What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে রাশিয়া (1 Viewer)

mlZakQf.jpg


সোভিয়েত ভেঙে রাশিয়া

১৯৯১ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে ভেঙে গিয়েছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন। ১৯৪৫ সাল থেকে ১৯৯১ সালে ভেঙে যাওয়ার আগে পর্যন্ত সোভিয়েত ঐক্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী পরাশক্তি হিসেবে স্নায়ুযুদ্ধে লিপ্ত ছিল। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনে ১৫টি নতুন প্রজাতন্ত্র গঠিত হয়। তিনটি সোভিয়েত প্রজাতন্ত্র রাশিয়া, ইউক্রেন এবং বেলারুশের নেতারা সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য এক ঐতিহাসিক চুক্তিতে সই করেন। ১৯৮৯ সালে বার্লিন প্রাচীর ভেঙে যাওয়ার পর পূর্ব ইউরোপের বহু দেশে কমিউনিজমেরও পতন ঘটে। কিন্তু সোভিয়েত ইউনিয়ন তখনো টিকে ছিল। কমিউনিস্ট পার্টির নেতা তখন মিখাইল গর্বাচেভ। ১৯৯১ সালের আগস্টে তার বিরুদ্ধে এক অভ্যুত্থানের চেষ্টা করে কট্টরপন্থি কমিউনিস্টরা। কিন্তু সেই অভ্যুত্থান ব্যর্থ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এখানেই থেমে যায়নি সব কিছু। ১৫টি সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রের অনেকগুলোতেই স্বাধীনতার আন্দোলন জোরদার হয়ে ওঠে। ইউক্রেনসহ অনেক ছোট ছোট প্রজাতন্ত্রে স্বাধীনতার দাবিতে গণভোটও হয়ে যায়। ইউক্রেনের নেতা লিওনিদ ক্রাভচুক তখন সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে বিচ্ছিন্ন হতে চান। একই বছর ডিসেম্বরে বেলারুশে বৈঠকে বসেন তিনটি সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রের নেতারা। বৈঠকটি ডেকেছিলেন বেলারুশের প্রেসিডেন্ট স্ট্যানিস্লাভ শুশকেভিচ। ইউক্রেনের নেতা লিওনিদ ক্রাভচুক এবং রাশিয়ার নেতা বরিস ইয়েলৎসিন যোগ দেন তার সঙ্গে। ইউক্রেন তত দিনে স্বাধীনতা ঘোষণা করে দিয়েছে। কিন্তু বেলারুশ তখনো সে রকম ঘোষণা দেয়নি। আবার গর্বাচেভকে না জানিয়ে এ রকম একটা বৈঠকে বসা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। ১৯৯১ সালের ৭ ডিসেম্বর রাশিয়ার নেতা বরিস ইয়েলৎসিন, ইউক্রেনের নেতা লিওনিদ ক্রাভচুক এবং বেলারুশের নেতা স্ট্যানিস্লাভ পূর্ব বেলারুশের এক বিরাট খামারবাড়িতে গিয়ে মিলিত হলেন। বৈঠক শুরুর অল্প পরেই তারা সোভিয়েত ইউনিয়ন বিলুপ্তির লক্ষ্যে চুক্তির প্রথম লাইনটির ব্যাপারে একমত হন সবাই। লাইনটি ছিল এ রকম- 'ভূরাজনৈতিক বাস্তবতা এবং আন্তর্জাতিক আইনের বিষয় হিসেবে ইউনিয়ন অব সোভিয়েত সোশ্যালিস্ট রিপাবলিকস বা ইউএসএসআরের কোনো অস্তিত্ব আর নেই।' এই চুক্তির মধ্য দিয়ে সোভিয়েত নেতা মিখাইল গর্বাচেভ কার্যত অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়লেন। এর মধ্য দিয়ে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যায়।

রুশ বিপ্লবের পর সৃষ্টি হয়েছিল যেভাবে

pi0fhfh.jpg


সোভিয়েত ইউনিয়ন ছিল একটি একদলীয় সমাজতান্ত্রিক দেশ। যার অস্তিত্ব ছিল ১৯২২ সাল থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত। সোভিয়েত অর্থনীতি ছিল কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রিত। ভূমি ও বাড়ির ব্যক্তিগত মালিকানা সোভিয়েত ইউনিয়নে নিষিদ্ধ ছিল। যদিও বলা হতো, সব সম্পদের মালিক সোভিয়েত জনগণ। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে সম্পদের মালিক ছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন সরকার। যার উত্থান ঘটেছিল মূলত রুশ বিপ্লবের মধ্য দিয়ে ১৯১৭ সালে। ভøাদিমির ইলিচ লেনিনের বলশেভিক পার্টির নেতৃত্বে হয়েছিল রুশ বিপ্লব। সে সময় মার্কস-অ্যাঙ্গেলসের অর্থনৈতিক-সমাজবাদী তত্ত্বের বাস্তব প্রয়োগ ও প্রকাশ ঘটান লেনিন ও সহকর্মীরা। এর প্রভাব ঢেউ তোলে গোটা বিশ্বে, বিশেষ করে ইউরোপীয় সমাজে। সোভিয়েত শাসন ব্যবস্থা স্নায়ুযুদ্ধ যুগে পৃথিবীর সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলোর মডেল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিল। মূলত চারটি প্রজাতন্ত্র হতে সোভিয়েত ঐক্যের উৎপত্তি হলেও ১৯৯১ সালে ভেঙে যাওয়ার আগে পর্যন্ত এই ইউনিয়নের প্রজাতন্ত্রের সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল ১৫টিতে। এগুলো ছিল- আর্মেনিয়া প্রজাতন্ত্র, আজারবাইজান প্রজাতন্ত্র, বেলারুশ প্রজাতন্ত্র, এস্তোনিয়া প্রজাতন্ত্র, জর্জিয়া প্রজাতন্ত্র, কাজাখস্তান প্রজাতন্ত্র, কিরগিজিস্তান প্রজাতন্ত্র, লাটভিয়া প্রজাতন্ত্র, লিথুয়ানিয়া প্রজাতন্ত্র, মলদোভিয়া প্রজাতন্ত্র, রাশিয়া প্রজাতন্ত্র, তাজিকিস্তান প্রজাতন্ত্র, তুর্কমেনিস্তান প্রজাতন্ত্র, ইউক্রেন প্রজাতন্ত্র, উজবেকিস্তান প্রজাতন্ত্র। সোভিয়েত ইউনিয়ন পরিচালিত হতো কাল মার্কসের দর্শনানুসারে। রাষ্ট্রের নাগরিকদের বিনামূল্যে স্বাস্থ্য ও শিক্ষালাভের সুযোগ ছিল। পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন পর্যন্ত সবাই বিনামূল্যে শিক্ষা পেত। পানি, গ্যাস, সেন্ট্রাল হিটিংসহ নাগরিক বিভিন্ন সুবিধায় রাষ্ট্র প্রচুর পরিমাণে ভর্তুকি প্রদান করায় নাগরিকদের এ খাতে তেমন কোনো খরচ করতে হতো না। পেশা ও চাকরির শর্তানুসারে বেতন নির্ধারিত হতো। ছাত্রদেরকেও রাষ্ট্র বেতন প্রদান করত। সব চাকরিজীবীকে ডরমিটরিতে আবাসন প্রদান করা হতো। পরবর্তীতে সবাইকেই নিজস্ব বাসা প্রদান করা হতো। খুব অল্প কিছু বিশেষ দক্ষতা সম্পন্ন লোককে জীবনের শুরুতেই বড় অ্যাপার্টমেন্ট প্রদান করা হতো। মূলত মধ্যবিত্ত সম্প্রদায় ছিল সোভিয়েত সমাজের বৃহত্তর অংশ। অত্যন্ত ক্ষমতাবান গুটিকয়েক পার্টি সদস্যকে রাষ্ট্রের তরফ থেকে বিশেষ সুবিধা প্রদান করা হতো। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ঐক্য ভেঙে গেলে ভূতপূর্ব সোভিয়েত ঐক্যের ১৫টি প্রজাতন্ত্রের মধ্যে ১১টি নিজেরা একটি শিথিল জোট সৃষ্টি করে। যেটা স্বাধীন রাষ্ট্রের রাষ্ট্রমন্ডল নামে পরিচিত। তিনটি বাল্টিক রাষ্ট্র লিথুয়ানিয়া, লাটভিয়া ও এস্তোনিয়া এই জোটে যোগ দেয়নি। এই রাষ্ট্রমন্ডলের মূল সদস্য থাকলেও তা থেকে তুর্কমেনিস্তানকে বর্তমানে সহযোগী সদস্য করা হয়েছে। তিনটি বাল্টিক রাষ্ট্র লিথুয়ানিয়া, লাটভিয়া ও এস্তোনিয়া ২০০৪ সালে ন্যাটো ও ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগ দেয়।

SbZxcW6.jpg


বিশ্বযুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়ন

EFFIjOT.jpg


বিশ্বযুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়ন ছিল শক্তিশালী। স্তালিনের আমলে ভিন্নমতাবলম্বী সন্দেহে লাখ লাখ মানুষ প্রাণ হারায়। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে চলে ভয়াবহ হত্যালীলা। এ সময় জার্মানরা সোভিয়েত কর্তৃপক্ষের স্বীকৃতি অনুযায়ী সাড়ে ৩ লাখ সোভিয়েত লাল ফৌজকে হত্যা করে। তাদের হাতে সাধারণ মানুষের জীবনহানি ঘটেছে লাখ লাখ। জার্মান হামলার মুখে স্তালিন ১৯৪১ সালের ৬ নভেম্বর জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন। তিন দশকব্যাপী শাসনামলে এটি ছিল জাতির উদ্দেশে তার দ্বিতীয় ভাষণ। সোভিয়েত একনায়ক স্তালিন তার ভাষণে দাবি করেন যে, 'জার্মান হামলায় সোভিয়েত বাহিনীর সাড়ে ৩ লাখ সেনা নিহত হলেও ৪৫ লাখ জার্মান সেনাও নিহত হয়েছে এবং বিজয় আমাদের দ্বারপ্রান্তে।' তবে অনেকেই দাবি করে এই সংখ্যা ছিল কল্পনাপ্রসূত। এ কথা ঠিক, জার্মানদের বিরুদ্ধে সোভিয়েত সেনারা তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। এ প্রতিরোধের জন্য তাদের ব্যাপক মূল্য দিতে হয়। ১৯৪১ সালের ডিসেম্বর নাগাদ মস্কোর উপকণ্ঠে হানাদার সেনাদের অগ্রযাত্রা স্তব্ধ এবং তাদের অগ্রাভিযান থামিয়ে দেওয়ার আগ পর্যন্ত জার্মান সেনাদের বিরুদ্ধে লাল ফৌজের প্রতিরোধ ছিল অকার্যকর। সোভিয়েত সেনারা যুদ্ধে ব্যর্থ হলেও প্রচন্ড ঠান্ডা আবহাওয়া জার্মানদের পরাজয় ডেকে আনে। স্তালিনগ্রাদের যুদ্ধে জার্মানদের পরাজিত করতে সোভিয়েত মার্শাল জর্জিঝুচভের সঙ্গে স্তালিন একযোগে কলাকৌশল প্রণয়ন করেন। জার্মানির বিরুদ্ধে প্রতিরোধযুদ্ধে সোভিয়েত সেনারা প্রাণপণ লড়েছে বাধ্য হয়ে। যুদ্ধে পিছু হটলেই তাদের জন্য মৃত্যু ছিল নিশ্চিত। ১৯৪৮ সালের ২৭ জুলাই স্তালিনের ২২৭ নম্বর অর্ডারে তার এই যুদ্ধ কৌশলের ভয়াবহ চিত্র ফুটে উঠেছে।

রাশিয়া ফেডারেশন

w0lbGN9.jpg


সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর নিষ্প্রভ হয়ে পড়েছিল রাশিয়া। কিন্তু সেই রাশিয়া এখন আবার বিশ্বনেতৃত্বের জায়গায় সরব হয়ে উঠছে। বিশেষ করে সিরিয়ায় পশ্চিমা শক্তিগুলোর বিরুদ্ধে সরাসরি অবস্থান নিয়ে মস্কো এখন বিশ্বরাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছে। রাশিয়ার এই সাফল্যের পেছনে যিনি প্রধান ভূমিকা পালন করছেন তিনি হলেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন। পূর্ব ইউরোপ ও উত্তর এশিয়াজুড়ে বিস্তৃত বিশ্বের বৃহত্তম দেশ। রাশিয়ার আয়তন দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ কানাডার আয়তনের প্রায় দ্বিগুণ। দেশটির সরকারি নাম রাশিয়ান ফেডারেশন। রাশিয়ার মতো এত বেশি খনিজসম্পদ বিশ্বের অন্য কোনো দেশের নেই। রাশিয়ার চার-পঞ্চমাংশ জনগণ এর পূর্ব ইউরোপীয় অংশে বাস করে। ২০০৩ সালে দেশটির জনসংখ্যা ছিল ১৪ কোটি ৪৫ লাখের কিছু বেশি। রাশিয়ার রাজধানী মস্কো। দেশটির বেশিরভাগ জনগণ রুশ ভাষায় কথা বলে। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর সেন্ট পিটার্সবার্গ, যা সোভিয়েত শাসনামলে লেনিনগ্রাদ নামে পরিচিত ছিল।

কেজিবি এখন এফএসবি

QiSXYV5.jpg


সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের গোয়েন্দা বাহিনী কেজিবি। কেজিবির তৎপরতা ছিল বিশ্বজুড়ে। তাদের গুপ্তচরবৃত্তি আর গোপন কার্যক্রম নিয়ে তোলপাড় চলে সর্বত্র। সবার চোখের সামনে থেকেও যেন অদৃশ্য ছিল এই গোয়েন্দারা। সেই কেজিবি এখন নেই। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে গড়ে উঠেছে রাশিয়া। বিশ্বের অন্যতম সামরিক শক্তিধর দেশ রাশিয়ার গোয়েন্দা বাহিনী এখন এফএসবি। কেজিবি থেকে এফএসবি এখন আরও দুর্র্ধর্ষ। এফএসবির কর্মী সংখ্যা আনুমানিক ৩ লাখ ৫০ হাজারের মতো। এফএসবির সদর দফতর রাশিয়ার মস্কো শহরের ল্যুবিয়াঙ্কা স্কোয়ারে। এর জবাবদিহিতা রাশিয়ান ফেডারেশনের প্রেসিডেন্টের কাছে। এফএসবির সাহায্যকারী সংস্থার নাম গ্রু। এফএসবির মোট ১০টি বিভাগ রয়েছে। তাদের কাজ গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ, কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স পরিচালনা, গুপ্তহত্যা, বর্ডার সার্ভেইল্যান্স, রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ, কাউন্টার টেররিজম, নিজস্ব লোক সংগ্রহ ও নেটওয়ার্ক তৈরি, বিদেশি কূটনীতিকদের ওপর নজরদারি ইত্যাদি।

প্রধান যত নেতা

XtOnZIL.jpg


Uz0GoJL.jpg


সোভিয়েত ইউনিয়ন ছিল একটি একদলীয় রাষ্ট্রী সমাজতন্ত্রিক দেশ, যার অস্তিত্ব ছিল ১৯২২ সাল থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত। ১৯৪৫ সাল থেকে ১৯৯১ সালে ভেঙে যাবার আগে পর্যন্ত সোভিয়েত ইউনিয়ন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী পরাশক্তি হিসেবে স্নায়ুযুদ্ধে লিপ্ত ছিল। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনে ১৫টি নতুন প্রজাতন্ত্র গঠিত হয়। আর এগুলো হলো:


  • রাশিয়া
  • জর্জিয়া
  • ইউক্রেন
  • মলদোভা
  • বেলারুশ
  • আর্মেনিয়া
  • আজারবাইজান
  • কাজাখস্তান
  • উজবেকিস্তান
  • তুর্কমেনিস্তান
  • কিরগিজিস্তান
  • তাজিকিস্তান
  • ইস্তোনিয়া
  • লাতভিয়া
  • লিথুয়ানিয়া
 

Users who are viewing this thread

Back
Top