What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

শিশুকে কেন খিচুড়ি খাওয়াবেন (1 Viewer)

GRKR1Q8.jpg


অনেক মা-বাবার প্রশ্ন থাকে যে শিশুকে খিচুড়ি খাওয়ানো কি খুবই দরকারি? এ ব্যাপারে বিভিন্ন জনের বিভিন্ন রকমের মতামত দেখা যায়। কেউ বলেন, শিশুকে খিচুড়ি খাওয়ানো জরুরি, আবার কেউ বলেন, না। এ বিষয়ে অনেক ধরনের তথ্য-উপাত্ত পাওয়া যাবে। একটু খুঁজলেই আপনিও পেয়ে যাবেন সেসব।

Pj5FnAd.jpg


ছয় মাস নিবিড়ভাবে মায়ের দুধ খাওয়ানোর পরে শিশুর বাড়তি খাবারে খিচুড়ি থাকা জরুরি

ছয় মাস নিবিড়ভাবে মায়ের দুধ খাওয়ানোর পরে যখন শিশুকে নতুন খাবারের সঙ্গে পরিচয় করানো হয়, সেসব খাবারের মধ্যে খিচুড়ি থাকা বেশ জরুরি। এটা শিশুদের বেড়ে ওঠার, এ সময় শিশুদের ব্যালান্স ডায়েট খুব জরুরি। ব্যালান্স ডায়েট বলতে বোঝায় যে খাবারে পরিমিত পরিমাণে শর্করা, প্রথম শ্রেণির প্রোটিন, চর্বিসহ অন্যান্য ভিটামিন এবং মিনারেল থাকে। এসব উপাদান একত্রে পেতে হলে আপনাকে আপনার শিশুকে ভাত বা রুটি, মাছ বা মাংস বা ডিম, শাকসবজি, তেল—সব কটি উপাদান একসঙ্গে খাওয়াতে হবে। কিন্তু শিশুরা নতুন খাওয়া শেখার সময় মাছ, মাংস, ডিম, ডাল, শাকসবজি আলাদা আলাদাভাবে সহজে খেতে চায় না। এতে তাদের পুষ্টির ঘাটতি হতে পারে। সে ক্ষেত্রে খিচুড়ি হতে পারে সহজ এবং সস্তা সমাধান।

কীভাবে খিচুড়ি সহজ সমাধান

মাছ, মাংস, ডিম—এগুলো প্রোটিনজাতীয় খাবার। আবার ডালও প্রোটিনজাতীয় খাবার। তবে মাছ, মাংস, ডিম প্রথম শ্রেণির প্রোটিন (প্রাণিজ প্রোটিন) বা উন্নত মানের প্রোটিন হিসেবে বিবেচিত, অন্যদিকে ডাল বা শিমের বিচি দ্বিতীয় শ্রেণির প্রোটিন (উদ্ভিজ্জ প্রোটিন) হিসেবে বিবেচিত।

DCvpor9.jpg


খিচুড়ির উপকরণ

পার্থক্যটা কোথায়

প্রথম শ্রেণির প্রোটিনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে তাতে সব ধরনের এসেনশিয়াল অ্যামিনো অ্যাসিড উপস্থিত থাকে, অন্যদিকে দ্বিতীয় শ্রেণির প্রোটিনে এক বা একাধিক এসেনশিয়াল অ্যামিনো অ্যাসিডের ঘাটতি থাকে বা থাকতে পারে।

কিন্তু শিশুদের শরীর ও মস্তিষ্কের সঠিক গঠনের জন্য প্রথম শ্রেণির প্রোটিন অত্যন্ত জরুরি। ছয় মাস বয়স পর্যন্ত শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশে জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত উপাদান মায়ের বুকের দুধেই থাকে। তাই ছয় মাস পর্যন্ত নিবিড়ভাবে মায়ের দুধ পানই যথেষ্ট এবং খুবই জরুরি।

ছয় মাস পর থেকে শিশুকে ঘরে তৈরি বাড়তি খাবার দিতে হয়। এটা শিশুর বেড়ে ওঠার সময়। আর এ সময় প্রথম শ্রেণির প্রোটিনের চাহিদা একটু বেশিই থাকে। প্রোটিনকে বডি বিল্ডিং ফুড বলা হয়। অর্থাৎ, কোনো কারণে যদি আপনার শিশুর প্রথম শ্রেণির প্রোটিনের ঘাটতি থাকে, তাহলে তার শারীরিক বৃদ্ধি সঠিকভাবে হবে না, সেই সঙ্গে মানসিক বৃদ্ধিও ব্যাহত হতে পারে।

vqXL0nQ.jpg


খিচুড়ি রান্না না করে শিশুকে ডাল-ভাত খাওয়ানো হলে শিশু খিচুড়ির মতো পুষ্টিগুণ পাবে না

খিচুড়ি কি প্রথম শ্রেণির প্রোটিনের ঘাটতি পূরণ করতে সক্ষম?

এবার আসি মূল প্রসঙ্গে। এতক্ষণের আলোচনায় এটুকু অন্তত বুঝতে পেরেছি, প্রথম শ্রেণির প্রোটিন কতটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন প্রশ্ন হতে পারে, তাহলে খিচুড়ি কি এর ঘাটতি পূরণ করতে সক্ষম? উত্তর, অবশ্যই সক্ষম। কিন্তু সেটা কীভাবে? ডালকে দ্বিতীয় শ্রেণির প্রোটিন বলা হয়, কারণ ডালের মধ্যে লাইসিন নামক একটি এসেনশিয়াল অ্যামিনো অ্যাসিড থাকে না। অন্যদিকে, চালের মধ্যে ওই লাইসিন নামক এসেনশিয়াল অ্যামিনো অ্যাসিড বেশি থাকে। আমরা যখন চাল আর ডাল একত্রে রান্না করি, তখন চালে অধিক পরিমাণে অবস্থিত লাইসিন অ্যামিনো অ্যাসিড, ডালের লাইসিন অ্যামিনো অ্যাসিডের ঘাটতি পূরণ করে।

ফলে ডাল তখন প্রথম শ্রেণির প্রোটিনে পরিণত হয়। অর্থাৎ, আপনি যদি শিশুকে মাছ, মাংস, ভাত খাওয়ান, সে ক্ষেত্রে শিশু যে পুষ্টিগুণ পাবে, ডালের খিচুড়ি খাওয়ালেও সেই একই পুষ্টি পাবে। সঙ্গে উভয় ক্ষেত্রেই একটু সবজি আর শাকের কচি পাতা যোগ করে দিলেই তৈরি হয়ে গেল আপনার শিশুর ব্যালান্স ডায়েট।

এখন প্রশ্ন হতে পারে, কেউ যদি খিচুড়ি রান্না না করে শিশুকে ডাল-ভাত খাওয়ায়, তাহলে কি শিশু খিচুড়ির মতো পুষ্টিগুণ পাবে? না, খিচুড়ির পরিবর্তে ডাল-ভাত খাওয়ালে সমপরিমাণ পুষ্টিগুণ পাবে না।

তাই নতুন খাবার শেখার শুরুটা খিচুড়ি দিয়ে হলেও শিশুকে অবশ্যই ধীরে ধীরে বাড়ির স্বাভাবিক খাবারে অভ্যস্ত করাবেন।

লেখক: মো. ইকবাল হোসেন | পুষ্টি কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top