What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

মৌসুমি ফলে পুষ্টিচাহিদা পূরণ (1 Viewer)

xZQXrML.jpg


সময় এখন গ্রীষ্মকাল। প্রচণ্ড দাবদাহে অস্থির হয়ে উঠেছে মানুষের জীবন। এ সময় ভাইরাস জ্বর, জন্ডিস, ডায়রিয়ায় মানুষ বেশি আক্রান্ত হয়। এ ছাড়া অনেকে অ্যালার্জির সমস্যায়ও ভোগে। তা ছাড়া ঘামের মাধ্যমে শরীর থেকে প্রচুর পানি বের হয়ে যায়। ফলে শরীরে পানির স্বল্পতা ও ইলেকট্রোলাইটে ভারসাম্যহীনতা হয়। সহজেই শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়ে। শরীরকে সতেজ ও সুস্থ রাখতে প্রয়োজন আমাদের দৈনন্দিন পুষ্টিচাহিদা পূরণ। রোগ ঠেকাতে ও সতেজ থাকতে মৌসুমি ফল কার্যকর। আবার এই ঋতুতে ফল খুব সহজলভ্য।

মৌসুমি ফলগুলো একদিকে উপাদেয়, অন্য দিকে স্বাস্থ্যকর। কেননা মৌসুমি অসুখ সারাতে প্রয়োজনীয় উপাদান বিদ্যমান থাকে এসব ফলে। দেখে নেওয়া যাক কিছু মৌসুমি ফলের কিছু গুণ।

আম

C6XPXSE.jpg


ছবি: উইকিপিডিয়া

আম শুধু স্বাদে নয়, গুণেও অনন্য। গ্রীষ্মের অন্যতম রসাল এই ফল পুষ্টিগুণে ভরপুর, যা শরীরের ভিটামিনের অভাব পূরণের পাশাপাশি কর্মশক্তি জোগায়। পাকা আম ভিটামিন ‘এ’সমৃদ্ধ। আমের আয়রন, আঁশ, পটাশিয়াম, ভিটামিন সি ও খনিজ উপাদান শরীর সুস্থ–সবল রাখতে সাহায্য করে। ক্যারোটিন চোখ সুস্থ রাখে, সর্দি-কাশি দূর করে। কাঁচা আমে ৯০ মাইক্রোগ্রাম এবং পাকা আমে ৮ হাজার ৩০০ মাইক্রোগ্রাম ক্যারোটিন থাকে।

আম কর্মশক্তি জোগায়। এতে রয়েছে কার্বোহাইড্রেট। প্রতি ১০০ গ্রাম কাঁচা আম ৪৪ কিলোক্যালরি ও পাকা আমে ১০ ক্যালরি শক্তি প্রদান করে। আরও আছে আয়রন, যা অ্যানিমিয়া প্রতিরোধ করে। কাঁচা আমে ৫ দশমিক ৪ ও পাকা আমে ১ দশমিক ৩ মিলিগ্রাম আয়রন পাওয়া যায়। ক্যালসিয়াম হাড় সুগঠিত করে, হাড় ও দাঁতের সুস্থতা বজায় রাখে। কাঁচা আমে ১০ মিলিগ্রাম ও পাকা আমে ১৬ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। আম থেকে ভিটামিন সি পাওয়া যায়। ভিটামিন সি স্কার্ভি রোগ প্রতিরোধ করে।

zbxnssg.jpg


দাঁত, মাড়ি, ত্বক ও হাড়ের সুস্থতা রক্ষা করতেও সাহায্য করে ভিটামিন সি। প্রতি ১০০ গ্রাম কাঁচা আমে ৬৩ মিলিগ্রাম ও পাকা আমে ৪১ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি পাওয়া যায়। আমে বিদ্যমান পটাশিয়াম রক্তস্বল্পতা দূর করে ও হৃদ্‌যন্ত্র সচল রাখতে সাহায্য করে। এই ফলের আঁশ, ভিটামিন ও খনিজ উপাদান অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ, যা হজমে সহায়তা করে। গরমের কারণে হওয়া স্ট্রোকের আশঙ্কা হ্রাসে কাঁচা আম বিশেষ ভূমিকা পালন করে। চোখের নানা রোগ, চুল পড়া, খসখসে চামড়া, হজমের সমস্যা ইত্যাদি দূর করতে পারে আম। রাতকানা ও অন্ধত্ব প্রতিরোধে পাকা আম এমনকি কাঁচা আম মহৌষধ। পরিমিত পরিমাণ আম খেলে শরীরে শর্করার মাত্রা ঠিক থাকে। তবে অতিরিক্ত আম খাওয়া ডায়াবেটিস রোগীর জন্য ক্ষতিকর।

জাম

msxvR9w.jpg


ছবি: উইকিপিডিয়া

বাংলাদেশের সুপরিচিত একটি ফল। আম ও জামের রস একত্রে খেলে বহুমূত্র রোগ ভালো হয়। লোকমুখে প্রচলিত আছে, জামের রস রক্তকণিকা পরিষ্কারে সহায়তা করে। রোগ নিরাময়ে জামের ভেষজ গুণ অনেক। ডায়াবেটিস প্রতিরোধে ও ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য জাম খুবই উপকারী। কারণ, এতে থাকা অ্যান্টিডায়াবেটিক প্রোপার্টিজের কারণে রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়, যা স্টার্চ ও চিনিকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং শরীরে শক্তির জোগান দেয়।

এ ছাড়া জাম ক্যালসিয়াম, লোহা, পটাসিয়াম ও ভিটামিন সি–সমৃদ্ধ। এতে প্রচুর পুষ্টি রয়েছে, যা সুস্বাস্থ্যের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। জামে থাকা প্রচুর পরিমাণে পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম ও লৌহ হাড়ের শক্তি বৃদ্ধির জন্য চমৎকারভাবে কাজ করে। ফলটিতে থাকা এত সব অ্যান্টি উপাদান শরীর থেকে বিষাক্ত ইনফেকশন দূর করতে সাহায্য করে। জন্ডিস নিরাময়, ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে ফলটি। কোরোনার এ সময়ে শরীরের ইমিউনিটি বাড়াতে কার্যকর উপায় হতে পারে জাম। এতে থাকা প্রচুর ভিটামিন-সির কারণে হাই লেভেল ও সাধারণ সিজনাল সমস্যাগুলোর সঙ্গে যুদ্ধ করে শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে আরও শক্তিশালী করে তোলে।

আনারস

Yo8GtwO.jpg


রসের ফল আনারস। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ এবং সি, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও ফসফরাস রয়েছে। এসব অপরিহার্য উপাদান আমাদের দেহের পুষ্টির অভাব পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। সর্দি-কাশিতে আনারস খেলে কাজে দেয়। কৃমি সারাতেও এটি কার্যকর।

স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এ ফলের জুড়ি নেই। হজমশক্তি বৃদ্ধি করতে, ভাইরাসজনিত ঠান্ডা ও কাশি প্রতিরোধে, শরীরের ওজন কমাতে, দাঁত ও মাড়ি সুরক্ষায় আনারসের পুষ্টিগুণ দারুণ কার্যকর। এ ছাড়া আনারস চোখের রেটিনা নষ্ট হয়ে ধীরে ধীরে অন্ধ হয়ে যাওয়া রোগ ‘ম্যাক্যুলার ডিগ্রেডেশন’রোগটি হওয়া থেকে আমাদের রক্ষা করে।

তরমুজ

RjTRCoX.jpg


তরমুজ আমাদের দেশের অতিপরিচিত এবং সবার প্রিয় ফল। এটি এখন প্রায় সব সময়ই পাওয়া যায়। তরমুজে আছে লাইকোপেন, অ্যামিনো অ্যাসিড, ভিটামিন, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও পানি। তরমুজ কেবল খেতেই সুস্বাদু নয়। এতে আছে নানা গুণ। তরমুজ একাধারে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে যেমন সহায়তা করে তেমনি হৃদ্‌যন্ত্রের সুস্থতায় বেশ উপকারী এ মৌসুমি ফল তরমুজ। অন্যদিকে এ ফলের ক্যানসারের মতো রোগ প্রতিরোধের ক্ষেত্রেও বেশ কার্যকর।

তরমুজে থাকা বিশেষ উপাদান ক্যানসারের কোষ বৃদ্ধি রোধে বেশ কাজ করে। যারা অতিরিক্ত ওজন নিয়ে সমস্যায় ভুগছেন তাঁদের খাদ্যতালিকায় জায়গা করে নিতে ফলটি। তরমুজ ওজন কমাতে সহায়তা করে তেমনি আপনার শরীরের কার্যক্ষমতা, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও বেশ সহায়ক। অতিরিক্ত চর্বি কমাতে ও খুব দ্রুত মেদ কমাতে সহায়তা করে তরমুজ। তরমুজের বীজ বেটে ঠান্ডা পানিতে চিনিসহ মিশিয়ে খেলে যকৃৎ পরিষ্কার থাকে।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top