What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

ইন্দোনেশিয়ার খাবারদাবার (1 Viewer)

hlThXe4.jpg


আমার রান্নার হাত বরাবরই ভালো। আর ইন্দোনেশিয়ায় এসে আমার এই রান্নার হাতের দক্ষতা আরও বাড়ানোর সুযোগ পেয়ে গেলাম। শেফ আর রাঁধুনির মধ্যে যে পার্থক্য বিদ্যমান এই রান্নার ক্লাসে না এলে তা জানতামই না। জাভার মানুষের খাদ্যাভ্যাস আর আমাদের বাংলাদেশিদের খাদ্যাভ্যাস প্রায় একই। তাই নির্দ্বিধায় যেকোনো বাংলা খাবারই ইন্দোনেশিয়ার মানুষের মন কাড়ে। ইন্দোনেশিয়া থেকে যা কিছুই সঙ্গে নিয়ে যায় না কেন তা চিরস্থায়ী হবে না। আর যদি আমি এই রন্ধনশিল্পটা আয়ত্ত করতে পারি, তাহলে অন্তত সারা জীবন এ ইন্দোনেশিয়ান স্বাদ সবার কাছে পোঁছাতে পারব। তাই আমিও এখানে এসে ইন্দোনেশিয়ান খাবার রান্না শেখার সুযোগ হাতছাড়া করলাম না।
আমার শিক্ষক ভাগ্য সব সময়ই সুপ্রসন্ন। এবার রান্না শিক্ষক হিসেবে পেলাম ইবু (মা/শিক্ষিকা) রেটনো সাইয়ার সেপতিয়ানিকে। আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের কুলিনারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। রেটনো ম্যাম বাংলাদেশি খাবারের প্রতি অতি আসক্ত। তাই একজন বাঙালি রাঁধুনিকে তিনি ছাত্র হিসেবে গ্রহণ না করে বরং গ্রহণ করলেন সন্তান হিসেবে। তাই ক্লাসের প্রতিটি বিষয় তিনি আমাকে হাতে ধরে শেখাতেন। সেটা পেঁয়াজ কাটা হোক আর লবণ দেওয়া, সবকিছুতেই তার মাতৃভাব বিরাজ করত। আর আমিও চেষ্টা করতাম আমার সর্বোচ্চ দিয়ে।

নাসি গোরেং

ইন্দোনেশিয়ার বিখ্যাত খাবারের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নাসি (ভাত) গোরেং (ভাজা)। অনেকটা ফ্রাইড রাইসের মতো মনে হবে। কিন্তু পার্থক্য এখানেই! মনে হওয়া আর বাস্তবতা এক জিনিস নয়। তাই এর স্বাদ গ্রহণ না করা পর্যন্ত বোঝা যাবে না পার্থক্যটা আসলে কোথায়। নাসি গোরেংকে সাধারণত ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় খাবার হিসেবে বলা যায়। প্রস্তুত করা হয় পেঁয়াজ, রসুন, ঝাল, লবণ, তেল ও সাধারণ ভাত দিয়ে। আর এতে প্রয়োগ করা হয় ইন্দোনেশিয়ান কেচাপ, যা ফ্রাইড রাইচ থেকে নাসি গোরেংকে আলাদা করেছে। জাভার যেকোনো রেস্তোরাঁর সহজেই পাওয়া যায় এ খাবার। সমগ্র ইন্দোনেশিয়ায় অতিথি আপ্যায়নে নাসি গোরেং বিখ্যাত।

গাডো গাডো

জাকার্তা মহর এশিয়ার নিউইয়র্ক বলে সর্বাধিক পরিচিত হলেও এই শহরটি গাডো গাডোর শহর হিসেবে পরিচিত। গাডো গাডো জাভার অন্যতম স্ট্রিট ফুড হিসেবে পরিচিত। মাছ থেকে তৈরি একধরনের চপ। এটি পরিবেশন করা হয় সবজি আর বাদামের সমন্বয়ে তৈরি একপ্রকার সস দিয়ে। যার স্বাদ অতি সহজেই সবার মন কাড়ে।

নাসি উদুক

নাসি উদুক জাভার অন্যতম আরেকটি বিখ্যাত খাবার। নারকেলের দুধ, মাংস ও বিভিন্ন প্রকারের সবজি দিয়ে প্রস্তুত করা হয় এ খাবার। পরিবেশন করা হয় চিকেন ফ্রাইসহ অন্যান্য ইন্দোনেশিয়ান খাবার দিয়ে। ৪০০ বছরের পুরোনো এ খাবার এখনো জাভার মানুষ তাদের সভ্যতা ও সাংস্কৃতিক অংশ হিসেবে বহন করে চলেছে।

yy0O0zQ.jpg


যেকোনো বাংলা খাবার ইন্দোনেশিয়ার মানুষের মন কাড়ে

পাডাং

পাডাং কোনো নির্দিষ্ট খাবার নয়। বলা যায় জাভার মানুষের যখন ঝালযুক্ত খাবারের দরকার পড়ে তখন তারা পাডাং-এ এসে হাজির হয়। এখানে সহজেই দেখা যায় বাংলাদেশি খাবারের রমরমা ছড়াছড়ি। যদিও সব খাবার দেখতে বাংলাদেশি খাবারের মতো, তবুও স্বাদটা একটু আলাদা। জাভার মসলা আর বাংলাদেশি মসলার মধ্যে পার্থক্য সুস্পষ্ট। পাডাংয়ের সব খাবারের স্বাদ মুখে লেগে থাকার মতো। এখানে পাওয়া যায় গরু ভুনা, মুরগি ভুনা, ডিম ভুনাসহ মুখরোচক খাবার।

তেমপে গোরেং

তেমপে ভাজাপোড়া জাতীয় খাবার। প্রস্তুত করা হয় সয়াবিন থেকে। আংরিংকান (জাভার রাস্তার পাশের খাবারের দোকান) ও বুর্জ-তে (সাধারণ খাবার হোটেল) সহজেই মেলে এ খাবার। ভাজাপোড়া যাঁদের পছন্দ, তাঁরা অবশ্যই জাভা ভ্রমণে এই তেমপে গোরেং-এর স্বাদ নিতে ভুল করবেন না। তাহু (সয়াবিন থেকে প্রস্তুত) খাবারটিও জাভার মানুষ বিভিন্ন উপায়ে খেয়ে থাকে।

eUxm9uj.jpg


ইবু রেটনোর সঙ্গে নাসি গোরেং রান্নার ক্লাস শেষে লেখক

মি আইয়াম

মি (নুডলস) ইন্দোনেশিয়ানদের অন্যতম প্রিয় একটি খাবার। আইয়াম (মুরগি) দিয়ে সেদ্ধ সুপি নুডলস জাভার মানুষ এক দিন না খেয়ে থাকতে পারে না। মি বহুল প্রচলিত ইন্দোনেশিয়ান খাবার বলা যায়, মি ইন্দোনেশীয়দের প্রাত্যহিক আধুনিক জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে মিশে আছে।

এ ছাড়া ইন্দোনেশিয়ান খাবারের মধ্যে অন্যতম হলো সাম্বাল, সাতে, বাক্স, সোতো, নাসি উদুক, বাকপাও, পেপেছ ইকান, পেমপেক, মার্তাবাক, কেতোপ্রাক, বালাদো তোরং, রেন্দাং, সিওমাই, ইকান বাকার, ওটাক-ওটাক ইত্যাদি অন্যতম।

লেখক: মো. এরফান রাশেদ
 
খাবারগুলো দেখেই জীভে চল চলে এলো
 

Users who are viewing this thread

Back
Top