What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

ST SEX (এস টি সেক্স) (2 Viewers)

পঞ্চাশৎ পর্ব

(৩)

কিন্তু এখন আর বলে না। যবে থেকে সে সুচরিতার সংস্পর্শে এসেছে, তবে থেকে আর বলে না।। কি যেন আছে এই মেয়েটির মধ্যে। ।
রিদয় বা পেম নয় ওটি কে পাতি বাংলায় বলে ছিনালি।
 
পঞ্চাশৎ পর্ব

(৩)

এই নিয়ে সাত-আট বার রেসের মাঠে এলো শানু, অবশ্যই লাল্টুদার সাথে – তার ল্যংবোট হয়ে। আজকাল মূলতঃ লাল্টুদার তল্পিবাহক হয়েই দেখা যায় তাকে – যাকে সাদা বাংলায় বলে ‘চামচা’। এ নিয়ে অবশ্য শানুর মধ্যে কোন হীণমন্যতা নেই; rather হীণমন্যতা বোধ করার জায়গাতেও সে নেই। লোকে বলে তার বউ লাল্টুদার রক্ষিতা এবং সে নিজে লাল্টুদার চামচা। “যা খুশী ওরা বলে বলুক ওদের কথায় কি আসে যায়”। শানুর কাছে লাল্টুদা ভগবানতুল্য। তার মতো একটা চূড়ান্ত অপদার্থ, জীবনের সর্বক্ষেত্রে পরাজিত মানুষ এবং তার পরিবারের গ্রাসাচ্ছদনের ব্যবস্থা করেছেন তিনি ভগবান ছাড়া আর কি। লোকে তাকে চিটিংবাজ, তোলাবজ যাই বলুক না কেন। সারাদিন জনগণের সেবা করে ক্লান্ত লোকটা সুচরিতার কাছে আসে একটু সেবা পেতে। সুচি কোনদিন মাথা টিপে দিলো, কোনদিন গুনগুন করে একটা গান শোনালো, কোনদিন একটা আবৃত্তি করলো। হ্যাঁ লাল্টুদা অনেক পাল্টে গেছে। এখন সে ভালো ভালো গান, কবিতা শোনে। সুচি কোনদিন হয়তো গাইলো, “ওগো দুখজাগানিয়া, তোমায় গান শোনাবো”, কোনদিন বা “ঘরেতে ভ্রমর এলো গুনগুনিয়ে”; তবে লাল্টুদার সবথেকে পছন্দের গান, “আমার সকল রসের ধারা, তোমাতে আজ হোক না সারা”।

গানের অন্তর্নিহিত অর্থের মাথামুন্ডু সে কিছুই বোঝে না, কিন্তু সুচির মতো চামরি মাগীর গলায় রসের কথা শুনলেই, তার রস চুপচুপে তালশাঁসটার কথা চোখের সামনে ভেসে ওঠে, আর তার দু পায়ের ফাঁকের কালো কোবরাটা ফোঁস করে ওঠে। এই সাংস্কৃতিক পরিবেশকে মূহূর্তে ভুলুন্ঠিত করে, শিকারী হায়নার মতো সে ঝাপিয়ে পড়ে, সুচরিতার কাঁধে কামড়ে দেয়। চোক পাকিয়ে ছদ্মরাগ দেখায় সুচরিতা, ঠোঁট ফুলিয়ে অভিমানের স্বরে বলে, “উফ্ফ্, লাল্টুদা, তুমি না জানোয়ার একটা। দিলে তো কামড়ে, লাগে না বুঝি”। এই, এই, এই অদায়ে (এটি একটি হিন্দী শব্দ, এর সঠিক বাংলা প্রতিশব্দ আমার জানা নেই), এর জন্যই লাল্টু মাগীর উপর ফিদা্হ হয়ে যায়। না হলে, মেয়েছেলের শরীর লাল্টু অনেক ঘেঁটেছে। এক সময় সে বলতোও বটে, “হেঁজীপেঁজী নূরজহান, শায়া তুললে সব সমান।“ কিন্তু এখন আর বলে না। যবে থেকে সে সুচরিতার সংস্পর্শে এসেছে, তবে থেকে আর বলে না।। কি যেন আছে এই মেয়েটির মধ্যে। বুকে দুটো মাংসের তাল, পেছনে দুটো মাংসের ঢিপি, দু পায়ের মাঝে রসালো চেরা, শুধু এটুকুই তার একমাত্র সম্পদ নয়, তার উপরেও আরো কিছু আছে, তার কাজলকালো চোখের বাঁকা চাহনি, পালতোলা নৌকার মতো ভুরুর ভঙ্গিমা, কমলালেবুর কোয়ার মতো দুটো ঠোঁট সামান্য ফাঁক করে অস্ফুট শীৎকার এ সবই লাল্টুর হৃদকম্পন বাড়িয়ে দেয়। হৃদয় বলে মানুষের শরীরে যে একটা অঙ্গ অছে, সেটাই লালু ভুলে গিয়েছিলো। নারী সম্পর্কে তার যাবতীয় অনুভূতি কেন্দ্রীভূত ছিলো, দু পায়ের ফাঁকের ওই আলকাতরা রঙের মুশলটাতে। সুচরিতার স্পর্শে লাল্টুর হৃদয় যেন জেগে উঠেছে। কি গানটা যেন গায় সুচি, “আমার হৃদয়, তোমার আপন হাতের দোলায়, দোলাও, দোলাও, দোলাও, আমার হৃদয় ……”।

পরবর্তী পার্টের অপেক্ষায় রইলাম
 
রিদয় বা পেম নয় ওটি কে পাতি বাংলায় বলে ছিনালি।

সুচরিতার "আদায়ে"-কে ছেনালি বলে অপমান করবেন না। কারণ সে তো স্বভাব-নষ্ট মেয়ে নয়। পরিস্থিতির চাপে পড়ে, সে নষ্ট হতে বাধ্য হয়েছে।
আসলে সুচরিতার মতো মেয়েরা যেন সাক্ষাৎ রতিদেবি, যার প্রতিটি রোমকূপ থেকেই, যৌনতার নির্য্যাস বের হয়।
 
সুচরিতার "আদায়ে"-কে ছেনালি বলে অপমান করবেন না। কারণ সে তো স্বভাব-নষ্ট মেয়ে নয়। পরিস্থিতির চাপে পড়ে, সে নষ্ট হতে বাধ্য হয়েছে।
আসলে সুচরিতার মতো মেয়েরা যেন সাক্ষাৎ রতিদেবি, যার প্রতিটি রোমকূপ থেকেই, যৌনতার নির্য্যাস বের হয়।
তর্ক করব নি | এতে লেখকের সৃষ্টিরস শুকায়ে যায় | ;)
 
Last edited:
একপঞ্চাশৎ পর্ব

(১)

সেক্স মানে লাল্টু জানতো শুধু গদাম গদাম ঠাপিয়ে, অন্ডকোষ খালি করে, নারীর পচপচে যোনিতে বীর্য্য ঢেলে দেওয়া। শুধু এ টুকুই যে সেক্স নয়, তা তাকে শেখালো কামিণী সুচরিতা। মূল সেক্সের আগে একটু খুনসুটি, একটু আদর, সেক্স চলাকালীন সঙ্গী বা সঙ্গীনির কমফর্টের দিকে একটু নজর, সেক্সে পরে একটু সোহাগ, একটু ভালবাসা, কামক্রীড়ার আনন্দ সহস্রগুণে বাড়িয়ে দেয়। তাই তো যে সুখ সুচরিতার সঙ্গে শুয়ে সে পায়, তা আগে আর কখনো কোনো নারীর সঙ্গে পায়নি। আর সে কারণেই শুধু তার শরীর নয়, গোটা মেয়েটিরই প্রেমে পড়ে গেছেন, এলাকার সমস্ত দেড় থেকে দু নম্বরী মেয়েদের গুদের গন্ধ শোঁকা লাল্টু চৌধুরি। কেমন পাগল পাগল অবস্থা তার। ব্যাবসয় মন বসে না, পার্টির কাজ করতে ভালো লাগে না, সকাল থেকে মনটা উচাটন হয়ে থাকে, সন্ধ্যাবেলায় কখন সুচরিতার সাথে দেখা হবে, একটু ভালবাসাবাসি হবে, লাল্টু একটু অশ্লীল কথা বললে সুচরিতার কান আক্ষরিক অর্থে লাল হবে, তার বুকে দুমদুম করে কিল মারবে। আর তারপরই সেই শারিরীক খেলাটা।

কেমন যেন তল খুঁজে পায় না লাল্টু - সুচরিতার – শরীর এবং মনের, দুয়েরই। চরম উত্তেজনার মূহূর্তে সুচি যখন পা দুটোকে কাঁচি করে তার কোমরে বেড় দিয়ে ধরে, চুল্লিরমতো গনগনে গরম গুদের দেওয়াল দিয়ে পিষে ধরে তার লিঙ্গ, সর্বস্বান্ত হয়ে যায় লাল্টু। মূহূর্তে বীর্য্যস্থালন হয়ে যায় তার, যেন এ খেলার নিয়ন্ত্রণ সুচরিতার হাতে, সে যখন যেমন খেলাবে, তেমনটি খেলতে সে বাধ্য। কিন্ত এই নারীর শরীরে উপগত হয়ে, সর্বস্বান্ত হওয়ার মধ্যেও না জানি কতোই না আনন্দ। সব শেষে ক্লান্ত লাল্টু যখন তার নগ্ন শরীরটার উপরে শুয়ে থাকে, তখন কতো যত্ন করে তার কপালের ঘাম মুছিয়ে দেয় সুচরিতা, ঠোঁটে মৃদু মৃদু চুমু খায়, কানের লতিতে হাল্কা হাল্কা কামড় দেয়, পরম সোহাগে পিঠে হাত বুলিয়ে দেয়। এটাকেই কি বলে টোট্যাল সেক্স! নাম যাই হোক, এই সেক্সই তো সে এতদিন চেয়েছিলো, যা সে ঝপাং করে কাপড় তুলে, পটাং করে শুয়ে পড়া মেয়েদের থেকে কোনদিনই পান নি। মাঝে মাঝে তার মনে হয়, সুচরিতা তার বাঁধা মেয়েছেলে নয়, তিনিই সুচরিতার বাঁধা পুরুষ। বাঁধা পড়ে গিয়েছেন কুহকিনীর কামনার জালে।

“বলো কি আছে গো তোমারই আঁখিতে,

আমি পারি না মন বাঁধিয়া রাখিতে হায়”

(পরবর্তী পর্ব একটু পরেই, সাথে থাকুন)
 
লালটুকে যৌন দাসএ পরিণত করে লালটুর ব্যাবসা সুচরিতা দখল করুক। তারপর লালটুর অনুভূতিটা ঠিক কেমন হয় বর্ণনা করুন। অনুরোধ । কারন সেই শ্রেণী চেতনা। লালটুর ক্লাসের লোকে দের ক্ষমতাবান থাকা উচিত নয় । উঁহু ।
 
একপঞ্চাশৎ পর্ব

(২)

লাল্টুদা যখন ঘরের ভিতরে সুচরিতার সঙ্গে ঘরের মধ্যে তার সারাদিনের ক্লান্তি দুর করে রিফ্রেসড্ হন, শানু তখন মেয়েকে নিয়ে বাইরের বারান্দায় বসে থাকে। প্রথম কয়েকদিন কলিবৌদি এটা করতেন, কিন্তু তিনিই বা কতদিন নিজের কাজকরম বন্ধ রেখে সুচরিতার সান্ধ্যবাসরের সময় তার মেয়েকে পাহারা দেবেন। তখন এই দায়িত্বটা পড়লো শানুর উপরে। শানু করেটা কি সংসারের জন্য। সুচরিতা যখন তাদের অন্নদাতা লাল্টুদার মনোরঞ্জন করছে, তখন শানু একটু মেয়েকে দেখতে পারবে না? সংসারের জন্য এইটুকু করতে পারবে না সে? তাই এই ব্যবস্থা। তাই সন্ধে সাতটা- সাড়েসাতটা থেকে রাত এগারোটা –সাড়ে এগারোটা অবধি অন্ধকার বারান্দায় মেয়েকে কোলে করে কাটাতে হয় শানুকে। ঘুপচি বারান্দাটায় বেজায় গরম, কিন্তু মেয়েটাকে নিয়ে একটু যে ছাদে ঘুরে বেড়াবে, তার জো নেই। লাল্টুদাদের ফরমায়েসের শেষ নেই। কখনো লাল্টুদা আন্ডারওয়্যার পড়ে বেরিয়ে এসে, দু প্যাকেট কিং সাইজ ফিল্টার্ড সিগারেট আনতে দেন (লাল্টুদার একটাই ভালো, ফেরত আসা পয়সা কখনো চান না), কখনো বা সুচি শায়াটাকে বুকের উপর বেঁধে, দরজাটা একটু ফাঁক করে, মুখ বাড়িয়ে, ফ্রিজ থেকে ঠান্ডা জল দিতে বলে।

এইসব ফাইফরমায়েশ খাটতে শানুর কোনো আপত্তি নেই, না কি তার আপত্তি আছে লাল্টুদা এবং সুচরিতার একান্তে সময় কাটানোতে, অবশ্য তার মতো বালছাল মাল আপত্তি করলে, শুনছেটাই বা কে। বরং বেশী ট্যাঁফোঁ করলে তাদের দানাপাণি বন্ধ হয়ে যাবে – এটুকু বোঝার মতো বাস্তববুদ্ধি তার আছে। এমনিতে সুচরিতা লাল্টুদাকে গান শোনাবে বা আবৃত্তি করে শোনাবে, এই অবধি ঠিক আছে। বিয়ের আগে তাদের প্রেমপর্বে বা বিয়ের পরে পরেই, তাকেও শোনাতো। কিন্তু লাল্টুদার এই আন্ডারওয়্যার পড়ে থাকা বা সুচরিতার শায়াটাকে বুকের উপর বেঁধে রাখা, এটাকে শানু কিছুতেই মেনে নিতে পারে না। কেন সুচি অর্ধনগ্ন বস্থায় একজন পরপুরুষের সঙ্গে একঘরে থাকবে। সবথেকে অস্বস্তিকর শেষের দিকে খাটের মচমচ শব্দটা। নিজের অভিজ্ঞতা দিয়ে সে জানে, এ রকম শব্দ কখন হয়। তাহলে কি …….? না এটা কিছুতেই হতেপারে না। সুচরিতার উপর তার অগাধ আস্থা আছে। কোনো অবস্থাতেই সে পরপুরুষকে দেহদান করবে না। তাহলে …….। জিজ্ঞেস করেছিো একদিন সুচিকে। সুচি তাকে বুঝিয়েছিলো, “লাল্টুদার ভারী শরীর তো। তাই খাটে শুয়ে একটু এ পাশ ও পাশ করলেই ওরকম শব্দ হয়”, তারপরেই মুখ ঝামটা দিয়ে বলেছিলো, “তোমার সব ব্যাপারে কান দেওয়ার দরকার কি? লোকটা সারাদিন খেটেখুটে দু দন্ড বিশ্রাম নিতে আসে, তাও তোমার হাজারটা প্রশ্ন। খাটে কেন শব্দ হয়, কেন আন্ডারওয়্যার পড়ে থাকে?” শেষকালে সুচি প্রয়োগ করে তার ব্রহ্মাস্ত, ঠোঁটদুটো সূচোলো করে, চোখে আগুন ঝড়িয়ে হিসহিস করে ওঠে, “তুমি কি আমায় সন্দেহ করছো না কি? এতই যখন পুরুষমানুষ, লাল্টুদার ধামাধরা না হয়ে থেকে, একটা চাকরি যোগাড় করে, সংসারটা চালাও না। তাহলে আমাকেও আর লাল্টুদার সেবা করতে হয় না, তোমাকেও আর বারান্দায় বসে খাটের আওয়াজ শুনতে হয় না”। এই জায়গাতে কুঁকড়ে যায় শানু। কিছু বলতে পারে না সে। ল্যাজ গোটানো কুকুরের মতো সরে পড়ে ওখান থেকে।

কিন্তু আবার রাতে যখন খাটে ওই শব্দটা হয়, অস্থির হয়ে ওঠে সে। পাশ ফিরে শোওয়ার আওয়াজ কি এতটা রিদমিক হতে পারে। না বাবা, এসব প্রশ্ন তুলে লাভ নেই, সুচি রেগে যায়, লাল্টুদা শুনলে সেও ভয়ংকর রাগ করবে। আর লাল্টুদা রাগ করলে তো সর্বনাশ। তাদের মাথারউপরের ছাদ, সংসার চালানোর টাকা, সর্বোপরি তার নেশার যোগান, সব নিমেষে চলে যাবে। শোওয়ার ঘরের দরজাটা কি ভিতর থেকে বন্ধ থাকে? যদি না থাকে, তাহলে কি সে দরজা ঠেলে ভিতরে ঢুকবে? ঢুকে যদি দেখে, সুচির যৌবনবতী পেলব শরীরটা লাল্টুদার বনমানুষের মতো দেহের তলায় পিষ্ট হচ্ছে, তার উল্টানো রুপোর জামবাটির মতো স্তন, লাল্টুদার রোমশ কঠিন হাত মর্দন করে চলেছে, বা তার পুংদন্ডটা সুচির গোপন অঙ্গে খুঁজে নিয়েছে সুখের আশ্রয়, তখন কি করবে শানু? না আর কিছু ভাবতে পারে না সে, পকেট থেকে চুল্লুর পাউচটা বার করে গলায় ঢালে।

(পরবর্তী পর্ব একটু পরেই, সাথে থাকুন)
 
দ্বিপঞ্চাশৎ পর্ব


রেসের মাঠে যখন যাওয়া হয়, তখন এ সি সুমোর মাঝের সিটে লাল্টুদা হাত পা ছড়িয়ে বসেন, সেখানে আর কারো বসার অধিকার নেই। সামনের সিটে টাকা ভর্তি ফোলিও ব্যাগ নিয়ে বসে শানু। পিছনের সিটে বসে বাচ্চা ঠাকুর এবং ছোটে মিয়া। প্রত্যেকর দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া আছে। শানুর দায়িত্ব টাকাপয়সা সামলে রাখা, যে রেসে লাল্টুদা যতো টাকার বাজী ধরবেন, সেই টাকা বাচ্চা ঠাকুরকে গুনে দেওয়া এবং কোনো রেসে জিতলে, যদিও এই ঘটনা খুব কমই ঘটে, জেতা টাকা ব্যাগে গুছিয়ে তুলে রাখা। বাচ্চা ঠাকুরের কাজ লাল্টুদার নির্দেশ অনুযায়ী যে রেসে যত টাকার বাজী খেলবেন, সেই মতো কাউন্টারে গিয়ে টিকিট কাটা, জিতলে টিকিট দেখিয়ে টাকা নিয়ে আসা, লাল্টুদার জন্য বিয়ার, সিগারেট ইত্যাদি নিয়ে আসা, আরো সব টুকিটাকি ফরমায়েশ খাটা। লাল্টুদা বসে বসে বিয়ারের জাগে চুমুক দেন, ছোটে মিয়ার সাথে আলোচনা করে, কোন রেসে কোন ঘোড়ার উপর বাজী ধরবেন, তার ডিশিসন নেন, আর রেস শুরু হলে, চেয়ার ছেড়ে, রেলিং-এর পাশে দাড়িয়ে, খুব দামী একটা বাইনোকুলারে চোখ রেখে পুরো রেসটা দেখেন। উত্তেজনায় নিজের উরুতে দুমদুম করে কিল মারতে থাকেন, আর রেস শেষ হলে “হার্ডলাক, হার্ডলাক” বলে বিড়বিড় করতে করতে, আবার নিজের সিটে ফিরে যান।


হারলে অবশ্য তার খুব একটা কিছু যায় আসে না, কারণ এই মাঠে তিনি যে টাকা ওড়ান, সবটাই হারামের টাকা – চিটিংবাজী, তোলাবাজি করে কামাই করা টাকা। তার তৈরী বাড়িতে ১:৪ অনুপাতের প্লাস্টারিং-এর বদলে, ১:৮ অনুপাতের প্লাস্টারিং করে কামানো টাকা; লো গ্রেড সিমেন্ট, লো স্ট্রেন্থ রি-রোলড স্টিল, নোনাধরা ইট, পাতলা বালি, পুওর কোয়ালিটি স্টোনচিপ ব্যবহার করে কামানো টাকা, সর্বোপরি পার্টিফান্ডের নাম করে তোলা চাঁদার সিংহভাগ নিজের পকেটস্থ করা টাকা। আর কে না জানে, “উৎপাতের টাকা চিৎপাতে যায়”। কচ্চিৎ কদাচিৎ একটা রেসে, লাল্টুদা যে ঘোড়ারউপর বাজী লড়েছেন, সে ঘোড়া যদি জিতে যায়, তাহলে আর তাকে পায় কে। হাত মুঠো করে আকাশের দিকে ছুঁড়তে ছুঁড়তে, চেঁচাতে থাকেন, “এ ঘোড়ার মৃত্যু নেই”, “ঘোড়া তো নয় বাঘের বাচ্চা, লেজ ছুঁতে দেয় নি কাউকে”, ইত্যাদি, ইত্যাদি।


আগেই বলেছি, প্রত্যেকটি রেসে কোন ঘোড়ার উপর বাজী ধরবেন, তার ডিশিসন লাল্টুদা, ছোটে মিয়ার সাথে আলোচনা করেই নেন। এই ছোটে মিয়া আদতে একজন অভিজ্ঞ পান্টার। প্রত্যেকটি রেসে প্রত্যেকটি ঘোড়ার কুষ্ঠীঠিকুজী তার নখদর্পনে। কোন ঘোড়ার মা কোন ডার্বি জিতেছিলো, কোন ঘোড়ীর বাবা কোন গিনি জিতেছিলো, টাইমিং কি ছিলো, হ্যান্ডিক্যাপ কতো ছিলো, জকি কে ছিলো, ট্রেনার কে ছিলো, এ সবের চলতি-ফিরতি এনসাইক্লোপেডিয়া হলো এই ছোটে মিয়া। এ ছাড়া সে একজন খবরিলালও বটে। এই মাঠে অনেক দু নম্বরি কাজকম্মোও চলে। সে সব গোপন সংবাদ সে যোগাড় করে। যেমন কোন ঘোড়ার মালিকরা, নিজেদের মধ্যে understanding করে, ফেবারিট ঘোড়ার বদলে আপসেট ঘোড়া জেতাবে, কোন জকি অন্য ঘোড়ার মালিকের থেকে দানা (রেসের মাঠের ভাষায় এর অর্থ ঘুষ) খেয়ে ঘোড়াকে টেনে দেবে অর্থ্যাৎ ইচ্ছে করে slow করিয়ে দেবে এইসব information রাখা এবং যৎসামান্য পয়সার বিনিময়ে বেচা, এটাই ছোটে মিয়ার জীবিকা।


অথচ এক সময় খিদিরপুরে ছোটে মিয়ার রমরমা দর্জির দোকান ছিল। কিন্তু সর্বনাশা রেসের নেশায়, সেই দোকান, ওয়াটগঞ্জে তার তিনতলা বাড়ী, সব খুইয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছে সে। এমন কি তার বিবিও তাকে তালাক দিয়ে ছেলেমেয়ে নিয়ে চলে গেছে। আজকাল সে লাল্টুদার আশ্রয়েই আছে। তিনি তাকে ভরসাও করেন খুব, অন্ততঃ রেস খেলার ব্যাপারে। কিন্তু শানুর কেমন যেন মনে হয়, ছোটে মিয়ার স্পেকিউলেশনগুলো খুবই আনসাইন্টিফিক। যদি তার কোন বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা থাকতো, তাহলে সে নিজে কেন তার সর্বস্ব গাঁড় মারিয়েছে, আর লাল্টুদাই বা তার টিপস-এ খেলে, প্রায় প্রতি রেসে হারেন। স্ট্যাটিস্টিক্সে শানু পড়েছে “Law of Uncertainty”, যেটা অনুযায়ী অবশ্যম্ভাবী ঘটনা কখনোই ক্রমাগত ঘটতে পারে না, মাঝেমধ্যে অনিশ্চিত ঘটনা ঘটবেই। আবার অনিশ্চিত ঘটনাও কখনো ক্রমাগত ঘটতে পারে না, অবশ্যম্ভাবী ঘটনা মাঝে ঘটবেই। এটা শুধু বৈজ্ঞানিক ভাবে প্রমানিত সত্য নয়, একটা জীবনদর্শনও বটে।


যদি রেসের মাঠে এই সূত্র প্রয়োগ করা যায়, দেখা যাবে এর উপযোগিতা। এক দিনে যে সাত-আটটি রেস হয়, প্রত্যেকটিতেই টপ ফেবারিট ঘোড়া জেতে না, মাঝেমধ্যেই দু’একটা রেসে আপসেট হয়। আবার উল্টোটাও সত্যি। প্রতিটি রেসেই নন-ফেভারিট ঘোড়া জেতে না। খুব প্রসপেকটিভ ঘোড়াও তার জীবনে অনেক রেস হারে, আবার খুব দুর্বল ঘোড়াও সারা জীবনে, দু’চারটে বাজী তো জিতেই যায়। ফেবারিট ঘোড়ার উপর বাজী ধরলে, সেই ঘোড়া জিতলে, তার উপর ডিভিডেন্ড খুব কম পাওয়া যায়, হয়তো টাকায় কুড়ি পয়সা বা বড়জোর তিরিশ পয়সা। কিন্তু নন-ফেবারিট ঘোড়ার উপর থাকে সাত কিংবা আটের দর, কখনো কখনো আরও বেশী অর্থ্যাৎ সেই ঘোড়া জিতলে, তার উপর বাজী ধরা পান্টার, যত টাকা বাজী ধরেছে, তার তত গুন ডিভিডেন্ড পাবে। শানুর কাছে রেসের এই আপসেট ইভেন্টগুলোর আকর্ষণ সব থেকে বেশী।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top