What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

ক্ষীণদৃষ্টির ঝুঁকিতে ঘরবন্দী শিশুরা (1 Viewer)

চোখে দিনের আলো কম পড়া ও মুঠোফোনে বেশি সময় দেওয়ায় শিশুদের চোখের সমস্যা হতে পারে। চীনে বাড়ছে এ সমস্যা।

fncDGLq.jpg


করোনাকালে ঘরে থাকা শিশুদের ক্ষীণদৃষ্টি অথবা দূরে দেখার ক্ষমতা কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন দেশের শিশু চক্ষুবিশেষজ্ঞেরা। সমস্যাটির নাম মায়োপিয়া।

শিশু চক্ষুবিশেষজ্ঞদের মতে, করোনাকালে কয়েকটি কারণে শিশুদের মধ্যে এ সমস্যা বাড়তে পারে—১. স্কুল বন্ধ থাকায় ঘরে থাকা। ২. দিনের আলো চোখে কম পড়া। ৩. অনলাইনে বিরতিহীনভাবে দীর্ঘ সময় ক্লাস করা। ৪. মুঠোফোনের মতো ডিজিটাল ডিভাইসের পর্দায় (স্ক্রিনে) সময় বেশি দেওয়া।

চীনে পরিচালিত এক গবেষণায় করোনাকালে শিশুদের মধ্যে এ সমস্যা বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা উঠে এসেছে। আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের মেডিকেল জার্নাল জ্যামা অফথালমোলজিতে গত ১৪ জানুয়ারি প্রকাশিত '২০২০-এ ইয়ার অব কোয়ারেন্টিন মায়োপিয়া' শিরোনামের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনে ছয় থেকে আট বছর বয়সী শিশুদের মায়োপিয়ার হার আগের চেয়ে ১ দশমিক ৪ থেকে ৩ গুণ বেড়েছে।

চীনের শ্যানডং প্রদেশের ফেইচাং এলাকার ১০টি এলিমেন্টারি (প্রাথমিক) স্কুলের ৬ থেকে ১৩ বছর বয়সী ১ লাখ ২৩ হাজার ৫৩৫টি শিশুর ওপর তিয়ানজিন মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃত্বে গবেষণাটি হয়। গবেষকেরা মহামারির সময়ের সঙ্গে আগের পাঁচ বছরের তুলনা করে মায়োপিয়া বাড়ার হার তুলে ধরেন। এতে আরও বলা হয়, ৯ থেকে ১৩ বছর বয়সী শিশুরা অনলাইনে বেশি সময় ধরে ক্লাস করলেও তাদের মায়োপিয়া বাড়ার হার কম।

বাংলাদেশে করোনাকালে মায়োপিয়া পরিস্থিতি জানতে একটি গবেষণা শুরু করেছে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের শিশু বিভাগ। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে শুরু হওয়া গবেষণাটির শিরোনাম 'কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে ঘরবন্দী থাকার কারণে স্কুলের শিশুদের মায়োপিয়া'।

অনলাইন ক্লাস যেহেতু বন্ধ করা যাবে না, তাই ক্লাসের পর যথাসম্ভব ডিজিটাল ডিভাইস বর্জন করতে হবে। এ ছাড়া ডিভাইস থেকে দূরে শরীর সোজা রেখে যথাযথভাবে বসতে হবে। - ডা. মো. মোস্তফা হোসেন, শিশু চক্ষুরোগ বিভাগের প্রধান, ইস্পাহানী ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতাল

জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের শিশু চক্ষু বিভাগের প্রধান ডা. খায়ের আহমেদ চৌধুরী বলেন, ডিভাইসের ব্যবহার চোখের দৃষ্টিতে প্রভাব ফেলতে পারে। গত এক বছরে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া শিশুদের মধ্যে যারা চশমা ব্যবহার করত, তাদের অনেকের চশমার 'পাওয়ার' পরিবর্তন হয়েছে বলে দেখা গেছে। তাঁর মতে, অনলাইন ক্লাস চলার সময় ৩০ মিনিট পরপর ১০ মিনিটের জন্য চোখের বিশ্রাম দেওয়ার ব্যবস্থা রাখা জরুরি।

করোনাকালে শিশুদের চোখের সমস্যা বাড়ার প্রবণতার বিষয়টি জানা যায় হাসপাতালে ঘুরে। অনেক অভিভাবক চোখের সমস্যায় আক্রান্ত সন্তানদের চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাচ্ছেন। ৮ মে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের বহির্বিভাগে আট বছরের সায়মাকে নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন মা শামীমা আক্তার। সায়মা অনলাইনে ক্লাস করে। তার মা প্রথম আলোকে বলেন, সায়মা মাথাব্যথা ও চোখব্যথায় ভুগছে।

ইস্পাহানী ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালের বহির্বিভাগে আসা শিশু রোগীদের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশের বেশি দৃষ্টিত্রুটি নিয়ে আসে বলে জানান হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. কাজী সাযযাদ ইফতেখার। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এই শিশুদের মধ্যে শহরের শিশুরাই বেশি। বাইরে কম যাওয়ার কারণে তাদের দূরে দেখার দৃষ্টির ক্ষমতা কমে যায়।

ইস্পাহানী ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতাল জানিয়েছে, সেখানকার বহির্বিভাগে এ বছরের প্রথম তিন মাসে প্রায় ২১ হাজার শিশুকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে ২৩৩টি শিশু চিকিৎসা নিয়েছে। ২০২০ সালে সংখ্যাটি ছিল ৬১ হাজার, যা আগের বছরের চেয়ে ৩৫ হাজার কম।

জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের রেকর্ড বই ঘেঁটে দেখা যায়, এ বছরের প্রথম ৪ মাসে প্রায় সাড়ে ১৭ হাজার শিশুর চোখের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ২০২০ সালে সংখ্যাটি সাড়ে ৪৪ হাজার ছিল, যা আগের বছরের চেয়ে কম। চিকিৎসকেরা বলছেন, করোনাকালে খুব জরুরি না হলে কেউ হাসপাতালে আসেনি। এটাই রোগী কমার কারণ।

চিকিৎসকেরা বলছেন, মায়োপিয়ার সমস্যাটি চশমা ব্যবহারের মাধ্যমে সমাধান করা যায়। তবে শিশুরা যাতে এ সমস্যায় না পড়ে সেজন্য কিছু পরামর্শও দিয়েছেন তারা। ইস্পাহানী ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালের শিশু চক্ষুরোগ ও স্কুইন্ট (ট্যারা) বিভাগের প্রধান ডা. মো. মোস্তফা হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, এই সময়ে অনলাইন ক্লাস যেহেতু বন্ধ করা যাবে না, তাই ক্লাসের পর যথাসম্ভব ডিজিটাল ডিভাইস বর্জন করতে হবে। এ ছাড়া ডিভাইস থেকে দূরে শরীর সোজা রেখে যথাযথভাবে বসতে হবে। তিনি বলেন, একনাগাড়ে ডিভাইস ব্যবহারে মাথাব্যথা হয় ও চোখে চাপ পড়ে।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top