What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

পবিত্রতা অর্জন সম্পর্কিত বিবিধ মাসায়েল (2 Viewers)

মৃত পশুর চামড়া দ্বারা তৈরী পাত্র ব্যবহারের হুকুম :

যে পশুর গোশত খাওয়া হালাল সে পশু মৃত্যুবরণ করলে তার চামড়া লবণ বা অনুরূপ পদার্থ দ্বারা পাকা করলে তা পবিত্র হয় এবং তা ব্যবহার করা জায়েয। পক্ষান্তরে যে পশুর গোশত খাওয়া হারাম তার চামড়া পাকা করার মাধ্যমে পবিত্র হয় না এবং তা ব্যবহার করাও জায়েয নয়। এ প্রসঙ্গে হাদীছে এসেছে,

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ : سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى الله عَليْهِ وسَلَّمَ يَقُوْلُ : أَيُّمَا إِهَابٍ دُبِغَ فَقَدْ طَهُرَ.

ইবনু আববাস (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি, ‘যে চামড়া পাকা করা হয় তা পবিত্র’।
( মুসলিম, হা/৩৬৬; তিরমিযী, হা/১৬৫০।) অন্য হাদীছে এসেছে, মায়মূনা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, এক সময় মায়মূনার এক দাসীকে ছাদাক্বা হিসাবে একটি ছাগল দেওয়া হয়েছিল। একদিন সেটা মরে গেল (তা ফেলে দেওয়া হ’ল)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) একদা তার পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় বললেন, তোমরা এর চামড়া খুলে পাকা করে নিলে না কেন? তাহ’লে প্রয়োজনে ব্যবহার করে উপকৃত হ’তে পারতে। সবাই বলল, ওটা মরে গিয়েছিল তাই। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, মরে গেলে তো তা খাওয়া হারাম’ (কিন্তু তার চামড়া ব্যবহার করা তো হারাম নয়)। (মুসলিম, হা/৩৬৩; ইবনু মাজাহ, হা/৩৬১০।)

অতএব যে পশুর গোশত খাওয়া হালাল, সে পশু মারা গেলে তার পাকাকৃত চামড়া দ্বারা তৈরী পাত্র ব্যবহার করা জায়েয। শায়খুল ইসলাম ইবনে তায়মিয়া এবং মুহাম্মাদ বিন ছালেহ আল-উছায়মীন (রহঃ) অনুরূপ ফৎওয়া প্রদান করেছেন। (শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমিয়া, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ২১/১০৩; শারহুল মুমতে আলা যাদিল মুসতাকনি, ১/৯২।)
 
পেশাব-পায়খানা সম্পর্কিত মাসআলা

ইসতিনজা তথা মল-মূত্র ত্যাগের পর পবিত্রতা অর্জন :

মল-মূত্র ত্যাগের পর পবিত্রতা অর্জনের দু’টি মাধ্যম রয়েছে। তা হ’ল-

১- ইসতিনজা : পানি দ্বারা ধৌত করে পবিত্রতা অর্জন করা।

২- ইসতিজমার : পবিত্র ঢিলা অথবা পাথর কিংবা অনুরূপ পবিত্র বস্ত্ত দ্বারা মাসেহ করে পবিত্রতা অর্জন করা।

উল্লিখিত দু’টি মাধ্যমের যেকোন একটি দ্বারা মল-মূত্র ত্যাগের পরে পবিত্রতা অর্জন করা জায়েয।

عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ يَقُوْلُ كَانَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَدْخُلُ الْخَلاَءَ فَأَحْمِلُ أَنَا وَغُلاَمٌ نَحْوِى إِدَاوَةً مِّنْ مَّاءٍ وَعَنَزَةً فَيَسْتَنْجِى بِالْمَاءِ.

আনাস ইবনু মালেক (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) টয়লেটে প্রবেশ করতেন, তখন আমি ও আমার মত একজন গোলাম একটি চামড়ার তৈরী ছোট পাত্রে পানি ও একটি বর্শা বা বল্লম নিয়ে যেতাম। অতঃপর তিনি পানি দ্বারা ইসতিনজা করতেন। (মুসলিম, হা/২৭১।)
 
আর যদি কেহ ইসতিজমার তথা পাথর বা অনুরূপ কোন পবিত্র বস্ত্ত যেমন- ঢিলা, টিস্যু, কাগজ ইত্যাদি দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করতে চায়, তাহ’লে সে যেন তিনবারের কম মাসেহ না করে।
عَنْ سَلْمَانَ قَالَ قِيْلَ لَهُ قَدْ عَلَّمَكُمْ نَبِيُّكُمْ صلى الله عليه وسلم كُلَّ شَىْءٍ حَتَّى الْخِرَاءَةَ. قَالَ فَقَالَ أَجَلْ لَقَدْ نَهَانَا أَنْ نَسْتَقْبِلَ الْقِبْلَةَ لِغَائِطٍ أَوْ بَوْلٍ أَوْ أَنْ نَسْتَنْجِىَ بِالْيَمِيْنِ أَوْ أَنْ نَسْتَنْجِىَ بِأَقَلَّ مِنْ ثَلاَثَةِ أَحْجَارٍ أَوْ أَنْ نَسْتَنْجِىَ بِرَجِيْعٍ أَوْ بِعَظْمٍ.
সালমান (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, তাকে বলা হ’ল, তোমাদের নবী (ছাঃ) তোমাদেরকে সব কিছুই শিক্ষা দিয়েছেন। এমনকি পায়খানা করার নিয়মও শিক্ষা দিয়েছেন। তিনি বললেন, হ্যাঁ, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) নিষেধ করেছেন, পেশাব-পায়খানার সময় ক্বিবলার দিকে মুখ করতে, ডান হাত দ্বারা ইসতিনজা করতে, তিনটির কম পাথর (ঢিলা) দ্বারা ইসতিনজা করতে, গোবর অথবা হাড্ডি দ্বারা ইসতিনজা করতে।
( মুসলিম, হা/২৬২।) অন্য হাদীছে এসেছে,
عَنْ عَائِشَةَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِذَا ذَهَبَ أَحَدُكُمْ إِلَى الْغَائِطِ فَلْيَذْهَبْ مَعَهُ بِثَلاَثَةِ أَحْجَارٍ يَسْتَطِيْبُ بِهِنَّ فَإِنَّهَا تُجْزِئُ عَنْهُ.

আয়েশা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘যখন তোমাদের কেউ পায়খানায় যাবে, সে যেন তিনটি পাথর নিয়ে যায়। সে তা দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করবে। আর এটাই তার জন্য যথেষ্ট হবে’। (আবু দাউদ, ‘পাথর দ্বারা ইসতিনজা করা’ অনুচ্ছেদ, হা/৪০।)
 
পেশাব-পায়খানা করার সময় ক্বিবলার দিকে মুখ অথবা পিঠ করে বসার হুকুম :

খোলা মাঠে পেশাব-পায়খানা করার সময় ক্বিবলার দিকে মুখ অথবা পিঠ ফিরে বসা জায়েয নয়।
عَنْ أَبِيْ أَيُّوْبَ الأَنْصَارِيِّ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ : إِذَا أَتَيْتُمُ الْغَائِطَ فَلاَ تَسْتَقْبِلُوا الْقِبْلَةَ، وَلاَ تَسْتَدْبِرُوْهَا وَلَكِنْ شَرِّقُوْا، أَوْ غَرِّبُوْا قَالَ أَبُوْ أَيُّوْبَ فَقَدِمْنَا الشَّأْمَ فَوَجَدْنَا مَرَاحِيْضَ بُنِيَتْ قِبَلَ الْقِبْلَةِ فَنَنْحَرِفُ وَنَسْتَغْفِرُ اللهَ تَعَالَى.
আবু আইয়ূব আনছারী (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, নবী করীম (ছাঃ) বলেছেন, ‘যখন তোমরা পায়খানা করতে যাও, তখন ক্বিবলার দিকে মুখ করবে না কিংবা পিঠও দিবে না, বরং তোমরা পূর্ব দিকে অথবা পশ্চিম দিকে ফিরে বসবে’। আবু আইয়ূব আনছারী (রাঃ) বলেন, আমরা যখন সিরিয়ায় এলাম তখন পায়খানাগুলো ক্বিবলামুখী বানানো পেলাম। আমরা কিছুটা ঘুরে বসতাম এবং আল্লাহ তা‘আলার নিকট তওবা ইসতিগফার করতাম।
(বুখারী, ‘মদীনাহ, সিরিয়া ও (মদীনার) পূর্ব দিকের অধিবাসীদের ক্বিবলাহ্’ অনুচ্ছেদ, হা/৩৯৪; বাংলা অনুবাদ, তাওহীদ পাবলিকেশন্স ১/২০৩।)

যেহেতু মদীনাবাসীদের ক্বিবলাহ দক্ষিণে, সেহেতু আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) ক্বিবলার দিকে মুখ অথবা পিঠ না করে পূর্ব এবং পশ্চিমে মুখ অথবা পিঠ ফিরে পেশাব-পায়খানা করার নির্দেশ দিয়েছেন। সুতরাং আমাদের ক্বিবলাহ যেহেতু পশ্চিম দিকে সেহেতু খোলা মাঠে পেশাব-পায়খানা করার সময় উত্তর ও দক্ষিণে মুখ অথবা পিঠ ফিরে বসতে হবে।
 
পক্ষান্তরে যদি ঘরের মধ্যে পেশাব-পায়খানা করে অথবা ক্বিবলার দিকে কোন দেয়াল থাকে তাহ’লে ক্বিবলার দিকে মুখ অথবা পিঠ ফিরে পেশাব-পায়খানা করা জায়েয।
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ قَالَ ارْتَقَيْتُ فَوْقَ ظَهْرِ بَيْتِ حَفْصَةَ لِبَعْضِ حَاجَتِيْ فَرَأَيْتُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقْضِيْ حَاجَتَهُ مُسْتَدْبِرَ الْقِبْلَةِ مُسْتَقْبِلَ الشَّأْمِ.
আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আমার বিশেষ এক প্রয়োজনে হাফছাহ (রাঃ)-এর ঘরের ছাদে উঠলাম। তখন দেখলাম, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ক্বিবলার দিকে পিঠ দিয়ে শামের দিকে মুখ করে তাঁর প্রয়োজন পূর্ণ করতে (পেশাব-পায়খানা) বসেছেন।
(বুখারী, ‘গৃহের মধ্যে পেশাব পায়খানা করা’ অনুচ্ছেদ, হা/১৪৮; বাংলা অনুবাদ, তাওহীদ পাবলিকেশন্স ১/৯১।) অন্য হাদীছে এসেছে,
عَنْ مَرْوَانَ الأَصْفَرِ قَالَ رَأَيْتُ ابْنَ عُمَرَ أَنَاخَ رَاحِلَتَهُ مُسْتَقْبِلَ الْقِبْلَةِ ثُمَّ جَلَسَ يَبُوْلُ إِلَيْهَا فَقُلْتُ يَا أَبَا عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَلَيْسَ قَدْ نُهِىَ عَنْ هَذَا قَالَ بَلَى إِنَّمَا نُهِىَ عَنْ ذَلِكَ فِى الْفَضَاءِ فَإِذَا كَانَ بَيْنَكَ وَبَيْنَ الْقِبْلَةِ شَىْءٌ يَسْتُرُكَ فَلاَ بَأْسَ.
মারওয়ান আল-আছফার (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি ইবনু ওমর (রাঃ)-কে তাঁর উষ্ট্রীর উপর ক্বিবলার দিকে মুখ করে বসে থাকতে দেখেছি। অতঃপর তিনি বসে পেশাব করতে লাগলেন। তখন আমি বললাম, হে আবু আব্দুর রহমান! এই ব্যাপারে কি নিষেধ করা হয়নি? তিনি বললেন, হ্যাঁ, এই ব্যাপারে নিষেধ করা হয়েছে, তবে তা খোলা জায়গায়। অতএব তোমার মাঝে এবং ক্বিবলার মাঝে যদি এমন কিছু থাকে যা তোমাকে

আড়াল করবে, তাহ’লে কোন অসুবিধা নেই। (আবু দাউদ, হা/১১, দারাকুতনী, হা/১৫৮, ইবনে হাজান এবং নাছিরুদ্দীন আলবানী হাদীছটিকে হাসান বলেছেন। দ্রঃ ইরওয়াউল গালীল হা/৬১।)
 
টয়লেটে প্রবেশকারীর জন্য সুন্নাত কাজ সমূহ :

(ক) বিসমিল্লাহ বলে টয়লেটে প্রবেশ করা :

আলী (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, سِتْرُ مَا بَيْنَ الْجِنِّ وَعَوْرَاتِ بَنِيْ آدَمَ إِذَا دَخَلَ الْكَنِيْفَ أَنْ يَّقُوْلَ : بِسْمِ اللهِ. ‘আদম সন্তানের লজ্জাস্থান এবং জিনের মাঝে পর্দা হ’ল যখন সে টয়লেটে প্রবেশ করবে, তখন বলবে ‘বিসমিল্লাহ’। (ইবনু মাজাহ, হা/২৯৭; তিরমিযী, হা/৬০৬; নাছিরুদ্দীন আলবানী হাদীছটিকে ছহীহ বলেছেন। দ্রঃ ছহীহুল জামে আছ-ছাগীর, হা/৩৬১১।)

(খ) টয়লেটে প্রবেশের দো‘আ পাঠ :

عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِذَا دَخَلَ الْخَلاَءَ قَالَ: اللَّهُمَّ إِنِّيْ أَعُوْذُ بِكَ مِنَ الْخُبُثِ وَالْخَبَائِثِ.
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) বর্ণনা করেন, নবী করীম (ছাঃ) যখন পায়খানায় প্রবেশ করতেন, তখন তিনি বলতেন, হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে যাবতীয় পুরুষ ও নারী শয়তানদের থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি’। (বুখারী, ‘পায়খানায় প্রবেশের দো‘আ’ অনুচ্ছেদ, হা/৬৩২২, বাংলা অনুবাদ, তাওহীদ পাবলিকেশন্স ৫/৫৮৮।)
অতএব টয়লেটে প্রবেশের দো‘আ হ’ল, بِسْمِ اللهِ اللَّهُمَّ إِنِّيْ أَعُوْذُ بِكَ مِنَ الْخُبُثِ وَالْخَبَائِثِ‘আল্লাহর নামে টয়লেটে প্রবেশ করছি। হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে যাবতীয় পুরুষ ও নারী শয়তানদের থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।
 
(গ) টয়লেট থেকে বের হয়ে দো‘আ পাঠ করা :

عَنْ عَائِشَةَ رضى الله عنها أَنَّ النَّبِىَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ إِذَا خَرَجَ مِنَ الْغَائِطِ قَالَ غُفْرَانَكَ.
আয়েশা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, নবী করীম (ছাঃ) যখন পায়খানা হ’তে বের হ’তেন তখন বলতেন, غُفْرَانَكَ ‘তোমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি’।
(আবূদাউদ, হা/১৭, তিরমিযী, হা/৭, নাছিরুদ্দীন আলবানী হাদীছটিকে হাসান বলেছেন। দ্রঃ ছহীহুল জামে আছ-ছাগীর, হা/৪৭০৭।)

(ঘ) নিতম্ব মাটির নিকটবর্তী করার পরে কাপড় উত্তোলন করা :

عَنِ ابْنِ عُمَرَ أَنَّ النَّبِىَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ إِذَا أَرَادَ حَاجَةً لاَ يَرْفَعُ ثَوْبَهُ حَتَّى يَدْنُوَ مِنَ الأَرْضِ.
ইবনু ওমর (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) যখন (পেশাব-পায়খানার) প্রয়োজন মেটানোর ইচ্ছা করতেন, তখন তিনি মাটির নিকটবর্তী না হয়ে কাপড় উত্তোলন করতেন না। (আবূদাউদ, হা/১৪, তিরমিযী, হা/১৪, নাছিরুদ্দীন আলবানী হাদীছটিকে ছহীহ বলেছেন। দ্রঃ ছহীহুল জামে আছ-ছাগীর, হা/৪৬৫২।)

(ঙ) টয়লেটে প্রথমে বাম পা দিয়ে প্রবেশ করা এবং ডান পা দিয়ে বের হওয়া। এর দ্বারা বাম দিকের চেয়ে ডান দিকের ফযীলত বৃদ্ধি করা হয়। যেমন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ডান দিকের ফযীলত বেশী হওয়ার কথা বর্ণনা করেছেন। অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) মসজিদে প্রথমে ডান পা দিয়ে প্রবেশ করতে বলেছেন এবং বাম পা দিয়ে বের হ’তে বলেছেন। জুতা পরিধান করার সময় ডান পা দিয়ে শুরু করতে বলেছেন এবং খোলার সময় বাম পা দিয়ে শুরু করতে বলেছেন। অনুরূপভাবে টয়লেটে প্রবেশের সময় প্রথমে বাম পা দিয়ে প্রবেশ করতে হবে এবং বের হওয়ার সময় প্রথমে ডান পা দিয়ে বের হ’তে হবে। কেননা টয়লেটের ভেতরের চেয়ে বাহির উত্তম। (শারহুল মুমতে আলা যাদিল মুসতাকনে ১/১০৮; ফিক্বহুল মুয়াস্সার, পৃঃ ১০।)
 
পেশাব-পায়খানাকারীর উপর হারাম কাজ সমূহ :

(ক) আবদ্ধ পানিতে পেশাব করা :

عَنْ جَابِرٍ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ نَهَى أَنْ يُبَالَ فِى الْمَاءِ الرَّاكِدِ.
জাবের (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) সূত্রে বর্ণনা করেন, ‘নিশ্চয়ই তিনি বদ্ধ পানিতে পেশাব করতে নিষেধ করেছেন’। (মুসলিম, হা/২৮১; বুখারী, ‘আবদ্ধ পানিতে পেশাব করা’ অনুচ্ছেদ, হা/২৩৯।)

অন্য হাদীছে এসেছে,
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم : لاَ يَبُولَنَّ أَحَدُكُمْ فِي الْمَاءِ الدَّائِمِ وَلاَ يَغْتَسِلُ فِيْهِ مِنَ الْجَنَابَةِ.

আবু হুরায়রাহ্ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ যেন বদ্ধ পানিতে পেশাব না করে এবং জানাবাতের অবস্থায় গোসল না করে’। (আবূদাউদ, ‘আবদ্ধ পানিতে পেশাব করা’ অনুচ্ছেদ, হা/৭০।)
 
পবিত্রতা অর্জন সম্পর্কিত বিবিধ মাসায়েল


ভূমিকা :

আল্লাহ তা‘আলা মানব জাতিকে একমাত্র তাঁর ইবাদত করার জন্য সৃষ্টি করেছেন এবং ইবাদতের যাবতীয় নিয়ম-পদ্ধতি অহী মারফত জানিয়ে দিয়েছেন, যা কুরআন ও হাদীছ গ্রন্থ সমূহে বিদ্যমান। আর সকল ইবাদতের মধ্যে শ্রেষ্ঠ ইবাদত হল ছালাত, যা পবিত্রতা অর্জন ব্যতীত বৈধ নয়। এ কারণে সকল মুহাদ্দিছ এবং ফক্বীহগণ ত্বাহারাহ বা পবিত্রতা অধ্যায় দিয়ে কিতাব লিখা শুরু করেছেন। অতএব পবিত্রতা অর্জনের গুরুত্ব অপরিসীম। নিম্নে এ সম্পর্কে ধারাবাহিকভাবে আলোচনা করা হ’ল।-

الطهارة (ত্বহারাহ্)-এর আভিধানিক অর্থ : النظافة، والنزاهة، والنقاوة অর্থাৎ পবিত্রতা, পরিচ্ছন্নতা ও বিশুদ্ধতা। (আল-মু‘জামুল ওয়াসীত, (বৈরুত : দারু এহইয়াইত তুরাছ আল-আরাবী), পৃঃ ৩৮৭।)


الطهارة (ত্বহারাহ্)-এর পারিভাষিক অর্থ : পারিভাষিক অর্থে الطهارة (ত্বহারাহ্)দু’টি অর্থ প্রদান করে। যথা :

১- طهارة معنوية তথা অর্থগত দিক থেকে পবিত্রতা : তা হ’ল طهارة القلب অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলার ইবাদতের মধ্যে কোন ব্যক্তি বা বস্ত্তকে শরীক করা থেকে নিজের অন্তরকে পবিত্র রাখা এবং আল্লাহ তা‘আলার মুমিন বান্দার উপর হিংসা-বিদ্বেষ ও গোপন শত্রুতা থেকে নিজেকে বিরত রাখা।

আর এটা কোন অপবিত্র বস্ত্ত থেকে শরীর পবিত্র করার চেয়ে অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ। কেননা শিরক দ্বারা অপবিত্র শরীরকে পানি দ্বারা ধৌত করে পবিত্র করা সম্ভব নয়। যদিও বাহ্যিক দিক থেকে তার শরীর অপবিত্র নয়। অর্থাৎ তার শরীর স্পর্শ করলে কেউ অপবিত্র হবে না এবং তার উচ্ছিষ্ট অপবিত্র নয়।


আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا إِنَّمَا الْمُشْرِكُوْنَ نَجَسٌ ‘হে ঈমানদারগণ, নিশ্চয়ই মুশরিকরা নাপাক বা অপবিত্র’ (তওবা ২৮)।
খুব ভালো লাগলো তথ্যবহুল পোস্ট

কিছু তথ্য আমার জানা ছিলো না, তা আজ জানলাম, তবে যদি বাংলা উচ্চারণ সহ লিখতেন তবে যারা আরবি পড়তে পারেনা তাদের জন্য একটু সহজ হতো, ভালো লেখার জন্য ধন্যবাদ ।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top