What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

শিশু যদি শাক সবজি ও ফলমূল না খায় (1 Viewer)

yy6D0gV.jpg


'আমার বেবি ফল খায় না, আমার বেবি শাকসবজি খায় না'—এমন কথা অনেক মা-বাবার মুখেই শোনা যায়। কেউ বলেন, 'আমার বেবি ফল খেতে চায় না, কী করি বলেন তো।' আবার কেউ বলেন, 'আমার বেবি শাকসবজি খেতে চায় না, কী করি!'

শিশুরা ফল বা শাকসবজি খেতে চায় না, এটা নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কারণ নেই। তবে দুটোই যদি খেতে না চায়, সে ক্ষেত্রে অবশ্য একটু টেনশন করতে পারেন।

সমাধান কী?

সমাধান পেতে হলে আপনাকে প্রথমেই জানতে হবে যে আপনি কেন শিশুকে ফল বা শাকসবজি খাওয়াবেন। আমরা প্রতিদিন যে খাবারগুলো খাই, তার পেছনে নিশ্চয় একটা উদ্দেশ্য আছে। মনে রাখতে হবে, আমরা শুধু পেট ভরানোর জন্য খাই না। প্রতিটি খাবারের নির্দিষ্ট কিছু গুণ আছে। সেই গুণ বিচার করেই আমরা খাবার খাই বা আমাদের খাবার খাওয়া উচিত।

শাকসবজি ও ফলমূল আমরা কেন খাই?

n5s6pKm.jpg


ভিটামিন ও মিনারেলের ভান্ডার হচ্ছে শাকসবজি এবং ফলমূল

খাদ্য উপাদানের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুটি উপাদান হচ্ছে ভিটামিন ও মিনারেল। আর ভিটামিন ও মিনারেলের ভান্ডার হচ্ছে শাকসবজি এবং ফলমূল। তাই আমরা আমাদের শরীরের প্রতিদিনের চাহিদা মেটাতে, শরীরের রোগপ্রতিরোধব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করতে, শরীরের ভিটামিন ও মিনারেলের চাহিদা মেটাতে শাকসবজি এবং ফলমূল খেয়ে থাকি। আমাদের শিশুদেরও খাওয়ানোর চেষ্টা করি। ঠিক যেমনটা শর্করার চাহিদা মেটাতে ভাত, রুটি, মুড়ি; প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে মাছ, মাংস, ডিম, ডাল এবং চর্বির চাহিদা মেটাতে ঘি, মাখন বা তেল খেয়ে থাকি। ঠিক তেমনি ভিটামিন ও মিনারেলের চাহিদা মেটাতে আমরা শাকসবজি ও ফলমূল খেয়ে থাকি। সব ধরনের ভিটামিন ও মিনারেলের সবচেয়ে ভালো উৎস এগুলো।

এবার আসি মূল কথায়

শাকসবজিতে যে যে ভিটামিন ও মিনারেল পাওয়া যায়, ঠিক ফলেও একই রকম ভিটামিন বা মিনারেল পাওয়া যায়। কিছুটা পার্থক্য নিশ্চয় আছে, তবে সেটা খুবই সামান্য পরিমাণ। হয়তো কোনো কোনো ফলে একটু বেশি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট পাওয়া যায়, শাকসবজিতে একটু কম পাওয়া যায়। আবার হয়তো কিছু ভিটামিন বা মিনারেল শাকসবজিতে একটু বেশি পাওয়া যায় আর ফলমূলে একটু কম। এটাকে ১৯-২০-জাতীয় বিষয় বলা যেতে পারে।

1EyYg25.jpg


ফলমূল ও শাক সবজির যে কোনো একটি খেলেই শিশুর ভিটামিন ও মিনারেলের দৈনিক চাহিদা পূরণ হতে পারে

যেমন খোসাসহ আপেল, আম, লাল আঙুর, তরমুজ ইত্যাদি ফল ভিটামিন এ-এর ভালো উৎস। আবার লালশাক, মিষ্টিকুমড়া, পেঁপে, কাঁকরোল—এগুলো থেকেও ভিটামিন এ পাওয়া যায় যথেষ্ট পরিমাণ। তাই আপনার শিশু যদি আপেল না খেয়ে পরিমাণমতো লালশাক খায়, তাতেও তার ভিটামিন এ-এর চাহিদা পূরণ হয়ে যাবে।

আবার টমেটো, ক্যাপসিকাম, ব্রকলি, লেটুসপাতা ইত্যাদি সবজি ভিটামিন সিতে ভরপুর। অপরদিকে পেয়ারা, আমলকী, আনারস, স্ট্রবেরি ইত্যাদি ফলেও ভিটামিন সি থাকে।

যেমন: খোসাসহ আপেল, আম, লাল আঙুর, তরমুজ ইত্যাদি ফল ভিটামিন এ-এর ভালো উৎস। আবার লালশাক, মিষ্টিকুমড়া, পেঁপে, কাঁকরোল—এগুলো থেকেও ভিটামিন এ পাওয়া যায় যথেষ্ট পরিমাণ। তাই আপনার শিশু যদি আপেল না খেয়ে পরিমাণমতো লালশাক খায়, তাতেও তার ভিটামিন এ-এর চাহিদা পূরণ হয়ে যাবে।

এখন যে শিশুরা ফলমূল খেতে চায় না, তাদের শাকসবজি খাওয়ানোর অভ্যাস করুন। আর যে শিশুরা শাকসবজি খেতে চায় না, তাদের ফলমূল খাওয়ানোর অভ্যাস করুন। শাকসবজি অথবা ফলমূলের মধ্যে একটা না হলে অন্যটা আপনার শিশু অবশ্যই খাবে। তবে হ্যাঁ, ধীরে ধীরে শিশুকে অবশ্যই দুটোতে অভ্যস্ত করতে হবে। শিশুরা কী পরিমাণে শাকসবজি ও ফলমূল খাবে, সেটা তাদের ওজন ও উচ্চতার ওপর নির্ভর করবে। খেতে পছন্দ করলেও শিশুদের অতিরিক্ত না খাওয়ানোই উচিত।

একটা উদাহরণ দেওয়া যাক

একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষ শাকসবজি ও ফলমূল মিলিয়ে ৪০০ গ্রাম খেলেই সারা দিনের শরীরের ভিটামিন এবং মিনারেলের চাহিদা পূরণ হয়ে যায়। এখন কেউ যদি মনে করেন যে তিনি ফলমূল খাবেন না, শুধু ৪০০ গ্রাম শাকসবজিই খাবেন, তাতে কোনো সমস্যাই নেই। যেকোনো একটি খেলেই তাঁর শরীরের ভিটামিন ও মিনারেলের চাহিদা মিটে যাবে। আবার কেউ যদি শাকসবজি না খেয়ে শুধু ৪০০ গ্রাম ফলমূল খান, তাতেও তাঁর দৈনিক চাহিদা মিটে যাবে। তবে প্রতিদিন কমপক্ষে ৪০-৫০ গ্রাম ফলমূল খেতে পারলে খুব ভালো হয়। এটা জরুরিও বটে।

jhQrbwc.jpg


প্রতিদিন কমপক্ষে ৪০-৫০ গ্রাম ফলমূল খাওয়া জরুরি

শাকসবজি রান্না করে খেতে হয়, তাতে কিছু পুষ্টিগুণ অবশ্যই নষ্ট হয়। পরবর্তী সময়ে গরম করলে আরও কিছু পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু ফলমূল সরাসরি খাওয়া হয়, তাই এর পুষ্টিগুণ অক্ষত থাকে। ফলমূল অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের খুব ভালো উৎস, যা আমাদের শরীরকে বিভিন্ন ধরনের রোগবালাই থেকে মুক্ত রাখে। তাই বলা যায়, ফলমূল থেকে একটু বেশি পরিমাণে নিউট্রিয়েন্ট পাওয়া যায় এবং এটি বেশি উপকারী।

লেখক: মো. ইকবাল হোসেন | পুষ্টিবিদ, পুষ্টি কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল, চট্টগ্রাম।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top