What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

স্বামীর কল্পনা স্ত্রীয়ের যন্ত্রণা (2 Viewers)

অসাধারণ হচ্ছে প্রিয় লেখক ।আপনার লেখা এক কথায় অসাধারণ হয়।গল্পটা ইন্টারেস্টিং হতে যাচ্ছে ।দয়া করে আপডেট দেয়া বন্দ করবেন না ।তাড়াতাড়ি আপডেট এর অপেক্ষায় আছি
 
পর্ব ১৫

প্রায় ফাঁকা সিনেমা হলে রাজীব অনুরিমাকে জড়িয়ে ধরেছিলো। পিছনের সারিতে বসে কিছুটা দূর থেকে সেটা প্রত্যক্ষ করছিলো সমীর। অনুরিমা ছটফট করছিলো আর বলছিলো , "প্লিজ রাজীব বাবু , এতো তাড়াতাড়ি এতোদূর এগোবেন না। আমাকে একটু সময় দিন দয়া করে। "

ক্রমাগত বলার ফলে রাজীব অনুরিমাকে ছেড়ে দিলো।

- "ঠিক আছে , তুমি যদি প্রস্তুত না থাকো , তাহলে আমি জোর করবো না। কিন্তু মনে রেখো , তুমি যত দেরী করবে ততোই তার ফল দেরীতে পাবে।"

এই বলে রাজীব সিনেমার স্ক্রিনে নিজের ফোকাসটা ঘুরিয়ে নিলো। সে আর কিছু করলোও না , কিছু বললোও না। অনুরিমার কিছুটা খারাপ লাগলো। সে এভাবে রাজীবকে বলতে চাইনি , কিন্তু সে একটু বেশিই নার্ভাস হয়ে পড়েছিলো। রাজীব তো যা করছে সেটা তাদের দাম্পত্য জীবনের ভালোর জন্যই করছে। এইভাবে সে কিছুক্ষণ ভাবতে লাগলো। তারপর নিজেই রাজীবের দিকে হাত বাড়ালো। রাজীবের হাত স্পর্শ করে বললো , "আপনি এবার শুরু করতে পারেন , আমি নিজের মন কে তৈরি করিয়ে নিয়েছি। "

এই কথা শোনা মাত্রই রাজীব আর বিন্দুমাত্র সময় নষ্ট না করে অনুরিমাকে জড়িয়ে ধরলো ! ধরে এলোপাথাড়ি চুমু খেতে লাগলো। অনুরিমা আর কোনো প্রতিবাদ করলো না , নিথর হয়ে এক পরপুরুষের লালামিশ্রিত চুমু নিজের দেহে নিতে লাগলো। রাজীব ওকে চুমু খেতে খেতে ওর সবচেয়ে স্পর্শকাতর জায়গায় এসে পৌঁছলো , সেটা হলো তার ঘাড়। ঘাড়ে চুমু পড়তেই অনুরিমা কুকঁড়িয়ে উঠলো। রাজীব বুঝতে পারলো সে অনুরিমার মোক্ষম জায়গায় স্পর্শ করেছে। এবার অনুরিমার রেহাই নেই। সে অনুরিমার ঘাড়ে ঠোঁট বসিয়ে ক্রমাগত চুমু খেতে লাগলো। অনুরিমা ঘাড় বেঁকিয়ে তা প্রতিরোধ করার চেষ্টা করছিলো , কিন্তু বারংবার অসফল হচ্ছিলো। শেষে অনুরিমা বলে উঠলো , "ছাড়েন এবার , অনেক হয়েছে। আমাকে একটু বিরতি দিন। "

অনুরিমার কথায় রাজীবের হুঁশ ফিরলো। সে নিজেকে সংযত করে অনুরিমার ঘাড় থেকে মুখটা সরিয়ে নিলো। অনুরিমা লম্বা লম্বা নিঃশ্বাস ফেলতে লাগলো। সে কিছুটা ভয় পেয়ে গেছিলো, এসব যে তার জীবনে প্রথমবার হচ্ছিলো , কোনো পরপুরুষের সাথে এরকম একটা ফাঁকা সিনেমা হলে....... ।

অনুরিমার আতংকিত অবস্থা দেখে রাজীব তার শরীরের উপর থেকে নিজের হাত দুটোও সরিয়ে নিলো , ওকে কিছুক্ষণ নিজের মতো করে একা ছেড়ে দিলো। পাশ থেকে রাজীব উঠে গেলো। রাজীবকে উঠে যেতে দেখে অনুরিমা একটু অবাক হলো। মনে প্রশ্ন জাগলো , সে কেন উঠে গেলো ? কোথায় গেলো ? সে কি আবার তার উপর রাগ করেছে ? এই মানুষটা কে যে এখন অনুরিমার সবচেয়ে বেশি দরকার নিজের স্বামীকে ঠিক করার জন্য ! তাকে তো চটালে চলবে না ! ওর কি এখন রাজীব বাবুর পেছনে যাওয়া উচিত ? কোথায় গেলেন দেখার জন্য।

এসব মনে মনে ভাবতে লাগলো অনুরিমা। তারপর সিদ্ধান্ত নিলো যে সে অপেক্ষা করবে কিছুক্ষণ , না এলে তখন গিয়ে দেখবে , বা ফোন করবে। ওদিকে ঠিক পিছনের সারিতে বসে আড়াল থেকে সবটা নিজের চোখে প্রত্যক্ষ করছিলো সমীর। তার মনে এক অদ্ভূত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল , যা সে বাক্যের দ্বারা বলে কাউকে বোঝাতে পারবে না। তার প্যান্টের ভিতর বাল্জ এর সৃষ্টি হয়েছিল , অর্থাৎ তার পুংজননেন্দ্রিয়টি প্যান্টের ভেতর ফুলে ফেঁপে উঠেছিল এসব দৃশ্য অনুভব করে।

রাজীব আসলে গেছিলো অনুরিমার জন্য জলের বোতল কিনে আনতে। অনুরিমাকে এরূপ বিধস্ত অবস্থায় দেখে খানিকটা আঁতকে উঠেছিল রাজীব। অনুরিমা যে এতোটা ভয় পেয়ে যাবে সেটা রাজীব কল্পনা করতে পারেনি। তাই ওকে সুস্থ স্বাভাবিক করতে রাজীব ফুড কাউন্টারে গেছিলো কিছু খাবার আর পানীয় আনতে।

কিছুক্ষণ পর রাজীব এক বাকেট পপ কর্ন ও একটা জলের বোতল নিয়ে হলে ঢুকলো। সিনেমা তখনও চলছিলো , ইন্টারভেল হয়নি। অনুরিমার পাশে এসে বসলো রাজীব। রাজীবকে দেখে অনুরিমা হাঁফ ছাড়লো। রাজীবকে হঠাৎ উঠে যাওয়ার কারণ জিজ্ঞেস করতে যাবেই তার আগে রাজীব উত্তর দিলো যে সে অনুরিমার জন্য পপ কর্ন ও জলের বোতল আনতে গেছিলো। কারণ অনুরিমাকে দেখে তার খুব টেন্সড লাগছিলো, তাই সে ভাবলো কিছু খাবার আর জল সে তার বন্ধু অনুরিমার জন্য যদি নিয়ে আসে।

রাজীবের এই কাইন্ড জেসচার অনুরিমার খুব ভালো লাগলো। সে যেন ভুলেই গেলো কিছুক্ষণ আগে এই রাজীবই তাকে কতোটা অপ্রস্তুত অবস্থায় ফেলেছিলো। রাজীব তাকে পপ কর্ন এর বাকেট-টা দিলো। অনুরিমা সাদরে সেটি গ্রহণ করলো। কয়েকটা কর্ন সে মুখে দিয়ে চেবাতে লাগলো। সৌজন্যতাবশতঃ রাজিবকেও অফার করলো , রাজীব পোলাইটলি রিফিউস করলো। কিছুক্ষণ এভাবেই কেটে গেলো। তারপর ইন্টার্ভালের সময় এসে পড়লো। বিরতির সময়ে অনুরিমা ও রাজীব একটু বাইরে বেড়োলো , রিফ্রেশ হতে।

সমীর নিজের সিটেই বসেছিলো। ওখান থেকে নড়লো না চড়লো না। পাছে যদি রাজীবের ন্যায়ে অনুরিমাও তাকে ধরে ফেলে। সে তাই ঘাপটি মেরে নিজের সিটেই বসে রইলো। সিনেমা চলাকালীন অবশ্য সে একটি কান্ড ঘটিয়ে ফেলেছিলো। নিজের উত্তেজনাকে প্রশমিত করতে না পেরে সমীর সিটে বসেই অনুরিমা ও রাজীবের মধ্যে ঘটে যাওয়া মুহূর্তগুলো কে পূনরায় চিন্তা করে হস্তমৈথুন করেছিল। লিঙ্গ থেকে রস খসে গড়িয়ে পড়েছিল সিটের সামনে মেঝেতে। ইন্টার্ভালে আলো ফিরলে সে চেক করতে থাকে তার বাঁড়া নিঃসৃত রস কোথাও কোনো সন্দেহভাজন দাগ ফেলেছে কিনা কোনো ফাঁকা সিটে বা মেঝেতে। সেটা পরবর্তীতে হলের স্টাফরা জানতে পারলে কোনো বড়ো ইস্যু নাহলেও সেটা সমীরের বিবেক ও পৌরুষত্বের কাছে খুবই এম্ব্যারাসিং ব্যাপার , যে সে তার স্ত্রীকে তার ডাক্তারের সাথে চাক্ষুস দেখে সিনেমা হলেই মাল ফেলে হলের পরিষ্কার মেঝে বা সিটে দাগ করে একাকার করে দিয়েছে। সে যে নিজের পাপের কোনো চিহ্ন রাখতে চায়না। তাতে তার বিবেকে আঘাত লাগবে। সে আজকে এখানে এসেছে একটা অনুভূতি নিতে , নিজের ম্যান সম্মান কে নিজের যৌনরসের মাধ্যমে হলে ছড়িয়ে দিতে নয়।

হল থেকে বাইরে বেরিয়ে অনুরিমা ওয়াশরুমে গেলো। রাজীব বাইরে অপেক্ষা করছিলো। ওয়াশরুম থেকে ফেরার পর অনুরিমা ও রাজীব একটু এদিক-ওদিক ঘুরলো। বিভিন্ন সিনেমার অ্যাড দেখে সেইসব সিনেমা নিয়ে চর্চা আলোচনা করলো। দুজনের মধ্যে সবকিছু ফের স্বাভাবিক হয়েগেছিলো। রাজীব সেটা করার জন্য উদ্যত হয়েছিল। তাই হল থেকে বেরিয়ে হলে ঘটে যাওয়া মুহূর্তগুলি নিয়ে সে একটি বাক্যও খরচা করেনি। সেই প্রসঙ্গই আনতে দেয়নি।

সেকেন্ড হাফ শুরু হওয়ার কিছু মুহূর্ত আগে তারা ফের হলে প্রবেশ করলো। সমীর সেই থেকে নিজের স্থানেই বসেছিলো। চাতক পাখির মতো তাদের ফেরার অপেক্ষা করছিলো। তাদের আসতে দেখে সমীর মাথাটা নিচু করে নিলো। কারণ তখনও সিনেমার সেকেন্ড হাফ শুরু হয়নি , ফলে থিয়েটারের আলো নেভেনি। ছদ্মবেশে থাকলেও সে কোনোপ্রকার রিস্ক নিতে চাইছিলনা।

রাজীব ও অনুরিমা পূনরায় নিজের সিটে গিয়ে বিরাজমান হলো। ইন্টার্ভালের সময়ে রাজীব ও অনুরিমার মধ্যে হওয়া স্বাভাবিক কথোপকথন অনুরিমার জড়তাকে অনেকটা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করেছিলো। আর এটাই রাজীব চেয়েছিলো। কিন্তু এখন সে কোনো তাড়াহুড়ো করতে চাইছিলো না। শুধু সঠিক সময়ের জন্য অপেক্ষারত ছিল।

দ্বিতীয়ার্ধে সিনেমা শুরু হলো। যথারীতি আলো আবার নিভে অন্ধকার নেমে এলো হলে। সমীরও একটু রিল্যাক্স হলো থিয়েটার অন্ধকার হয়ে যাওয়ায়। এবার সে আরো মনোযোগ দিয়ে সামনের সারিতে কি ঘটছে তার উপর নজর রাখতে পারবে। কিছুক্ষণ সব স্বাভাবিক থাকলো। রাজীব কোনোরকম "উদ্যোগ" নিলোনা অনুরিমার দিকে হাত বাড়ানোর। অনুরিমা সেটা আশা করেনি। কারণ ও জানে রাজীব তাকে কেন হলে নিয়ে এসেছে। কিন্তু সে ভেবে পাচ্ছিলো না যে দ্বিতীয়ার্ধে এতো সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পরও রাজীব কেন কিছু করছে না ? যদিও না করলেই ভালো বাট রিহার্সাল ইস ইনএভিটেবেল। কখনো না কখনো তো তাকে এটা করতেই হবে। কতোক্ষণ বা কতোদিন সে পরিস্থিতি থেকে মুখ ফিরিয়ে পালাবে ? রাজীবই তো তাকে বলেছে যত তাড়াতাড়ি রিহার্সাল হবে ততো তাড়াতাড়ি তারা সবকিছু গুছিয়ে নিতে পারবে।

তাই না পারতে লজ্জার মাথা খেয়ে অনুরিমাই তাকে জিজ্ঞেস করে উঠলো তাদের রিহার্সালের কথা। আর রাজীব ঠিক এই মুহূর্তটার জন্যই অপেক্ষা করছিলো। তাই সে আগে থেকে আগ বাড়িয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। অনুরিমা বললো , "রাজীব বাবু , আপনি কি করবেন বলেছিলেন ..... মানে আমাদের রিহার্সাল ..... সেটা করবেন না ?"

- "আমি তো তোমায় সময় দিচ্ছিলাম , তুমি প্রস্তুত হলেই আমি প্রস্তুত।"

নিচু স্বরে অনুরিমা বললো , "হুমঃ ..... আমি প্রস্তুত। "

- "ঠিক তো ? আর হেসিটেট করবে না তো ?"

- "নাহঃ। .... আপনিই বলেছেন না, দ্রৌপদীকেও পরিস্থিতির কারণে নিজেকে মানিয়ে নিয়ে অনেক কঠিন কার্য করতে হয়েছিল , তাহলে এই যুগের অনুরিমা কেন সেটা পারবে না ? যখন এসবের পেছনে উদ্দেশ্যেটাই হলো আমার স্বামীর মঙ্গল কামনা , তাকে সঠিক পথে নিয়ে আনা। "

"চিন্তা করোনা , আমি আছি তো। আমার উপর আস্থা রাখো , সব ঠিক হয়ে যাবে ", এই বলে রাজীব অনুরিমার হাত স্নেহের সাথে স্পর্শ করলো। অনুরিমা এবার কিছু বললো না। সে নিজের মনকে মানিয়ে নিয়েছিলো এই অগ্নিপরীক্ষা দেওয়ার জন্য।
 
প্রিয় লেখকের কাছে আবেদন গল্প মাঝখানে এসে থেমে যাবেন না।এবং গল্পের পর্ব সং্খা একটু বাড়িয়ে দিবেন তাহলে গল্প পরে ভালো লাগার ফিলিংস কাজ করে ধন্যবাদ
 
প্রিয় লেখকের কাছে আবেদন গল্প মাঝখানে এসে থেমে যাবেন না।এবং গল্পের পর্ব সং্খা একটু বাড়িয়ে দিবেন তাহলে গল্প পরে ভালো লাগার ফিলিংস কাজ করে ধন্যবাদ
অসংখ্য ধন্যবাদ গল্পে নিজের মূল্যবান মতামত প্রদান করার জন্য। আর আমি লেখিকা , লেখক নই। আপনি চাইলে আমাকে রাইটারও বলতে পারেন।
 
প্রিয় লেখিকা আপনার লেখা গল্পগুলো পরার জন্য ব্যাস্ততার মাঝের সময় বের করি কিন্তু আপনার পক্ষ থেকে আপডেট একদমি পাচ্ছি না ।আশা করি তাড়াতাড়ি আপডেট দিয়ে পাঠকদের আপনার গল্প বেশি বেশি পরার উৎউৎসাহিত করিবেন 💚
 
পর্ব ১৬

রাজীব ধীরে ধীরে অনুরিমার হাতে মালিশ করতে লাগলো। ঠান্ডা শীতল হলে তার কোমল হাতকে ঘষে গরম করছিলো যাতে তার মনে অল্প হলেও এক চিলতে উষ্ণতার আগুন জ্বলে। তারপর রাজীব নিজের বাম হস্ত দ্বারা অনুরিমাকে জড়িয়ে বুকে টেনে নিলো। না পারতে অনু রাজীবের ডান বাহুটি জাপটে ধরলো , যাতে সে সিটের সামনে মুখ থুবড়ে না পড়ে। তখন তার মুখটা ছিল রাজীবের বক্ষ জুড়ে। রাজীব সেখান থেকে মুখটা টেনে উপর দিকে আনলো, চুম্বন দেবে বলে। সে প্রথমে অনুরিমার ঠোঁটে চুম্বন এঁকে দিলো। তারপর মুখশ্রীর চারপাশে চুম্বনের বর্ষণ করতে লাগলো।

চুম্বনের প্রবণতা বাড়তে থাকলো, ফলে অবচেতন মননেই দুজন দুজনকে জড়িয়ে ধরলো। পেছন থেকে সেটা চাক্ষুষ অভিজ্ঞতা নিচ্ছিলো সমীর। রাজীব ও অনুরিমা উষ্ণ চুম্বনের মাধ্যমে খুব কাছাকাছি চলে এসেছিলো। রাজীব তো পারলে অনুরিমাকে নিজের কোলেই তুলে নিচ্ছিলো। অনুরিমা নিজের শরীরের ভার-টা কে প্রায় রাজীবের উপরই ছেড়ে দিয়েছিলো। রাজীব দু'দিক দিয়ে নিজের হস্তযুগলের দ্বারা অনুরিমাকে শেকলের ন্যায় জাপ্টে রেখেছিলো।

এলোপাথাড়ি চুমুতে অনুরিমার বদন সে যেন ভিজিয়ে দিচ্ছিলো। অনুরিমা কি করবে বুঝে উঠতে পাচ্ছিলো না। রাজীবের দামালপনায় যে তার উত্তেজনার পারদ ক্রমশ বেড়েই চলেছিলো। সে এসেছিলো এখানে শুধু রিহার্সালের জন্য , কিন্তু রাজীবের দুস্টুমি তাকে এ কোন অতল সমুদ্রে তলিয়ে নিয়ে যাচ্ছে ! ডুবে যাওয়ার আগে এক্ষুনি নিজেকে সামলে নিতে হবে নাহলে যে বড্ড দেরী হয়ে যাবে ! এই ভেবে অনুরিমা রাজীবকে থামতে বললো। বাধ্য ছেলের মতো রাজীবও নিজের কারুকার্য সাময়িকভাবে বন্ধ রেখে অনুরিমার পানে চেয়ে রইলো , এটা জানার জন্য যে আবার কেন হঠাৎ ছন্দপতন ?

অনুরিমা বললো , "আমাদের মনে হয় এর থেকে বেশি এগোনো উচিত নয়। রিহার্সাল করতে করতে আমরা যেন অজান্তেই বারংবার ক্যারিড অ্যাওয়ে হয়ে যাচ্ছি। এরকম চলতে থাকলে না চাইতেও বড়োসড়ো একটা অনাচার হয়ে যাবে আমাদের দ্বারা , যেটা কোনোমতেই কাঙ্খিত নয়। তাই আমার মনে হয় আজকের মতো এখানেই আমাদের রিহার্সালের ইতি টানা যাক। "

অনুরিমার কথা শুনে রাজীবের প্রচন্ড রাগ উঠছিলো। কারণ তার যৌনউত্তেজনা তখন সীমানা পেরিয়ে গেছিলো। তার মন চাইছিলো অনুরিমাকে হলের মেঝেতে শুইয়ে মর্দন করতে। সে কোনোমতে নিজের চাহিদার উপর লাগাম টেনে বললো , "ঠিক আছে , তুমি যদি এখন আর কমফোর্টেবল ফীল না করো , তাহলে আজ এই পর্যন্তই থাক ! তোমার কমফোর্ট জোনের বাইরে গিয়ে আমি কিছু করতে চাইনা। তবে মনে রেখো , আগামী দিন তোমাকে আরো প্রস্তুত হয়ে আসতে হবে। আজকে যা হলো তা আশানরুপ হয়নি। তোমাকে মনকে আরো বেশি শক্ত ও দৃঢ় করতে হবে। মনে রাখবে , তুমি যা করছো তোমার সমীরের ভালোর জন্যই করছো। "

অনুরিমা চুপ করে মন দিয়ে রাজীবের কথা গুলো শুনলো। রাজীবের হ্যাঁ তে হ্যাঁ মেলালো। রাজীব বললো আর এখানে সময় নষ্ট করে লাভ নেই , এমনিতেও তারা সিনেমা দেখতে আজ আসেনি , বেশিরভাগ সময়ই তারা মনোযোগ দিয়ে সিনেমাটা দেখেনি। তাই এখন তাদের ওঠবার পালা। রাজীবের কথামতো অনুরিমাও নিজের সিট থেকে উঠলো। সমীর দেখলো দুজন কে সিনেমা শেষ হওয়ার প্রাক্কালেই হল ত্যাগ করে চলে যেতে। সে তাও কিছুক্ষণ বসে রইলো , পাছে তারা আবার ফিরে আসে। সমীর তাদের কারুকার্য দেখতে পেলেও , তাদের কথোপকথন তো সে শুনতে পায়নি। তাই তাদের এতো তাড়াতাড়ি হঠাৎ উঠে যাওয়ার কারণ সে ঠাহর করে উঠতে পাচ্ছিলো না। তবে কি রাজীব ও অনুরিমা অন্য কোথাও যাওয়ার প্ল্যান করলো ? অন্য কোথাও গিয়ে তারা এসব করবে ? রাজীব অনুরিমাকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেনা তো ? এইসব আশঙ্কা সমীরের মনের ভেতর ঘুরতে লাগলো।

কিন্তু রাজীব তো তাকে বলেছিলো আগাম সবকিছু সে আগে থেকে সমীরকে জানিয়ে রাখবে ! সেই ভেবে সমীর পকেট থেকে ফোনটা বের করে চেক করতে লাগলো রাজীবের তরফ থেকে তার উদ্দেশ্যে নতুন কোনো আপডেট আছে কিনা। ফোনটা সাইলেন্ট ছিল যাতে কোনোভাবে হঠাৎ বেজে না ওঠে। রিংটোন টা তো অনুরিমার চেনা ছিল , তার কানে এসে পৌঁছলে সাড়ে সর্বনাশ হতো। সমীর ফোন খুলে কিছু না পেয়ে খানিকটা ডিসাপয়েন্টেড হলো। ভাবলো যে সেও এখন উঠবে। হল থেকে বেরিয়ে দেখবে কোথায় গেলো ওরা দুজন। সেইমতো সমীরও সিনেমা হল ছেড়ে বেরিয়ে গেলো। বাইরে বেরিয়ে তাদের খুঁজে পেলো না সে। কিছুটা নিরাশ , কিছুটা হতভম্ব হয়ে রইলো। কি করবে সেটা ভেবে উঠে পাচ্ছিলো না। রাজীবকে কল করবে ? নাহঃ ! অনুরিমা তো ওর সাথে আছে । তাহলে কি একটা মেসেজ দেবে ? ভাবতে ভাবতে সমীরের কাঁধে একটা হাত এসে পড়লো। সমীর চমকে উঠলো। পিছন ফিরে দেখে , রাজীব দাঁড়িয়ে। যথারীতি আর কেউ চিনুক না চিনুক রাজীব ঠিক ওকে আইডেন্টিফাই করতে পেরেছিলো।

"কি , কেমন দেখলেন আমাদের ?", রাজীব জিজ্ঞেস করলো।

সমীর ভয়ে ভয়ে চারপাশটা দেখলো , অনুরিমা নেই তো ! রাজীব বুঝতে পারলো , "অনুরিমাকে খুঁজছেন ? চিন্তা নেই , সে চলে গ্যাছে। আমি বললাম এগিয়ে দিই , উনি রিফিইউস করলেন। আমি আপনাকে অনেক আগেই খেয়াল করেছি , সেই একই ছদ্মবেশ নিয়েই তো এসেছেন। হলে পিছনের রো তে বসেছিলেন, সব নোটিশ করেছি। "

রাজীবের কথা শুনে সমীর খানিকটা অস্বস্তিকর অবস্থায় পড়লো। তা দেখে রাজীব আর তার অস্বস্তি না বাড়িয়ে বললো , "অতো লজ্জা পাবেন না। যে পথে আপনি নেমেছেন সেই পথে লজ্জা ঘেন্না ভয় তিন থাকতে নয়। আপনার মুখ-চোখ দেখে বোঝা যাচ্ছে যে আপনি ভয়ে ভয়ে ছিলেন পাছে অনুরিমা আপনাকে চিনে ফেলে। এখন আমি আপনাকে চিনতে পারায় আপনি লজ্জিত বোধ করছেন। আর ঘেন্না ? সেটা আপনার অভিরুচির উপর নির্ভর করছে , আপনি কিরকম ফীল করলেন আমাকে আর অনুরিমাকে একসাথে দেখে। "

- "আসলে আমি ঠিক বলে বোঝাতে পারবো না আমার ফিলিংসটা কে। একদিকে যেন ভেতরটা পুড়ে খাঁক হয়ে যাচ্ছিলো ওই দৃশ্য দেখে আবার অন্যদিকে অদ্ভুত এক অবিরাম উত্তেজনার সৃষ্টি হচ্ছিলো। অনুরিমা কোনোদিনও আমাকে ছাড়া অন্য কোনো পুরুষকে স্পর্শ করেনি , সেই প্রাণের প্রিয়া অনুরিমাকে আপনার সাথে দেখে কিছুটা হলেও ঘেন্না হচ্ছিলো বইকি। আর হ্যাঁ ভয় আমি পেয়েছিলাম , অনুরিমার কাছে ধরা পড়ার। এই অবস্থায় এইসব নিয়ে আপনার সাথে কথা বলতে লজ্জা বোধও করছি। তাই স্বীকার করতে বাধা নেই যে আমার এখনও লজ্জা ঘৃণা ভয় কোনোটাই যাইনি , সবকটি চেতনা বর্তমান রয়েছে।"

- "বেশ , তাহলে আপনিই বলুন , এখন আপনি কি চান ? আমি কি আপনার স্ত্রীয়ের সাথে কন্টিনিউ করবো নাকি এখানেই ইতি টানবো ? আপনার সাধ কি মিটে গ্যাছে ?"

- "বুঝতে পারছি না ডাক্তার বাবু , এক অদ্ভুত অন্তর্দ্বন্দ্বের মধ্যে পড়ে গেছি। মন চাইছেনা এসব মানতে কিন্তু হরমোন বারবার উত্তেজিত হয়ে পড়ছে , আরো কিছু দেখবার বা অনুভব করবার আশায়। "

- "তার মানে মুখে যাই বলুন না কেন, এখনও আপনার আঁশ মেটেনি। কি তাই তো ?"

সমীর মাথা নিচু করে রইলো , তারপর কিছুক্ষণ থেমে সে জিজ্ঞেস করলো , "আচ্ছা আমি যদি আপনাকে অ্যালাও করি তাহলে কতদূর আপনি অনুরিমার সাথে যাবেন ? "

"যতদূর আপনি অ্যালাও করবেন ততদূর ", সপাটে জবাব দিলো রাজীব।

"তার মানে আমি থামতে না বললে আপনি সবকিছু করে ফেলবেন আমার স্ত্রীয়ের সঙ্গে ", বলে শিউরে উঠলো সমীর।

- "আমার যা বলার আমি বলে দিয়েছি। এবার এটাকে ইন্টারপ্রেট করার পালা আপনার।"

রাজীবের সাথে অনুরিমা , নগ্ন অবস্থায় ! এক লহমায় কল্পনা করতেই সমীরের মাথা চট করে ঘুরে গেলো। তা দেখে রাজীব তাকে ধরে সামলে নিয়ে বললো , "আপনি ঠিক আছেন, মিস্টার মল্লিক ?"

"আমিঃ ...... আমি একটু জল খাবো। ....." , কাঠ গলায় সমীর বলে উঠলো।

- "দাঁড়ান আমি ব্যবস্থা করছি , আপনি একটু বসুন এখানে। "

সমীরকে বসিয়ে রাজীব গেলো জল কিনে আনতে। জল এনে দিয়ে সমীরকে সে পান করালো। কাঁধে হাত রেখে বললো , "আমি বলি কি আপনি আপনার গেট আপ-টা চেঞ্জ করে এবার বাড়ি ফিরে যান। অনেকক্ষণ এই ছদ্মবেশে রয়েছেন। পাগড়ি পড়ার অভ্যাস নেই আপনার তাই মাথায় এতো চাপ পড়ছে। বাড়ি গিয়ে শান্ত মনে ভাবুন , আপনিই কি চান ! নিজের ভাগ্যের নির্ধারক এখন আপনি নিজেই। আপনি যদি আপনার অবচেতনে মন বানিয়ে থাকেন অনুরিমাকে আমার বিছানায় পাঠানোর তাহলে সেটা নিয়ে আত্মবিশ্লেষণ করুন। ভাবুন আপনি সেই দৃশ্য সহ্য করতে পারবেন কিনা ? তবেই আমি এগোবো আপনার কথামতো , নাহলে নয়। "

- "আচ্ছা , অনুরিমা রাজি হবে আপনার সাথে যেতে ? ওর স্বামী বলে বলছিনা , কিন্তু সত্যি ও খুব আলাদা মেয়ে। ওর পক্ষে দ্বিচারিতা করা সত্যিই নেক্সট টু ইম্পসিবল। "

- "দ্রৌপদীও তো শুধু অর্জুনকেই বিয়ে করতে চেয়েছিলো , তাঁর ব্যাতিত অন্য কাউকে মন দিতে সে দৃঢ়ভাবে অরাজি ছিল। কিন্তু সেই দ্রৌপদীকেও পরিস্থিতির জাঁতাকলে পড়ে তাঁর ভাসুর ও দেওরদের শুধু বিয়েই করতে হয়নি , শরীরও দিতে হয়েছিলো। পরিস্থিতি মানুষ তথা দেবতাকে দিয়েও অনেক কিছু করায়। নিঃসন্দেহে আপনার স্ত্রী একজন পতিব্রতা নারী , কিন্তু কালচক্রে তার সতীত্বও নষ্ট হতে পারে যদি আপনি চান। "

- "কিন্তু এর ফলে যদি ও আমার থেকে দূরে সরে যায় ?"

- "কার কাছে যাবে ? আপনি তো তাকে আমার কাছেই পাঠাচ্ছেন ? আর এরকম ক্রিয়া আমি তো প্রথমবার করছিনা। আমি যদি আপনার মতো পেশেন্টের সাথে প্রতারণা করে তাদের স্ত্রীদের ইলোপ করে নিতাম তাহলে তো আমার পশাড় কবেই উঠে যেত মশাই।"

- "তার মানে এর আগেও আপনি ......?"

- "অতো ডিটেইলস-এ আপনাকে বলবো না , কারণ আমি আমার সব পেশেন্টের গোপনীয়তাটা-কে মেইনটেইন করি। নিজের ঢাক পেটানোর জন্য একজন পেশেন্টের খবর অন্য পেশেন্টকে দিইনা। এটা আমার এথিক্স এর বাইরে। তবে এইটুকু বলতে পারি যে আমি পূর্বেও কিছু বিবাহিতা নারীর সাথে যৌনকার্যকলাপে লিপ্ত হয়েছি। বেশিরভাগ সময়ে তা হয়েছে তাদের স্বামীর অনুমতির দ্বারা। বেশ কিছু নিঃসন্তান দম্পত্তির কোল আমি ভরিয়েছি স্ত্রীদের সহিত বিছানা ভাগ করে। তবে আপনার স্ত্রীয়ের মতো এতো দৃঢ় মানসিকতার মেয়ে আমি আগে একটাও দেখিনি। আগে যে সকল কেস আমার কাছে এসছে , তা সবই প্রায় সেলিব্রিটি কেস , যারা লোকলজ্জার ভয়ে আইভিএফ পদ্ধতির শরণাপন্ন হতে চায়না। অদ্ভুত সোশ্যাল ডগমা কাজ করে তাদের মধ্যে। তাই তারা তাদের বাড়িতে আমায় নিমন্ত্রণ জানায় , বলা ভালো বিছানায় নিমন্ত্রণ জানায় , বাড়ির বধূকে অন্তঃসত্ত্বা করার জন্য। কেউ কেউ নিজের কাকোল্ড ফ্যান্টাসি পূরণ করার জন্যও আমার সাথে কনসাল্ট করেছে। কিন্তু সেইসব ক্ষেত্রে দেখা গ্যাছে স্বামী স্ত্রী উভয়ই রাজি এই পরিকল্পনায় শামিল হতে। আপনাদের ব্যাপারটাই খুব ইউনিক এবং জটিল। যেখানে আপনি চান এই রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতাকে অনুভব করতে , আর আপনার স্ত্রী চান তা থেকে আপনাকে বিরত রাখতে। "

- "তাহলে আপনি আমার স্ত্রীয়ের সেই ইচ্ছেকে প্রাধান্য না দিয়ে আমার ইচ্ছেটাকেই কেন প্রাধান্য দিচ্ছেন ?"

- "কারণ আমি জানি আপনি নাছোড়বান্দা ব্যক্তি। মুখে না বললেও আপনার হাবেভাবে তা বোঝা যায়। ডেসপারেশনে এসে আপনি কোনো ভুল পদক্ষেপ না নিয়ে ফেলেন , তার জন্যই আপনারই ইচ্ছেটাকে আমায় বেশি গুরুত্ব দিয়ে বিচার করতে হচ্ছে। আমি চাইলে আজকে আরো অনেক কিছু করতে পারতাম , যদিও আপনার স্ত্রী রাজি ছিলোনা , তাও কোনোমতে তাকে রাজি করিয়ে ফেলতাম। কিন্তু কেন করলাম না জানেন ? আপনার জন্য ! আপনার কথা ভেবে। আগে দেখতে চাইলাম আপনার কিরকম রিঅ্যাকশন হয় এই স্বল্প অনুভবে। আমি চাইনা আপনার আর অনুরিমার সম্পর্ক খারাপ হোক। আমি দেখতে চাই আপনি কতোটা তৈরী নিজের ফ্যান্টাসির বাস্তবে সম্মুখীন হওয়ার জন্য। সেই বুঝে ব্যবস্থা নেবো আমি।"

"তাহলে এখন আমার কি করণীয় ডাক্তার বাবু ?", হতভম্বের মতো সমীর জিজ্ঞেস করলো।

- "ওই যে বললাম , আপনি এখন নিজের গেট আপটা চেঞ্জ করে বাড়ি ফিরে যান। বাড়ি ফিরে আগে ভাবুন আপনি কতদূর অবধি নিজের ফ্যান্টাসিটা-কে বাস্তব রূপ দিতে চান। আমি ধাপে ধাপেই এগোবো। যখন মনে হবে জল মাথার উপর দিয়ে বইছে , তখন বলবেন আমি থেমে যাবো। কিন্তু সাবধান ! অনুরিমার মন উচাটন হলে তখন আমার হাত থেকে খেলাটা বেরিয়ে যাবে। তখন উল্টে আমাকে ওর ডাকে সাড়া দিতে হবে , দিতেই হবে। আমি কোনো মেয়েকে উত্তেজিত করে উপোসী রাখতে পারবো না , তাতে কামদেব আমায় পাপ দেবে। "

- "আচ্ছা , এরপর আপনি কি করতে চলেছেন ওর সাথে ?"

- "আগে নিজের মনকে স্থির করুন। একটা সিদ্ধান্তে এসে পৌঁছন। করলে আজকেও অনেক কিছু করতে পারতাম , তখন দেখতেন আমার পরবর্তী কার্যক্রম গুলো। কিন্তু আজকে আপনার স্ত্রী প্রাথমিকভাবে আমায় বাধা দিলেন , আমিও প্রথমদিন বলে তেমন বিশেষ জোর করলাম না। আপনার স্ত্রী এখনও সংকুচিত হয়ে রয়েছে। আপনার স্ত্রী আজ আপনার কথা ভেবেই অনিচ্ছা সত্ত্বেও নিজের ডানা মেলতে এসছিলেন। তার মানে এখনও খেলাটা আমার নিয়ন্ত্রনেই আছে। আপনি বললে দান দেবো নাহলে ছেড়ে দেবো। এবার আপনি ম্যাচ রেফারি , বললে ম্যাচ আবার আরম্ভ হবে নাহলে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হবে।"

রাজীব ও সমীরের কথা শেষ হলো। রাজীব নিজ বাড়ি ফিরে গেলো। যাওয়ার আগে পুনরায় তার কথা গুলো সমীরকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে গেলো। সমীর গাড়িতে বসে নিজের গেট আপটা খুলে আসল রূপে ফিরে এলো। সেও বাড়ির দিকে রওনা দিলো। মাঝপথে সে একটি পার্কে এসে বসলো। এখনও তার টাইম হয়নি বাড়ি ফেরার। সময়ের আগে বাড়ি ফিরলে যদি অনুরিমা কোনো প্রশ্ন করে ? নার্ভাস হয়ে উল্টোপাল্টা উত্তর যদি দিয়ে ফেলে ? নাহঃ নাহঃ , এসব ফালতু রিস্ক একদম নেওয়া যাবেনা। তার চেয়ে বরং বাড়ির ছেলে যথা সময়ে বাড়ি ফিরুক। আর তার মধ্যে সে আরো একবার রাজীবের বলা কথা গুলোকে নিজের বিচার বিবেচনা দিয়ে ঝালিয়ে নিক।

সেই মতো পার্কে বসে সমীর রাজীবের কথা গুলো নিয়ে মনে মনে চুলচেরা বিশ্লেষণ করতে লাগলো। একটা সিদ্ধান্তে যে তাকে পৌঁছতেই হবে। হয় ইস্স পার নাহলে উস্স পার। মনে মনে কৌতূহল জাগছিলো রাজীবের পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে। তাই সে অনেক ভেবে চিন্তে ডিসাইড করলো যে সে রাজীবকে আরো একটা চান্স দেবে নিজের বিরল প্রতিভাকে অনুরিমার উপর প্রয়োগ করে তার সামনে তা প্রদর্শিত করানোর জন্য।
 
পর্ব ১৭

বাড়িতে ফিরে সমীর বিন্দুমাত্র সময় নষ্ট না করে রাজীবকে টেক্সট মেসেজ করে জানায় যে সে রাজি প্রক্রিয়াটা-কে চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য। রাজীব তাকে পরবর্তী সময় ও লোকেশন অনুরিমার সাথে কথা বলে ঠিক করে নিয়ে সময়মতো জানিয়ে দেবে বলে আশ্বাস দিয়ে ফোন রাখে। বাড়িতে অনুরিমা মোটামুটি স্বাভাবিকই ছিল। রোজকার কাজে ব্যস্ত ছিল। কিন্তু অনুরিমাকে দেখে সমীরের এক অদ্ভুত ফিলিং হচ্ছিলো , বমি পাচ্ছিলো। ওর মাথায় তখন সিনেমা হলের দৃশ্য গুলো ঘুরপাক খাচ্ছিলো। সে ভাবলো এইটুকুতেই তার এই অবস্থা , আরো কিছু ঘটতে দেখলে কি পরিণতি হবে তখন ? সে কি আর তার স্ত্রীকে নিজের কাছে টেনে নিতে পারবে ? সে কোনো ভুল পথে হাঁটছে না তো ?

অনুরিমাও লক্ষ্য করলো যে সমীর প্রচন্ড অন্যমনস্ক হয়ে আছে। সে তার দিকে ফিরেও তাকাচ্ছে না ! কিন্তু কেনো ? সে কি জানতে পেরে গ্যাছে আজকের ঘটনাগুলো ? নাহঃ !! মনে মনেই কেন জানি অনুরিমা প্রচন্ড ভয় পেয়ে গেলো এই সম্ভাবনার কথা ভেবে। সমীর জানবে কি করে ? রাজীব তো কোনোমতে তাকে জানাবে না। সারাদিন সমীর অফিসে ছিল , যথারীতি নিজের সময় মতোই বাড়ি ফিরলো। তাহলে ? সে কি একটু বেশিই ভাবছে আজকের ব্যাপারটা নিয়ে ? সমীর হয়তো আবার কোনো অফিসের ব্যাপার নিয়েই চিন্তা করছে। যা হেক্টিক কাজ ওর , সবসময়েই কিছু না কিছু লেগেই থাকে ওর কর্মজীবনে। এইসব ভেবে অনু একটু হালকা অনুভব করলো। কিন্তু মনের এক ঈশান কোণে যে কষ্টের বাসা বেঁধেছে। যতই সে মনকে বোঝাক , মন যেন বারবার বলছে আজ সে যা করেছে তা কোনোভাবেই যুক্তিসম্মত ছিলো না। সে তার স্বামীর সাথে প্রতারণা করেছে। যার কোনো ক্ষমা হয়না।

অনুরিমা একবারের জন্য ভাবলো যে সে সমীরকে সব সত্যি কথা বলে দেবে। সমীর নিশ্চই বুঝবে কেন সে রাজীবের সাথে দেখা করতে গেছিলো এবং সেইসব মুহূর্ত কাটিয়েছিলো। পরক্ষণে ভাবলো যে এই বিষয়টা নিয়ে একবার সুচরিতার সাথে কথা বলে নেওয়া যাক। সুচরিতা তো মোটামুটি জানেই সব। ও হয়তো সঠিক উপদেশ দিতে পারবে। তারপর নাহয় সে সমীরকে বলার চেষ্টা করবে। অথচ এই পতিপাগল মেয়েটি জানতোই না যে সবকিছু সমীরের ইচ্ছানুসারেই হচ্ছিলো। জানতে পারলে যে অনুরিমা কি করতো তা কারোর পক্ষে বলা সম্ভব নয়।

রাতের বেলা যখন দুজনেই একই বিছানায় এসে উপস্থিত হলো তখন কেউই কারোর দিকে চেয়ে ঠিকমতো কথা বলতে পারছিলো না। দুজনের মনের মধ্যেই প্রবল ঝড় চলছিলো। অনুরিমার গিল্ট ফিলিং হচ্ছিলো তো সমীরের মনে চাপা অন্তর্দ্বন্দ্ব চলছিলো। তবুও সমীর কিছুতেই নিজের ফ্যান্টাসির নেশা-কে কাটিয়ে উঠতে পারছিলো না। সে ভাবছিলো যে হয়তো বিষে বিষেই বিষক্ষয় সম্ভব , লোহাই লোহা-কে কাটবে। অর্থাৎ অনুরিমাকে রাজীবের সাথে ক্লোস হতে দেখে তার মনে যতই ঝড় উঠুক না কেন, তার অটুট বিশ্বাস এই যে কাকোল্ড ফ্যান্টাসির থেকে মুক্তির পথ একটাই। ভয়-কে জয় করার জন্য ভয়েরই সম্মুখীন হওয়া। অন্তত একবার তার ভয়াবহ কল্পনা সত্যি হোক। একবার কেউ তার প্রিয়তমা অনুরিমাকে নিজের করে নিক। তখন যে জ্বালায় সে জ্বলবে সেই জ্বলনে তার মন আবার পরিশুদ্ধ হয়ে যাবে। ফের সে পুরনো ও স্বাভাবিক সমীর হয়ে উঠবে। কিন্তু যদি এর উল্টো হয়, তখন ? সেই জ্বলনে দ্বগ্ধ হয়ে যদি সমীর বা অনুরিমার মধ্যে কোনো একজনের মন অপরের থেকে উঠে যায় , তাহলে কি হবে ? কি হবে ছোট্ট তিন্নির ? ভেবে দেখেছে কি সমীর তা ?

বিছানায় শুয়ে আকাশ পানে চেয়ে সমীর এসব ভাবছিলো। অনুরিমা দেখলো তার স্বামী গভীর কোনো চিন্তায় মগ্ন রয়েছে। তারও আজ তার স্বামীর সাথে কথা বলতে মন চাইছিলো না। আগে সুচরিতার সাথে কথা বলবে তারপর সিদ্ধান্ত নেবে সে কতোটা তার স্বামীকে বলবে বা বলা উচিত তার। তাই অনুরিমা কিছু না বলে চুপচাপ পাশ ফিরে ঘুমিয়ে পড়লো। কিছুক্ষণ পর সমীরেরও চোখটা লেগে এলো।

পরের দিন অনুরিমা ছুটলো সুচরিতার সাথে দেখা করতে। দেখা মাত্র সুচরিতা বেশি এদিক ওদিকের কথা না বাড়িয়ে প্রথমেই জানতে চাইলো কি কি হয়েছে তার আর রাজীবের মধ্যে। অনুরিমা ঢোঁক গিলে জল পান করে ধীরে ধীরে নিচু স্বরে সব বর্ণনা করতে লাগলো। সব কথা শুনে সুচরিতা অনুরিমাকে বললো সে কোনো খারাপ কাজ করেনি, মিছি মিছি গিল্ট ফিলিং-এ ভুগছে সে। অনুরিমা তার স্বামীকে এসব কথা বলবে কিনা তার পরামর্শ চাইতেই সুচরিতা সঙ্গে সঙ্গে "না" বলে উঠলো।

- "অনু , তুই কি পাগল হয়েছিস ? এসব কথা তুই সমীরকে এখন জানাতে যাবি !"

- "আমি শুধু নিজের কাছে পরিষ্কার থাকতে চাই। তাছাড়া সমীরকে জানালে কি হবে ? সে তো নিজেই চেয়েছিলো এসব ! এখন তাই একজন অনেস্ট ওয়াইফ হিসেবে আমার উচিত যে আমি যাই কিছু করে থাকি না কেনো তা সবটুকু ওর কাছে কনফেস করা। আমি শিওর যখন আমি ওকে পুরো ঘটনা এবং তার কারণ গুলো ব্যাখ্যা করে বলবো, তখন ও আমাকে ঠিক বুঝবে। তাছাড়া আমি তো রাজীব বাবুর সাথে সবকিছু করিনি। রিহার্সালের নামে যতটুকু প্রয়োজন ছিল ততোটুকুই করার চেষ্টা করেছি মাত্র। তারপর রাজীব বাবু সীমা অতিক্রম করতে চাইলে আমি সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে বাঁধা দিয়ে সেই পর্যায়েই রিহার্সালের যবনিকা পতন ঘটিয়েছি।"

- "আমি তোর কথা সব বুঝতে পারলাম। আমি তো বললাম তুই কোনো অন্যায় কাজ করিসনি। তুই সমীরকে ঠকাসনি। কিন্তু একটা কথা বল , তোর মেন্টর অর্থাৎ রাজীব কি তোকে বলেছে এসব কথা সমীরকে জানাতে ?"

- "নাহঃ , কিন্তু আমি ওনার কথা সবসময়ে শুনতে যাবো কেনো ? ওনার থেকে আমি আমার স্বামীকে ভালোভাবে চিনি ও জানি। "

- "ফালতু জেদ করিসনা অনু , ভুলে যাসনা রাজীব একজন সেক্সওলজিস্ট , হি নোস্ বেটার দ্যান ইউ টু হাউ টু হ্যান্ডেল দা সিচুয়েশন। নাহলে তুই ওঁর কাছে সমীরকে নিয়ে গেছিলিস কেনো এতোই যদি তুই সমীরের ব্যাপারে সবজান্তা হয়ে থাকিস তো ?"

অনুরিমা আর না পেরে মাথা নিচু করে কাঁদতে লাগলো। কাঁদতে কাঁদতে বললো , "আমি জানিনা আমি কি করছি , বা আদেও ঠিক করছি কিনা। তবে বিশ্বাস কর আমি শুধু সমীরকে ভালো করার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। "

কথা গুলো সে সুচরিতাকে বলছিলো কিন্তু বোঝাচ্ছিলো যেন নিজের মনকেই। সুচরিতা অনুর হাতে হাত রেখে ওকে সান্ত্বনা দিয়ে বললো , "আমি জানি রিমস্ , তুই এসব শুধু সমীরের জন্য করছিস। কিন্তু বেব্ , সমীরকে এখন সেটা বললে সমীর সেটা বুঝবেনা , ট্রাই টু আন্ডারস্ট্যান্ড। "

- "তাহলে এখন কি করবো ?"

- "সেটাই কর যেটা ডক্টর রাজীব রায় তোকে করতে বলছে। "

- "তুই বুঝতে পারছিস না , আমার ভালো লাগছেনা এসব করতে। দেখ আল্টিমেটলি সমীরকে জেলাস ফীল করানো নিয়ে কথা তো , ওকে কিছুটা হলেও ওর অদ্ভুত ফ্যান্টাসির ঝলক দেখানো নিয়ে কথা...... সেটা তো একবারে ডাইরেক্ট ওর সামনে করলেই হয়। তার জন্য এতো রিহার্সালের কি দরকার বল ? আর কি গ্যারান্টি আছে যে পরে ডাক্তার রায় এই রিহার্সালের কথা সমীরকে বলবে না ? তখন যদি সমীর আমাকে অবিশ্বাস করে , ভাবে আমি ডক্টর রায়ের সাথে হয়তো অনেক কিছুই করে ফেলেছি ! "

"হুমঃ .....", কিছুটা ভেবে সুচরিতা বললো , " দেখ তুই এইসবে বেশ আনকোড়া আছিস। তাই একেবারে সমীরের সামনে তুই রাজীব বা অন্য কাউকে কিস করতে পারবি না, তা তুই যতই কনফিডেন্ট হোসনা কেনো। তার জন্য তোর রিহার্সালের দরকার রে। সো, একটা উপায় আছে এর ......"

- "কি , বল ......"

- "যদি তোকে রিহার্সাল করতেই হয়ে, তাহলে তুই অন্য কারোর সাথে রিহার্সাল কর, যাকে রাজীব বা সমীর কেউই চেনে না , এমন কেউ ! কি বলিস ?"

"তুই আমাকে কি ভাবিস সুচি ? আমি চরিত্রহীনা ? আমার কোনো মান সম্মান কিচ্ছু নেই ? আমি যাকে তাকে নিয়ে এসব করে বেড়াবো ? অলরেডি আমি অনুশোচনায় দগ্ধ হয়ে মরছি রাজীবের সাথে ওসব হওয়ার পর আর তুই আমাকে উস্কাচ্ছিস আরো একজনের সাথে এসব করতে ? তোর কাছে আসাই আমার ভুল হয়েছে। থাক, তোকে আর কোনো অ্যাডভাইস দিতে হবেনা। আমি এক্ষুনি গিয়ে সমীরকে সব কথা বলে দেবো , তারপর যা হবার দেখা যাবে। অন্তত নিজের অন্তরাত্মার কাছে তো পরিষ্কার থাকবো আমি ", এই বলে রেগে মেগে অনুরিমা চেয়ার ছেড়ে উঠতে যাচ্ছিলো, সঙ্গে সঙ্গে সুচরিতা তাকে ধরে আবার বসালো।

বসিয়ে জলের গ্লাসটা এগিয়ে দিয়ে বললো , "দেখ রিমা , তুই আজকাল অল্পতেই বেশি হাইপার হয়ে যাচ্ছিস। আমি বুঝতে পারছি তোর জীবনে এখন কি ঝড় বয়ে চলেছে , তবুও আমি বলবো, না আমি , না রাজীব , কেউ তোর খারাপ চাইনা। রাজীবের কথা না হয় ছেড়ে দে , ও একজন প্রফেশনাল সেক্সওলজিস্ট, ও হয়তো এটাকে জাস্ট একটা কেস স্টাডি হিসেবে দেখছে। কিন্তু আমি তো তোর বন্ধু , দা বেস্ট ফ্রেন্ড। আমার উপর তো তুই চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করতে পারিস।.... তোর যদি মনে হয় , রাজীব তোদের মধ্যেকার ব্যাপার ট্রিটমেন্টের খাতিরেই হোক সমীরকে পরবর্তীতে বলতে পারে, তাহলে তোকে রাজীবের সাথে কিছু করতে হবেনা। বাট একটা ব্যাপারে আমি ডক্টর রাজীব রায়ের সাথে একমত , দ্যাট ইউ নিড সাম প্রিপারেশন অর্ রিহার্সাল। নাহলে তুই কোনোভাবেই সমীরের সামনে ওর ফ্যান্টাসির ডেমো দেখাতে পারবি না। আমি তোকে চিনি সুইটহার্ট। তাই সম্ভব হলে ফাইন্ড সাম আনাদার গাই। যার সাথে লুকিয়ে হলেও ওয়ান টাইম বা টু টাইম হুক আপ করে নিজেকে প্রিপেয়ার্ড করতে পারিস। তাহলে সেটা সবার অগোচরে হবে সো ইট উইল রিমেইন সিক্রেট। রাজীবের কি , রাজীব ইস আ প্রফেশনাল ডক্টর। ওকে তুই যখন বলবি তখনই সমীরের ডেমো ক্লাস অ্যারেঞ্জ করে দেবে। কিন্তু তুই যদি প্রথমবারে সমীরের সামনে পারফর্ম করতে ভুল করিস , তাহলে সবটা ঘেটে ঘ হয়ে যাবে। তারপর আর কিছু করার থাকবে না। তাই কনসাল্টেড ডক্টরের সাথে রিহার্স করতে হেসিটেট হলে , অন্য কাউকে খুঁজে নে , যে এই ব্যাপারটা গোপন রাখতে পারবে , লাইক সাম জিগোলো। "

- "জিগোলো ? সেটা আবার কি ?"

- "তুই জিগোলো মানে জানিস না ?? ওহঃ মাই গড !! ইউ আর সাচ্ আ নাইভ পার্সন অনু। জিগোলো মানে হলো মেল প্রস্টিটিউট , পুরুষ দেহব্যবসায়ী। তাদের সার্ভিসে প্রাইভেসী ও গোপনীয়তা দুটোই থাকে। তুই চাইলে ওটা অ্যাভেইল করতে পারিস নিজের রিহার্সালের জন্য। নাহলে যদি তোর অন্য কোনো বিশ্বস্ত জানা শোনা পুরুষ থেকে থাকে তুই তাকেও ট্রাই করতে পারিস। ইট'স্ আপ টু ইউ।"

অনুরিমা চুপ করে রইলো। আর একটাও কথা ব্যয় করলো না সে। অনুরিমাকে চুপ করে থাকতে দেখে সুচরিতা আর কোনো কথা বাড়ালো না। ও শুধু বললো, "চল এবার আমি উঠি। আমার শোয়ের টাইম হয়ে যাচ্ছে। আজকে বাইরে থেকে ফ্যাকাল্টি আসবে এক্সহিবিশনে। তোকে নিয়ে গেলে ভালো হতো কিন্তু আমি যেহেতু ওদেরকে ওয়েলকাম করছি তাই তোর সাথে বেশি থাকতে পারবো না। তুই তখন ওখানে একা একা বোড় হবি। তাই মন চাইলেও তোকে যেতে বলতে পারছিনা রে। "

- "না না , ইট'স্ ওকে। আই ক্যান আন্ডারস্ট্যান্ড। আমারও যাওয়ার সেরকম ইচ্ছে নেই ......"

বলতে বলতে আদিত্য সেখানে এসে হাজির , সুচরিতার এক্স হাসব্যান্ড। আসলে অনুরিমা ও সুচরিতা নন্দন চত্বরে দেখা করেছিলো। সেইখান থেকে সুচরিতার অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টস্ এ যাওয়ার কথা ছিলো। আদিত্যও একটু আধটু থিয়েটার করে। সেখান থেকেই সেই সূত্র ধরেই তো সুচরিতার সাথে ওর আলাপ তারপর বন্ধুত্ব, তারপর বিয়ে আর তারপর ডিভোর্স , একটা কমপ্লিট সাইকেল পূর্ণ হয়েছিল শিল্পকলার হাত ধরে। যাই হোক , আদিত্যও সেখানে আর্ট রিলেটেড কোনো কাজে এসেছিলো। তাই হঠাৎ দেখা।

আদিত্যকে দেখা মাত্রই সুচরিতা অনুরিমার কথাকে থামিয়ে বলে উঠলো, "আরে আদি , ওয়াট আ প্লেজেন্ট সারপ্রাইস !"

আদিত্য বললো সে নন্দনে একটা কাজে এসেছিলো। সুচরিতা তখন আদিত্যকে তার সাথে যেতে বললো , আদিত্য বললো সে আর এখন যেতে চাইছেনা। সুচরিতাও বেশি জোর করলো না। বাকি বিষয় নিয়ে সুচরিতা ও আদিত্যর কথোপকথনের মধ্যে হঠাৎ আদিত্যর নজর গিয়ে পড়লো অনুরিমার উপর। অনুরিমাকে দেখে তার মনটা কেন জানিনা ধুকপুক ধুকপুক করতে লাগলো। সে অনুরিমাকে কিছু বলতে যাবে তার আগে সুচরিতা আদিত্যকে একটা রিকোয়েস্ট করে বসলো। সুচরিতা বললো আদিত্য যখন ফিরেই যাচ্ছে তাহলে সে অনুরিমাকেও তার বাড়ির কাছাকাছি ড্রপ করে দিয়ে আসুক। অনুরিমা সুচরিতার আদিত্যকে করা এমন আবদারে একটু হকচকিয়ে গেলো, সে বলতে লাগলো যে সে একাই যেতে পারবে , কাউকে ড্রপ করতে হবেনা তাকে। কিন্তু সুচরিতা বললো আকাশে মেঘ করে এসেছে , যখন তখন বৃষ্টি নামতে পারে। বাড়ি ফেরা মুশকিল হয়ে যাবে তখন। কলকাতার পাবলিক ট্রান্সপোর্টের কোনো মা বাপ্ নেই , বৃষ্টি-বাদলের দিন কখন ঝুলিয়ে দ্যায় তার নেই ঠিক। তার চেয়ে বরং সে আদিত্যর গাড়িতে বেড়িয়ে যাক।

"প্রাক্তন স্ত্রী হিসেবে আমার বন্ধুর জন্য এইটুকু আবদার আমি করতেই পারি আদিত্যর কাছে , কি আদি ঠিক তো ? ", মজা করে বললো সুচি।

"অ্যাব্সলুটলি ইয়েস ম্যাম। জো আপকি হুকুম ", এই বলে মাথা নিচু করে নিজের আনুগত্যতা প্রকাশ করলো আদিত্য দুই নারীর সামনে। সঙ্গে সঙ্গে ছোট্ট একটা হাসির রোল উঠলো তিনজনের মধ্যে। অনেকক্ষণ পর অনুরিমার মুখে হাসি ফুটেছিলো। তাই আর সে বেশি মানা করলো না। সুচরিতার কথা শুনে সে রাজি হয়েগেলো আদিত্যর গাড়িতে ফিরতে। সেইমতো সুচরিতা দুজনকে "বাই" বলে নিজের কাজে বেড়িয়ে গেলো। রইলো সেখানে তখন দুজন ,
একজন অনুরিমা ও অপরজন আদিত্য সেনগুপ্ত। .........
 
গল্পটা পরার ইন্টারেস্ট দিন কে দিন বেড়েই যাচ্ছে ।অসাধারণ হচ্ছে প্রিয় লেখিকা আপনার লেখা 💚💚
 
গল্পটা পরার ইন্টারেস্ট দিন কে দিন বেড়েই যাচ্ছে ।অসাধারণ হচ্ছে প্রিয় লেখিকা আপনার লেখা 💚💚
Thank you so much.. আমি তাড়াতাড়ি আপডেট নিয়ে আসছি।
 
আপনার আপডেট এর অপেক্ষায় আছি ।তাড়াতাড়ি আপডেট দিবেন বলে কথায় হাড়িয়ে গেলেন ?

গল্পটা মনে হয় থেমেই গেল খুবই হতাশ

গল্পের আপডেট কি আর পাবো না । ? এখানেই বুঝি গল্পের ইতি হয়ে গেল ! 🙂
 

Users who are viewing this thread

Back
Top