What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

শীতকালীন শীতনিদ্রা (1 Viewer)

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,649
Messages
117,051
Credits
1,241,096
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
BEBqJr7.jpg


শীতকালে কিছু প্রাণী লম্বা সময়ের জন্য নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে। এসময় তারা কিছু খায় না এবং তাদের শরীরের তাপমাত্রা কমে যায়। এটা শীতনিদ্রা (Hibernation) নামে পরিচিত।

কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া শীতল রক্তের প্রাণীদের মধ্যেই এই ঘটনা বেশি দেখা যায়। মূলত খাবারের অভাব ঘটে বলেই এরা শীতনিদ্রায় সময় কাটিয়ে দেয়। কিছু প্রাণীর মধ্যে আবার শীতনিদ্রার মত বৈশিষ্ট্য দেখা যায়।

শীতল রক্ত

শীতল রক্তের প্রাণীদের মধ্যেই শীতনিদ্রা বেশি দেখা যায়। কারণ এরা নিজের শরীরে তাপ উৎপাদন করে না, বরং পরিবেশের তাপমাত্রায় এদের দেহের তাপমাত্রা ঠিক থাকে। ব্যাঙজাতীয় উভচর প্রাণীরা শীতনিদ্রায় যায়। এছাড়া টিকটিকি, গিরগিটি, লিজার্ডজাতীয় প্রাণী, সাপ, কচ্ছপসহ বেশ কিছু সরীসৃপের মধ্যে শীতনিদ্রার প্রবণতা দেখা যায়।

উষ্ণ রক্ত

অনেক শীতল রক্তের প্রাণী শীতনিদ্রায় গেলেও অল্পকিছু উষ্ণ রক্তের প্রাণীর ক্ষেত্রেও এরকম ঘটে। এদের মধ্যে কিছু ইঁদুরজাতীয় প্রাণী (Rodents) উল্লেখযোগ্য। পাখিদের মধ্যে একমাত্র পুওরউইল (Poorwill) পাখিটি শীতনিদ্রায় যায়। এসব প্রাণী শীতকালেই শীতনিদ্রায় যায়।

শীতকালে পরিবেশের তাপমাত্রা কমে আসে। উষ্ণ রক্তের হওয়ার কারণে এদের সব সময় শরীরে একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রা ধরে রাখতে হয়। ফলে শীতকালে বেশি খাবার গ্রহণ ও সে খাবার থেকে তাপ উৎপাদন আবশ্যক হয়ে পড়ে। কিন্তু এসব প্রাণী আকারে খুব ছোট হওয়ায় বেশি খাবার খাওয়াও তাদের পক্ষে সম্ভব হয় না। ফলে তারা বেশি তাপ উৎপাদনও করতে পারে না, যা তাদের জীবনের জন্য হুমকিস্বরূপ। এ অবস্থা থেকে রেহাই পেতে শীতনিদ্রা তাদের সাহায্য করে।

jdtDDkJ.jpg


কেনো এই শীতনিদ্রা?

স্বভাবিকভাবে বেঁচে থাকতে হলে প্রাণীকে খাদ্য থেকে শরীরে শক্তি তৈরি করতে হয়। কিন্তু শীতকালে খাবারের ঘাটতি দেখা দেয়। আবার উষ্ণ রক্তের প্রাণীর তুলনায় শীতল রক্তের প্রানীদের দেহে অনেক কম তাপ ও শক্তি উৎপন্ন হয়। শীতনিদ্রা হলো এমন এক অবস্থা, যেখানে শক্তির প্রয়োজন হয় খুব অল্প। শরীরে জমে থাকা চর্বিই সেই অল্প পরিমাণ শক্তি জোগানের জন্য যথেষ্ট। শীতনিদ্রার ফলে খাবারের সমস্যাকে পাশ কাটিয়ে প্রতিকূল পরিবেশে প্রানীর টিকে থাকার সম্ভাবনা বাড়ে বলে বিবর্তনের মাধ্যমে এই বৈশিষ্টটি প্রাণীদের মাঝে টিকে গেছে।

মরুভূমিতে গ্রীষ্মনিদ্রা

মরুভূমির কিছু কিছু প্রাণী একধরনের লম্বা ঘুম দেয়। তবে এটাকে শীতনিদ্রা বলা যায় না। গ্রীষ্মকালে অতিরিক্ত গরমের হাত থেকে রক্ষা পেতে এরা মাটির নিচে ঘুমিয়ে পড়ে। এ সময় তাদের হৃৎস্পন্দন কমে যায় এবং পানির প্রয়োজন হয় না। তাছাড়া এভাবেই তারা অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে, কারণ গ্রীষ্মকালে মরু অঞ্চলে পানির অভাব বেড়ে যায়। প্রতিকূল পরিবেশে টিকে থাকার সুবিধা দেয় বলে বিবর্তনের মাধ্যমে শীতনিদ্রার মতো গ্রীষ্মনিদ্রার উদ্ভব ঘটেছে।

শীতনিদ্রার শুরুতে…

যেসব প্রাণী শীতনিদ্রায় যায়, তারা আগে থেকেই এর প্রস্তুতি নিতে থাকে। শীতনিদ্রার সময় যত ঘনিয়ে আসে, ততই প্রানীটি বেশি করে খাবার খেতে থাকে। বেশি খাবার খাওয়ার ফলে তার শরীরে প্রচুর চর্বি জমা হয়। তারপর শীতনিদ্রার শুরুতে প্রাণীটি গুহা, মাটির নিচে বা অন্য কোনো নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যায়। যেহেতু শীতনিদ্রা একধরনের গভীর ঘুম, তাই এ সময় শিকারি প্রাণীর আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য তারা নিরাপদ জায়গায় থাকার চেষ্টা করে।

তখন যা ঘটে…

শীতনিদ্রায় যাওয়া প্রাণীটির শরীরে বিভিন্ন রকম পরিবর্তন হতে থাকে। খায় না বলে এসময় তার শরীরে শক্তি অনেক কম তৈরি হয়। শরীরে জমে থাকা চর্বি থেকে দেহের প্রয়োজনীয় শক্তি তৈরি হতে থাকে। শক্তি কম তৈরি হয় বলে তাপমাত্রাও কমে আসে। পাশাপাশি হৃৎপিণ্ডের স্পন্দনও কমে যায়, প্রতি মিনিটে হৃদস্পন্দন দশ-এর চেয়েও কম হয়। ফলে শ্বাস-প্রশ্বাসের কাজও অনেক ধীর হয়ে যায়। অর্থাৎ, শীতনিদ্রার সময় প্রাণীটির শরীর তার বেঁচে থাকার নূন্যতম প্রয়োজনের বাইরে কোন কাজ করে না।

শীতনিদ্রার পর…

অনেক প্রাণীই দীর্ঘ সময়ের জন্য শীতনিদ্রায় যায়। কিছু কিছু প্রাণী অবশ্য ক্ষণিকের জন্য জেগে উটে এবং মাটির গর্তে আগে থেকে সংগ্রহ করে রাখা বাদাম বা অন্য কোনো শক্তি সমৃদ্ধ খাবার খেয়ে আবার ঘুমিয়ে পড়ে। দীর্ঘ শীতনিদ্রার পর যখন শরীরের উষ্ণতা বাড়তে থাকে, তখন প্রাণীটি জেগে উটে। অন্যদিকে, পরিবেশের তাপমাত্রা না বাড়া পর্যন্ত শীতল রক্তের প্রাণীর শীতনিদ্রা শেষ হয় না।

শীতনিদ্রা কাটানোর জন্য কিছু উষ্ণ রক্তের প্রাণী কাঁপতে থাকে। ফলে তাদের দেহের তাপমাত্রা দ্রুত বাড়তে থাকে। স্বভাবিক ভাবে ছোট প্রাণীগুলো বড় প্রাণীদের চেয়ে অনেক দ্রুত শীত নিদ্রা কাটিয়ে উটতে পারে।

1tHJhJf.jpg


শীতনিদ্রা সম্পর্কিত মজার তথ্য

  • বাদামি ভালুকসহ আরও কিছু প্রজাতি শীতকালে লম্বা সময়ের জন্য নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে। এ সময় তারা কিছু খায়না। তবে এটাকে বিজ্ঞানীরা সত্যিকারের শীতনিদ্রা বলেন না। কেননা এ সময় তাদের শরীরের তাপমাত্রা খুব একটা কমে না। এছাড়া অনেক মা ভালুক শীতনিদ্রার সময় বাচ্চা প্রসব করে!
  • শীতনিদ্রারত প্রাণীর শরীরে তাপ উৎপাদন ছাড়া অন্যান্য কাজের শক্তি আসে মূলত শর্করা থেকে। এ জন্য শরীরে জমা থাকা শর্করাজাতীয় পদার্থ থেকে শর্করা তৈরি হয়। প্রক্রিয়াটির নাম শর্করাকরণ। যেসব প্রাণীর শীতনিদ্রা হয় না(যেমন, মানুষ) সেসব প্রানীতেও এই প্রক্রিয়াটি চলতে দেখা যায়। এটা বিশেষভাবে লক্ষ্য করা যায়, যখন প্রাণীটি অনাহারে থাকে!
  • শীতনিদ্রায় ব্যবহারের জন্য জমা হওয়া চর্বি (Brown fat) আর অন্য সময়ে জমা হওয়া চর্বির (Yellow/White fat) মধ্যে গুনগত পার্থক্য আছে। প্রথমটি বেশি পরিমান তাপশক্তির জোগান দিতে পারে!
  • শীতনিদ্রায় যাওয়া প্রাণী যখন প্রচুর খাবার খায়, তখন হঠাৎ করেই প্রাণীটির রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা দ্বিগুণ হয়ে যায়। শীতনিদ্রার পর সেটা আবার স্বাভাবিক হয়ে যায়। ফলে প্রাণিটি উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যা থেকে মুক্ত থাকে!
  • কিছু প্রজাপতি শীতনিদ্রায় যায়; অন্যরা শীতকালে উষ্ণ যায়গায় চলে যায়!
  • শীতনিদ্রায় যাওয়া একমাত্র পাখিটির নাম হচ্ছে 'পুওরউইল'!
  • শজারুরা দলবেঁধে শীতনিদ্রায় যায়!
  • কুণ্ডলী পাকিয়ে সাপ শীতনিদ্রায় যায়
 

Users who are viewing this thread

Back
Top