাষ্ট্রে অন্তত ৪ লাখ লোক নিয়মিত ঘুমের সমস্যায় ভোগে। বড়দের ৫ ভাগ স্লিপ অ্যাপনিয়ায় আক্রান্ত।

শিশুদের ভেতর এ হার ২-৩ ভাগ। তবে যেসব শিশু নাক ডাকে, তাদের ভেতর স্লিপ অ্যাপনিয়ার রোগী আছে ১০-২০ ভাগ। এসব বাস্তবতায় আজ শুক্রবার (১৮ মার্চ) পালিত হচ্ছে বিশ্ব ঘুম দিবস। প্রতিবছর মার্চ মাসের তৃতীয় শুক্রবার দিবসটি পালিত হয়। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য 'গুণগত ঘুম, সুস্থ মন, সুখী পৃথিবী।'

নিদ্রাকালীন শ্বাসরুদ্ধতা বা স্লিপ অ্যাপনিয়া

অ্যাপনিয়া একটি গ্রিক শব্দ। এর অর্থ শ্বাসহীনতা। স্লিপ অ্যাপনিয়া তিন রকম। সেগুলো হলো ১. নাক ও গলায় বাধাজনিত ২. মস্তিষ্ক নিয়ন্ত্রিত এবং ৩. মিশ্র ধরনের।
অ্যাপনিয়া অর্থ শ্বাসহীনতা। এতে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। জীবনের স্বাচ্ছন্দ্য নষ্ট হয়। বয়স্ক ব্যক্তিদের ৫ ভাগ স্লিপ অ্যাপনিয়ায় আক্রান্ত। শিশুদের মধ্যে এ হার ২ থেকে ৩ ভাগ।

স্লিপ অ্যাপনিয়া তিন রকম হয়। সেগুলো হলো ১. নাক ও গলায় বাধাজনিত, ২. মস্তিষ্ক নিয়ন্ত্রিত এবং ৩. মিশ্র ধরনের প্রতিক্রিয়া। তিন প্রকারের মধ্যে বাধাজনিত অ্যাপনিয়া রোগী সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। অ্যাপনিয়ার চিকিৎসা না করা হলে রোগীর শ্বাস বারবার কিছু সময়ের জন্য বন্ধ থাকে। কখনো সারা রাত শতবার এমন হয়। কখনো আবার এক-দুই মিনিটের জন্য হতে পারে। মস্তিষ্কে কোনো কারণে অ্যাপনিয়া হলে যেসব মাংসপেশি শ্বাস নেওয়ার কাজ করে, তারা সংকেত পাওয়া থেকে বঞ্চিত থাকে।

মিশ্র কারণে হলে একসঙ্গে দুটো প্রক্রিয়াই জড়িত থাকে। প্রতিবার অ্যাপনিয়া হলে মস্তিষ্ক অল্প সময়ের মধ্যে রোগীকে জাগিয়ে দেয়।

উপসর্গ: অবস্ট্রাকটিভ স্লিপে উচ্চশব্দে নাক ডাকে। নাক ডাকার ধরনটি হয় অস্বাভাবিক। থেমে থেমে নাক ডাকে।

অন্যান্য উপসর্গ: দিবাভাগে মাত্রাতিরিক্ত ঘুম ঘুম ভাব। স্মৃতিবিভ্রম। হতাশা, বদমেজাজ, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদযন্ত্রের দুর্বলতা, মোটা হয়ে যাওয়া, মানসিক অসুস্থতা, বিবাহ বিচ্ছেদ, ক্যানসার, আয়ু কমে যাওয়া, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ এবং হার্টের নানা অসুখ ইত্যাদি।

রোগ নির্ণয়: ঘুমের বিভিন্ন স্তর পর্যবেক্ষণ, অ্যাপনিয়া রোগ নির্ণয়, মাত্রা ও গুরুত্ব এবং সেভাবেই চিকিৎসার জন্য বিশেষ করে স্লিপ ল্যাবরেটরির ব্যবস্থা আছে।

চিকিৎসা: অতিরিক্ত ওজন কমিয়ে ফেলা, অ্যালকোহল, ধূমপান, অতিরিক্ত চা–কফি পান ও ঘুমের ওষুধ সেবন এড়িয়ে চলা এবং এক পাশে কাত হয়ে শোয়ার অভ্যাস করা। এ ছাড়া নাক বন্ধ থাকার সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা নেওয়া জরুরি। এ ক্ষেত্রে সিপিএপি বা কন্টিনিউয়াস পজিটিভ এয়ারওয়ে প্রেশার বা একনাগাড়ে শ্বাসতন্ত্রে বায়ুর চাপ বাড়িয়ে রাখার যান্ত্রিক ব্যবস্থা বেশ কার্যকর। এতে ঘুমের সময় একটি মাস্ক বা মুখোশ পরিয়ে দেওয়া হয় এবং উচ্চ চাপের বাতাস বইয়ে দিয়ে শ্বাসতন্ত্রকে খোলা রাখা হয়। বিভিন্ন রোগের জন্য দরকার হয় বিভিন্ন আকারের মাস্ক আর বিভিন্ন মাত্রার চাপ। এগুলো নির্ধারণের জন্য চিকিৎসকের সহায়তা নেওয়া প্রয়োজন। রয়েছে মুখ খুলে রাখার জন্য মুখগহ্বরে ব্যবহার্য যন্ত্র। রয়েছে ইউপিপিপি অর্থাৎ ইউভুলোপ্যালাটো ফ্যারিঙ্গাপ্লান্টি নামক ইএনটি অপারেশন। এতে সার্জন গলার পেছন অংশে ইফভুলো বা আলজিহ্বা, তালু ও গলানালির কোমল টিস্যুগুলোকে অপসারণ করে শ্বাসতন্ত্রের প্রতিবন্ধকতা দূর করে থাকেন। স্লিপ অ্যাপনিয়া নির্ণয়ের জন্য ঘুমের প্রকৃতি, চোখের নড়াচড়া, মাংসপেশির তৎপরতা, হৃদ্‌যন্ত্রের গতি, নিশ্বাসের জন্য প্রয়াস, বাতাসের গতি এবং রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা—এসব উপাদান পর্যবেক্ষণ করা হয়। এভাবে স্লিপ অ্যাপনিয়া যখন নির্ণয় করা যায়, তেমনি এর গভীরতাও বোঝা যায়। কখনো কখনো প্রথম রাত থেকেই চিকিৎসা শুরু করা যায়।

পর্যাপ্ত না ঘুমালে কী হয়?

পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে হার্ট অ্যাটাক, হার্টের অসুখ, অনিয়মিত হার্টবিট, উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রোক, ডায়াবেটিসের মতো সমস্যা হতে পারে। ঘুম কম হলে কার্টিসল নামের একটা হরমোনের নিঃসরণ হয়। এটা ত্বকের কোলাজেন ভেঙে ফেলে। যাঁরা দিনে ছয় ঘণ্টার কম ঘুমান, তাঁদের মুটিয়ে যাওয়ার প্রবণতা অন্যদের চেয়ে ৩০ শতাংশ বেশি থাকে। কম ঘুমানোর সঙ্গে অবসাদগ্রস্ততার গভীর সম্পর্ক রয়েছে। স্মৃতি হারিয়ে ফেলা, স্বাভাবিক জীবনের ছন্দ হারিয়ে ফেলা, ভুলে যাওয়া রোগ, ইনসমনিয়া, হ্যালুসিনেশনসহ নানা ধরনের জটিলতা হতে পারে।

কেন ঘুমাব?

ঘুম আমাদের মেটাবলিজম সিস্টেম আর ওজন নিয়ন্ত্রণ করে। জীবনে স্থিতি দেয়। ইমিউন সিস্টেমকে সক্রিয় করে। হৃদ্‌রোগের আশঙ্কা কমায়। দীর্ঘ আর স্বল্পমেয়াদি স্মৃতিশক্তি গুছিয়ে জড়ো করে রাখে। শারীরিক, মানসিক ও মস্তিষ্কের কার্যক্রম ঠিক রাখার জন্য জীবনের মোট সময়ের তিন ভাগের এক ভাগ ঘুমের কোনো বিকল্প নেই। আট ঘণ্টা ঘুম মস্তিষ্কের কার্যক্রমকে সবচেয়ে ভালো রাখে। আমরা যখন ঘুমিয়ে পড়ি, তখন এমন কিছু কার্যক্রম চালু হয়, যেগুলো জীবনের জন্য খুবই জরুরি। শরীর ও মনের ঠিকভাবে কাজ করানোর জন্য, 'কোয়ালিটি লাইফ'–এর জন্য প্রতিদিন তাই আট ঘণ্টা ঘুমানো উচিত।

লেখক: অধ্যাপক ডা. মনিলাল আইচ | বিভাগীয় প্রধান, সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল
 
দৈনিক ৬ঘন্টা ঘুমানো কি যথেষ্ট
 

Users who are viewing this thread

Back
Top