What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

বয়স্ক মানুষের খাবার কেমন হবে (1 Viewer)

3lzYNbN.jpg


বয়সের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সুস্থ থাকতে সুষম ও স্বাস্থ্যকর খাবার অত্যন্ত জরুরি। কারণ, সুষম ও স্বাস্থ্যকর খাবার মানুষের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা বজায় রাখে। গবেষণায় দেখা যায়, স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার পাশাপাশি প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট ব্যায়াম করলে বয়সের সঙ্গে শরীরের ভারসাম্য বজায় থাকে।

বয়স্ক মানুষের খাবারদাবার

কম ক্যালরিযুক্ত, তবে আরও পুষ্টিকর

বয়স বাড়ার সঙ্গে ক্যালরি কম খাওয়া প্রয়োজন। বয়স হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের চলাফেরা ও শারীরিক পরিশ্রম কমে যায়। পাশাপাশি ক্ষুধা ও পানির চাহিদাও কমে যায়। কম ক্যালরি প্রয়োজন হলেও স্বাস্থ্যকর পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে বয়স্ক মানুষের। এ জন্য ফলমূল, শাকসবজি, মাছ ও চর্বি ছাড়া মাংস খাওয়া বেশি দরকার। এ সময় ভাত, আলু ও মিষ্টিজাতীয় খাবার কম খেতে হবে।

PlV3L6T.jpg


ভাত, আলু ও মিষ্টিজাতীয় খাবার কম খেতে হবে

প্রোটিন গ্রহণ বাড়াতে হবে

বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পেশির ক্ষমতা ও শক্তিক্ষয় হতে শুরু করে, যা সারকোপেনিয়া নামে পরিচিত। এটি প্রবীণদের দুর্বলতা, হাড়ভাঙা ও স্বাস্থ্যহীনতার বড় একটি কারণ। তাই খেতে হবে ডাল, ডিম, মটরশুঁটি, বাদাম, বীজ, মাশরুম, মুরগি, মাছ ও চর্বি ছাড়া মাংস।

আঁশযুক্ত খাবার

বয়স্কদের মধ্যে কোষ্ঠকাঠিন্য একটি সাধারণ স্বাস্থ্যসমস্যা। বিশেষ করে ৬৫ বছরের বেশি বয়সের মানুষের। কেননা, এই বয়সে মানুষের চলাফেরা কমে যায় এবং বিভিন্ন ধরনের ওষুধ সেবন করার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা যায়। এ জন্য কোষ্ঠকাঠিন্য রোধে ও অন্ত্রের গতিবিধি ঠিক রাখতে পর্যাপ্ত পরিমাণে আঁশযুক্ত খাবার খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। এ সময় খেতে হবে লাল আটার রুটি, শাকসবজি, মটরশুঁটি, খোসাসহ ফল, যেমন পেয়ারা, আপেল, কালোজাম ইত্যাদি।

B6RRALq.jpg


যেকোনো ফল খাওয়ার পরিমাণ বাড়াতে হবে

ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি

বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নতুন হাড় তৈরির ক্ষমতা হ্রাস পায় এবং পরবর্তী সময়ে ফ্র্যাকচারের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে, যা অস্টিওপোরোসিসের কারণ হতে পারে। এসব থেকে দূরে থাকতে দরকার ভিটামিন ডি। আর ভিটামিন ডি-এর ভালো উৎস হলো সূর্যের আলো। প্রতিদিন নিয়ম করে একাধিকবার ১০-২০ মিনিট করে সূর্যের আলোতে থাকতে হবে। এ ছাড়া দুধ, দই, পনির, ডিমের কুসুম, তিল, মাশরুম, কমলার রস, কাঁটাসহ ছোট মাছ, কচুশাক ও কলমিশাক খেতে পারেন।

ভিটামিন বি১২

বয়স্ক ব্যক্তিদের পেটে অ্যাসিড উৎপাদন হ্রাস পায়। যার ফলে ভিটামিন বি১২ কম শোষণ হয়। এ ছাড়া বয়স্কদের বিভিন্ন নিউরোলজিক্যাল ডিসঅর্ডারের সমস্যা থাকতে পারে। যাঁরা নিরামিষ খাবার খান, তাঁদের জন্য ভিটামিন বি১২ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ জন্য খেতে হবে শিমের বিচি, বাদাম, কলা, মটরশুঁটি ও সবুজ শাকসবজি। আর যাঁরা নিরামিষ খাবার খান না, তাঁদের মাছ, চর্বি ছাড়া মাংস, ডিম, দুধ, দই ইত্যাদি খেতে হবে।

4UUNwOZ.jpg


মটরশুঁটিতে আছে ভিটামিন বি১২

পটাশিয়াম

বয়স বাড়ার সঙ্গে রক্তচাপ, কিডনিতে পাথর, অস্টিওপোরোসিস এবং হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি বাড়ে। এ রোগগুলো প্রবীণদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। এ জন্য বয়স্কদের পটাশিয়ামের উৎস হিসেবে খেতে হবে ডাল, বাদাম, বিভিন্ন ধরনের বীজ, আলু, টমেটো, খেজুর, বিভিন্ন প্রকার শাকসবজি, যেমন ফুলকপি, বাঁধাকপি, গাজর, মটর ইত্যাদি।

আয়রন

বয়স্কদের রক্তস্বল্পতা একটি সাধারণ সমস্যা। আর এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে আয়রনযুক্ত খাবার খাওয়া জরুরি। এ জন্য খেতে হবে ডালিম, বিটরুট, শাকসবজি, ডাল, বাদাম, চর্বি ছাড়া মাংস, ডিম ইত্যাদি।

পানি

বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেহে পানির পরিমাণ হ্রাস পায়। আর এই দীর্ঘমেয়াদি ডিহাইড্রেশনের ফলে ওষুধ শোষণের ক্ষমতা হ্রাস পায় এবং অবসন্নতা বাড়ে। এ জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে। এ ছাড়া পানিশূন্যতা এড়াতে স্যুপ, ফলের রস এগুলোও খাওয়া যেতে পারে।

zsoFqkI.jpg


টমেটোতে আছে প্রদাহরোধী গুণ

অ্যান্টিফ্ল্যামেটরি খাবার

রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে এ ধরনের খাবার তালিকায় রাখতে হবে। কারণ, এ খাবারগুলো যেকোনো ধরনের প্রদাহ কমাতে পারে এবং কার্ডিওভাস্কুলার রোগ ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি থেকে রক্ষা করতে পারে। অ্যান্টিফ্ল্যামেটরি খাবারের মধ্যে রয়েছে টমেটো, জলপাইয়ের তেল, আখরোট, চর্বিযুক্ত মাছ, ব্লুবেরি, চেরি ও কমলালেবু।

যে বিষয়টি উল্লেখ করে রাখা প্রয়োজন তা হলো, যদি আগে থেকে শারীরিক কোনো সমস্যা থাকে, তাহলে ডাক্তার বা পুষ্টিবিদের পরামর্শমতো খাবার খেতে হবে। ডাক্তার বা পুষ্টিবিদের পরামর্শ আপনাকে যেকোনো ধরনের সমস্যা থেকে মুক্ত রাখতে সহায়তা করবে।

কিছু করণীয়

  • বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্ষুধা হ্রাস পায়। এ কারণে ওজন কমে যেতে পারে এবং পুষ্টিহীনতা দেখা দিতে পারে। এ জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার হিসেবে বাদাম, দই ও সেদ্ধ ডিম খেতে হবে।
  • প্রতি ২-৩ ঘণ্টা পর খাবার খেতে হবে।
  • বয়সের সঙ্গে সঙ্গে খাবারের গন্ধ, স্বাদ ও অনুভূতি হ্রাস পেতে থাকে। ফলে খাবার কম আকর্ষণীয় মনে হতে পারে। এ জন্য খাবারে বৈচিত্র্য রাখতে হবে এবং পছন্দ অনুসারে খাবার খেতে হবে।

i9FWOuy.jpg


ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করুন

  • প্রবীণদের দাঁত পড়ে যাওয়া, খাবার খেতে ও চিবাতে অসুবিধা হতে পারে। তাই খাবার হতে হবে নরম ও সহজপাচ্য।
  • বয়স্কদের বিভিন্ন শারীরিক অসুস্থতা, পারিবারিক ও আর্থিক সমস্যার কারণে অবসন্নতা ও একাকিত্ব বাড়তে পারে। এ জন্য মাঝেমধ্যে বাড়ির বাইরে যাওয়া প্রয়োজন।
  • বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অতিরিক্ত চিনি, লবণ ও চা, কফি, সফট ড্রিঙ্কস এড়িয়ে চলতে হবে।
  • ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করতে হবে।
  • প্রতিদিন ৩০-৪৫ মিনিট হাঁটতে হবে।

* লেখক: লিনা আকতার | পুষ্টিবিদ, ঠাকুরগাঁও ডায়াবেটিক ও স্বাস্থ্যসেবা হাসপাতাল
 

Users who are viewing this thread

Back
Top