What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

মনীষী চরিতঃ আল্লামা ইহসান ইলাহী যহীর (4 Viewers)

বোমাটি স্টেজের নিচে পেতে রাখা ছিল। এর পূর্বে একটি ফুলদানি মঞ্চে রাখার জন্য জালসার পিছন থেকে পাঠানো হয়েছিল, যেটিতে শক্তিশালী রাসায়নিক দ্রব্য ছিল। বোমা বিস্ফোরণের পর সেখানে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়েছিল। লোকজনের আর্তচিৎকারে সেখানকার আকাশ-বাতাস ভারি হয়ে উঠেছিল। সবাই প্রাণভয়ে দিগ্বিদিক ছুটাছুটি করছিল। ৯ জন ব্যক্তি ঘটনাস্থলেই শহীদ হয়েছিলেন এবং আহত হয়েছিলেন ১১৪ জন। আহত ও নিহতদের পরিস্রুত রক্তে জালসা মাঠ রঞ্জিত হয়ে গিয়েছিল। আশপাশের কয়েকটি বাড়ি ও বিল্ডিংও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। নিহতদের মধ্যে ছিলেন ‘জমঈয়তে আহলেহাদীছ পাকিস্তান’-এর ডেপুটি সেক্রেটারী জেনারেল মাওলানা হাবীবুর রহমান ইয়াযদানী (১৯৪৭-১৯৮৭), মাওলানা আব্দুল খালেক কুদ্দূসী (১৯৩৯-১৯৮৭), ‘আহলেহাদীছ ইয়ুথ ফোর্স’ প্রধান মাওলানা মুহাম্মাদ খান নাজীব, মাওলানা মুহাম্মাদ শফীক খান, জালসার সভাপতি ইহসানুল হক, নাঈম বাদশাহ, রানা যুবায়ের, ফারূক রানা, মুহাম্মাদ আসলাম, মুহাম্মাদ আলম, আব্দুস সালাম, সেলিম ফারূকী প্রমুখ। বোমা বিস্ফোরণের পর আল্লামা যহীর ২০/৩০ মিটার দূরে নিক্ষিপ্ত হন। কিন্তু তখনও তিনি জ্ঞান হারাননি। তাঁকে মারাত্মক আহত অবস্থায় লাহোরের কেন্দ্রীয় মিউহাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি সেখানে পাঁচদিন ইন্টেনসিভ কেয়ারে (নিবিড় পর্যবেক্ষণে) চিকিৎসাধীন থাকেন। (মুহাম্মাদ ছায়েম, শুহাদাউদ দাওয়াহ আল-ইসলামিয়্যাহ ফিল কারনিল ইশরীন (কায়রো : দারুল ফাযীলাহ, ১৯৯২), পৃঃ ১৬৬-৬৭; মুহাম্মাদ বিন ইবরাহীম আশ-শায়বানী, ইহসান ইলাহী যহীর : আল-জিহাদু ওয়াল ইলমু মিনাল হায়াতি ইলাল মামাত (কুয়েত : ১৪০৭ হিঃ), পৃঃ ১৮-২০; ড. যাহরানী, শায়খ ইহসান ইলাহী যহীর, পৃঃ ৬৬; মুমতায ডাইজেস্ট, বিশেষ সংখ্যা-২, পৃঃ ১১৩-১৪; ‘আদ-দাওয়াহ’, সঊদী আরব, সংখ্যা ১১১৫, ৯ নভেম্বর ১৯৮৭, পৃঃ ৩১।)
উন্নত চিকিৎসার জন্য সঊদী আরব যাত্রা :
তাঁর আহত হওয়ার খবর জানতে পেরে শায়খ আব্দুল আযীয বিন আব্দুল্লাহ বিন বায (রহঃ) বাদশাহ ফাহ্দকে সঊদীতে তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা করার জন্য অনুরোধ করেন। ২৯ মার্চ ভোর পৌনে পাঁচটার সময় সঊদী এয়ারলাইন্স যোগে তাঁকে সঊদীতে নিয়ে যাওয়া হয়। পাকিস্তান ত্যাগের পূর্বে বিমানবন্দরে আল্লামা যহীর বলেছিলেন, ‘সঊদীতে চিকিৎসা নেয়ার পর আরো জোরেশোরে ইসলামের খেদমত করব’। সঊদীতে পৌঁছার পর তাঁকে রিয়াদের বাদশাহ ফয়সাল সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ডাক্তাররা তাঁকে তাঁর পা কেটে ফেলার কথা বলেছিলেন। কিন্তু তিনি তাতে সম্মত হননি।
 
শাহাদত লাভ :
পরদিন ৩০ মার্চ ’৮৭ সোমবার ভোর রাত ৪-টার সময় মাত্র ৪২ বছর বয়সে আল্লামা যহীর সেখানে ইন্তেকাল করেন। রিয়াদের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ ‘আল-জামেউল কাবীর’-এ শায়খ বিন বাযের ইমামতিতে তাঁর প্রথম জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। জানাযায় বিপুলসংখ্যক মুছল্লী অংশগ্রহণ করে।
মদীনায় দাফন : দো‘আ কবুল
রিয়াদে জানাযা শেষে সামরিক বিমানযোগে তাঁর লাশ ঐদিন বিকাল পৌনে চারটার দিকে মদীনা বিমানবন্দরে পৌঁছে। সেখান থেকে মসজিদে নববীতে নিয়ে যাওয়া হয়। মসজিদে নববীর ইমাম শায়খ আব্দুল্লাহ আয-যাহিমের ইমামতিতে মসজিদে নববীতে তাঁর দ্বিতীয় জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। জানাযা শেষে তাঁকে মদীনার ‘বাকবী’ কবরস্থানে দাফন করা হয়। এভাবে সত্যিকারের নবীপ্রেমিক ও মদীনাপ্রেমিক আল্লামা যহীরের দো‘আও কবুল হয়। তিনি প্রতিনিয়তই এ দো‘আ করতেন, اَللَّهُمَّارْزُقْنِيْشَهَادَةًفِيْسَبِيْلِكَوَاجْعَلْمَوْتِيْفِيْبَلَدِرَسُوْلِكَ. ‘হে আল্লাহ! তুমি আমাকে তোমার পথে শহীদ করো এবং তোমার নবীর দেশে আমার মৃত্যু লিখে রেখ’। (মুমতায ডাইজেস্ট, বিশেষ সংখ্যা-২, পৃঃ ১১৪-১৫; বিশেষ সংখ্যা-১, পৃঃ ১৪২; ড. যাহরানী, প্রাগুক্ত, পৃঃ ৬৬-৬৯; শাহাদত, মার্চ ২০০৮, পৃঃ ২৩।)
ঘাতক কে?
আল্লামা ইহসান ইলাহী যহীর কাদিয়ানী, শী‘আ, ব্রেলভী প্রভৃতি বাতিল ফিরকাগুলোর বিরুদ্ধে ছিলেন মূর্তিমান চ্যালেঞ্জ। তিনি এদের বিরুদ্ধে দলীলভিত্তিক বইপত্র লিখে ও অগ্নিঝরা বক্তৃতা প্রদান করে তাদের স্বরূপ বিশ্ববাসীর কাছে উন্মোচন করেছিলেন। স্বভাবতই তারা তাঁর ওপর প্রচন্ড ক্ষুব্ধ ছিল। তারা তাঁকে পত্রযোগে ও টেলিফোনে একাধিকবার প্রাণ নাশের হুমকি দিয়েছিল। মাওলানা আতাউর রহমান শেখুপুরী ৩/৪/১৪২১ হিজরীতে আল্লামা যহীরের উপর পিএইচ.ডি ডিগ্রি অর্জনকারী ড. যাহরানীকে জানান, একদিন এক ব্যক্তি আল্লামা ইহসান ইলাহী যহীরকে দেওয়ার জন্য একটি পত্র আমাকে দেয়। তাতে লেখাছিল, ‘আমরা অচিরেই আপনাকে হত্যা করব’। ইরানী বিপ্লবের নেতা ইমাম খোমেনী ঘোষণা করেছিলেন, ‘যে ব্যক্তি ইহসান ইলাহী যহীরের মাথা কেটে আনতে পারবে তাকে ২ লাখ ডলার পুরস্কার দেয়া হবে’। অনেকে ঘোষণা করেছিল, ‘যে ইহসান ইলাহী যহীরকে হত্যা করতে পারবে সে শহীদ’। শত্রুরা তাঁকে হুমকি প্রদান করে এমনটিও বলেছিল, ‘আপনি যখন রাস্তায় হাঁটবেন, তখন আমরা আপনার ওপর দাহ্য পদার্থ নিক্ষেপ করব’। তিনি অনেকবার মৃত্যুর সম্মুখীন হয়েছিলেন। শত্রুরা তাঁকে উদ্দেশ্য করে একবার গুলিও চালিয়েছিল। আমেরিকায় একবার তিনি প্রায় নিহত হতেই বসেছিলেন। (ড. যাহরানী, প্রাগুক্ত, পৃঃ ৬৪।)
 
বাতিলপন্থীদের এতো হুমকি-ধমকি ও প্রাণ নাশের তর্জন-গর্জন সত্ত্বেও তিনি ছিলেন লাপরোয়া। এসবকে তিনি বিন্দুমাত্র তোয়াক্কা না করে সর্বদা নির্ভয়ে সিংহহৃদয় নিয়ে চলতেন। ভয় করতেন স্রেফ আল্লাহকে; পৃথিবীর অন্য কাউকেই নয়। তিনি তাঁর বিভিন্ন বক্তৃতায় সূরা তওবার ৫১ (‘হে নবী আপনি বলুন! আল্লাহ আমাদের জন্য যা লিখে রেখেছেন, তা ব্যতীত কিছুই আমাদের কাছে পৌঁছবে না’) ও সূরা আ‘রাফের ৩৪ নং আয়াত (‘প্রত্যেক সম্প্রদায়ের একটি মেয়াদ রয়েছে। যখন তাদের মেয়াদ এসে যাবে, তখন তারা না এক মুহূর্ত পিছে যেতে পারবে, আর না এগিয়ে আসতে পারবে’) প্রায়ই পেশ করতেন। তিনি ইবনে আববাস (রাঃ)-কে উদ্দেশ্য করে বলা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর নিম্নোক্ত হাদীছটিও উল্লেখ করতেন,وَاعْلَمْأَنَّالْأُمَّةَلَوِاجْتَمَعَتْعَلَىأَنْيَّنْفَعُوْكَبِشَيْءٍلَمْيَنْفَعُوْكَإِلاَّبِشَيْءٍقَدْكَتَبَهُاللهُلَكَ،وَلَوِاجْتَمَعُوْاعَلَىأَنْيَّضُرُّوْكَبِشَيْءٍلَمْيَضُرُّوْكَإِلاَّبِشَيْءٍقَدْكَتَبَهُاللهُعَلَيْكَ.
‘জেনে রেখ! যদি সমস্ত মাখলূক একত্র হয়ে তোমার কোন উপকার করতে চায়, তবুও আল্লাহ তোমার ভাগ্যে যতটুকু লিখে রেখেছেন সেটা ছাড়া তারা তোমার কোন উপকার করতে পারবে না। অনুরূপভাবে তারা যদি সমবেতভাবে তোমার কোন ক্ষতি করতে চায়, তাহলেও আল্লাহ তোমার ভাগ্যে যতটুকু লিখে রেখেছেন সেটা ছাড়া কোন ক্ষতি করতে পারবে না’। (তিরমিযী হা/২৫১৬; মিশকাত হা/৫৩০২ ‘রিক্বাক্ব’ অধ্যায়, ‘আল্লাহর উপর ভরসা ও ছবর’ অনুচ্ছেদ, হাদীছ ছহীহ।) আল্লামা যহীর সঊদীতে রওয়ানা দেয়ার প্রাক্কালে বলেছিলেন, ‘আমি বিভিন্ন ফিরকার বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালাচ্ছিলাম এবং আমার সমালোচনা তাদের মনঃপীড়ার কারণ হচ্ছিল। তারা এর সাথে জড়িত থাকতে পারে বলে সন্দেহ হচ্ছে’। (মুমতায ডাইজেস্ট, বিশেষ সংখ্যা-২, পৃঃ ১৪২।) কুয়েতের ‘আল-মুজতামা’ পত্রিকায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, ‘বাতিল ফিরকাগুলোর মত খন্ডন ও তাদের ভ্রান্ত আক্বীদার স্বরূপ উন্মোচনে তিনি অত্যন্ত কঠোর ছিলেন। তাঁর বই-পুস্তক ও বক্তৃতায় কঠোর খন্ডন পদ্ধতির কারণে এই সমস্ত ভ্রান্ত ফিরকা তাঁর ওপর ক্ষুব্ধ ছিল। দীর্ঘদিন যাবৎ তিনি তাদের টার্গেটে পরিণত হয়েছিলেন। কাদিয়ানীরা ইতিপূর্বে পাকিস্তানে বেশ কয়েকজন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের আলেমকে কিডন্যাপ ও হত্যা করে। ব্রেলভীদের সাথেও তাঁর কঠিন শত্রুতা ছিল। (‘আল-মুজতামা’, কুয়েত, সংখ্যা ৮১২, বর্ষ ১৩, ৯শা‘বান ১৪০৭ হিজরী।) ড. আব্দুল আযীয আল-ক্বারী বলেন, ويبدوأنأسلوبهكانشديدالنكايةبالرافضةإلىدرجةأنهمآثرواقتله. ‘তাঁর খন্ডন পদ্ধতি রাফেযীদের এতটাই অন্তর্জ্বালার কারণ ছিল যে, তারা তাঁকে হত্যা করতে মনস্থির করে’। (ড. যাহরানী, প্রাগুক্ত, পৃঃ ৬৫।) মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রফেসর ও ‘রাবেতা আলমে ইসলামী’র সাবেক সহ-সেক্রেটারী জেনারেল শায়খ মুহাম্মাদ নাছের আল-উবূদী বলেন, ‘বিদ‘আতী ও ইসলাম থেকে বিচ্যুত-পথভ্রষ্টদের পরিকল্পনা ও প্রচেষ্টায় শায়খকে হত্যা করা হয়। হয়ত তাদের পিছনে বড় কোন হাত থাকতে পারে, যারা তাঁকে হত্যার ব্যাপারে প্ররোচনা দেয়। কেননা ইসলামের শত্রুদের জন্য তিনি ছিলেন চকচকে ধারালো তরবারির ন্যায়। যারা এই তরবারিকে কোষবদ্ধ (নিহত) করতে চাচ্ছিল’। (ড. যাহরানী, প্রাগুক্ত, পৃঃ ৬৯/৭০।)
 
সন্তান-সন্ততি :
আল্লামা ইহসান ইলাহী যহীরের ৩ ছেলে ও ৫ মেয়ে। তিন ছেলেই দাওয়াতী কর্মকান্ডের সাথে জড়িত আছেন। বড় ছেলে ইবতিসাম ইলাহী যহীর ‘জমঈয়তেআহলেহাদীছ পাকিস্তান’-এর সেক্রেটারী জেনারেল, ‘আল-ইখওয়াহ’ মাসিক পত্রিকার প্রধান সম্পাদক ও ‘কুরআন-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনে’র প্রধান নির্বাহী। ১৯৮৭ সালে লাহোরের ক্রিসেন্ট মডেল স্কুল থেকে তিনি ম্যাট্রিক ও ১৯৮৯ সালে লাহোর সরকারী কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট (এফএসসি) পাশ করেন। ১৯৯৪ সালে তিনি কুরআনমাজীদ হিফয করেন। বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং এবং বি.এ ছাড়াও তিনি গণযোগাযোগ, ইংরেজী, ইসলামিক স্টাডিজ, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, আরবী, ব্যবসায় প্রশাসন, কম্পিউটার সায়েন্স, ইতিহাস ও মনোবিজ্ঞানে মাস্টার্স করেন। তিনি মোট ১১টি বিষয়ে মাস্টার্স করে পাকিস্তানে এক বিরল রেকর্ড স্থাপন করেন। তিনি এযাবৎ এক হাযারের অধিক জালসা, সেমিনার ও কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করেছেন। তাঁর প্রতিষ্ঠিত ww.quran-o-sunnah.com ওয়েবসাইটের মাধ্যমে তিনি বিভিন্ন বিষয়ে ৭হাযারের অধিক প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। এটি উর্দূ ভাষার অন্যতম বড় একটি ইসলামী ওয়েবসাইট। প্রতি মাসে প্রায় ১ লাখ লোক এটি ভিজিট করে। তাছাড়া তাঁর সম্পাদনায় ‘আল-ইখওয়াহ’ নামে একটি মাসিক পত্রিকা ৮ বছর থেকে প্রকাশিত হচ্ছে, যার সার্কুলেশন সংখ্যা ৫ হাযার কপির বেশি। পাকিস্তান টেলিভিশন, জিয়োনিউজ, এক্সপ্রেস নিউজ, দুনিয়া নিউজ, রয়েল নিউজ, দ্বীন নিউজ, হাম টিভি, ডিএম টিভি (ইংল্যান্ড) প্রভৃতি টিভি চ্যানেলে তিনি তিনশ’র অধিক প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করেছেন। সঊদী আরব, ইরাক, মিসর, যুক্তরাজ্য, ডেনমার্ক, ইতালী প্রভৃতি দেশে তিনি দাওয়াতী সফর করেন এবং বড় বড় সেমিনারে বক্তব্য প্রদান করেন। লন্ডন, ব্রাডফোর্ড, স্টক অন ট্রেন্ট এবং কোপেনহেগেনে ইংরেজীতে জুম‘আর খুৎবা দিয়েছেন। তিনি উর্দূ ও ইংরেজীতে ভাল বক্তব্য দিতে পারেন। আরবীও ভাল বুঝেন। ছবর, অদৃশ্যে বিশ্বাস ও কুরআন-সুন্নাহর আলোকে বিভিন্ন বিষয়ের সমাধান সম্পর্কে তাঁর ৩টি বইও রয়েছে।
মেঝো ছেলে মু‘তাছিম ইলাহী যহীরও কুরআনের হাফেয। তিনি দুই বিষয়ে এম.এ ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তিনিও ভাল বক্তা। আর ছোট ছেলে হেশাম ইলাহী যহীর মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ফারেগ। তিনিও কুরআনের হাফেয ও বক্তা। মাত্র ২৪ বছর বয়সে তিনি পাঁচ বিষয়ে এম.এ ডিগ্রি অর্জন করেছেন। সম্ভবত তিনিই একমাত্র পাকিস্তানী যিনি এত অল্প বয়সে ৫ বিষয়ে এম.এ ডিগ্রি লাভ করেছেন। তিনি তিনটি গ্রন্থও প্রণয়ন করেছেন। (আল্লামা যহীরের বড় ছেলে ইবতিসাম ও ছোট ছেলে হেশামের সাথে যোগাযোগ করলে তারা ২২ জুলাই শুক্রবার ২০১১-এ এক ই-মেইল বার্তায় এসব তথ্য জানান। আল্লাহ তাদের উত্তম প্রতিদান দান করুন!)
 
গ্রন্থাবলী :
আল্লামা ইহসান ইলাহী যহীর মাত্র ৪২ বছর এ পৃথিবীর ক্ষণিকের নীড়ে বেঁচে ছিলেন। কিন্তু সময়ের সদ্ব্যবহারের কারণে নানাবিধ ব্যস্ততা সত্ত্বেও এত অল্প সময়ে তিনি গবেষণার ক্ষেত্রে অনন্য কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন। শায়খ মুহাম্মাদ নাছের আল-উবূদী যথার্থই বলেছেন, ولقدأنتجفيسنواتقليلةمالمينتجهغيرهفيسنواةكثيرة. ‘তিনি অল্প কয়েক বছরে যা রচনা করেছেন, অনেক বছরেও তা অন্যরা করতে পারেনি’। (ড. যাহরানী, প্রাগুক্ত, পৃঃ ১২৯।) তিনি সর্বমোট ১৮টি গ্রন্থ প্রণয়ন করেছেন। তন্মধ্যে ১৪টি আরবী ভাষায় ও ৪টি উর্দূ ভাষায়। (ড. যাহরানী, প্রাগুক্ত, পৃঃ ১৩৪/৩৫।)
১. আল-কাদিয়ানিয়্যাহ দিরাসাতুন ওয়া তাহলীলুন(القاديانيةدراساتوتحليل) :
মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে দামেশকের ‘হাযারাতুল ইসলাম’ পত্রিকায় প্রকাশিত ১০টি প্রবন্ধের সমাহার এ গ্রন্থটি। প্রথম প্রবন্ধে কাদিয়ানীদের উত্থানে সাম্রাজ্যবাদী ইংরেজদের ভূমিকা, দ্বিতীয় প্রবন্ধে মুসলমানদের সম্পর্কে কাদিয়ানীদের আক্বীদা, ইসরাঈল কর্তৃক কাদিয়ানীদের সহযোগিতা এবং ইসরাঈলে কাদিয়ানী কেন্দ্র সম্পর্কে, তৃতীয় প্রবন্ধে বিভিন্ন নবী ও ছাহাবীগণের সম্পর্কে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি, চতুর্থ প্রবন্ধে গোলাম আহমাদ কাদিয়ানীর রাসূল (ছাঃ)-এর চেয়ে শ্রেষ্ঠত্ব দাবী ও তার অসারতা, পঞ্চম প্রবন্ধে আল্লাহ, খতমে নবুঅত, জিবরীল, কুরআন, হজ্জ, জিহাদ প্রভৃতি সম্পর্কে তাদের আক্বীদা, ষষ্ঠ প্রবন্ধে গোলাম আহমাদ কাদিয়ানীর জীবনী, ৭ম প্রবন্ধে তার ভবিষ্যদ্বাণী সমূহ, ৮ম প্রবন্ধে ঈসা (আঃ) সম্পর্কে তাদের আক্বীদা, ৯ম প্রবন্ধে কাদিয়ানীদের নেতা ও তাদের বিভিন্ন গোষ্ঠী সম্পর্কে এবং ১০ম প্রবন্ধে খতমে নবুঅত প্রসঙ্গে তাদের আক্বীদা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত আরবীতে এটির ৩০টি ও ইংরেজীতে ২০টি সংস্করণ প্রকাশিত হয়েছে।
 
২. আশ-শী‘আ ওয়াস সুন্নাহ(الشيعةوالسنة) :
তিন অধ্যায়ে বিন্যস্ত এ গ্রন্থটি প্রথম ১৯৭৩ সালে প্রকাশিত হয়। ১৯৮৪ সালে এটির ২৪তম সংস্করণ প্রকাশিত হয়। প্রথম অধ্যায়ে আব্দুল্লাহ বিন সাবার ফিতনা, খুলাফায়ে রাশেদীন, উম্মাহাতুল মুমিনীন সহ অন্যান্য ছাহাবীগণের সম্পর্কে শী‘আদের ভ্রান্ত ধারণা, অপবাদ, তাদেরকে কাফের আখ্যাদান প্রভৃতি বিষয় আলোচিত হয়েছে। দ্বিতীয় অধ্যায়ে শী‘আদের কুরআন পরিবর্তন ও ইমামতের গুরুত্ব এবং তৃতীয় অধ্যায়ে তাদের ভ্রান্ত তাকিয়া নীতি প্রভৃতি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
ইংরেজী, ফার্সী, তুর্কী, তামিল, ইন্দোনেশীয়, থাইল্যান্ডী, মালয়েশীয় প্রভৃতি ভাষায় এটির অনুবাদ প্রকাশিত হয়েছে। গ্রন্থটির ভূয়সী প্রশংসা করে মুহাম্মাদ বিন ইবরাহীম আশ-শায়বানী বলেন, وللمرةالأولىفيتاريخالتأليففيالمللوالنحليؤلفكتاببهذاالتفصيلالذيلميسبقإليه. لانظيرلهفيالمؤلفاةالحديثة. ‘ধর্মতাত্ত্বিক গোষ্ঠী সম্পর্কে গ্রন্থ রচনার ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এধরনের বিস্তারিত বিবরণ সম্বলিত অভূতপূর্ব গ্রন্থ লেখা হয়। আধুনিক রচনাবলীতে এর দৃষ্টান্ত নেই’। (শায়বানী, ইহসান ইলাহী যহীর, পৃঃ ৫।)
 
৩. আশ-শী‘আ ওয়া আহলুল বায়েত(الشيعةوأهلالبيت):
এ গ্রন্থে শী‘আদের আহলে বায়তের প্রতি মেকি ভালবাসার মুখোশ উন্মোচন করা হয়েছে। যেমন গ্রন্থটির ভূমিকায় আল্লামা যহীর বলেন,
فأولاوأصلاكتبناهذاالكتابلأولئكالمخدوعين،المغترين،الغيرالعارفينحقيقةالقوموأصلمعتقداتهمكىيدركواالحق،ويرجعواإلىالصوابإنوفقهماللهلذلك،ويعرفواأنأهلالبيت- نعم- وحتىأهلبيتعليرضىاللهعنهمأجمعينلايوافقونالقومولايقولونبمقالتهم،بلهمعلىطرفوالقومعلىطرفآخر،وكلذلكمنكتبالقوموبعباراتهمهمأنفسهم.
‘যারা শী‘আদের প্রকৃতি ও তাদের মৌলিক বিশ্বাস সমূহ সম্পর্কে অনবগত সে সকল প্রতারণার শিকার ব্যক্তিদের জন্যই আমরা মূলত এই বইটি লিখেছি। যাতে তারা যেন প্রকৃত বিষয় জানতে পারে এবং যদি আল্লাহ তাদের তাওফীক দেয় তাহলে যেন তারা সত্যের দিকে ফিরে আসে। তারা এটাও জানতে পারে যে, আহলে বায়েত এমনকি খোদ আলী (রাঃ)-এর পরিবার-পরিজনও শী‘আ জাতির সাথে একমত নয় এবং তারা যা বলে তারা তা বলে না। বরং তারা একপ্রান্তে আর শী‘আরা আরেক প্রান্তে। এ সকল কিছু শী‘আদের বইপত্র ও তাদের উদ্ধৃতি দিয়েই উল্লেখ করা হয়েছে’।
(আশ-শী‘আ ওয়া আহলুল বায়েত, পৃঃ ৮।)
চারটি অধ্যায়ে বিভক্ত এ গ্রন্থের মোট পৃষ্ঠা সংখ্যা ৩১৬। প্রথম অধ্যায়ে শী‘আ ও আহলেবায়েত শব্দের বিশ্লেষণ এবং ইমামদের ব্যাপারে তাদের বাড়াবাড়ি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। দ্বিতীয় অধ্যায়ে কুরআন মাজীদে ছাহাবীগণের প্রশংসা, ছাহাবীগণের সম্পর্কে আলী (রাঃ)-এর দৃষ্টিভঙ্গি, খুলাফায়ে রাশেদীন সম্পর্কে শী‘আদের দৃষ্টিভঙ্গি প্রভৃতি বিষয় আলোচনা করা হয়েছে। তৃতীয় অধ্যায়ে মুত‘আ বিবাহ সম্পর্কে এবং চতুর্থ অধ্যায়ে রাসূল (ছাঃ), তাঁর সন্তান-সন্ততি ও ছাহাবীগণের সম্পর্কে তাদের বাজে মন্তব্য সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। উর্দূ, ইংরেজী, তুর্কী প্রভৃতি ভাষায় এটির অনুবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
 
৪. আশ-শী‘আ ওয়াল কুরআন(الشيعةوالقرآن):
আল্লামা মুহিববুদ্দীন আল-খতীব মিসরী (১৩০৩-১৩৮৯ হিঃ)الخطوطالعريضةনামে শী‘আদের বিরুদ্ধে একটি বই লিখেন। এ বইয়ে তিনি প্রমাণ করেছেন যে, শী‘আরা কুরআন পরিবর্তন করেছে। এর জবাবে একজন শী‘আ আলেমمعالخطيبفىخطوطهالعريضةনামে একটি বই লিখে দাবী করেন যে, আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের নিকট কুরআন যেমন অবিকৃত, তেমনি শী‘আদের নিকটও। আল্লামা যহীর সেই শী‘আ আলেমের দাবীর অসারতা ও খতীবের বক্তব্যের যথার্থতা প্রমাণ করে ৩৫২ পৃষ্ঠা সম্বলিত উক্ত বইটি রচনা করেন। যেমন তিনি বলেছেন, ‘আমরা এতে খতীবের বক্তব্যের সত্যতা প্রমাণ করেছি কথা ও আবেগের বশবর্তী হয়ে নয়; বরং অকাট্য দলীল-প্রমাণ, প্রমাণিত নছ, সুস্পষ্ট উদ্ধৃতি এবং অকাট্য বর্ণনা দ্বারা’। (আশ-শী‘আ ওয়াল কুরআন, পৃঃ ৭।) পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষায় এটি অনূদিত ও একাধিকবার প্রকাশিত হয়েছে।
৫.আল-ব্রেলভিয়া আকাইদ ওয়া তারীখ(البريلويةعقائدوتاريخ) :
ভারতীয় উপমহাদেশের বিদ‘আতী ও কবরপূজারী ব্রেলভী ফিরকা সম্পর্কে একটি প্রামাণ্য গ্রন্থ এটি। এ গ্রন্থের সুবাদে আরব বিশ্বের জনগণ প্রথমবারের মতো এই ভ্রান্ত ফিরকা সম্পর্কে অবগত হয়। পাঁচটি অধ্যায় সম্বলিত এ গ্রন্থের মোট পৃষ্ঠা সংখ্যা ২৫৪। প্রথম অধ্যায়ে এ মতবাদের ইতিহাস ও এর প্রতিষ্ঠাতা আহমাদ রেযা খানের জীবনী, দ্বিতীয় অধ্যায়ে ব্রেলভীদের আক্বীদা-বিশ্বাস, তৃতীয় অধ্যায়ে তাদের শিক্ষা, চতুর্থ অধ্যায়ে মুসলমানদের মধ্যে যারা তাদের আক্বীদা বিরোধী তাদেরকে কাফের আখ্যাদান ও তাদের বিভিন্ন বিদ‘আতী আমল এবং পঞ্চম অধ্যায়ে তাদের বিভিন্ন আজগুবি কেচ্ছা-কাহিনী আলোচনা করা হয়েছে। এছাড়া তাঁর রচিত অন্য গ্রন্থগুলো হচ্ছে-
৬. আশ-শী‘আ ওয়াত তাশাইয়ু
৭. আল-ইসমাঈলিয়্যাহ : তারীখ ওয়া আকাইদ
৮. আল-বাবিয়া আরয ওয়া নাকদ
৯. আল-বাহাইয়া : নাকদ ওয়া তাহলীল
১০.আর-রাদ্দুল কাফী আলা মুগালাতাতিদ দুকতূর আলী আব্দুল ওয়াহিদ ওয়াফী ফীকিতা বিহি বায়নাশ শী‘আ ওয়া আহলিস সুন্নাহ
১১. দিরাসাত ফিত-তাছাওউফ
১২.সুকূতে ঢাকা (উর্দূ)
১৩. আত-তুরুকুল মাশহূরা ফী শিবহিল কার্রাহ আল-হিন্দিয়া (অপ্রকাশিত)
১৪. আত-তাছাওউফ আল-মানশাউ ওয়াল মাছাদিরু
১৫. কুফর ওয়া ইসলাম (উর্দূ)
১৬. ইমাম ইবনু তাইমিয়ার ‘কিতাবুল অসীলা’-এর উর্দূ অনুবাদ
১৭. সফরে হিজায (উর্দূ)
১৮. আন-নাছরানিয়্যাহ (অপ্রকাশিত)।
 
বিশ্বব্যাপী তাঁর বইয়ের গ্রহণযোগ্যতা :
আল্লামা ইহসান ইলাহী যহীর আধুনিক বিশ্বের একজন অপ্রতিদ্বন্দ্বী ধর্মতাত্ত্বিক ছিলেন। বিভিন্ন বাতিল ফিরকার উপর লিখিত তাঁর গ্রন্থগুলোকে এ বিষয়ের মৌলিক গবেষণা গ্রন্থ হিসাবে বিবেচনা করা হয়। বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এগুলো পাঠ্যসূচীভুক্ত রয়েছে। আল্লামা যহীর বলেন, ‘আমি ধর্মতত্ত্বের উপর বই লিখে গোটা মুসলিম বিশ্বে আমার স্বকীয় বৈশিষ্ট্য প্রমাণ করেছি। আমার বইগুলো বিশ্বের প্রত্যেক ইসলামিক ইউনিভার্সিটিতে পাঠ্যসূচীভুক্ত রয়েছে এবং অনেক দেশে ডক্টরেট ডিগ্রির জন্য লিখিত অভিসন্দর্ভ সমূহে ঐসব বইয়ের উদ্ধৃতি দেয়া হয়েছে। আমার নিশিদিন অধ্যয়ন ও গবেষণার ফসল এগুলি’। (মুমতায ডাইজেস্ট, বিশেষ সংখ্যা-১, পৃঃ ৫০।) তিনি বলেন, ‘আমার বইগুলো মুসলিম বিদ্বানদের জন্য ধর্মতত্ত্ব বিষয়ক সাহিত্যের অভাব পূরণ করেছে’। (মুমতায ডাইজেস্ট, বিশেষ সংখ্যা-১, পৃঃ ৪৭।) তিনি আরো বলেন, ‘মোদ্দাকথা, ধর্মতত্ত্বের উপর আমার লেখা গ্রন্থগুলোর মুসলিম বিশ্বে একটি পরিমন্ডল সৃষ্টি হয়েছে’। (মুমতায ডাইজেস্ট, বিশেষ সংখ্যা-১, পৃঃ ৪৯।)
মুহাম্মাদ ছায়েম বলেন, وإنهافيمجالالأبحاثالعلميةلتعتبرمنأهممراجعالدارسينللفرقوالمللوالنحل. ‘বিভিন্ন ধর্মতাত্ত্বিক গোষ্ঠী সম্পর্কে গবেষণাকারীদের জন্য গবেষণা পরিমন্ডলে এ গ্রন্থগুলোকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসাবে গণ্য করা হয়ে থাকে’। (শুহাদাউদ দাওয়াহ, পৃঃ ১৬৫।)
আল্লামা যহীরের প্রত্যেকটি বইয়ের প্রথম সংস্করণ ৩০ হাযার কপি বের হত। তাঁর ‘আল-ব্রেলভিয়া’ বইটির ৩০ হাযার কপি মাত্র ১৫ দিনে নিঃশেষ হয়ে যায়। ফলে এক বছরে এই বইটি ৯ বার প্রকাশ করতে হয়। এতেও চাহিদা পূরণ না হলে দামেশক ও সঊদী আরব থেকেও এটি প্রকাশ করা হয়। তাঁর এই বইটি প্রকাশের পর সঊদী আরব ও মিসরে উক্ত ভ্রান্ত ফিরকা সম্পর্কে অনেক গবেষণাধর্মী প্রবন্ধ-নিবন্ধ প্রকাশিত হয়।
(মুমতায ডাইজেস্ট, বিশেষ সংখ্যা-১, পৃঃ ৪৯-৫০) তাঁর অধিকাংশ বই পৃথিবীর বিভিন্ন জীবন্ত ভাষায় অনূদিত হয়েছে।
সাবেক জনপ্রিয় সঊদী বাদশাহ ফয়সাল এক শাহী ফরমানে তাঁর নিজ খরচে আল্লামা যহীরের বইপত্র ক্রয় করে সঊদী আরবের সকল লাইব্রেরী, শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে এবং অন্য এক ফরমানে সেগুলো ছেপে এশিয়া, ইউরোপ ও আফ্রিকার বিভিন্ন লাইব্রেরীতে বিতরণের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
(শায়বানী, ইহসান ইলাহী যহীর, পৃঃ ১৪; ‘আল-মাজাল্লাতুল আরাবিয়্যাহ’, সংখ্যা ৪৮, ১৪০৮ হিঃ, পৃঃ ৯১; শুহাদাউদ দাওয়াহ, পৃঃ ১৬৫।)
 
তাঁর বইগুলোর বিশ্বব্যাপী গ্রহণযোগ্যতার কারণ সম্পর্কে তদীয় শিক্ষক মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রফেসর শায়খ আতিয়্যাহ সালিম (১৯২৭-৯৯) বলেন, إنكتاباتهكلهااتسمتبالرزانةوالاعتدالومدعمةبالأدلةوصدقالمقال. وأهممافيهاأنيستدللهامنكتبأهلهاممالايدعمجالاللشكفيمايكتبعنهم. ولامطعنفيهايفردهمنمصادرهمحتىأصبحتكتبهفيتلكالفرقمصادرومراجعللدارسينومناهلللباحثين.
‘তাঁর রচনাবলী গাম্ভীর্যও সুসামঞ্জস্যের বৈশিষ্ট্যে বৈশিষ্ট্যমন্ডিত এবং দলীল ও সত্যকথন দ্বারা মযবুতকৃত। এসব গ্রন্থের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হ’ল ঐসব ফিরকার নিজেদের রচিত বইপত্র থেকে প্রমাণ পেশ, যা তাদের সম্পর্কে তিনি যা লিখেন তাতে সন্দেহের কোন অবকাশ রাখেনা এবং তাদের সূত্রসমূহ থেকে তিনি যেসব উদ্ধৃতি দেন তাতে দোষারোপেরও কোন কিছু থাকেনা। এভাবে তাঁর গ্রন্থগুলো ঐ সকল ফিরকার ব্যাপারে পাঠক ও গবেষকদের জন্য আকরে পরিণত হয়েছে’। (আল-ব্রেলভিয়া, পৃঃ ৩।) শায়খ মুহাম্মাদ নাছের আল-উবূদী বলেন, واتسمتكتبهبقوةالحجةوالمنطق. ‘তাঁর গ্রন্থগুলো শক্তিশালী দলীল ও যুক্তির বৈশিষ্ট্যে বৈশিষ্ট্যমন্ডিত’। (ড. যাহরানী, প্রাগুক্ত, পৃঃ ১২৯।)
 

Users who are viewing this thread

Back
Top