What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Collected সংগৃহীত কবিতার আসর (1 Viewer)

ঘুড়ির ঘর
কবিঃ শামীম রেজা




জানিনা ঊর্ধ্বে যেতে যেতে
ঘুড়ির ফুসফুস কতোটা হাঁপায় !
দুরে যেতে যেতে কতোটা সে চায়
টান পড়ুক তার লাটাইয়ের সুতায় !

সেও কি গাছের ডালে আটকে
অজুহাতে যতি টানে যাত্রায়
কেন সে মেঘের কাছে যেতে যেতে
লাটাইয়ের কথা ভেবে কাতরায়

কদাচিৎ সুতো কেটে গেলে
খেলো বাতাসে দুলে দুলে
ঘুড়ি পড়ে থাকে প্রযত্নহীন
নোম্যান্স ল্যান্ডের ভুল ঠিকানায়
 
কিছুই ঠিকঠাক করা হল না এক জীবনে
প্রিয় কবিঃ কাজি দীন মুহাম্মদ




কিছুই ঠিকঠাক করা হল না এক জীবনে
ঠিকঠাক ঘুমুতে যাওয়া ঠিকঠাক ঘুম থেকে উঠা
ঠিকঠাক নাওয়া ঠিকঠাক খাওয়া
প্রতিদিন কভারসিল-৪মিঃগ্রাঃ নিশ্চিতভাবেই খেয়ে দিন শুরু করার কথা
অথচ মাথার পেছনে ঘাড়ের ব্যথা অসহ্য না হওয়া পর্যন্ত
সেকথা বেমালুম ভুলেই থাকি।

কিছুই ঠিকঠাক করা হল না এক জীবনে
রবিবারের বাজারে দূর সম্পর্কের এক আত্মীয়ের কাছে অপ্রত্যাশিত পেয়ে যাওয়া
আট টাকা সে কী তুমুল খুশির আলোড়ন তুলেছিল বুকে
আহা সেই টাকাও যে কী বেখেয়ালে হারিয়ে ফেলি!
কত কিছুই যে হারিয়ে ফেলেছি যা আগলে রেখেছিলাম নির্জনে
ব্যাডমিন্টনের কাঠের ব্যাট, বাজিমাত করে দেয়া দাবার ঘুঁটি, ৩নম্বর ফুটবল
তর্ক ও বিতর্কের রাত, ভেজা জোছনায় খোলা মাঠে শুয়ে থাকা বন্ধু
আমি আর তুই
ভারী বৃষ্টিতে কাদা মাখামাখি খেলে জিতে পাওয়া আয়না ও কাফুই

কিছুই নেই ঠিকঠাক আগে ছিল ঠিক যেমন
না ছোঁয়া ভালোবাসা, আদর্শ লিপিতে শেখা সত্যাসত্য, বোধ এবং মূল্যবোধ
বদলে গেছে বিশ্বাস ফাগুন মাস এমনকি বিশ্বস্ত ক্রোধ।
বদলে গেছে প্রিয় বই, ছুঁতে চাওয়া প্রিয় নারী
বদলে গেছে প্রিয় শিক্ষক স্বপ্নে বানানো হিজলতলায় বাড়ি

কিছুই ঠিকঠাক হয় না আমাকে দিয়ে
মানুষের ভিড়ে কিছুতেই যোগ্য করে তুলতে পারিনা নিজেকে
বন্ধুরা সজ্ঞানে এড়িয়ে চলে যেনো আনমনা মেঘ
নারীর সামনে এখনও আমি কৈশোরের সেই বুক ধরফর একপেশে প্রেমিক

কিছুই ঠিকঠাক করা হল না এক জীবনে
যে সময়ে তোমার ঠোঁট ছুঁয়ে দেয়ার কথা ছিল আমার ঠোঁটে
সেই সময়ে আমি তোমার হাত ধরেই আপ্লুত ছিলাম
হাঁদারাম এর মত
তোমাকে আদর করতে গিয়ে
কীসব ছাইপাশ বলতে বলতে আর করতে করতে
রাত পার করে দেই, তোমাকে
ঠিকঠাক আদর ও করা হল না এক জীবনে।

কবিতা লিখব বলে
কিছুই করা হল না নিজের মত করে
ঠিকঠাক করা হল না চাকরি
ঠিকঠাক করা হল না প্রেম
ঠিকঠাক করা হল না ঘর
ঠিকঠাক হওয়া হল না বর।
কবিতা লিখব বলে ইঁদুর দৌড়ে আমি বসে থেকেছি হুলো বিড়াল
পৈতা পড়া বামুনের পাশে নগ্ন চাঁড়াল

তবু কবিতাও লেখা হল না ঠিকঠাক
কিছুই ঠিকঠাক করা হল না এক জীবনে
 
অন্য আমি
কবিঃ শামিম রেজা



আমার মাঝে বসত করে আরো অনেক অন্য আমি
একটা আমি সস্তা আবার আরেক আমি ভীষন দামী
একটা আমি খুব সামাজিক গুটিয়ে থাকি নিজের ঘরে
একটা আমি বাউল হয়ে ঘুরি মনের পথটা ধরে

সেই আমিটা কোথায় থাকে, কোথায় গেলে পাই তারে
যে আমিটা সন্ধ্যে হলে নিত্য ফেরে তোমার ঘরে

একটা আমি গানের মানুষ, সুর তুলি আড়বাঁশীতে
একটা আমি বোহেমিয়ান, একলা হাটি উল্টো পথে
জলের রঙে তেলের রঙে, একটা আমি গল্প আঁকি
কালির দোয়াত উপুড় করে একটা আমি কাব্য লিখি

সেই আমিটা কোথায় থাকে, কোথায় গেলে পাই তারে
যে আমিটা সন্ধ্যে হলে নিত্য ফেরে তোমার ঘরে

একটা আমি কলের শ্রমিক, ঘামের দামে খাদ্য কিনি
সাম্যবাদ আনবো বলে একটা আমি যুদ্ধে নামি
একটা আমি ঋষি-পুরুষ, ইশ্বর খুঁজি মগ্ন ধ্যানে
একটা আমি ব্যর্থ-প্রেমিক, মৃত্যু চাই অভিমানে

সেই আমিটা কোথায় থাকে, কোথায় গেলে পাই তারে
যে আমিটা সন্ধ্যে হলে নিত্য ফেরে তোমার ঘরে
 
একটুখানি কষ্ট দেবে ?
কবিঃ ডাঃ আফতাব হোসেন




তুমি কি আমায় একটুখানি কষ্ট দেবে ?
যে কোনো কষ্ট হলেই চলবে-

ভালোবাসার কষ্ট, অবহেলার কষ্ট,
পাওয়ার কষ্ট, পেয়ে হারানোর কষ্ট,
স্বপ্ন দেখার কষ্ট, স্বপ্ন ভাঙ্গার কষ্ট,
সুযোগ দেয়ার কষ্ট, সুযোগ নেয়ার কষ্ট,
বোকা হওয়ার কষ্ট, ধোঁকা খাওয়ার কষ্ট,
প্রলোভনের কষ্ট, প্রতারণার কষ্ট,
ব্রতচারী কষ্ট, ব্যভিচারী কষ্ট,
ভোগের কষ্ট, ত্যাগের কষ্ট,
মোহের কষ্ট, দ্রোহের কষ্ট,
নষ্ট করার কষ্ট, ভ্রষ্ট হওয়ার কষ্ট,
এমনকি ডিজিটাল প্রেমের কষ্ট হলেও চলবে !
তোমার দেয়া সব কষ্ট আমি কিনে নেব কবিতার দামে।

অধরা, তুমি নাহয় কষ্ট করেই আর একটুখানি নষ্ট হলে,
দোষ কী তাতে, কবির খেতাব তাতেই যদি আমার মেলে?
 
অক্ষম আমি।
কবিঃ ডাঃ আফতাব হোসেন





দেবতার বরপুত্র নই আমি
সবাইকে দিয়ে কি সব কিছু হয় ?
আমিও পারি না অনেক কিছুই
কবিতার নামে যা লিখি,
ঠিকানা বিহীন চিঠির মতো, গন্তব্য-হীন …

শব্দের পারিজাত হয় না আমার তোলা,
শুধু ভুল শব্দে গাঁথি ভুল মালা!
জোনাকির আলোয় কাটে না অন্ধকার
কৃষ্ণপক্ষের চাঁদ নিঃশেষ প্রায়
কুয়াশা গিলে খেয়েছে শেষ রাতের জোছনা!

জানালার কার্নিশ ছুঁয়ে থাকা মেঘ
ঝিঁঝিঁদের ডাক
বিজলির আর্তনাদ
জারুল বনে ডাহুকের কান্না
সব অর্থহীন, পাগলের প্রলাপ!

তার চেয়ে এই ভালো,
কষ্টগুলো বুকের মাঝে, যত্ন করে লুকিয়ে রাখি,
একলা রাতে ঘুম না এলে, উল্টে পাল্টে দেখতে থাকি!
 
ভালোবাসা কারে কয় ?
কবিঃ ডাঃ আফতাব হোসেন





ভালোবাসা কি ঘুমহীন চোখ, একাকী নিঝুম রাত?
জেগে দেখা স্বপ্ন, হাতের মুঠোয় একটি কোমল হাত ।
ভালোবাসা কি কিশোরী ভোর, অঘোর অচেনা ঘুম?,
জানালার পাশে পরকীয়া রোদ, কপালে সিঁদুর চুম।

ভালোবাসা কি পড়া ভুল করা, মফিজ স্যারের ধমক?
আড় চোখে দেখা কবুতর বুক, হঠাৎ বিষম চমক!
ভালোবাসা কি উচ্ছল করিডোর, থমকে দাঁড়িয়ে পড়া?
ঝর্ণা হাসিতে দুলছ তুমি, আর ভাঙ্গছে আমার ধরা।

ভালোবাসা কি গলির মোড়, অলস দাঁড়িয়ে থাকা?
হাতে সিগ্রেট, ধূসর ক্যানভাস, তোমার ছবি আঁকা।
ভালোবাসা কি বিষণ্ণ বিকেল, একই পথে হেঁটে চলা?
খোলা ছাদে সাঁঝ আনমনা, নিজের সাথে কথা বলা।

ভালোবাসা কি ব্যাকুল এষণ, শুধু কাছে পেতে চাওয়া?
আগুন ভরা তোমার শরীর, আমি মোম, গলে যাওয়া।
ভালোবাসা কি হুড তোলা রিক্সা, অঝোর অমল বৃষ্টি ?
ঠোঁট ছোঁয়া নথ, নিশপিশ হাত, ছুঁয়ে দিলেই অনাসৃষ্টি!

ভালোবাসা কি কঠিন কয়েদ বুক, হাজার না বলা কথা?
সংকোচ দেয়ালে মাথা কোটা, পেয়েও না পাওয়ার ব্যথা।
ভালোবাসা কি থমকে যাওয়া সময়, হৃদয়ে তুমুল ঝড় ?
হঠাৎ সাহসী হওয়া, ভ্রষ্ট মোহে ভুলে যাওয়া সব ডর।

ভালোবাসা কি নীল খামে চিঠি, ঠিকানা-হীন, ফাঁকা?
ভুল দরজায় কড়া নাড়া, ফুটপাথে বেওয়ারিশ পড়ে থাকা।
ভালোবাসা কি ডায়রির পাতা, লেপটানো গোলাপ ফুল ?
কবিতার হিজিবিজি, প্রেমের প্রলাপ, ভুলের মাশুল।

অধরা, তুমি কি বলতে পারো, ভালোবাসা কারে কয়?
এ কি শুধু পেতে চাওয়া? নাকি পেয়ে হারানোর ভয়?
ভালোবাসা কি শুধুই একে অন্যে হয়ে যাওয়া লীন?
নাকি ভালোবাসা বিরহে অমর আর মিলনে মলিন?
 
তিস্তা পাড়ের মেয়ে

কবিঃ ডাঃ আফতাব হোসেন।




কাজল মেয়ে উদাস চোখে বসে গাছে নীচে,
ভেবে সারা একা একা, জীবনটা কি মিছে ?
বিলের জলে পানকৌড়ি ডুব দিয়ে মাছ ধরে,
জলের মেয়ের বুকের ভেতর কেমন জানি করে।

কত পাখি আসে বিলে, কত পাখি যায়,
পাখা যদি থাকত মেয়ের উড়াল দিত বায়।
দূরে বহে তিস্তা নদী, তুফান যে তার ভারি,
ছোট্ট নায়ে নদীর মেয়ে কেমনে দেবে পাড়ি?

নদীর ওপার থাকে যে তার প্রাণের সুজন মাঝি,
আসবে বলে সেই যে গেল, আসল না তো আজি!
বনের মেয়ে বন বাদারে ঘোরে মনের দুঃখে,
না জানি সেই অচিন মাঝি আছে কত সুখে।

পল্লী বালার মনের জ্বালা বুঝবে সে আর কবে?
মরলে ডুবে নদীর জলে, বুঝবে সেদিন তবে।
বুক ফাটে তো মুখ ফোটে না, গাঁয়ের সরল মেয়ে,
কইতে নারে মনের কথা কারও কাছে যেয়ে।

তিস্তা পাড়ের মেয়ের দুচোখ শুধুই জলে ভরে,
পালিয়ে গেছে চতুর মাঝি মনটি চুরি করে।
 
অন্তিম আকাঙ্ক্ষা

কবিঃ ডাঃ আফতাব হোসেন




দেখতে কি পাও,
কোন আগুনে জ্বলে জ্বলে অঙ্গার এই মন ?
একবার ছুঁয়ে দেখো,
না, পুড়ে যাবে না,
লোনা জলে ডুবে আছে বুকের উঠোন।

শুনতে কি পাও,
কোন না পাওয়ায় হাহাকার করছে এই হৃদয়?
একবার কান পাতো,
না, নিরাশ হবে না,
স্তব্ধ করে দেয়নি হৃৎস্পন্দন নিষ্ঠুর সময়।

জানতে কি চাও,
কোন বাসনায় থিরিথিরি এখনও কাঁপছি আমি ?
একবার স্পর্শ করো,
না, অপবিত্র হবে না,
ক্ষয়িষ্ণু পৌরুষে উঠবে না আর প্রণয় সুনামি !

তবু শুধু একবার, এই বুকে রাখো বুক,
নিভে যাবার আগে শুধু একবার জ্বলে উঠুক,
মৃতপ্রায় আগ্নেয়গিরি হতে হোক শেষ অগ্নুৎপাত,
অতঃপর,নিথর হয়ে যাক এই অতৃপ্ত শরীর অকস্মাৎ !
 
কবি ও কবিতা
কবিঃ ডাঃ আফতাব হোসেন



কেন মঁজে থাকো নষ্ট প্রেমে ?
চক্ষু খুলিয়া দেখো,
মানবতা লুটায় পথের ধুলায়!
তবু মুখ ঢেকে রাখো ?

কোথা সে নজরুল, কোথা সুকান্ত,
রবীন্দ্রনাথ, আল মাহমুদ?
সোনালী অতীত ভুলিয়া সবাই
প্রণয়ে হয়েছ বুঁদ!

মুখের কালি মুছে ভাল সাজলেই
মনের কালি কি মোছে ?
কলমের কালি ঢেলে দাও, যদি
গ্লানি কিছুটা ঘোঁচে!

জেগে ওঠো কবি, লেখো কাব্য
শানিত খন্জর হাতে,
জাগাও জাতির বিকলাঙ্গ বিবেক
নিদারুন কষাঘাতে।
 
হিসেব নিকেশ
কবিঃ ডাঃ আফতাব হোসেন



স্টেথো কানে হৃদপিণ্ডের স্পন্দন শুনেছি শুধু,
শুনিনি হৃদয়ের কান্না শোনায় কেমন।
হাত ছুঁয়ে বুঝেছি নাড়ী কত বেগে ছুটে চলে,
বুঝিনি ছোঁয়ায় জাগে রক্তে কতটা শিহরণ।

পাপড়ির ছায়ায় দেখেছি ধূসর জমিন, রক্তহীন,
দেখিনি কষ্টের মেঘে কীভাবে রক্ত ঝরে।
কতটা হলুদ হলে চোখ, জন্ডিস হয় জানি,
জানিনি প্রতীক্ষায় সে চোখও যায় মরে!

পুষ্টি-হীনতায় শরীর শুকিয়ে যায় বুঝি,
বুঝিনি অবহেলায় শুকিয়ে যায় মন,
শরীরের তাপমাত্রা মেপেছি নির্ভুল,
মাপিনি বুকটা শীতল কেন যে এমন?

শরীর বিশারদ হয়েই কাটালাম জীবন,
মনের খবর কারও রাখিনি কখনও।
ব্যাংকে টাকার অংকই বেড়েছে শুধু
জীবনের হিসেব নিকেশ মেলেনি এখনও।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top