What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

১৯৬৯: চীন-সোভিয়েত ইউনিয়ন সীমান্ত যুদ্ধ (1 Viewer)

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,649
Messages
117,051
Credits
1,241,096
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
Io9CfqG.jpg


১৯২২ সালে প্রথম কমিউনিস্ট রাষ্ট্র হিসেবে সোভিয়েত ইউনিয়ন গঠিত হয়। এরপরে পূর্ব ইউরোপের আরও কিছু দেশ কমিউনিজমের আদর্শকে বেছে নিলেও আয়তন, জনসংখ্যা ও প্রভাবের বিচারে সোভিয়েত ইউনিয়নের পর চীনই সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কমিউনিস্ট দেশ। আদর্শগত মিল থাকায় চীনের গৃহযুদ্ধকালীন সময় থেকেই চীনের কমিউনিস্ট পার্টি সোভিয়েত ইউনিয়নের সাহায্য সহযোগিতা পেত। বলা যেতে পারে সোভিয়েত ইউনিয়নের আশীর্বাদেই কমিউনিস্ট পার্টি গৃহযুদ্ধ জেতে এবং ১৯৪৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় পিপল রিপাবলিক অফ চায়না ।

পরবর্তীতে চীন-সোভিয়েত সম্পর্ক খারাপ হতে বেশি দিন লাগে নি। বিভিন্ন কারণে চীনের সর্বেসর্বা মাও ও সোভিয়েতের মধ্যে দূরত্ব বাড়তে থাকে। ১৯৬০ এর শুরুর দিকে সোভিয়েত ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্র নিউক্লিয়ার পরীক্ষার ব্যাপারে একটি শান্তি চুক্তি করে। কিন্তু বিষয়টি চীন ভালোভাবে নেয় নি। তারা এটিকে পশ্চিমা বিশ্বের কাছে একটি কমিউনিস্ট রাষ্ট্রের "আত্মসমর্পণ" হিসেবে দেখেছিল। এবং সেই সাথে নিজেদের শক্তিমত্তা বাড়ানোর ব্যাপারেও সচেষ্ট হয়েছিল। এসবের ধারাবাহিকতায় ১৯৬২ সালে চীন-সোভিয়েত ইউনিয়ন পরস্পরের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে।

অমীমাংসিত সীমান্ত

"মেইন ল্যান্ড চায়না" বলতে এখন আমরা যেটা বুঝি, ১০০-২০০ বছর আগে সেটি আয়তনে এত বড় ছিল না। জাপানিজ, বৃটিশদের কাছে হরদম নিষ্পেষিত হতো চাইনিজরা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে সোভিয়েত ইউনিয়নই কমিউনিস্ট পার্টিকে সাহায্য করে জাপানিজদের দখল করা বেশ কিছু অঞ্চল নিজেদের দখলে নিতে। বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কারণে সোভিয়েত ইউনিয়ন-চীনের নিজেদের মধ্যকার অমীমাংসিত কিছু সীমান্ত নিয়ে প্রথম দিকে কোন ঝামেলা হতো না। কিন্তু ১৯৬০ এর পর থেকে দুই দেশের মাঝে সেই সীমান্তগুলো নিয়ে বিরোধ শুরু হয়। ১৮৬০ সালের একটি চুক্তি অনুযায়ী চীন-সোভিয়েত ইউনিয়নের পূর্ব দিকের উসুরি নামক এক নদী এই দু'দেশকে আলাদা করেছে। কিন্তু এই নদীতে অনেকগুলো বিচ্ছিন্ন দ্বীপ ছিল, সেই দ্বীপগুলোর মালিকানা নিয়েই মূলত বিরোধ বাঁধে।

১৯৬৯ সালের ২ মার্চ, চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির (PLA) একটি দল ঝেনবাও দ্বীপে সোভিয়েত সীমান্ত ফাঁড়িতে হামলা চালায়। এতে নিহত হয় অনেকেই। আহতের সংখ্যাটাও কম ছিলোনা। এই ঘটনা থেকে চীনা-সোভিয়েত সীমান্তজুড়ে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ে। যা দুই দেশকে প্রায় যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যায়। যুদ্ধের পরিস্থিতি এতটাই সাংঘর্ষিক হয়ে দাঁড়িয়েছিল যে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের সম্ভাবনাও জেগেছিল সে সময়।

প্রকৃত হতাহতের সংখ্যা জানা না গেলেও ধারণা করা হয় এই যুদ্ধে ৬০ জন সোভিয়েত সৈন্য এবং প্রায় ২০০-৮০০ চীন সৈন্য নিহত হয়।

cgFpT5s.jpg


রিচার্ড নিক্সন ও মাও সে তুং

পরিণতি

সীমান্তের সকল ঝামেলা আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ করতে ১৯৬৯ সালের সেপ্টেম্বরে সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রধানমন্ত্রী এলেক্সি কসিজিন চীনের প্রধানমন্ত্রী চৌ এনলাই এর সাথে দেখা করেন। তাদের আলোচনায় সাময়িকভাবে সীমান্ত উত্তেজনা কমলেও চূড়ান্ত সমাধান আসে নি। সোভিয়েত ইউনিয়নের ভাঙ্গনের পর থেকে সীমান্ত নিয়ে রাশিয়া-চীনের ১৯৯১, ১৯৯৪, ২০০৪ সালের ধারাবাহিক আলোচনায় সব সমস্যার সমাধান হয়। শেষ পর্যন্ত চীন আরগুন, আমুর, উসুরি নদীর অনেকগুলো দ্বীপ নিজেদের দখলে পায়। যেই দ্বীপ থেকে ১৯৬৯ সালের সংঘাত সেই ঝেনবাও দ্বীপ এখন চীনে দখলে।

চীন- সোভিয়েত সংঘাত যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কূটনৈতিক বিজয় ছিল। এক দিকে সোভিয়েতকে কোণঠাসা করা অপরদিকে চীনকে নিজেদের দিকে নেয়া- দুই সুযোগই তারা কাজে লাগাতে চাইছিল। অবশ্য এই যুদ্ধের পর চীনও চেয়েছিলো এমন কোন শক্তিশালী রাষ্ট্রের সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন করতে, যারা রাশিয়ার বিপক্ষে রয়েছে। ১৯৪৯ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে চীনের কোন কূটনীতিক সম্পর্ক ছিল না। কিন্তু ১৯৬৯ সালের পর থেকে সব কিছু পরিবর্তন হতে থাকে। ১৯৭২ সালে পুরো পৃথিবীকে অবাক করে দিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন চীনে ভ্রমণ করেন।

সব মিলিয়ে চীন পুরো বিশ্বকে জানিয়ে দেয়, তারা আর আগের মতো দূর্বল নেই। শক্তিশালী সোভিয়েত ইউনিয়নকেও তারা ভয় না। এবং যেকোন আক্রমণের জবাবে তারাও পাল্টা আক্রমণ করতে জানে।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top