What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Collected সংগৃহীত কবিতার আসর (1 Viewer)

ঋণ
কবিঃ জনাব শামিম রেজা





আমি বহুদিন, তুমিহীন
তোমার আঁচলের গাঁটছাড়া ছেড়ে
কর্কটক্রান্তির পথ ধরে চলে এসেছি পৃথিবীর আরেক গোলার্ধে,
বঙ্গোপসাগরে পা ডুবিয়ে বসে থাকা তুমি
পৃথিবীর মানচিত্রে চিবুকের একটি তিলের মত ক্ষুদ্র
তবু অনায়াসে আমি ছুঁতে পারি তোমায় আঙ্গুলে

স্পর্শহীন করতল, তবু
ভিজি আমি তোমার প্রতিটি ঝুমবৃষ্টিতে
উল্লাসে মাতি তোমার প্রতিটি উৎসবে
তোমার প্রতিটি কম্পন আমাকে খন্ডিত করে
পুড়ি ততোবার, যতোবার তুমি জ্বলো আগুনে
মরি প্রতিবার, তোমার প্রতিটি নিহতের শোকে

এইসব প্রশস্ত সড়ক, ঝকঝকে অমল ফুটপাত
স্কাই স্ক্রাপারস, সার্কাসের দড়ির মত স্পাইরাল সেতু
স্নো ফ্লেকসে ঢেকে যাওয়া শুভ্র শহর
ক্ষনিক মুগ্ধতা দেয়, পুনর্বার টানেনা

মাউন্ট সিয়েরার খাদের কিনার ঘেষে সিনিক ড্রাইভ
টলমল সবুজ লেক, নীল অতলান্তিক সমুদ্র
সমুদ্রের ভেতর হেটে যাওয়া পাথরের পিয়ার ধরে
ক্ষনিক আলোড়ন দেয়, তোলপাড় করেনা

কেবল একবার, একটি দৃশ্য আমাকে ব্যস্ত মাল্টিলেনের সড়কে
হাইস্পিডের গাড়ি থেকে নামিয়ে এনেছিলো, দাঁড় করিয়ে দিয়েছিলো
কয়েকদিনের একটানা বৃষ্টিজমা এক জলাভুমির কাছে
যেরকম তিরতিরে এক জলের বিলের কাছে
আমার অনেক ঋন ছিলো, ঋণ আছে...

আমি একখন্ড 'তোমার' পাড়ে অপার হয়ে বসে থাকি...
 
ভালোবাসা
কবিঃ ডাঃ আফতাব হোসেন।



অধরা, তুমি বলতে পারো, ভালোবাসা কারে কয় ?
এ কি শুধু পেতে চাওয়া, নাকি পেয়ে হারানোর ভয়?
ভালোবাসা কি তৃষিত চাতক চোখ, অবিরাম দেখতে চাওয়া?
ভালোবাসা কি অহেতুক সন্দেহ, অকারণ কষ্ট পাওয়া?
ভালোবাসা কি অধীর উচাটন মন, শুধু কাছে ডাকা ?
ভালোবাসা কি অভিনয় সুনিপুণ, আনমনে হাত রাখা?
ভালোবাসা কি চকিত নরম ছোঁয়া, চঞ্চল চিত্ত আলোড়ন ?
ভালোবাসা কি সযত্নে সরানো আঁচল, রিরংসিত প্রলোভন ?
ভালোবাসা কি কুমুদ কোমল ঠোঁট, হৃদয়ে তুমুল ঝড় ?
ভালোবাসা কি নষ্ট ভ্রষ্ট পথ, ভুলে যাওয়া সব ভয় ডর?
ভালোবাসা কি জেগে দেখা স্বপ্ন, একাকী নিঝুম রাত ?
ভালোবাসা কি অন্তহীন অতৃপ্তি, মিথুন ক্লান্ত হাত ?
ভালোবাসা কি শুধুই একে অন্যে হয়ে যাওয়া লীন?
তবে কেন জাগে সংশয়, ভালবাসা হয় মিলনে মলিন ?
 
রাখাল ও মেঘ বালিকা।
কবিঃ ডাঃ আফতাব হোসেন।



মেঘ বালিকা, মেঘ বালিকা, কোথায় তুমি থাকো ?
বৃষ্টি এলে সবাই ভেজে, তুমি ভেজো নাকো ?
আমি যে ভাই জলের মেয়ে, মেঘের দেশে থাকি,
বৃষ্টি এসে জল ভেজাবে, সাধ্য আছে নাকি ?

জলের মেয়ে, আকাশ বেয়ে, কোথায় তুমি ধাও ?
ইচ্ছে ভারি, মেঘের বাড়ি, আমায় নিয়ে যাও।
মাটির ছেলে, কী যে বলে, পাচ্ছে আমার হাসি,
জলের দেশে আসলে তোমার, পাবে বেদম কাশি !

জলের পরী, দুষ্টু ভারি, দিচ্ছ কেন ভয় ?
একটুখানি ভিজলে জলে, কাশি কি আর হয় ?
আহা খোকা, কেমন বোকা, নেই যে তোমার ডানা,
ধুলোর ছেলে, ধরায় থাকো, উড়তে তোমার মানা।

আকাশ জুড়ে, চলছ উড়ে, ভাসছ মেঘের ভেলায়,
চাঁদের সাথে লুকোচুরি, মাতছ হাসি খেলায়।
বোকা রাখাল, দেখছ মাকাল, জলের আবার হাসি ?
বুকটা ফাটে, বজ্রনাদে, কাঁদতে ভালোবাসি।

মেঘের মেয়ে, দেখো চেয়ে, আমার ছোট্ট ঘরে,
পেলে তোমায়, ভালোবাসায়, রাখব যতন করে।
তোমরা মানুষ, উড়াও ফানুস, আজও স্বপ্ন দেখো ?
মিথ্যে আশায়, জলের ভাষায়, প্রেমের প্ত্র লেখো !

মেঘের কন্যা, হব ধন্য, একবার তোমায় ছুঁলে,
এই জীবনে, না পাওয়া সব, কষ্ট যাব ভুলে।
রাখাল ছেলে, রাখাল ছেলে, সত্যি আমায় চাও ?
কাব্য লিখে জলের বুকে ভাসিয়ে দিও নাও।

কাব্য লিখতে পারি না হায়, থাকো কত দূরে ?
কোথায় পাব তোমার দেখা, কোন সে অচিন পুরে ?
মেঘ বালিকার চোখের জলে, বইছে কষ্ট নদী,
পাবে দেখা, সেই নদীতে নৌকা ভাসাও যদি !
 
ফুলপরী।
কবিঃ ডাঃ আফতাব হোসেন ।


আমি তার এক বুড়ো দাদা,
দূরত্ব যার হয়নি বাধা,
ভালোবাসার বাঁধন এমন-
সুখে দু:খে হাসা কাঁদা।

ফুলের মালা খোঁপায় পরে,
মিষ্টি হাসি মুখে ধরে,
পাঠায় চিঠি হাওয়ার পাখায়-
বাঁধতে রাখি আমার করে।

তার নাম দিয়েছি ফুলপরী,
প্রথম দেখায় আদর করি,
সেই পরীটার জন্মদিনে-
জীবন সুখে উঠুক ভরি।

আকাশ ভরা যত তারা,
নদীর বুকে জলের ধারা,
কাশবনে আজ জোছনা দোলে-
নেচে গেয়ে পাগলপারা ।
 
মন…
কবিঃ ডাঃ আফতাব হোসেন।


মনটা আমার আকাশ হত,
ভাসতে যদি মেঘের মতো,
ভালোবাসার আলতো ছোঁয়ায়-
ভুলে যেতাম কষ্ট যত।

মনটা আমার হত নদী,
প্রেমের তরী বাইতে যদি,
ছলাত ছলাত শব্দে তুলে-
বয়ে যেতাম নিরবধি।

মনটা আমার হত যে জল,
রইতাম ছুঁয়ে পাপড়ি যুগল,
কাজল চোখে কান্না পেলে-
চুমে দিতাম তোমার কপোল।

হল না যে তোমায় পাওয়া,
মন আমার আজ উদাস হাওয়া,
চলে গেলে উড়িয়ে আঁচল-
দেখলাম বসে তোমার যাওয়া।

মন এখন এক পাগলা ঘোড়া,
চাইলেও আর দেয় না ধরা,
রইল লাগাম তোমার হাতে-
হলাম আমি ছন্নছাড়া।
 
যেতে চাই কিন্তু যাইনা
কবিঃ জনাব শামিম রেজা


দুরত্বকে দুর্গম ভাবিনি কোনদিন
তুমি চাইলেই পাড়ি দিতে পারি চৌদ্দ হাজার মাইল
এয়ার বাসের ছোট্ট জানালায় পরিযায়ী মেঘ দেখতে দেখতে
স্যাটেলাইট বার্তায় তুমি অনায়াসে জেনে যেতে পারো
আমার ইঞ্চি ইঞ্চি এগিয়ে আসার খবর
আমার আগেও তোমার কাছে পৌঁছেছে
মোঘল সুলতানেরা তাদের আয়েশী হাতিতে দুলে দুলে
কিংবা তারও আগে বনিক নাবিক
সন্ধ্যাতারার দিকে কম্পাস ঘুরিয়ে
আরব্য দুতেরাও এসেছিলো দ্রুতগামী ঘোড়ার ক্ষুরে
ধুলোর ঝড় উঠিয়ে সাহারায়
তুমি চাইলে আমি জুল ভার্নের ফিকশনের মত
পৃথিবী ঘুরে তোমার কাছে আসতে পারি দ্রুততম সময়ে
অথবা আদিম সেপিয়েন্সদের মত সুদীর্ঘ পথ পায়ে হেঁটে
যেমন তারা গিয়েছিলো পূর্ব আফ্রিকা থেকে দক্ষিন এশিয়ায়
অথচ প্রায়শই আমি দুঃস্বপ্নের ভেতর
সামান্য এক সাঁকো ভেঙ্গে পৌনপূনিক পড়ে যাই
তোমার কাছে অনাহুত যেতে চাই বলে.....
 
Last edited:
মুখোমুখি শব্দগুলো

মূল লেখকঃ জনাব শামিম রেজা



শব্দ শুধু মাত্রার নীচে দাঁড়িয়ে থাকা কতক অক্ষর নয়,
তারও আছে ইন্দ্রিয় সমেত শরীর
সেও চায় প্রতিশব্দের মুখোমুখি বসতে
ধোঁয়া ওঠা চায়ের সাথে বাষ্প হয়ে উড়ে যেতে
শব্দেরাও বহুমাত্রিক হয়
কিছু অকপট, কিছু দ্বিধা জড়সড়
কিছু বাহু ঘেষা, কিছু দূরতম
কিছু উদ্ধত, কিছু অবনত
শব্দেরও ভাষা থাকে,
থাকে দুই শব্দের মাঝখানে অনুচ্চারিত আড়াল
সব বলা হয়ে যাওয়ার পরও কিছু ধুসরতা, অস্পষ্ট দোলাচল
শব্দেরাও মাঝে মাঝে সাজে অন্তমিলে
ফিরে ফিরে আসে বারবার অনুপ্রাসে
কোন ব্যাকুল কবিতার যোগ্য হবে বলে
শব্দেরাও অপেক্ষায় থাকে
একটি শব্দ তার প্রতিশব্দের
প্রতিত্তর না পেলে তারাও আর্দ্র হয় অভিমানে
দূরতম পাহাড়ে বাঁধা পেয়ে ফিরে আসে প্রতিধ্বনিতে
শব্দেরা একবার বের হলে আর ঘরে ফেরেনা
কেউ তারে তুলে না নিলে শ্রবনে
মহাকালে সে হারায়
 
গোঁজামিল ত্রিভূজের উপপাদ্য

মূল লেখকঃ জনাব শামিম রেজা



সে তোমাকে পায়। আর
তোমাকে পাওয়ার গল্প আমকে শোনায়।
তুমি নাকি তোমার মুখশ্বাসের ভাপে
তার চশমার কাঁচ ঘোলা করে ওড়নার খুঁটে মুছে দাও।
তুমি নাকি তার অগোছালো চুল আচড়ে দাও আঙ্গুলে
আবার এলোমেলো করো পরিপাটি চুল অদ্ভুত খেয়ালে।
উৎসুক পথচারীদের সন্দেহ উপেক্ষা করে
ওর হাত ধরে হাটো, চা খাও এক কাপে টং এর টুলে ।
ওর বলা শেষ হলে, আমি খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে জিজ্ঞেস করি ওকে
তুমি কি কখনও হঠাত আনমানা হয়ে যাও অনর্গল কথা বলার ফাঁকে
হাসতে হাসতে হঠাত কি উদাস হয়ে যাও? এক ফোঁটা জল কি জমে
চোখের গোপনে !
সে তোমাকে পায়, আর
তোমাকে পাওয়ার গল্প আমাকে শোনায়
অথচ আমি শুনতে চাই সে কখন তোমাকে পায়না...
 

Users who are viewing this thread

Back
Top