পিসিওএস বংশগত ও হরমোনাল রোগ। সাধারণত নারীর শরীরে অ্যান্ড্রোজেন হরমোন স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে গেলে এ রোগ হয়।
বর্তমানে বিশ্বে নারীরা যেসব সমস্যায় বেশি ভোগেন, সেগুলোর মধ্যে অন্যতম পলিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (পিসিওএস)। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি ১০ জন নারীর অন্তত ১ জন এ রোগে আক্রান্ত। সেপ্টেম্বরকে পিসিওএস সচেতনতা মাস হিসেবে পালিত হয়। তাই পিসিওএস নিয়ে সবার সচেতন হওয়া উচিত।
লক্ষণ
অনিয়মিত অথবা দীর্ঘকালীন মাসিক; ওজন বেড়ে যাওয়া; ত্বকের বিভিন্ন অংশে কালচে ভাব; ব্রণ, আঁচিল; মুখে অবাঞ্ছিত লোম; চুল পড়া ও চুল পাতলা হয়ে যাওয়া।
কারণ
পিসিওএস বংশগত ও হরমোনাল রোগ। সাধারণত নারীর শরীরে অ্যান্ড্রোজেন হরমোন (পুরুষ হরমোন) স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে গেলে এ রোগ হয়। পিসিওএস হলে বন্ধ্যাত্ব সমস্যাও দেখা দেয়। যেসব স্থূলকায় নারী পিসিওএসে আক্রান্ত, তাঁরা যদি নিজেদের ওজন কমিয়ে আনতে পারেন, তাহলে তাঁদের মাসিক আবার নিয়মিত হয়। ওজন যদি আরও কমিয়ে আদর্শ পর্যায়ের কাছাকাছি আনা যায়, তাহলে নারীর ডিম্বাশয়ের কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়। এতে বন্ধ্যাত্বের সমস্যা পুরোপুরি সমাধান করা সম্ভব হয়।
জটিলতা
পিসিওএস নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারলে দীর্ঘকালীন নানা জটিলতা দেখা দেয়। যেমন টাইপ–২ ডায়াবেটিস, কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ, নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ, অ্যান্ড্রোমেট্রিয়াল ক্যানসার, বিষণ্নতা ইত্যাদি।
প্রতিরোধের উপায়
আমাদের মনে রাখতে হবে, নিয়মিত সঠিক চিকিৎসা ও জীবনযাত্রার মান পরিবর্তনের মাধ্যমে পিসিওএস নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। লক্ষণগুলো দেখা দিলে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন এবং নিয়মিত চিকিৎসা করান। জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনা জরুরি। এগুলোর মধ্যে আছে নিয়মিত ৩০ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টা করে হাঁটার অভ্যাস গড়ে তোলা; কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার কমিয়ে প্রোটিন জাতীয় খাবার বেশি খাওয়া; খাদ্যতালিকায় প্রচুর পরিমাণে ফলমূল ও শাকসবজি যোগ করা; সারা দিন ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করা; জাঙ্ক ফুড খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দেওয়া; রাতের খাবার যত আগে সম্ভব খেয়ে নেওয়া।
লেখক: অধ্যাপক ডা. শেখ জিন্নাত আরা নাসরিন, সাধারণ সম্পাদক এবং ডা. শারমিন আব্বাসি, যুগ্ম সম্পাদক, পিসিওএস ক্লাব অব বাংলাদেশ