What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

শ্যাম নেব না কুল নেব (1 Viewer)

Nagar Baul

Board Senior Member
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
1,152
Messages
13,339
Credits
547,766
Pen edit
Sailboat
Profile Music
শ্যাম নেব না কুল নেব – ১

স্বামীর ছোট বেলার বন্ধুর নাম জাভেদ, ১৯৯৮ সালে আমার স্বামী ইমরান আর জাভেদ একই সাথে ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা দেয় , পরীক্ষায় ইমরান পাশ করলেও পাশ করতে ব্যর্থ হয় জাভেদ। ব্যর্থতার ক্ষোভে, দুঃখে, এবং লজায় বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়। বাড়ির কারো সাথে তার যোগাযোগ পর্যন্ত ছিলনা। একমাত্র সন্তানের বাড়ি পালানোর কারনে মা বাবা দুঃখ ও বিরহে অসুস্থ হয়ে অকালে প্রান হারায়। তার খোজ নেয়ার মত পৃথিবীতে আর কেউ রইলনা, তার চাচা এবং চাচাত ভায়েরা কয়েকদিন আপসোস করে জাভেদের কথা মন থেকে মুছে দেয়। ইমরান প্রান প্রিয় বন্ধুর কথা অনেকদিন মনে রাখলেও বর্তমানে প্রায় ভুলেই গিয়েছিল। জীবন ও জীবিকার দায়ে যেখানে ভাই ভাইকে ভূলে যায় সেখানে বন্ধু হয়ে বন্ধুকে কয়দিনই বা মনে রাখতে পারে?

ইমরান ২০০০ সালে ডিগ্রী পাশ করে ঢাকায় একটি বেসরকারী ফার্মে ক্লার্কিয়াল জবে যোগ দেয়, ১৯৯১ সালে আমাদের পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়, তিন ভাই এর মধ্যে ইমরান সবার ছোট, অন্য ভায়েরা তেমন লেখা পড়া করেনি ,দেশের বাড়িতে থেকে কৃষি কাজের মাধ্যমে মা বাবা নিয়ে কোন রকমে সংসার চালায়। বিয়ের এক বছর পর হতে আমরা উত্তরাতে কম ভাড়ার একটা বাড়ি নিয়ে ঢাকাতেই থাকি। স্বল্প বেতনের চাকরী , যা বেতন পায় দু ছেলে কে নিয়ে আমাদের নুন আনতে পানতা পুরানোর অবস্থা।

গত ঈদে ইমরান বাড়ি যায়নি, তাই এবার ঈদে আগে থেকে প্ল্যান করে ঈদের ছুটির সাথে যোগ করে পাঁচ দিনের ছুটি বারিয়ে নেই, তাই ঈদের পাচঁ দিন আগেই সে দেশের বাড়িতে পৌঁছে যায়। ইমরান পৌছার দুদিন পর স্থানীয় বাজারে জাভেদের সাথে ইমরানের প্রথম দেখা হয়। জাভেদই ইমরানকে সনাক্ত করে।
তুই কি ইমরান?

হ্যাঁ আমি ইমরান, তুই কি জাভেদ? দোস্ত তুই কি বেচে আসিছ ?
বহুদিন পর প্রান প্রিয় বন্ধুকে কাছে পেয়ে ইমরান ও জাভেদ আবেগের উচ্ছাসে একে অন্যকে বুকে অড়িয়ে ধরে।
অতীত স্মৃতি রোমন্থন করে দুজনেই কান্নায় ভেঙ্গে পরে। তারপর বাড়ির দিকে যাত্রা করে, হাটতে হাটতে একে অপরের সাথে আলাপ জুড়ে দেয়, আবেগ আপ্লুত কন্ঠে ইমরান জানতে চায়,
কোথায় ছিলি এতদিন?

ইটালীতে ছিলাম, ইটালীর নাগরিকত্ব পেয়ে সেখানে বসবাস করি।
বাড়ির কোন খবরাখবর জানিস তুই?

হ্যাঁ জানি। ঢাকায় এসে গত বছর জেনে গেছি, মা বাবার মৃত্যুর খবর শুনে আর বাড়ির দিকে পা মাড়ায়নি, তোর খবর ও জানতে চেয়েছিলাম, পরে জেনেছি তুই নাকি ঢাকায় থাকিস, বিশাল শহরে কোথায় খুজে পাব তোকে, তাই তোর খোজে আর বেশীদুর আগায়নি। আজ তোর দেখা পেয়ে খুব ভাল লাগছে, মনে হচ্ছে আমার আপন ভায়ের সাক্ষাত পেয়েছি।
তুই কি করছিস বল? ঢাকায় কোথায় থাকিস? জাভেদ জানতে চাইল।

একটা প্রাইভেট ফার্মে চাকরী করি, উত্তরাতে স্বল্প ভাড়ায় একটা বাড়ি নিয়ে থাকি।
উত্তরাতে! জাভেদ আশ্চর্য হল।
আশ্চর্য হলি যে?

আশ্চর্য হবনা কেন? আমি ও যে উত্তরায় থাকি, উত্তরায় জায়গা কিনে দশ ফ্লাটের পাচঁতলা একটি বিল্ডিং করেছি, ভাড়া দেব বলে। তোকে পেলেত সব দায় দায়ীত্ব তোকেই দিতাম।
কোথায় ? লোকেশানটা বল?
বলবনা , তোদেরকে সেখানে নিয়ে গিয়ে সারপ্রাইজ দেব।

আলাপে আলাপে তারা বাড়ি পৌছল, প্রথমে চাচাদের ঘরে উঠলেও সার্বক্ষনিক আমাদের ঘরে ইমরানের সাথে থাকতে লাগল, শুধু রাতের বেলা চাচাদের ঘরে রাতটা কাটায়। ঈদের বাজার আমার স্বামীকে করতে হলনা, চাচাদের পরিবার ও আমাদের পরিবারের সব বাজার সে নিজে করল, আমার স্বামী প্রথমে বাধা দিলেও বন্ধুর মনের দিকে চেয়ে পরে কিছু বলল না।

ঈদের ছুটি শেষ হলে আমরা ঢাকায় চলে গেলাম, জাভেদ ও আমাদের সাথে ঢাকায় চলে এল , আমাদেরকে তার বাড়িতে নিয়ে গেল, অপুর্ব সুন্দর বাড়ি, বাইরের দেয়াল ব্যাতিত ভিতরের সব কিছু দামী মোজাইক করা, কারুকার্য দেখ।
তার বাড়িতে নিয়ে গেল, অপুর্ব সুন্দর বাড়ি, বাইরের দেয়াল ব্যাতিত ভিতরের সব কিছু দামী মোজাইক করা, কারুকার্য দেখলে মনে দু কোটি টাকার কম খরচ হয়নি। দুবন্ধুর মাঝে বিভিন্ন আলাপ আলোচানা চলছিল, আলাপের এক পর্যায়ে

জাভেদ আমার স্বামীকে প্রস্তাব দিল, " আমিত একা , আমার পাক সাক করার মানুষ ও নাই, তুই ভাবীকে নিয়ে আমার একটা ফ্লাটে চলে আয়, আমিও তোদের সাথে এক পাকে খাব, আর আমি চলে গেলে তোরা আমার ফ্লাটে থাকবি এবং অন্য ভাড়া টিয়াদের কন্ট্রোল করবি।" নিজেদের দৈন্যদশার কথা ভেবে কায়চার জাভেদের প্রস্তাবে রাজি হয়ে গেল, আমরা একই সাথে এক বাড়িতে থাকতে লাগলাম।
মাস খানেক যাওয়ার পর জাভেদ হঠাত একদিন উচ্ছাসের সাথে ইমরানকে জড়িয়ে ধরে বলল, আমি তোর ইটালী যাওয়ার সব বন্দোবস্ত করে ফেলেছি।
ইমরান জানতে চাইল, কিভাবে? আমি এত টাকা কোথায় পাব?

সব টাকা আমার, টাকার কথা তোকে ভাবতে হবেনা। আগামী সেপ্টেম্বরের দুই তারিখে তোর ফ্লাইট।
মাত্র পাচদিন বাকি, কি করে সম্ভব?

এ পাচ দিন ইমরানের ঘুম হল না, তার চোখে রঙিন স্বপ্ন, তারও হয়ত পাঁচ তলা বিল্ডিং হবে, বার বার আমাদের সাত ও পাঁচ বছরের ছেলে কে জড়িয়ে ধরে আদর করছে , মাঝে মাঝে সবার আড়ালে কাঁদছে সবাইকে ছেড়ে দূরে চলে যাবে তার বিরহে, আমার ও বেশ খারাপ লাগছিল, কিন্তু রঙিন স্বপ্নের বিভোরতায় সে খারাপ কে আমলে নিইনি।

ইমরান কাউকে জানাতেও পারেনি, তার পরিবারের কাউকে কোন খবর দিতেও পারেনি, মাত্র পাঁচ দিনের মাথায় সে ইটালীর উদ্দেশ্যে পাড়ি দিল।

ইমরান চলে যাওয়ার প্রথম সাপ্তাহ হতে জাভেদের আচরনে বিস্তর পার্থক্য লক্ষ্য করলাম, জাভেদ ইমরানের উপস্থিতিতে যে ভাবে আমাকে সম্মান দেখিয়ে কথা বলত এখন সে ভাবে সম্মান দেখায়না।আগে যে জাভেদ আমার সাথে লাজুকতা নিয়ে ভদ্রভাবে কথা বলত, সে এখন মাঝে মাঝে যৌন আবেদন মুলক খিস্তি কাটতে চায়, আমার বুকের দিকে কোন কোন সময় এক পলকে চেয়ে থাকে, আমি লজ্জায় বুক ঢেকে নিলেও সে তার চোখ নামায় না বরং আমাকে লক্ষ্য করে বলে , কেন এই অপরুপ সুন্দর মৌচাকটা ঢেকে দিলে ভাবী? আমি ভিতরে ভিতরে রাগ সম্বরন করার চেষ্টা করি, যেহেতু তার বাড়িতে থাকি তাই চুপ মেরে থাকতে বাধ্য হই।

জাভেদের বিশাল উপকার আমাকে রাগতে দেইনা, তার কাছে আমাদের গোটা পরিবার কৃতজ্ঞ, ইমরান চলে যাওয়ার পর আমাদের তিনটি প্রাণির ভরন পোষন নির্বাহ করছে , আমার দুই ছেলেকে বাপের আদলে স্কুলে নিয়ে যায়, আবার ছুটির টাইমে গিয়ে নিয়ে আসে,বাপ না থাকলে ও বাপের অনুপস্থিতি জাভেদ ছেলেদের বুঝতে দিচ্ছেনা। মাঝে মাঝে ঢাকা শহরের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে বেড়াতে নিয়ে যায়, আমার ছেলেরা বড়ই আনন্দে আছে। যে এতটুকু আমাদের জন্য অবদান রাখছে তার দেখায় রাগ দেখায় কি করে। কিন্তু দিনে দিনে যে জাভেদ আমার শরীরে প্রতি লোভী হয়ে যাচ্ছে তাকে ঠেকাব কি করে বুঝতে পারছিনা।

একদিন জাভেদ বলল, ভাবী রেডি থেকো আজ সবাই মিলে সিনেমা দেখতে যাব, ছয়টা থেকে নয়টা, আমি হ্যাঁ বা না কিছু বললাম না, জাভেদ দ্বীতিয়বার আমার কনফারমেশন পাওয়ার জন্য বলল, ভাবী কোন জবাব দিলেনা যে? বললাম, আমি ভীষন চিন্তায় আছি, আজ পঁচিশ দিন হয়ে গেল ইমরানের কোন খবর পেলাম না, গিয়ে পৌছল কিনা, ভাল আছে কিনা, কিছুই জানলাম না।

এখনো পৌছয়নি, আরো সময় লাগবে, তারা এখান হতে লেবানন যাবে, সেখান হতে দালালের মাধ্যমে সীমান্ত পেরিয়ে ইউরোপে ঢুকবে, তারপর ইটালী পৌছবে, আমি সব কিছু বলে দিয়েছি তাকে, তুমি সেটা নিয়ে কোন চিন্তা করবে না ভাবী।

তার কথা শুনে আমাকে এক অজানা আশংকা চেপে ধরল, শুনেছি সীমান্ত পার হতে গিয়ে রক্ষীদের গুলিতে অনেক লোক মারা যায়।এমনটি হবেনাত!
 

Users who are viewing this thread

Back
Top