What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

কমিউনিটি সার্ভিস (4 Viewers)

রাতে শোয়ার পর বৌ এসে বুকের ওপর মাথা দিয়ে শুয়ে পড়ল। বলল,


- আবার গোসল করেছি দুপুরে।
সকালে জিজ্ঞেস করেছিলাম বলে মাইন্ড করেছে হয়তো। ধরে নিয়েছে ওকে 'নোংরা' বলেছি। মাথায় হাত দিয়ে অনুতাপ জানালাম।
- স্যরি সোনা, সকালে মিসবিহেভ করে ফেলেছি তোমার সঙ্গে। তুমি একা একা চলে এসেছ তো, ঠিকমত পৌঁছালে কিনা দুঃশ্চিন্তা হচ্ছিল।
- স্যরির কি হলো, চিন্তা তো হবেই..
সহজভাবেই বলল মুনীরা।
- সকালে গোসলের কথা বলেছি, মাইন্ড করেছ, তাইনা?
- আরেহ ,না..
হেসে মাথা নাড়ে।
- ওই বাসায় হয়তো সুযোগ পাওনি, তাই বলেছি। ইন্টারকোর্সে তো গোসল ফরয, তারওপর হারাম কাজ হয়ে গেছে..
ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করলাম।
- তোমার বলা তো ঠিকই আছে। শুধু শুধু ভেবোনা তো।
থামিয়ে দিয়ে গায়ের সঙ্গে লেপ্টে গেল বৌ।
- রাতে পেছন-পেছন বেরিয়েছিলাম, খুজে পাচ্ছিলামনা তোমাকে। অনেক রুম ওদের বাসায়।
মুনীরা নিশ্চই মনোক্ষুণ্ণ হয়েছে ওকে উদ্ধার করতে না আসায়। ওকে যে খুজেই পাইনি, বিশ্বাস করবে?
- হুম, অনেক রুম।
ছোট্ট করে বলল। কৌতূহল থেকে জিজ্ঞেস করি,
- কোন রুমে ছিলে তোমরা? অনেকক্ষণ খুজেছি, পাইনি।
- কেন, পাশের রুমেই তো ছিলাম।
অবাক গলায় জানায় মুনীরা। মনে পড়ল, ওই করিডোরের শুরুর দিকের রুমগুলো খুঁজিনি। একেবারে পাশের রুমেই যে নিয়ে যেতে পারে, মাথায় ঢোকেনি। তখন মনে হচ্ছিল, দূরে কোথাও নিয়ে গেছে। হাতের কাছে রেখেও খুজে পাইনি, এই অজুহাত কি বিশ্বাস করবে মুনীরা?
- তাই নাকি? তাহলে.. দরজা বন্ধ করে দিয়েছিল ওরা?
অবাক হবার ভান করি।
- হুম.. নক করেছিলে?
গলায় খানিকটা অভিযোগ। চটপট বললাম,
- নক করছিলাম তো, অনেক গেস্ট দরজা আটকে ঘুমাচ্ছিল। নক করায় বিরক্ত হচ্ছিল, তাই আর করিনি.. তুমি ভয় পাওনি?
- আমি তো ভেবেছি ওরা দুষ্টুমি করছে। সবাই যে রুমে ছিল, ওখানে তো ওরা খুব সুইট আচরণ করছিল। আন্টি করে ডাকছিল। বলে, আপনি খুব ভাল, খুব সুন্দর..
- যখন নিয়ে যাচ্ছিল তখন বাধা দিলেনা যে?
আমিও অভিযোগ করি। ও ছেলেদুটোর সঙ্গে আগে এত মিলমিশ না করলেই ওরা সাহস পেতোনা, আমারও এত ভোগান্তি হতোনা।
- আমি যে বোকা, তাই। আমাকে বলেছে, একটা প্রাংক করবে - দেখি আঙ্কেল কি করে। আমি তো ভেবেছি তুমি চলে আসবে আর ওরা হাসাহাসি করবে তুমি ভয় পেয়েছ বলে।
ধোকা খাবার কথা বিস্ময় নিয়ে বলে মুনীরা।
- আমি তখুনি বের হতে চেয়েছি। কিন্ত ওরা বেরোতে দিচ্ছিলনা। বলছিল তুমি ইচ্ছে করে গেছ ওদের সঙ্গে, আমি কিছু করতে পারবনা। ওদের এলাকায় নাকি বিয়েবাড়িতে এভাবেই হয়।
স্পষ্ট করেই বললাম এবার।
- হু, রুমে নিয়ে যাওয়ার পর ওরাও তাই বলল।
মুনীরা জানায়। বললাম,
- একেক এলাকায় রীতি-রেয়াজ একেক রকম হয়.. তাই বলে হালাল-হারাম আছেনা?
- আমাকে নিয়ে গিয়ে বিছানায় রেখে ওরা কাপড় ছেড়ে ফেলল। আমি তো অবাক। বলি, কি করো? ওরা বলে, আন্টি, এই এই অবস্থা, আপনি কাপড় খুলে ফেলেন।
- তারপর খুললে?
- না, এত সহজে? আমি বলেছি, তোমাদের আঙ্কেল চলে আসবে। তাছাড়া তোমরা না বললে প্রাংক! ওরা বলে, না, আসবে না - প্রাংক আসলে আমাকেই করেছে ওরা! আমি ভেবেছি তুমি বুঝি পেছন পেছন চলে আসবে, আর আমরা তোমাকে নিয়ে হাসাহাসি করব। তুমি আসছিলে না, আর ওরাও খুব প্রেশার দিচ্ছিল...
অপরাধীর মত বলে মুনীরা। কপালে চুমু খেয়ে বলি,
- ইটস ওকে। ..কাপড় খুলে ওখান থেকে অন্য কোথাও নিয়ে গিয়েছিল?
- উহু, ওই রুমেই ছিলাম।
ভ্রু কুচকালাম। সীমার কথারও সত্যতা মিলছে।
- বয়স কম হলে কি হবে, একদম নাছোড়বান্দা ছেলেদুটো। ওদের কোনভাবেই বোঝানো সম্ভব না, করবেই। মিথ্যে কথাও বলেছি।
মুনীরা কৈফিয়তের মত বলে চলেছে।
- কি?
- বলেছি আমি পিল খাইনা। বুদ্ধিতে কাজ হয়নি। একজন চলে গেল কনডম আনতে। এর মধ্যে বুদ্ধি বের করলাম, চুষে দেই। ভাল ব্যাপার, দুজনকেই ক্লীন করে ফেলতে পেরেছি।
হাসিহাসি চোখে বলছে মুনীরা। ওর কৈফিয়ত শোনার ইচ্ছে ছিলনা, এসব শুনে কাজ নেই। কিন্ত এ পর্যায়ে এসে ইন্টারেস্টিং মনে হল। বৌ ভাল বুদ্ধি খেলিয়েছে।
- তারপর কি ফিরে এসেছিলা?
- হাহহাহাহহ.. না, এত সহজে ছাড়ে? আমাকে মাঝে নিয়ে স্যান্ডউইচ করে দুই ভাই মিলে খুব চেষ্টা করেছে, হার্ড হতে পারছিলনা। কই কই হাত-মুখ দেয়নি, আল্লাহ!
মুখে হাত চেপে হাসি আটকে বলে মুনীরা। মনে করে লাল হয় গাল।
- নরমটাই আঙুল দিয়ে টিপে ঢোকাবে.. তাও হয়নি। আমি তো আল্লা আল্লা করছিলাম, যেন না পারে। দোয়া কবুল হয়েছে।
এক্সাইটেডভাবে বুকের লোমে আঙুল বুলিয়ে বলছে বৌ।
- এক ভাই বলল, গরম পানির শাওয়ার নিয়ে আসবে - তাহলে নাকি শক্ত হয়। আমিও গেলাম সঙ্গে। ইয়ে ফেলে মুখটুখ ভরিয়ে দিয়েছিল, শুকিয়ে গাল টানছিল। তখনই গোসল করেছি, বুঝলে?
মাথা নাড়লাম।


- বেতন পেলে লাগিয়ে দেবো, শীত আসছে।
বললাম। খুশি হল মুনীরা।
- হুম, দরকার তো। ভাবীরা বলে শীতে গ্যাস সমস্যা করে। সকালে অফিসে যেতে হবে ঠান্ডা পানিতে গোসল করে।
আবার নিশ্চিত করলাম, গীজার লাগিয়ে নেবো।
- রাতে একটু ঠান্ডা ঠান্ডা লাগেনা? শাওয়ারে কিছুক্ষণ থাকলে বাথরুম সহ গরম হয়ে যায়। আসলেই শরীর গরম হয়।
- ওরা আর ট্রাই করেনি?
জিজ্ঞেস করি।
- কি যে বলো, ট্রাই করবেনা? শাওয়ারে নিয়ে দুজনে মিলে কি কচলাকচলি করেছে.. উফ! পেছন সাইডে সাবান মেখে মাঝখানে ওটা রেখে ঘষাঘষি করেছে, সামনে দিয়ে আঙুল ঢুকিয়েছে..
মনে করে কেঁপে ওপে মুনীরা।
- লাগেনি তোমার?
দরদী গলায় জিজ্ঞেস করি। দুই চ্যাংড়ার কাজকর্ম কেমন হতে পারে কল্পনা করতে পারছি।
- ব্যাথা দেয়নি। একজন কিস করার সময় জিহ্বা ঠেলে দিচ্ছিল, একটু কামড়ে দিয়েছি।
দাঁত বের করে বলে মুনীরা। পিঠ চাপড়ে দিই। বলি,
- গুড। আমি দোয়া করছিলাম তোমার যেন কিছু না হয়।
বৌ বুকে গাল ঘষে, আওয়াজ করে আদুরে গলায়।
- জানি, সেজন্যেই তো পারেনি। তবু একটু ইয়ে হয়েছে.. বলব?
- হ্যাঁ, বলো।
 
একটু বিব্রত দেখায় মুনীরাকে। বলে,
- আমি তো দোয়া করছিলাম, যেন না পারে। সেতু ভাবীর তালিমে শিখেছি, বিপদে পড়লে পড়ার দোয়া। শাওয়ারের সময় ওরা শরীরে এমনভাবে ধরছিল-টরছিল যে মন ওদিকে চলে গেল, পড়তে ভুলে গেছি। শয়তানে ধরেছিল বোধহয়, কখন যেন পেনিসও হাতে নিয়েছিলাম। শরীর মুছে রুমে এসে কাপড় পড়ব, এরমধ্যে একজনের শক্ত হয়ে গেল।
- যারটা হাতে নিয়েছিলা?
- হুম, ওরটাই। আমার মনে হয় কি, গান-বাদ্যের রুমেই শয়তান বসেছিল। আমি অসতর্ক থাকায় আমাকেই ধরেছে। দোয়া শুরু করার পর আর ক্ষতি করতে পারেনি। যেই একটু সুযোগ পেয়েছে, আবার ধরেছে।
- হতে পারে। কাওকে জিজ্ঞেস করে জেনেছ?
- না, আমাার ধারণা। নইলে বলো, এতক্ষণ ট্রাই করে আমাকে কাবু করতে পারেনি কেন?
অপরাধীর মত বুকে মুখ লুকিয়ে বলছে বৌ। চুলে হাত বুলিয়ে স্বান্তনা দিচ্ছি।
- আমার ওপর তখন শয়তান সওয়ার। পুরো শরীর গরম হয়ে গেছে, নিপল শক্ত। ওরা নিচে হাত দিয়ে দেখে ভিজে গেছে। মানা করতেই পারলাম না।
মুনীরার পিঠে হাত বুলিয়ে দিচ্ছি। বলতে বলতে মন খারাপ হয়েছে ওর।
- ব্যাথা দেয়নি তো ওরা?
- উহু। ভিজে গেছে বললাম না?
- খোদারই রহমত হয়তো, শুকনো অবস্থায় করতে পারেনি।
স্বান্তনা দিয়ে বলি। মুনীরা একমত হয়েছে মনে হলোনা।
- গীবত হয়ে যায় কিনা জানিনা। ওদেরগুলো ছোটছোট, টের-ই পাইনি। হাহহাহহ..
- দুজনেরই?
- আরেকজন তো দাঁড় করাতেই পারেনি। বেচারা মন খারাপ করেছে। ঢুকিয়ে ফেলার সঙ্গে সঙ্গে মনে পড়ল, আরে, আমি তো দোয়া পড়তে ভুলে গেছি! তখুনি পড়া শুরু করলাম।
মুনীরা চোখ বড় করে উত্তেজিতভাবে বলছে। মাথা নেড়ে আমার থিউরি বললাম,
- তখন শয়তান চলে গিয়েছিল, নাহলে ঢিল দিয়েছে।
- চলে যায়নি। বিসমিল্লাহ না বলে ঢুকিয়েছে তো, শয়তানও সঙ্গে ঢুকিয়ে দিয়েছে। এটাই তো শয়তানের টার্গেট।
জ্ঞানীর মত বলে বৌ।
- দোয়ার ক্ষমতা দেখ, এক মিনিট পরেই ছেলেটা আর হার্ড রাখতে পারলনা। আমারও হঠাৎ শুকিয়ে গেল। আগের মত হয়ে গেল, টিপে টিপেও ঢোকাতে পারেনি।
মুনীরার মত আমিও অবাক হলাম। দোয়ার ক্ষমতা অবিশ্বাস করা যায়না। অবিশ্বাস করলেও অসম্ভব বলা যায়না, ঈমান থাকবেনা।
- পরে যে দোয়া করেছিলাম, যেন ভেতরে ডিসচার্জ না করতে পারে - সেটা কবুল হয়েছে।
খুশি হয়ে বলে মুনীরা।
- কেন, কন্ডম?
- আমার তখন হুশ আছে? মনেই নেই..
- যাক, যা হয়েছে, হয়েছে। আর ডিস্টার্ব করেনি তো পরে?
- না। আল্লাহর রহমতে আর কাছে আসেনি কেউ। তবে ওরা কিন্ত শান্ত হয়নি।
মাথা নেড়ে বলে বৌ।


- লাল শাড়ী পড়া একটা মেয়েকে দেখেছ, গানের কলি খেলছিল খুব ভাল?
মাথা নাড়ি। অনেকেই খেলছিল, বিশেষভাবে কাওকে লক্ষ্য করিনি।
- ওকে নিয়ে গেছে। ওমা, ওকে লাগাতে নাকি কোন সমস্যাই হয়নি! শয়তান বোধহয় আমাকে ছেড়ে ওকে ধরেছিল।
আন্দাজ করে বলে মুনীরা। কাকীর দেয়া সোনার গোল আংটিটা আঙুলে ঘোরাচ্ছে।
- ওরা ঘুমানোর এ্যারেঞ্জমেন্ট করছিল মেয়ে-ছেলে জোড়া বানিয়ে। আমি বলেছি, একা শোব নইলে মেয়েদের সঙ্গে শোব। ওরা মানছিলনা.. মোটা করে একটা মহিলা, ফর্সা.. ওনার সঙ্গে ছিলে তুমি?
হঠাৎ জিজ্ঞেস করল। ও নিশ্চই রুমে ফিরে জেনে নিয়েছে আমার খবরাখবর। জবাব দিতে গিয়ে বিব্রত লাগল। ভালমানুষের মত বলি,
- কার কথা বলছ?
- কি যেন.. হুম, সীমা আপার সঙ্গে ছিলেনা?
- অ.. হুম.. তোমাকে কিছু বলেছে রাতে?
জিজ্ঞেস করলাম। সীমাকে বেশ জেলাস টাইপের মেয়ে মনে হয়েছে আমার।
- রাতে দেখিনি। সকালে ফজর পড়তে ওঠার পর দেখা হয়েছে। কেমন করে যেন আমাকে চিনল, মানে কার বৌ সেটা জানে। গল্পটল্প করল। নামাজের পরে বলল তোমরা অনেক রাত পর্যন্ত জেগে ছিলা।
ইঙ্গিতপূ্র্ণভাবে বলে মুনীরা।
- হুম, দেরি হয়ে গিয়েছিল। ক্লান্তও ছিলাম, ফজর মিস হয়ে গেল।
ছোট্ট করে বললাম। মুনীরার কথার ধরণে ঈর্ষা শোনা না গেলেও খারাপ লেগেছে আন্দাজ করতে পারি। এতদিন সোহানী-চাঁদনী চাপা রেখে একদিনে দুজনের সঙ্গে শুয়েছি জেনে ভাল লাগার কথা নয়। তবু সেতু ভাবীদের ব্রেইনওয়াশের বদান্যতায় বিরোধিতা করেনি।
বিয়ের পর খুব ইনসিকিউর ছিল। ঢাকায় বসে কি করছি, ভার্সিটিতে মেয়ে বন্ধু আছে কিনা ইনিয়ে বিনিয়ে জিজ্ঞেস করত। এখনো লুকোচুরি করে কিছু করতে গেলে নির্ঘাৎ তুলকালাম করে দেবে।
এতক্ষণ ওকে হালাল-হারামের কথা বলে এখন দেখি আমার ঘটনাও জানে, লজ্জ্বার ব্যাপার। আমার প্রসঙ্গ সরাতে জিজ্ঞেস করি,
- তুমি কার সঙ্গে ঘুমালে তারপর, পুরুষ?
- হ্যাঁ। আমি আগেই বলে নিয়েছি, কিছু করবনা। ওরা শুনলইনা। আমি এক রুমে গিয়ে সোজা শুয়ে পড়েছি শাড়ী নিয়েই। এক লোক এল, ডাকাডাকি করল - আমি দোয়া পড়তে পড়তে ঘুমের ভান করে রইলাম।
- দোয়ায় কাজ হল?
- হাহাহহ.. হবেনা? শুয়ে শুয়ে বুক টেপাটেপি করল কিছুক্ষণ। কাৎ হয়ে শুয়েছি তো, শাড়ি তুলে পেছন থেকে চেষ্টা করল। আমি শক্ত করে পা চেপে রইলাম। ঢোকাতে না পেরে পেছনটায় ঘষে ঘষেই ফিনিশ।


- শাড়ি নষ্ট হয়নি?
- হোকগে, যে ভয় পেয়েছিলাম তা হয়নি সে-ই শুকরিয়া। ফজরের সময় উঠে চুপচাপ আবার গোসল করে বেরিয়ে গেলাম রুম থেকে।
- একা এসেছিল বিয়ে খেতে?
- হ্যাঁ, তাই তো বলল। সকালে দেখা হয়েছিল। বেচারা কষ্ট পেয়েছে। তবে মুখে কিছু বলেনি। আমাকে বলেনি, সীমা আপার কাছে নাকি বিচার দিয়েছে.. হিহিহহ..
মনে মনে বলি, বৌ-টৌ নিয়ে এলে ঠিকই শোধ তুলত।


- কি হয়েছে জানো, নতুন জামাই-বৌ আবার ঝগড়া শুরু করেছে।
প্রসঙ্গ বদলে বলে মুনীরা।
- তুমি কেমন করে জানলে?
- সীমা আপা বলেছে ফোন করে।
মুনীরার ফোন নাম্বার নিয়ে আলাপও করছে, লেগে থাকবে নাকি আমাদের পেছনে? ঝামেলার আভাস পেলাম।
- কি বলল, আবার ইঞ্জেকশান দিতে হবে বৌকে?
- হিহিহহহ.. না, তোমাকে আর লাগবেনা। আজ ওরা ব্যাক করেছে মেয়ের বাড়ি থেকে। তারপর আবার ঝামেলা। আঙ্কেল ইমাম সাহেবকে যোহরের সময় বলেছেন অবস্থার উন্নতি হয়নি। ছেলের তো নয়, মেয়েরও বিহেভ ঠিক নেই। হুজুররা বোঝালেন, মেয়ের আদব-কায়দা আমল-আখলাক ঠিক করতে হবে। রিহ্যাবে ক'দিন থাকলে অন্তত নামাজ-কালামটা শিখতে পারবে। ছেলেও ক'দিন বৌ ছেড়ে থাকলে লাইনে আসবে।
- মেয়ে ড্রাগস নেয় নাকি?
- না, তেমন কিছু শুনিনি।
- রিহ্যাব কেন তবে?
অবাক হয়ে বলি।
- আরে, ওই রিহ্যাব না। মাদ্রাসায় মেয়েদের রিহ্যাব আছেনা, ওখানে থাকবে।
এবার বুঝতে পারছি কি বলতে চাইছে।
 
শাতিরা বেগমের বিয়ে হয়েছিল পাকিস্তান আমলে ঢাকার বনেদি ব্যবসায়ি-আড়ৎদার পারিবারে। যুদ্ধের সময় পরিবারের কেউ কেউ রাজাকারে যোগ দিয়েছিল। সেই রেশে ব্যবসা-বাণিজ্য, বাড়িঘর ছেড়ে একরকম লুকোচুরি খেলে এদিক-ওদিক ভাড়া বাসায় থাকতে হয়েছে তাদের কয়েক বছর।


পঁচাত্তরে শেখ সাহেবের মৃত্যুর পর পরিস্থিতি আবার অনুকূলে চলে আসে। তবু ব্যবসাপাতি ফিরে পাওয়া, পুরনো জৌলুস উদ্ধার করা সম্ভব হয়না। সে অবস্থানগুলো অন্যকেউ দখল করে নিয়েছে।
শাতিরা বেগম স্বামীর সঙ্গে ভাড়া বাসা বদলেছেন বারবার টানাটানি করে। এরমধ্যেই এক জায়গায় থিতু হয়েছেন। জমি কিনে বাসা করেছেন পৈতৃকসূত্রে পাওয়া কিছু অর্থে।

ঢাকায় টিনশেড একতলা বাসা সত্তরের দশকে খারাপ ছিলনা। তাছাড়া সামনে ঘেসো উঠান, ভবিষ্যতে বাড়িঘর তোলা যাবে।

দেশের পরিস্থিতি কখনোই পুরোপুরি ধর্মীয় রাজনীতির জন্যে খুব একটা অনুকূল ছিলনা। বিশেষ করে যুদ্ধের পর তো নয়ই। মানুষ দাড়িটুপি দেখলে সেলাম দেয়, কিন্ত ভোট দেয়না।

শাতিরা বেগমের স্বামী হাকিম চৌধুরি ছিলেন পরিশ্রমী সৎ লোক। সেইসঙ্গে বেজায় ধার্মিক। সাধারণ মোল্লাকুলের হিপোক্রেসি দেখতে পারতেন না। স্বপ্ন দেখতেন আন্দোলনের। পাকিস্তানের পাকাপোক্তভাবে ইসলামি প্রজাতন্ত্র হওয়ার খবরে আফসোস করতেন। কিন্ত এদেশে সে আর হবার কই?

সমমনা সঙ্গী খুজতে খুজতে একটা ছোটখাট দল হয়ে যায়। নিজেরা নিজেদের 'সংগঠন' বলতেন। কোন রাজনৈতিক এক্টিভিটি ছিলনা, ছোট গ্রুপ। তারা বিশ্বাস করতেন সমকালীন রাজনৈতিক পরিবেশে ভাল কিছু সম্ভব না। পরিস্থিতি নিজেদেরই বদলাতে হবে। সেজন্যে সময় লাগবে, ধৈর্য্য ধরতে হবে।

সমমনা হলেও তারা একত্রে এক সমাজে থাকতে পারতেন না, তেমন জায়গা ছিলনা। একই বা আশেপাশের এলাকায় ভাড়া বাসা, নিজ বাড়ি এভাবেই ছিলেন। একটা নিবিড় কলোনির স্বপ্ন অধরা রয়ে যায় আরো অনেক বছর।


শাতিরা বেগম বড় ছেলের জন্যে বৌ দেখার সময় শিক্ষিত মেয়ে খুঁজছিলেন। স্বামী গত হওয়ায় সেদিক থেকে বাধা না আসলেও, ফ্যামিলির ভেতর-বাইরে এর বিরোধিতা ছিল।

গৃহকর্ত্রী নিজে শিক্ষিত হয়ে চৌধুরি বাড়িতে আসেননি। পরে সাক্ষর হয়েছেন নিজ ইচ্ছায়। সঙ্গি হয়েছেনে স্বামীর সাংগঠনিক কর্মকান্ডে। তার সবসময় মনে হয়েছে, সংগঠনটাকে সত্যিকারের অগ্রগতি পেতে হলে নারীদের অংশগ্রহণ দরকার। সময়ের সঙ্গে তাল মেলাতে দরকার শিক্ষিত মস্তিষ্ক।

সামিতুন্নেছা সেতু ইডেন কলেজে বাংলা বিষয়ে বি.এ. ফাইনাল পরীক্ষা দেবার পরপর বিয়েটা হয়। বাপের বাড়িতে কিন্ত সবাই মাস্টার-উকিল, শিক্ষিতমনষ্ক ফ্যামিলি। ওপরঅলার ইচ্ছা, 'সংগ্রামী' ফ্যামিলিতে বিয়ে হলো।

শাতিরা বেগম নিজে বৌ চয়েজ করেছেন। উচা-লম্বা, ফর্সা চেহারা, ফিট গড়ন আর সুন্দর হাসি - বুঝেছেন ছেলের সঙ্গে মানাবে ভাল। বয়সের ব্যবধানটাও মডারেট।

প্রথম বৌয়ের সঙ্গে বয়সের ব্যবধান কম হলে ভাল বলে ধারণা শাতিরা বেগমের। হাকিম সাহেব যদিও কখনো তার আঁচলছাড়া হননি, ছেলের যে আরো কাওকে মনে ধরবেনা তার নিশ্চয়তা নেই। যেহেতু শরীয়তে আছে, পুরুষের জন্যে চারটে হালাল। ক'বছর যাক, নাতি-নাতকর হলে বড় বৌয়ের শরীরে ভাঙন ধরবে, মুটিয়ে যাবে। ছেলেও চল্লিশের কোঠায় পড়বে। ও বয়সে ভীমরতি হয় অনেকের।

তেমন হলে আর বেঁচে থাকলে শাতিরা বেগম নিজে ষোড়শী পছন্দ করে আনবেন। তাহলে অন্তত এক-দেড় দশক নিশ্চিন্তে কাটবে। ষাটের দিকে যদি আবার ইচ্ছে হয়, তবে বড় বৌ-ই কোন বিধবা মেয়েলোক জোগাড় করে দেবে। বৌ স্কুল-কলেজ পড়েছে তো কি হয়েছে, গড়ে তুলবেন শাতিরা বেগম নিজ হাতে।

বিয়ের পর সেতু আবিষ্কার করে, শ্বাশুড়ি টাফ মহিলা। তখন দেশের মেয়েরা *-* করতোনা বললেই চলে। কলেজপড়ুয়া শহুরে মেয়েরা তো নয়-ই। শাতিরা বেগম বৌকে *-নেকাব শেখালেন। প্রথম প্রথম বাইরে যেতে হলে এমন বেশে নিজেকে আয়নায় দেখলে ভুত-টুত মনে হত। বান্ধবীদের সঙ্গে দেখা করতে পারেনা, বাপের বাড়ি যেতেও লজ্জ্বা লাগে। গরম লাগে বলে অভিযোগ করত।

ধীরে ধীরে মানিয়ে নিতে সমস্যা হয়নি। শাতিরা বেগমও অনুগত বৌ পেয়ে খুশি।


বিয়ের আগে জয়নাল চৌধুরির ব্যবসা ভালই চলছিল। রানিং বিজনেস, হঠাৎ টানা লোকসান শুরু হল। নতুন বিয়ে, বৌ নিয়ে মাতোয়ারা হয়ে রইবে, তা-না। বাড়িতে যতক্ষণ থাকে ছেলে শুধু ব্যবসার সমস্যার কথাই বলে। শাতিরা বেগম ব্যাবসা বোঝেননা, কিন্ত পরহেজগার মানুষ, সমস্যা-সমাধান দিতে পারেন।

নব্বইয়ের মাঝামাঝি ডেমরায় সংগঠনের প্রথম কলোনি উঠেছে, ছোট্ট কলোনি। নিজেদের বাড়ি থাকায় কলোনিতে ওঠেনি চৌধুরি পরিবার। তবে শাতিরা বেগম নিয়মিত কলোনিতে যাতায়াত করেন। খুব সম্মান ওখানে তার। মেয়ে-বৌদের নসীহত করা তো আছেই, সংগঠনের নানা সিদ্ধান্তেও তার মতামত নেয়া হয় অনেকসময়। যদিওবা ওসব পুরুষদের আয়ত্বে বলে ধরা হয়।


একদিন তালিম করে ফিরে আসার পর জানালেন, কলোনির মাদ্রাসায় ভাটির দেশের একজন নামকরা পীরসাহেব আসবেন। মাদ্রাসা নতুন, ভাড়া বাসায় চলছে। পীরালিতে বিশ্বাসী নয় সংগঠন, প্রচুর ভন্ডামি-বেদাতি আছে ওতে। কিন্ত এই পীর বিশেষ লোক, পরীক্ষিত।

শাতিরা বেগম রাতে খাবার টেবিলে বসে ঘোষণা করলেন, বৌমাকে খেদমতে পাঠানো হবে। তার কথার ওপর বাসায় কেউ আওয়াজ করেনা। হাকিম সাহেবও স্ত্রীর সিদ্ধান্তে আস্থা রাখতেন। আজও এর ব্যত্যয় হয়না।

খাবার টেবিলে বসে না বুঝেই মাঝা ঝাঁকিয়েছে সেতু। শ্বশুরবাড়িতে এসে ধর্মককর্ম শিখলেও অনেক কিছুই অজানা তার। মনে পড়ল সেদিন এক ভাবী এসে আলাপ করছিল। খেদমত নিয়ে শাতিরা বেগমের কাছে টিপস চাইছিল। মনযোগ দিয়ে শোনেনি সেতু।

খবার পর প্লেট-গ্লাস ধুয়ে বিছানায় যাবার আগে শাতিরা বেগম বৌকে নিয়ে বসেন। খেদমত বলতে আদতে কি বোঝায়, তা ভেঙে বলেন। শুনতে শুনতে কান লাল হয়ে ওঠে নববধূর, অবিশ্বাস্য ঠেকে। ভয়ে শুধু হুঁ হুঁ করে যায়।

শোবার সময় স্বামীকে জিজ্ঞেস করে, সে-ও একই কথা বলে।

- পীরসাহেব হুজুর কামেল লোক। আম্মা ঠিক করেছে যেহেতু, ভালই হবে। বিজনেস দিনকে দিন ডাউন হচ্ছে, কিচ্ছু মাথায় ধরছেনা।

বলে ক্লান্ত জয়নাল চৌধুরি অন্য কাৎ হয়ে শুয়ে পড়ে।


মায়ের ওপর অগাধ বিশ্বাস জয়নালের। স্বামীর কাছে সাপোর্ট না পেয়ে দিশেহারা লাগে সেতুর। মুখে কিছু না বললেও পরদিন জরুরি দরকারে বাপের বাড়ি যাবার কথা বলে সেখানে গিয়ে বসে রইল, ফিরবেনা।

কি ঘটনা, তা তো বাসায়ও বলা যায়না। বিবাহিতা মেয়ে বাপের বাড়িতে অকারণে বেশিদিন থাকলে সমস্যা। তাই বাবা-মাও ফেরার জন্য চাপ দিচ্ছে।

শাতিরা বেগম ঠিকই বুঝেছেন বৌ কেন বাপের বাড়ি গেছে। রেগে না গিয়ে ক'দিন সময় দিলেন। সপ্তাখানেক পর নিজে যান বৌ নিয়ে আসতে। খুব একটা চেষ্টা করতে হয়নি। এমনি বাপ-মা চাপ দিচ্ছিল, তারওপর শ্বাশুড়ি বলেছে প্রয়োজনে বাসায় ভেঙে বলবে সমস্যার কথা।

তাতেই লজ্জ্বা পেয়ে ব্যাগ গুছিয়ে নেয় সেতু। ভয় হয় বাসায় ফিরে শ্বাশুড়ি বকাবকি করবেন। না, তেমন কিছু হলোনা।

বাসায় ফেরার পর শ্বাশুড়ি একটা পাতলা বই পড়তে দেয়। কাগজে ছাপা কাভার। সাদার ওপর লাল প্রিন্টে নাম লিখা, "নারীশিক্ষাঃ মুসাফিরের খেদমত"। কলোনি স্থাপনের পর দু-তিনজন মিলে প্রথমেই একটা প্রেস দিয়েছেন। সংগঠনের বইপত্র সব বাইরে ছাপানো যায়না। সবাই সংগঠনের মতের প্রতি সহনশীল নয়।
 
নারীশিক্ষা সিরিজের বেশকিছু বই আছে সংগঠন থেকে বের করা। দুয়েকটা শ্বাশুড়ি পড়তেও দিয়েছেন। ওগুলো পর্দা, সংসার, স্বামী-সন্তান নিয়ে চলাফেরা ইত্যাদি দৈনন্দিন প্রয়োজন নিয়ে লিখা। এই বইটি একটু অন্যরকম।

সংগঠনের বইয়ে কখনো প্রাণীর ছবি থাকেনা, থাকে ক্যালিগ্রাফি। এই পুস্তিকায় এর ব্যত্যয় ঘটেছে। কাভার পেইজে আউটলাইন ড্রইংয়ে * পরিহিতা নারীর ছবি, ছড়ানো ঠোঁটে, গোলগোল চোখ হাস্যোজ্জ্বল। দুপাশে পাঞ্জাবি পড়নে দাড়ি-পাগড়ি পড়া দুজন পুরুষ। দুজনে মহিলাটির এক এক হাত ধরে দাঁড়িয়ে। কাভারের এক কোণে বাবলের ভেতর লিখা "সচিত্র"।
"কে কে? বাবা-ভাই? বাবা-হাজবেন্ড?" ভ্রু কুচকে মনে মনে ভেবে পড়তে শুরু করে সেতু।


পুস্তিকার শুরু মুসাফিরের সঙ্গা দিয়ে। কে কতটুকু দূরত্ব কতদিনে পড়া দিয়ে কোথায় কয়দিন থাকলে "মুসাফির" বলে গণ্য হবে, এসব। ছবিতে দেখা যাচ্ছে একজন লোক মরুভূমির ওপর পোটলা মাথায় নিয়ে হাঁটছে।

সেতু পাতা উল্টে দেখল, প্রতিটিতে ছবি রয়েছে। রঙিন নয়, কালো আউটলাইন করে আঁকা। যে এঁকেছে তার হাত ভাল, বেশ বর্ণনা আছে ছবিতে।

দ্বিতীয় পেজে দেখা যাচ্ছে, জোব্বা পড়া লোকটি ক্লান্তভাবে কারো ঘরে বসে আছে, গৃহকর্তার সঙ্গে গল্প করছে হাতে পানির পেয়ালা নিয়ে। একজন মহিলা ভেতর ঘরের দরজায় উঁকি দিয়ে দেখছে।

তৃতীয় ছবিতে পরিবারের বাচ্চাকাচ্চারা সহ মুসাফির গোল হয়ে খেতে বসেছে। মহিলাটি মাথার ওড়না দিয়ে মুখ প্যাচিয়ে পর্দা রক্ষা করে খাবার বেড়ে দিচ্ছে। বর্ণনায়ও অতিথি আপ্যায়নের ফযিলত ও গুরুত্বের কথা রেফারেন্সসহ উল্লেখ করা হয়েছে।

চতুর্থ পাতায় গিয়ে মনযোগ বাড়ায় সেতু। মুসাফির ভেতরের কক্ষে খাটে বসে সেই মহিলাটিকে পাশে নিয়ে গল্প করছে। একটু আগে যার সঙ্গে মুখ ঢেকে পর্দা করছিল, এখন তার গা ঘেঁষে বসা। মাথায় ওড়নাও নেই, কালো চুল ছেড়ে রাখা।

বর্ণনায় সাধু ভাষায় লিখাঃ "মুসাফিরের নিকট পৌঁছাইয়া খেদমতকারিনী তাহার অভিপ্রায় ব্যক্ত করিয়া নিয়্যত করিবেন। ইহা মুসাফিরের কর্ণগোচর হওয়ামাত্র উভয়ের মধ্যকার পর্দার বিধান উঠিয়া যাইবে।"

পরের দু'পাতায় মুসাফিরের সঙ্গে গৃহিণীর ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। তারপরের পাতায় এসে চোখ বড়বড় হয় সেতুর, শুকনো ঠোঁট চেটে ঢোক গেলে।


মুফাসির খালি গায়ে বিছানায় শুয়ে আছে। পাশে দাঁড়ানো গৃহিণীর গায়ে জামা নেই, উবু হয়ে পাজামা ছাড়ছে! তারপর? তারপর মহিলাটি মুসাফিরের পাজামা খুলে দিচ্ছে।

"ওটা কি? ইছহ.. দাঁড়িয়ে আছে! ওটা হাতে নিয়ে.." মনে মনে আঁতকে ওঠে সেতু।

কি হচ্ছে বুঝতে "খেদমতের বিধান" সেকশন থেকে পড়তে শুরু করে সেতু। দ্রুত পাতা উল্টে সামনে যেতে যেতে দেখা গেল ছবিগুলো রগরগে হচ্ছে। "আল্লাহ! কি করছে?" অস্ফুটে বলে ওঠে সেতু কাঁপা হাতে পাতা ওল্টাতে গিয়ে।

বিবসনা হয়ে মহিলাটিকে নিচে রেখে পুরুষটি কি করছে তা বেশ ভালমতই ফুটিয়ে তুলেছে শিল্পী। আঁকিয়ের নামও প্রচ্ছদের ভেতর দেয়া আছে - লাজমুন্নেছা। "নামের সঙ্গে কাজের মিল নেই!" ভাবে সেতু।

ছবির নিচের বর্ণনাগুলো পড়ে কান ঝাঁঝাঁ করে গৃহবধূর। কলেজে থাকতে এক ইঁচড়েপাকা বান্ধবী একবার একটা বাজে বই এনে দিয়েছিল। সেটা পড়তে গিয়ে এমন লেগেছিল। তবে ওটায় এত ছবি ছিলনা, আর বাজে ভাষায় লিখা। এখানে ভাষা খুবই মার্জিত। ছবিগুলোও একদিক দিয়ে রুচিশীল।

"ওমা, কোলে কেন মহিলা?" ছবি দেখে অবাক হয়ে বর্ণনা খোঁজে সেতু।

প্রাসঙ্গিক কিছু বলা নেই। বলা আছেঃ "প্রশান্তি দিবার জন্য খেদমতকারিনী সর্বোত প্রচেষ্টা করিবেন। ক্লান্ত মুসাফিরের উপরি রতিপরিশ্রমের গ্লানি ভুলাইতে আলাপচারিতায় মশগুল থাকিবেন। মুসাফিরের সঙ্গে গোমড়ামুখ করিবেন না, হাসিয়া কথা বলিবেন। বাড়ির খোঁজখবর লইতে পারেন, সফরের বিত্তান্ত জানিতে পারেন। কড়া গলায় কথা বলিবেন না। মুসাফির ভিন্নভাষী হইলে ইশারা করিবেন। শরীরের নানা স্থানে হস্ত রাখিয়া যোগাযোগ করিতে পারেন।

মুসাফির আপত্তিকর কোন ভঙ্গিমায় ঘনিষ্ঠ হইতে চাইলে রাগিবেন না। বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্নরুপে মিলিত হওয়ার রেয়াজ রইয়াছে। যেমন - কোন কোন অঞ্চলে শিশ্ম প্রবেশ করাইবার পূর্বে "আউযুবিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রজিম" পড়িয়া স্ত্রীঅঙ্গে তিনবার থুথু মারিয়া শয়তান তাড়াইবার রেয়াজ দেখা যায়। শরীয়ি তাগিদ না থাকিলেও ইহাতে দোষের কিছু নাই।

ক্লান্ত মুসাফিরের লিঙ্গোত্থান হইতে সময় লাগিলে, রতিকার্যের মধ্যে নেতাইয়া পড়িলে বা বীজস্থলন হইতে দীর্ঘকাল লাগিলে বিরক্ত হইবেন না। হস্ত প্রয়োগ করিয়া সহায়তা করুন।

মেহমানের বিশেষ অঙ্গ ছোট বলিয়া তাচ্ছিল্য করিবেন না, তাহাতে পুরুষের মনোকষ্ট হয়। অনুরুপভাবে শিশ্ম অতিকায় হইলে গ্রহণ করিতে আপত্তি করিবেন না। আপনি সদিচ্ছা রাখিয়া জঙ্ঘা প্রসারিত করিলে খোদাতালা আপনার যোনি প্রসারিত করিয়া দিবেন বলিয়া বিশ্বাস রাখিবেন। তদুপরি রতিকার্যে বেদনা হইলে মিষ্টভাবে জানাইবেন। উঠিয়া গিয়া বা ক্রন্দন করিয়া মেহমানকে বিব্রত করিবেন না। বীজস্থলন পর্যন্ত যেকোন মূল্যে মিলন চালাইয়া যাইতে দিবেন এবং সঙ্গীকে উৎসাহিত করিবেন।"

"অনেএএক নিয়ম.." একটানে পুরোটা পড়ে দম নেয় সেতু। "মানে হচ্ছে, যাই হোক, কমপ্লিট করতে হবে, হুমম.. ঠিকই তো, মাঝপথে উঠে পড়লে হবে? খারাপ দেখায়না?" নির্দেশগুলো যুক্তিপূর্ণ মনে হয় নববধূর।


ছবিতে মনযোগ কম দিয়ে পড়তে পড়তে এগোয় সেতু। শেষদিকে এসে দেখা যায় গৃহিণী বিছানা থেকে নেমে কাপড় পরে নিচ্ছে। লোকটির ওই জায়গাটা নেমে আছে। মহিলা সবস্ত্র হয়ে ওড়না মাথায় দিয়েছে, আগের মত মুখও ঢেকেছে।

"বাবাহ, ঢঙ!" হেসে ফেলে সেতু। এই দ্বিচারিতা অদ্ভুত ঠেকে। নিচে সীসার ছাপ দেয়া হরফে ক্যাপশন দেখতে পায়ঃ "রতিকার্য সম্পন্ন হইবে বীজস্থলের মাধ্যমে। খেদমতকারিনী চেষ্টা করিবেন উহা পূর্ণরুপে দেহে ধারণ করিতে। মুসাফিরের বিশেষ অঙ্গ শিথিল হওয়া পর্যন্ত যুগল জোটবদ্ধ থাকিবে। আপনা হইতে অঙ্গ ছুটিয়া গেলে খেদমতকারিনী নিজেকে ছাড়াইয়া নিবেন। তাহাকে দ্রুত কাপড় পরিধান করিতে হইবে। কেননা এমতাবস্থায় পুনরায় মুসাফিরের সঙ্গে খেদমতকারিনীর পর্দার বিধান জারি হইয়া যায়।"

ব্যাখ্যাটি পড়ে মাথা ঝাঁকায় সেতু। না বুঝেই সিরিয়াস বিষয় নিয়ে হাসাহাসি করায় জিভ কেটে নিজেকে তিরষ্কার করে।

শেষ ছবিতে দেখা যাচ্ছে মুসাফির বেরিয়ে গেছে, গালভরা হাসি নিয়ে পেছন ফিরে হাত নাড়ছে। বাড়ির সকলে দোরে দাঁড়িয়ে হাত নেড়ে বিদায় দিচ্ছে। মহিলাটির মুখ আগের মত ওড়না প্যাচানো নেকাবে ঢাকা।

অবিশ্বাস, কৌতূহল, একমত-দ্বিমত মিলিয়ে ভারী মস্তিষ্ক নিয়ে বইটা রিভিশন করল কয়েকবার। বড় হুজুরের ফতোয়া, মাসআলা-হাদিস মিলিয়ে পুরো ব্যাপারটির গ্রহণযোগ্যতা অনুধাবন করে নিজেকে অপরাধী মনে হল। আর কিছু না হোক, একজন ওলী সেই কোন জেলা থেকে আসবেন, সারারাত ওয়াজ করে আবার সকালে ছুটবেন। ক্লান্তি প্রশমনের জন্যে এমন একজন লোকের কাছে সাদকা হিসেবে নিজেকে সঁপে দিতে পারলে গর্ববোধ হবার কথা। "এমন পরহেজগার ওলীকে খুশি করতে পারলে খোদাও নিশ্চই আমার নিয়্যতের দিকে তাকাবেন" মনে মনে ভাবে সেতু।

বইটা আবার খুলে শেষের দিকের একটা পাতা বের করে। হাত-পা ছড়িয়ে মুসাফির মুখে স্মিত হাসি নিয়ে শোয়া, উঠে বসে নিস্তেজ জননাঙ্গ মুছে দিচ্ছে বিবস্ত্র গৃহিণী। এই অবস্থায় পড়ার দোয়াঃ "মা'বুদ, আমি যেমন করিয়া আপনার বান্দার গ্লানি নিবারনের চেষ্টা করিলাম, আপনি তেমনি আমার নেক নিয়্যতগুলি পূরণ করিয়া দিন।"

বিড়বিড় করে পড়ে সেতু। স্বামীর দুশ্চিন্তাঘন মুখটা চোখের সামনে ভেসে ওঠে। গত এক সপ্তায় ব্যবসায়ের আরো ক্ষতি হয়েছে। দুদিন আগে এক কর্মচারী ক্যাশের পয়সা নিয়ে ভেগেছে। কিছুতেই কিছু হচ্ছেনা। কান্না চলে আসে। "খোদা, কেন তুমি আমাদের ওপর নারাজ? কেন?" ফিসফিস করে বলে নববধূ।

সে বাড়িতে আসার পর পরই এই দুর্দশা শুরু হয়েছে। না, সেতু কুসংস্কারে বিশ্বাসী নয়। শ্বাশুড়িও কখনো বৌকে দায়ী করেনি। তবু তো সন্দেহ থেকে যায়। সেতুর মনে হয় এ বুঝি খোদারই ইশারা। বইয়ের শুরুর দিকে ফিরে যায় "খেদমতের ফযিলত" সেকশনে। একটা পয়েন্টে বলা হয়েছেঃ "বদনজরের অস্তিত্ব হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। ফসলের ফলন, সুখি সংসার, সুন্দর বিবির ওপর বদচক্ষু লোকের জানতে-অজান্তে নজর লাগিলে বিশদ ক্ষতি হইতে পারে। সঠিক নিয়্যতে নিয়ম মানিয়া খেদমত প্রদান করিলে নজর কাটিবার নজির রইয়াছে।"

পড়ে চোখ সরু হয় সেতুর। হয়তো এমন কিছুই হয়েছে। ব্যবসায়ি পরিবারে বিয়ে হওয়ার সুবাদে কোন কোন বান্ধবী, আত্মীয়-স্বজনের কন্ঠে ঈর্ষা টের পেয়েছে। তখন আমালে নেয়নি। সেখান থেকেই কারো নজর পড়েনি তো? বদনজর সত্যি হলে তো বিপদ।

সেতুদের এলাকায় এক লোকের দুর্নাম আছে, চোখ খারাপ। সে একবার একজনের বাগান দেখে বলেছিল - সুন্দর পেঁপে হয়েছে। কদিনের মধ্যে বিশাল ফলন্ত বাগান রোগে ধরে বিলীন। বেচারা কি বিব্রতই না হয়েছে। তখন লোকটির ওপর দোষ দেয়া পছন্দ করেনি সেতু। কিন্ত এখন মনে হচ্ছে তেমন কিছু হতেও তো পারে, পারেনা?

বইটা বুকে জড়িয়ে ধরে চোখ বুজে বিড়বিড় করে নববধূঃ "আল্লাহ, আমি আপনার নেক বান্দার ক্লান্তি মুছে দেবার জন্য আপন শরীর সাদকা করিবার নিয়্যত করিলাম। আপনি আমার নিয়্যত কবুল করুন। আমীন।"

বইটা ড্রইংরুমের টেবিলে রেখে উঠে দাঁড়ায় সেতু। না বলে বাপের বাড়িতে গিয়ে রাগ করে বসে থেকে স্বামী-শ্বাশুড়ির মনে কষ্ট দেয়ায় অনুশোচনা হয়।

সকালে বাসায় ফেরার পর শাতিরা বেগম বৌয়ের হাত ধরে বসে বুঝিয়েছেন অনেক্ষণ ধরে। এইযে রুপ যৌবন, আকর্ষণীয় দেহবল্লবী, এগুলো কার নেয়ামত? যিনি বানিয়েছেন তিনি কেন বানিয়েছেনে? সেতু স্বীকার করে পুরুষের জন্যেই দিয়েছে। তাই বলে কি যাকে তাকে রুপ-যৌবন দেয়া যাবে, সেই পুরুষ কি শুধুই স্বামী নয়? হ্যাঁ, তাই।

শাতিরা বেগম বুঝিয়ে বলেছেন, স্বামীরও ধরণ আছে। জয়নাল হচ্ছে স্বামী। কাল হালালা যদি হয়, আরেকজন স্বামী হবে সাময়িকের জন্যে। খেদমতে গেলে আরেক স্বামী ক্ষণিকের। সব ধরণের স্বামীরই হক রয়েছে স্ত্রীর শরীরে। যখন যে স্বামীর প্রয়োজন, সে স্বামীর বাহুডোরেই রইতে হবে।

মানসিক প্রস্ততি নিচ্ছিলই সেতু, বইটা পেয়ে নিয়্যত করতে সুবিধা হল।
 
আটাত্তরে সংগঠনের শুরুর দিকের কথা। সাগরপাড়ের এলাকা থেকে হাকিম চৌধুরির একজন দোস্ত আসবে। আগে তাবলীগি জামাতে এসে পরিচয় হয়েছিল। তারপর খুব খাতির। চিঠি লিখে বলেছে আসবে। চিঠি পৌছাতে পৌছাতে মেহমান আসবার দিন চলে এল।

তখনকার দিনে হোটেল-মোটেল অত ছিলনা। থাকলেও সজহলভ্য নয়, বেশ দূরে। সংগঠনের প্রভাবে তাবলীগ ছেড়ে দিয়েছে লোকটি, তাই থাকতে হবে নিজ উদ্যোগে। দ্বিনী ভাইয়ের বাড়িতে থাকবেন, সমস্যা নেই। কিন্ত হাকিম চৌধুরি সূক্ষ্মভাবে চিন্তা করার লোক।
সাথীদের জানালেন ঘটনা। লোকটি একটা কাজে আসবে। থাকবে সপ্তাদুয়েক। শুনে সবাই জানালেন এটা ঠিক হবেনা। চৌধুরি সাহেব থাকবেন ব্যবসায়ের কাজে বাইরে। বাড়িতে শুধু স্ত্রী আর ছোট্ট জয়নাল। লোকটা এসে থাকবে দিনরাত, শরীয়তসম্মত হবেনা।
কয়েকটা সল্যুশন বের হল দলের আলোচনায়। চৌধুরি সাহেব বন্ধুকে বাসায় রাখবেনই - না রেখেও উপায় নেই, বেচারা থাকবে কই? এক্ষেত্রে শাতিরা বেগমের সঙ্গে মেহমানের মাহরামের সম্পর্ক থাকা বাধ্যতামূলক। যেহেতু লোকটি তার বাপ-ভাই কেউ নয়, স্বাভাবিকভাবে তা হচ্ছেনা।
হালালা তখন দেশে পুরোদমে প্রচলিত। সেই অপশনটি তো থাকছেই। কিন্ত তাতে সমাধান হচ্ছে কই। তখন চৌধুরি সাহেব বেগানা হয়ে যাবেন, তাকেই বাইরে ঘুমাতে হবে!
বৃত্তের বাইরে বেরিয়ে বাস্তববাদী কিন্ত সৎভাবে জীবনযাপনের নিমিত্তে গড়া সংগঠনটিতে নতুন নতুন যুক্তিতে ফতোয়া উদ্ভাবন হয় অহরহ। এরমধ্যে কোনটি বেদাত, কোনটি যুক্তিযুক্ত তা নিয়ে তর্কের পর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।


মুসাফিরের খেদমতের ফতোয়ার উদ্ভাবক সংগঠনের কেউ নয়। সংগঠনের প্রতি আগ্রহী একজন মুফতিকে সিলেট থেকে আমন্ত্রণ করে আনা হয়েছিল ক'মাস আগে। উদ্দেশ্য, তিনি সদস্যদের স্বপ্নের কলোনির জন্য একখন্ড জমির ব্যবস্থা করবেন কয়েকজন ভক্তকে কাজে লাগিয়ে। পয়সা সদস্যরাই জমা করেছে। কিন্ত এমন জায়গায় নিষ্কন্টক জমি পাওয়া, কেনা, আর ধরে রাখা কঠিন।
তখনও চৌধুরি সাহেবের মত সমস্যায় পড়েছিল সংগঠন। তাবলিগী না হওয়ায় মসজিদে অবস্থানের সুযোগ নেই, এটা একটা বড় সমস্যা। নিমন্ত্রণ করে মেহমানকে হোটেলে রাখলেও সম্মান থাকেনা। সংগঠনের সকলে হয় চাকুরিজীবি নয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ি। ভাড়া বাসায় বা ছোট্ট বাড়িতে থাকেন। টাকা-পয়সা জমান কলোনির জমি-মসজিদ-মাদ্রাসার জন্যে।
সবারই রুম সংকট। তাদের মধ্যে বাহালুল হকের ভাড়া বাসায় গেস্টরুম আছে। মুফতি সাহেবের আগমন উপলক্ষ্যে একটা বেডরুম পরিষ্কার করে রাখা হয়েছে। ছোট চৌকির গেস্টরুম তো হুজুরকে দেয়া যায়না।
বাহালুল হকের বাসায় স্ত্রী-কন্যা আছে। মুফতি সাহেব এসে জমি বায়না করতে করতে সপ্তাখানেক অন্তত লাগবেই। চৌধুরি সাহেবের মতই সমস্যাটা ধরা পড়েছিল তখন।
হুজুর চলে এসেছেন, ব্যাগপত্র রেখে বিশ্রাম করে খাওয়া-দাওয়া করেছেন। আছরের সময় সমস্যাটা মসজিদের বাইরে মাঠে হুজুরকে নিয়ে গোল হয়ে বসে কুশলাদি বিনিময়ের সময় কেউ একজন তোলে।
অনেকেরই মনে হয় এটা তেমন কোন সমস্যা না। শুধু শুধু ঝামেলা তৈরি করা হচ্ছে। কিন্ত, আলোচনা যেহেতু শুরু হয়েছে, সমাধান আবশ্যই।
প্রথম সমাধান, মুফতি সাহেবকে স্থান বদল করতে হবে। কিন্ত বাহালুল হক মোটেও রাজি নন। হুজুর এসে আবার থাকার জায়গার জন্যে সন্ধ্যাবেলা দৌড়াদৌড়ি করবেন, এ-তো নিজের জন্যে বটে সংগঠনের জন্যেও লজ্জ্বার।
হালালার কথাই প্রথম ওঠে। বাহালুল হল স্ত্রীপ্রেমী মানুষ, তালাক-ফালাক বলতে পারবেন না। হাত নেড়ে মাথা ঝাঁকিয়ে মানা করে দিলেন। আরেক সমাধান হলো হুজুর যদি মেয়েটিকে বিয়ে করে নেন। তাতে সুবিধা হল, বৌ-শ্বাশুড়ি এক বাড়িতে থাকতেই পারে। এর আবার দুই সমস্যা। একেতো হালালা জিনিসটিই প্রশ্নবিদ্ধ, নেহাৎ প্রয়োজন হলে মেনে নেয়া হয়। তারওপর একেবারে শুধুশুধু সাময়িক বিয়ে কি জায়েয হবে?
কেউ কেউ বলেন শুধুশুধু তো নয়, দ্বীনি কাজের জন্যেই হবে। তা-ও নাহয় হতো, কিন্ত হুজুরের অলরেডি বিবি রয়েছে চারখানা!


মুসাফিরের খেদমতের যুক্তিটা ঠিক কে উত্থাপন করেছে, সঠিক জানা যায়না। প্রাথমিকভাবে বেশিরভাগ সদ্স্যই বিপক্ষে ছিল। কিন্ত উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিয়ের প্রশ্নবিদ্ধতা এড়িয়ে সমস্যা সমাধানের পন্থাটি ক্রমে যুক্তিযুক্ত মনে হল সবার। শিয়াদের তো মু'তা আছে, বলেন কেউ কেউ। সুন্নী ভিত্তিতে বেড়ে ওঠা সংগঠনে ওটা গ্রহণযোগ্য নয়। কিন্ত বিশেষ প্রয়োজনে ওটাই প্রয়োগ করা যায় কিনা সে নিয়ে তর্কাতর্কি হলো।
সরাসরিভাবে শরীয়াসম্মত বলে স্বীকৃত না হলেও গ্রহণযোগ্যতা বাড়ল মুফতি সাহেবের মন্তব্যে। যেহেতু দেশে শরীয়া চলছেনা, বিরুপ পরিবেশে রয়েছে সংগঠন, তাই শিয়াদের থেকে তাকিয়া, মু'তার মত কিছু বিশেষ বিষয় ধার করা যেতে পারে। তৎক্ষণাৎ টিকে থাকা ও বিস্তারের স্বার্থে সৎ উদ্দেশ্যে মুসাফির খেদমতের ফতোয়ার খসড়া পাশ হল।


চৌধুরি সাহেবের ঘটনার আগ পর্যন্ত তিনবার ফতোয়াটির প্রয়োগ করা হয়েছে। প্রতিবারই কোন গুরুত্বপূর্ণ ওলীর আগমন উপলক্ষে। সদস্যদের মধ্যে একটা বোঝাপড়া আছে, শুধুমাত্র সংগঠনের সৎ স্বার্থেই এই ফতোয়ার প্রয়োগ করা যাবে। চৌধুরি সাহেবই প্রথম ব্যক্তিগত সমস্যার কথা উত্থাপন করেন।
এমন নয় যে এরকম সিচুয়েশন অন্য বাড়িতে হয়না। দূর সম্পর্কের না-মাহরাম আত্মীয়-স্বজন তো সবার ঘরেই মাঝেসাঝে বেড়াতে আসে। কেউ এসে একরাত থাকলেই ঘরের নারীদের সঙ্গে শোয়াতে হলে তো বিপদ। বাস্তবতা বিবেচনায় এ নিয়ে কেউ চিন্তা করেনা। চৌধুরি সাহেবই সমস্যাটি সামনে আনলেন।
সেবার শেষপর্যন্ত শাতিরা বেগমের বিছানায় পরপুরুষের ঠাঁই হয়নি। বিশদ আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, এক সপ্তাহ পর্যন্ত না-মাহরাম এক ছাদের নিচে থাকতে পারবে বিনা সমস্যায়। এরমধ্যে মাহরাম করার কোন বাধ্যবাধকতা নেই, যদি আলাদা ঘরে মেহমানকে রাখা যায় এবং নারীরা পর্দা করতে রাজি থাকেন।
যেহেতু সাতদিনের বেশি দূরের বন্ধু-আত্মীয় সাধারণত কারো বাসায় সাধারণত অবস্থান করেনা, সে হিসেবেই এই ফতোয়া দেয়া হয়। চৌধুরি সাহেবের বন্ধুর কাজ চারদিনেই শেষ হয়েছিল।
অতদিনে আবার মুসাফিরের খদমতের ব্যাপারটি সংগঠনের মেহমানদের কাছে প্রত্যাশিত হয়ে উঠেছে। কলোনির জমি রেজিস্ট্রির সময় সিলেটের মুফতিসাহেব এলেন গোটাছয় সাগরেদসহ। রেজিস্ট্রির সময় এলাকার কেউ ঝামেলা করতে চাইলে সঙ্গে যত লোক রাখা যায়, ততই ভাল।
নিজ জমিতে বাড়ি উঠেছে সবে চৌধুরি সাহেবের। স্বভাবতই তার ঘরে জায়গা হলো দুজনের। তারা এক সপ্তা নয়, থাকবেন এক রাত। তা হলে কি হবে, হুজুরের অতিথিদের ওসব যুক্তি দেখালে চলবেনা। তারা ঠিকই রাতে শোবার ঘরে বিছানার মাঝে জায়গা রেখে অপেক্ষা করবেন।


ত্রবধূর অস্থিরতা দেখে শাতিরা বেগম রাগ করেন না। দুই যুগ আগে অতিথি নিয়ে ঘরে এসে এক কোণে ডেকে স্বামী যখন দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়েছিল, তিনিও সন্তস্ত্র হয়ে পড়েছিলেন।

সেতুকে বইটি নিয়ে মনযোগ দিয়ে বারবার পড়তে দেখে আশান্বিত হন শাতিরা বেগম। যাক, মেয়েটা আস্তে-ধীরে সব জানুক। তাহলে পরে ভয় কম পাবে। তার সময় তো কেউ কিছু বলার-বোঝানোর ছিলনা।
 
- বৌমা, বইটা পড়ছ, দিলাম যে?
বিকেলে বৌকে নিয়ে শাক বাছতে বসে জিজ্ঞেস করে শ্বাশুড়ি।
- জ্বি আম্মা।
গলা নিচু করে জবাব দেয় বৌ।
- দোয়াগুলা দেখছ?
- হ্যাঁ।
- এগুলা কিন্ত এমনিও পড়া লাগে, বরকত আছে। স্বামীর সাথে হইলেও পড়া লাগে। পড়?
- না.. জানতাম না তো।
- এখন পড়। তোমার তো ব্রেন ভাল, তাড়াতাড়ি মুখস্ত করতে পারো। কামেল লোকের কাছে যাইবা, ওনারা কামেল মেয়েলোকই পছন্দ করে।
- উঁ..
লালশাকের ডাঁটা ছিলতে ছিলতে শুনছে সেতু।
- পুরাটা পড়ছ? ছবি আছে, দেখছ?
- হুম, দেখেছি।
- ভয় পাওয়ার কিছু নাই। তুমি খালি সময়মত দোয়া-দুরুদ পড়বা, যেসময় যেটা। দেখতে দেখতে কাম হয়ে যাবে।
আশ্বস্ত করার জন্যে বলেন শাতিরা বেগম। সেতু চুপচাপ শুনছে।
- এইযে পরীসাব হুজুর না? হ্যায় কিন্ত অনেক খুতখুইতা।
হাসুর মা আলু ছিলতে ছিলতে বলে। হাসুর মা বাড়ির কাজের মহিলা। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কাজকর্ম করে, রান্নাবান্নায় সাহায্য করে।
- ক্যান? কি হইছে?
- গত বচ্ছরও তো আইছিল। ময়েজ সাবের পোলার বৌরে নিয়া গেছিল ওনার ইস্তিরী। হুজুর জিগায় আয়তুল কুরছি, কইতে পারেনা। সূরা কোনটা জানি জিগাইল, পারেনা। পরে জিগায়, অযু কইরা আসছেন? ছেড়ি কয়, জ্বি। কিন্ত হাত ধোয়া পাও ধোয়া কয়বার-কি কইতে পারেনা। * পিন্দাইয়া ফিরত পাঠাইয়া দিছে। বাইরে ময়েজ সাবের বৌ আছিল, হ্যায় অনেক রিকুয়েস্ট করছে। হুজুর কয়, না - পরেজগার মেয়েলোক ছাড়া কাওরে হ্যায় সদকা নিবোনা।
শাতিরা বেগম শুনে মাথা ঝাঁকান।
- দেখছ বৌ, কামেল লোকের চাই কামেল নারী। তুমি বুদ্ধিমান আছ, সব মুখস্ত রাখবা।
- জ্বি।
সেতুরও ঘটনা শুনে ভয় হয়। এতকিছুর পর যদি এভাবে রিজেক্ট করে দেয়, তবে শ্বাশুড়িকে কিভাবে মুখ দেখাবে?


- জয়নাল, কাল গোডাউনের দিকে যাবি রে?
রাতে খেতে বসে ছেলেকে জিজ্ঞেস করেন শাতিরা বেগম।
- জ্বি আম্মা।
- জাহিনরে বলিস, দুপুরে যেন বাসায় চইলা আসে।
- আগামীকাল? কালকে তো মাল আসবে মনে হয়।
- সারাদিন থাকতে হবে? কর্মচারী আছেনা? দুপুর বেলায় আসতে বলবি। খাওয়াদাওয়া করে ঘন্টা-দেড় ঘন্টার মধ্যে চইলা যাবে।
- আচ্ছা, বলব।
- সকাল সকাল বলবি। বাসায় জানায়ে দিবি কাউকে দিয়ে। বৌমা রেডি হয়ে থাকবে।
- আচ্ছা।
কথোপকথন শুনে সেতুর কান খাড়া হয়।
- কোথাও যেতে হবে, আম্মা?
- না, যাওয়া-যাওয়ির ডেট এখনো শিওর হয়নাই।
শ্বাশুড়ি বলেন। মাথা নাড়ে সেতু। আর প্রশ্ন করেনা। এমনিতেই মাত্র "পালিয়ে" যাবার পর ফিরেছে। বেশি পকপক করলে শ্বাশুড়ি ক্ষেপতে পারে। জয়নাল যে রাগ করেনি তাতেই কৃতজ্ঞ সেতু। অবশ্য মায়ের ওপর আগ বাড়িয়ে রাগ দেখাবেও না।


সকালে দশটার দিকে লোক মারফত খবর আসে, মেহমান আসছে।
- মামা একা আসবে?
রান্নাঘরে বসে জিজ্ঞেস করে সেতু।
- হ্যাঁ। ব্যবসা রেখে আসবে। এসে চলে যাবে।
জাহিন সাহেব সেতুর মামাশ্বশুর। বয়সে শাতিরা বেগমের ছোট। নাম জাহিনউদ্দিন খান। শরীয়াভিত্তিক পলিটিক্স করেছেন ছাত্রজীবন থেকে, পোড় খাওয়া লোক। ওনার এলাকায় বড় ফিনান্সিয়ার ছিলেন, অভিজ্ঞ লোক। সরকার পরিবর্তনে ব্যবসায় ধ্বস নেমেছিল, তা আর ঠিক হয়নি। তবে ভালই আছেন বলতে হয়। সবসময় ফুর্তিতে থাকেন।
- কাছাকাছিই না ওনাদের বাসা, এত তাড়াহুড়া করে আসবে যে?
- তোমার জন্যই না আসবে। শুক্রবার ডেট পড়লে আগে থেকে রেডি হইতে হবেনা?
- আমার জন্য?
- হ্যাঁ। যোহরের পর আসবে। তাড়াতাড়ি রান্নাবাড়া শেষ কর, গোসল-টোসল করে রেডি থাকবে। বিকালে নাকি সিলেট থেকে মাল আসবে। বেশি সময় পাবেনা।
- কোথায় যাব আমরা?
- যাওয়ার সময় কই? তোমাদের শোয়ার ঘরটা গুছিয়ে রেখো। জয়নালের ধোয়া লুঙ্গি আছেনা?
- আছে।
- লুঙ্গি দিয়ো। দেখো বিছানার ওপর যে না দাঁড়ায়। ফ্যানে বাড়ি খাবে।
- জ্বি। খাওয়া-দাওয়া করে রেস্ট নিয়ে ফিরবে মামা?
- রেস্ট নেওয়ার সময় পেলে নিবে। পাংখা রেখো হাতের কাছে, কারেন্টের তো ঠিক ঠিকানা নেই। গরমে কষ্ট করবে।


যোহরের পরপরই কাঠের দরজায় নক হলো। শেষ মুহুর্তের রান্নায় হাসুর মায়ের সঙ্গে হাত লাগাচ্ছিল সেতু। শ্বাশুড়ি বললেন দরজা খুলে দিতে।
পাঞ্জাবি-পাজামা পড়া লম্বা একটা লোক দাঁড়ানো। ঘাড় তুলে তাকাতে হয় সেতুকে। পেটানো শরীর, খোচা খোচা লাল-সাদা দাঁড়ি, স্মিত হাসি। জাহিন সাহেব বিয়ের সময় এসেছিল, সেতুর খেয়াল নেই। বলা চলে প্রথমবার দেখা। তবু চিনতে সমস্যা হয়না গৃহবধূর। মামার কথা অনেক শুনেছেন। অনেক মজার গল্প আছে ওনাকে নিয়ে।
- এ্যাই, এ্যাই.. ওঠো..
পা ছুঁয়ে সালাম করতে গেলে মাথায় হাত দিয়ে হাসেন জাহিন সাহেব। শক্ত চোয়ালে সুদৃশ্য হাসি।
- কি যেন নাম তোমার?
- জ্বি, সামিতুন্নেছা সেতু।
- মাশাল্লা, জয়নাল ভাল বৌ পেয়েছে তো।
মামাকে তাকিয়ে থাকতে দেখে সলাজ হয়ে ঘোমটা দেয় সেতু। বলে,
- মামীকে নিয়ে আসতেন?
- ওদের নিয়ে আসার সময় কই। আপার অর্ডার তাই এলাম।
শাতিরা বেগম বেরিয়ে এসেছেন। বলেন,
- আসছিস? নে, বোস। খেতে বোস।
- আমার কিন্ত সময় খুব শর্ট, আপা।
- সব রেডি, হাত ধুয়ে বস। হাসুর মা, খাবার বাড়ো।
হাঁক দেন।
জাহিন সাহেব হাত ধুয়ে পাঞ্জাবির হাতা গুটিয়ে খেতে বসেন। বোন-ভাগ্নেবৌকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বলেন,
- বৌমা, বসো, খেতে বসো। আপা, তুমিও বসো। আমরা নিয়ে নিয়ে খাবো।
- আমি পরে খাব মামা। আম্মা বসে পড়েন।
সেতু বাটি সাজাতে সাজাতে বলে।
- তুমি বইসা পড়ো মামার সাথে। আমি আজ খাবনা দুপুরে।
শাতিরা বেগম চামচ হাতে নেন। বৌকে ধরে বসিয়ে দেন ভাইয়ের পাশে।
 
খাবার টেবিলে বসে কুশলাদি বিনিময় হয়। কথায় কথায় জয়নালের ব্যবসায়ের কথা তোলেন শাতিরা বেগম। জাহিন সাহেব বলেন,


- একটু মন্দা চলছে। ঠিক হয়ে যাবে, সময় লাগবে।
- ফতুর হইয়া যাবে তো এদ্দিনে। বিশাল লোকসান দিচ্ছে। লাস্ট চালানে নাকি মালও খারাপ পড়ছে।
বোনের গলায় শঙ্কা টের পান জাহিন সাহেব।
- এখন যেই অবস্থায় আছে, সবকিছু বৌয়ের হাতে।
শ্বাশুড়ির সিরিয়াস গলা শুনে নিজের গলায় ভাত আটকে যাবার যোগার সেতুর।
- কোন হুজুর এটা? নোয়াপুরি?
জাহিন সাহেব জিজ্ঞেস করেন।
- কি নামে ডাকে জানিনা, বড় পীর।
- সামিতুন্নেছা, তোমার হাতেই এখন সব।
মামা বাঁয়ে তাকিয়ে বলেন। তার বলার ধরণে কাঁধে আরো চাপ অনুভব করে সেতু।
- তাও ঠিকনা। সব তো ওনার হাতে, মানুষ অছিলা।
শাতিরা বেগম বলেন।
- তা হইল। কিন্ত খোদা কি বলেছে, যে চেষ্টা করবে তার সঙ্গে আমি আছি। কি বল, বৌমা?
- জ্বি মামা।
নিচু গলায় বলে সেতু।
- কি জানি রে ভাই। বৌ তো পালাইছিল, কাল আনছি ধইরা।
- কি? কার সঙ্গে?
- ওই বাপের বাড়ি গিয়ে বইসা ছিল। আইনা বই-টই পড়তে দিছি, বুঝাইতেছি।
- তাই, সেতু? স্বামী-শ্বাশুড়ির কথার বাইরে যেওনা, লানত পড়বে।
গলা মোটা করে বলেন মামাশ্বশুর।
- ভুল হয়ে গেছে মামা, আর হবেনা।
মিনমিন করে বলে সেতু।
- কথা শুনতেছ এখন?
- জ্বি।
- হুম, দেখব কেমন শুনতেছ।
মাথা নাড়েন মামাশ্বশুর।
- তোর ছোটটারে যে হুজুরেরে দিয়ে করাইছিলি, উনি নাই?
শাতিরা বেগম জিজ্ঞেস করেন।
- উনি তো ঢাকায় আসেনা, খবর পেয়ে খুলনা নিয়ে গিয়েছিলাম। সাতদিন ছিলাম, ফিরে এসেই শুনি শিপমেন্ট চলে গেছে। আট মাসে প্রথম শিপমেন্ট। পুরা লস কাভার।
- হুম, শুনছি অনেক বড় হুজুর। এখন কই উনি?
- ওনার বয়স হয়েছে, রিটায়ার্ড। ছেলে পীরালি নিয়েছে।
- কেমন?
আগ্রহ নিয়ে জিজ্ঞেস করেন শাতিরা বেগম।
- অত ভালনা রেপুটেশন। দশজনে একজনের কাজ হয়। কবিরাজিতেও নাকি সুবিধার না।
- হুমম.. বাপের নাম বেইচ্চা খায় তাইলে।
মাথা ঝাঁকিয়ে বলেন শাতিরা বেগম।


- সালামআলাইকুম মামা, শইলটা ভাল?
দাঁত ভাসানো হাসি দিয়ে হাসুর মা তরকারির বাটি নিয়ে এগিয়ে এসেছে।
- ভাল, কি খবর তোমার?
জাহিন সাহেব হেসে জিজ্ঞেস করেন।
- জ্বে, ভালা।
- খান মামা, চিংড়ি পাতুরী টেস হইছে।
বেড়ে দিতে দিতে বলে হাসুর মা।
- তুমি কেমন করে জানলা, চুরি করে খাইছ?
- আমি রানছি, জানুমনা?
- তাই বলো।
হাসেন জাহিন সাহেব।
- শাক-মাছ খান, শইল্লে তাকাত হইবো। ভাবীসাব তো কিছুই খায়না। মামার লগে বইয়া শরম পাইছে।
সেতু মুখ তুলে হাসুর মায়ের দিকে চেয়ে লাজুক হাসে।
- লন, লালশাক লন। এক্কেবারে খালি পেডে ছেঁচা পড়লে লইতে পারবেন না!
অদ্ভুত শোনায় কথাটা। চোখ তুলে আবার তাকায় সেতু। হাড় বেরোনো গাল উদ্ভাসিত করে তার দিকে চেয়ে আছে মহিলা।
- হইছে, লইয়া খাইতে দে। দুপুর বেলা গরমের মধ্যে ভরা পেটে শরীল চলবেনা পরে।
শাতিরা বেগম হাসুর মার খাবার ঠেলা থামিয়ে বলেন।
- হ, তাও ঠিক।
পিছিয়ে যায় গৃহকর্মী।


- জাহিন গেছে ঘরে?

খাওয়া শেষ হলে বাসনপত্র ধুয়ে ড্রইংরুমে ফিরতে শাতিরা বেগম বৌকে জিজ্ঞেস করেন।
- জ্বি, শুয়ে রেস্ট নিচ্ছে দেখেছিলাম।
- যাও তাইলে, ভিতরে যাও। দরজা লাগাইয়া দিও।
- আমি যাব? কারেন্ট আছে তো, ফ্যান চলছে।
- না, তোমার পাংখা বাওয়া লাগবেনা। তুমি গিয়া একপাশে শুইয়া পড়। মামা জানে কি করা লাগবে।
- বিছানায়? মামা তো ঘুমিয়ে পড়েছে মনে হয়।
- না না, ঘুমালে হবে কেমনে? আগে ডাক দিয়ে তুলে নিও। একসপ্তা নাই বাকি, প্রস্ততির সময় অল্প। মামা যা যা শিখায় মনে করে শিখে নিবা।
- কি শিখাবে মামা?
- সময় কম, একদিনে যা পারে। তুমি কথা শুনবা, তাহইলে আগাবে। হাতে-কলমে না শিখলে টাইম মত পারবানা।
- হাতে-কলমে? আম্মা, আমি তো বই দেখে শিখছি।
- বই পড়া ভাল। দোয়া-দুরুদগুলা পড়বা, দেখবা মনে আছে নাকি। খালি বই পড়ে শিখা যায়? বই পড়ে কেউ সাতার শিখছে কোনদিন?
- বইটা নিয়ে যাব?
- না, ওইটা নিজে নিজে পইড়ো। মামা যা বলে শুনবা। এই কাইৎ হইতে বললে এই কাইৎ, ওই পাও উচা করতে বললে ওই পাও। বুঝছ?
সেতু নার্ভাসভাবে দাঁতে শাড়ির আঁচল কাটতে কাটতে মাথা নাড়ে।
- আসো, তোমার কাপড়-চোপড় ঠিক করে দেই।
শাতিরা বেগম বৌকে নিয়ে রুমে চলে যান। সেতু শঙ্কা নিয়ে জিজ্ঞেস করে,
- মামা কি গায়ে হাত দিবে?
শাতিরা বেগম সন্তস্ত্র সেতুর দিকে একবার চোখ তুলে তাকান। দৃঢ় গলায় বলেন,
- সব দিবে। হাসুর মা বালতি ভইরা রাখবে। বাইর হয়ে গায়ে পানি ঢাইলা নিবা!
 
নরম পায়ে উঁকি দিয়ে শোবার ঘরে প্রবেশ করে সেতু। হাতের জগ-গ্লাস টেবিলে রেখে খাটের পাশে দাঁড়ায়। লোকটা ঘুমিয়ে পড়েছে।

- মামা? জাহিন মামা?
প্রায় ফিসফিস করে জিজ্ঞেস করে সেতু।
- মামা? ঘুমাচ্ছেন?
- উঁ.. কে?
চোখ বুজে গম্ভীরভাবে আওয়াজ করে লোকটি। যেন স্বপ্ন দেখছে।
- মামা, সেতু। উঠবেন?
- উউউ?
কপাল কুঁচকে আধঘুমে থাকা জাহিন সাহেব কথাগুলো প্রসেস করছেন। কয়েক মুহুর্ত পর সজাগ হলেন। চোখ মেলে তাকিয়ে দেখলেন ভাগ্নেবৌ দাঁড়িয়ে।
- আরে, বৌমা যে.. কখন থেকে দাঁড়িয়ে আছ? আহা, ঘুমিয়ে পড়লাম নাকি আমি?
- না মামা, মাত্রই এলাম।
- আহ, কখন আসছ.. দাঁড়াইয়া আছ? আমার চোখ লেগে আসছে, দুপুর বেলায়তো..
সেতু হেসে বলে,
- না না, ঠিক আছে। খাওয়াদাওয়ার পর একটু ঘামানো লাগে তো।
জাহিন সাহেব কাৎ হওয়া থেকে সোজা হয়ে শুলেন। গুটিয়ে যাওয়া পাঞ্জাবি সোজা করে যেন পরিপাটি হওয়ার চেষ্টা করলেন। আলনা থেকে স্বামীর একটা ভাজ করা লুঙ্গি এনে এগিয়ে দেয় সেতু।
- রাখো, পরে। দাঁড়িয়ে আছ কেন? এসো, এইযে.. শুয়ে পড়, গল্প করি।
কিনারের দিকে এগিয়ে এসে মাথার নিচ থেকে একটা বালিশ নিয়ে পাশে রাখেন জাহিন সাহেব।
মামার লম্বা পা এড়িয়ে সেতু ওপাশে চলে যায়। বালিশে মাথা রেখে সোজা হয়ে শুয়ে পড়ে। চোখ সিলিংয়ে, ফ্যানের দিকে। শাড়ীটা টেনে ঠিক করে নেয়। কেমন খালি খালি লাগছে গা।
শাতিরা বেগম বৌকে রুমে নিয়ে জিজ্ঞেস করেছেন, "শাড়ি পড়তে পারো পেটিকোট-ব্লাউজ ছাড়া?" পারেনা সেতু। শ্বাশুড়ি বলেন, "আজকালকার মেয়েরা পারেনা। আগের দিনে শুধু শুধু শাড়ি পড়ত মেয়েরা। এখনও গ্রামদেশে পড়ে।" বৌকেও সে কায়দায় শাড়ি পড়িয়ে দিলেন।
- আম্মা, খুলে যাবেনা?
অস্বস্তি নিয়ে বলে সেতু। শ্বাশুড়ি হাসে।
একপ্রস্থ কাপড়ে বৌকে পাঠানোর কারণ, খোলাখুলি নিয়ে নখড়ামো করতে পারে। মেয়েমানুষ এরকমই করে। অন্যজনের কথা কি বলবেন, নিজেই তো দোষি। প্রথমদিন সায়ার নাড়া চেপে ধরে রেখেছিলেন হাত মুঠ করে। চৌধুরি সাহেব কি বিরক্তই না হয়েছিলেন। মনে পড়লে হাসি আসে এখন।


- দুপুরে খাওয়ার পরে ঘুম তো আসেই। এমনিতে দোকানে থাকি, সময় হয়না। আজকে তোমাদের নরম বিছানা পেয়ে আলসেমি ধরে গেল.. হাহাহহ..

জাহিন সাহেব বলেন।
- বোনের বাড়িতে এসেছেন, ঘুমালে ক্ষতি কি?
সেতু বলে।
- পড়ে পড়ে ঘুমালে আস্ত রাখবে আমাকে? তুমি তো চেননা আপাকে!
আমোদিত গলায় বলেন জাহিন সাহেব। বাঁয়ে তাকিয়ে সেতুর শক্ত হয়ে ওপরদিকে চেয়ে থাকা দেখে বলেন,
- দূরে কেন? কাছে এসো.. হুমম.. তাকাও আমার দিকে.. ইশ, কি লজ্জ্বা!
সেতু কোমর ঘষে মামার গা ঘেঁষে এসেছে। ঠোঁট চেপে লাজুক হাসি চেপে তাকিয়েছে।
জাহিন সাহেব দুআঙুলে গাল টিপে দেন, ঠোঁটের দুপাশ চেপে চকচকে দাঁত দেখেন।
- লিপস্টিক দিয়েছ?
- নাহ।
- চকচক করছে যে?
অনামিকা ঠোঁটের ফাঁকে গলিয়ে দেন। মুখ শক্ত হয়ে যায় সেতুর।
- হাঁ কর সোনা।
দাঁতের ওপর আঙুলের চাপ। ধীরে ধীরে চোয়াল আলগা হলে আঙুলটা মুখের ভেতরে ঘুরতে শুরু করে। পরিষ্কার আঙুল, কৌতূহল আর ভয়ের সংমিশ্রণে শরীর কাঠ সেতুর।
- জিহ্বা কই? আছে না কেটে দিয়েছে কেউ?
- আছে..
কোনমতে বলে সেতু।
- চাটো। আঙুল যেদিকে যায়, জিভ সেদিকে যাবে... চাটতে সমস্যা? কুলফি মনে করে চাটো।
অস্বস্তিবোধ কাটিয়ে মামার নির্দেশ মানার চেষ্টা করছে সেতু। আঙুল বারবার বেঁকে এদিক ওদিক ঘুরছে। সেটা জিভ দিয়ে ছুঁতে পারাটা খেলার মত হয়ে গেল। চোখ বুজে ফেলেছিল, খুলে দেখল মামা একাগ্রভাবে তাকিয়ে আছে ওর দিকে। হেসে ফেলল দুজনে।
ইঁদুর-বেড়াল খেলায় মজাই হচ্ছিল। আঙুল-জিভের লুকোচুরি যে এতটা মজার হতে পারে, ভাবেনি সেতু। হঠাৎ যেন আঙুলের দৈর্ঘ্য বেড়ে গেল। বাঁকিয়ে রাখা অঙ্গুলি সোজা করে গলার দিকে ঠেলে দিয়েছেন জাহিন সাহেব। খক করে কেশে মুখ ভেচকে গেল সেতুর। অস্বস্তি নিয়ে তাকায় মামার দিকে।
- হুম, ধরো, ধরো.. আঙুলেই আটকে গেলে চলবে?
জাহিন সাহেব চোখ নাচিয়ে বলেন। আঙুলটা এবার অনেকটা অনির্দেশ্যভাবে ঘুরছে, আগুপিছুও করছে। সহজ খেলাটা হঠাৎই কঠিন হয়ে গেল। তবে সেটাও আয়ত্বে চলে এল মনযোগি যুবতীর।
সেতুর মনে হল শ্বাশুড়ি ঠিকই বলেছে, এসব বইয়ে আছে বলে মনে হয়না। থাকলেও অভিজ্ঞতা ছাড়া এরকম খেলা খেলতে পারা সম্ভব নয়।
- রেস্ট নাও একটু।
আঙুল বের করে নেন জাহিন সাহেব। সেতু গা ছেড়ে দম নিতে গিয়ে আড়ষ্ঠ হয়ে যায় ভেজা আঙুলটা গায়ে লাগতে। মামা পেটের ওপর থেকে শাড়ী সরিয়ে নাভীর চারধারে আঙুল ঘুরিয়ে মুছছেন।
- সুন্দর তো, আগে দেখিনি কেন?
নিজেকেই যেন বলেন জাহিন সাহেব। স্কুল থেকে ভার্সিটি পর্যন্ত রুপের প্রশংসা নানাভাবে শুনেছে সেতু। কিন্ত নাভির? কেউ সুন্দরী বললে মুচকি হেসেছে, বান্ধবীরা হলে থ্যাংকস বলেছে। কি বলবে মামাকে?
- আমি নাভি ঢেকে শাড়ি পড়ি, তাই দেখেননি।
একটু ঠমক দেখিয়েই বলে।
- আমার জন্যে পড়েছ আজ?
- হ্যাঁ।
হাসে সেতু।
- আমি মেয়ে হলে আর এমন নাভি থাকলে, দুই বিঘত নিচে পড়তাম শাড়ি। এবার যে যা বলুক।
- ইশ, আম্মা তো * ছাড়া বেরোতেই দেয়না।
- ঠিকই আছে। দুলাভাইয়ের একটা সম্মান আছে এলাকায়। তার ছেলের বৌ পেট দেখিয়ে বেরোলে লোকে কি বলবে?
জাহিন সাহেবের দ্বিমুখি মন্তব্যে অপ্রস্তত হয় সেতু। দ্রুত বলে,
- হ্যাঁ, পর্দা তো করি-ই।
- গুড!
 
সেতুর বাঁ হাতটা ধরেন জাহিন সাহেব। পাঞ্জাবি পেটের ওপর তুলে হাতটা রাখেন পাজামার ওপর।


- হাত চালাও, খুজে বের করো।
সেতু আস্তে আস্তে ছোট ছোট মুঠ করে ধরার চেষ্টা করে। কি খুঁজছে সেটা বলে না দিলেও জানে। তবে আন্ডারওয়্যারে চাপা থাকায় খুজে পায়না।
- পাচ্ছনা?
মাথা নাড়ে সেতু।
- ভেতরে হাত দাও, নিচে দেখ... জাঙ্গিয়ার ভেতর... রাইট!
ভাগ্নেবৌয়ের হাত পুরুষাঙ্গে লাগতে জাহিন সাহেব গা রিলাক্স করে পা ছড়িয়ে শোন। সেতুকে দিতে হলোনা, হাতটা গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত ঘুরছে। এটা স্বামীর সঙ্গে প্রায়ই হয়। ক্লান্ত জয়নাল চৌধুরি রুমে এসে শুলে গোপনাঙ্গে বৌয়ের কোমল হাতের মাসাজ খুব পছন্দ করেন। তা অবশ্য সবসময় বেশি কিছুতে গড়ায় না। তবে সেতুর সন্দেহ, আজ অনেকদূর গড়াবে।
যুবতির মাসাজে বেড়ে উঠেছে পুরুষাঙ্গ। অন্তর্বাসের হাজতে থাকতে চাইছেনা। কোমর উঁচিয়ে পাজামা-জাঙ্গিয়া নামিয়ে পাঞ্জাবি আরো ওপরে তুলে দেন জাহিন সাহেব।

খোলা বাতাসে দিনের আলোয় বেরিয়ে আসতে একটু থমকায় সেতু। গোড়াটা আলতো হাতে ধরে রাখে। স্বামীর পর প্রথম কোন পুরুষাঙ্গ দেখার-ছোঁয়ার সুযোগ হল।

পুরোপুরি টাটিয়ে ওঠেনি এখনো। মুচড়িয়ে ঘুমিয়ে দেখছে সেতু। তার ধারণা ছিল, সব পুরুষের এ জিনিস একই রকম হয়। প্রথম দেখায় তেমনটা মনে হলেও পার্থক্য চোখে পড়তে লাগল।
মাঝ বরাবর গোল করে মুঠ ধরলে একটু মোটা মনে হয়। দন্ডের রং জয়নালের চেয়ে গাঢ়। বিঘত মেপে মনে হল স্বামীর মতই লম্বা। তবে এখনি বলা যাচ্ছেনা, বাড়ছে যেহেতু।
কাঠের দুই পাটের খোলা জানালা দিয়ে বাইরে তাকায় সেতু। বাউন্ডারির ওপর দিয়ে ওবাড়ির ঘরের জানালা। কেউ দেখে ফেলার ভয়ে জানালা চাপিয়ে দেয়। তাতে অবশ্য টিনশেড ঘর অন্ধকার হয়না দিনে-দুপুরে।
- কি, বুড়োর বাবুটাকে মনে ধরেছে?
জাহিন সাহেবের আওয়াজে মনযোগ ফেরে সেতুর। মামার দিকে তাকিয়ে হাসে একবার।
- বুড়ো হলেন কোথায়? বুড়ো হলে এরকম হয়?
বাঁড়াটা কচলে বলে সেতু।
- দেখছনা, চুল-দাঁড়িতে পাক ধরেছে?
- সে ধরুক, এইযে, একদম কালো।
পুরুষাঙ্গের গোড়ায় জমা ঘন ছোট কেশরাজিতে আঙুল বুলিয়ে চোখ নাচায় সেতু। জাহিন সাহেব মনে মনে তারিফ করেন। ভয়-সংকোচ আছে, কিন্ত মেয়েটা তাল মেলাতে পারে ভাল। কথার পিছে কথা বলতে পিছপা হয়না। বেয়াদব ছেলে-মেয়েরা এরকম করে। তবে এর মধ্যে সেরকম চিহ্ন দেখছেন না। দেখা যাক সামনে কি হয়। লজ্জ্বার পর্দা পুরোপুরি হটে গেলে বেশরমি ভর করতেও পারে।
মামার বাঁড়া নিয়ে খেলতে সেতু কাৎ হয়ে বুকের ওপর ভর দিয়েছে। নারকেল তেল মাখা চুলের গোছা নাকে লাগছে জাহিন সাহেবের। পিঠ থেকে শাড়ি একদিকে সরিয়ে নিটোল ফর্সা জমিনে হাত বুলাচ্ছেন।
সেতুর হাতের আলতো-ধারালো আদরে বাঁড়াটি টানটান হয়ে উঠেছে। বুড়ো আঙুল দিয়ে মুন্ডির অগ্রে মাসাজ দিতে গিয়ে আঠালো স্বচ্ছ তরলের ফোঁটা লাগল। নিয়ম হচ্ছে এরকমটা হলে জয়নালকে বলতে হয়। তখন জয়নালই পরের ধাপে এগোয়। মামাকে কি বলবে? না বাবা, পারবনা। মনে মনে বলে সেতু। মামাই বুঝে নিক কখন কি করবে।
কি মনে করে উরুর মাঝে ঝুলে থাকা অন্ডথলিটা দুআঙুলে ধরে তুলে আনে সেতু। ওই চটচটে জিনিসটা দেখলেই গা ঘিনঘিন করে তার। হাতে নিলে কেমন চিটচিটে হয়ে লেগে থাকে, তরলের মত গলগল করে নেমে পড়তে চায়। মামারগুলো কেমন তা দেখতেই তুলেছে। যেমন ভেবেছে তেমনই, তবে জয়নালের চেয়ে অনেকটা ভারী আর বড়। এমন কেন? ভাবে সেতু। হুম, মামার বয়স তো ভাগ্নের দ্বিগুণের বেশি। সে হিসেবে ঠিকই আছে - মনে মনে বলে।

- মামা, এইযে... হয়েছে?

মুন্ডির মুখ থেকে আঙুল তুলে সুতোর মত লম্বা হয়ে বেরোনো কামরসের দিকে নির্দেশ করে সেতু। এতক্ষণ অপেক্ষা করে দেখেছে, মামার মন অন্যদিকে। পিঠে সুড়সুড়ি দেয়া আর বুকের পাশের কোমল জায়গাটা চিপে দেয়া নিয়ে এত ব্যস্ত যে ক্রমাগত বেরোতে থাকা রসের ফোঁটার দিকে মনযোগই নেই।
জাহিন সাহেব দেখেন স্মিত হেসে মাথা নড়েন।
- গুড জব, সেতু। এখন চুমু দাওতো বাবুটাকে।
- কোথায়?
সন্দিহান চোখে তাকায় সেতু।
- বাবুটাকে।
চোখ দিয়ে ইশারা করেন। সেতু বাঁড়ার গোড়া ধরে ঝাঁকিয়ে দেখায়।
- এটা?
- হ্যাঁ, সোনা।
- যাহ!
হেসে ফেলে সেতু। মামা যে সিরিয়াস, বুঝতে ক'সেকেন্ড লাগে।
- ইশ, নোংরা!
বুঝতে পেরেই থুতনি লোমশ বুকের ওপর রেখে গুলুগুলু চোখ করে তাকায় মামার চোখে। জাহিন সাহেব হেসে চুলে হাত বুলিয়ে দেন।
- দাও সোনা, মাথায় চুমু দাও.. দাও..
থুতনি ধরে উঠিয়ে দেন। সেতু আঁচলটা টেনে নিয়ে সোজা হয়ে বসে। মুন্ডির নিচে হাত গোল করে চেপে ধরে। চাপ লেগে মুন্ডিটা ফুলে চকচক করছে। বাবুর টাকমাথায় বেঢপ একজোড়া লম্বালম্বি ঠোঁট যেন লালচে আভা নিয়ে তার দিকে তাকিয়ে আছে। যতই নজর যায় ততই অনীহা বাড়ে নববধূর।
- ও মামা, এখানে চুমু দিলে কি হবে?
নাকানো গলায় জিজ্ঞেস করে। প্রশ্নটা জাহিন সাহেব হয়তো ঠিক বুঝতে পারেননি। বললেন,
- আগে চুমু দাও, পরেরটা পরে।
পরে কি হবে, সে আশঙ্কায় সেতু আরো সতর্ক হয়ে ওঠে। পিঠ বাঁকিয়ে কাছাকাছি ঝুঁকে আসতে উরুসন্ধির পুরুষালি গন্ধ নাকে হানা দেয়।
- কিভাবে? দেখেন কি বের হচ্ছে?
মুন্ডি চেপে আগায় জমা চকচকে রসবিন্দু দেখায় সেতু।
- ও কিছুনা, মুছে নাও।
জাহিন সাহেব পাত্তা দেন না।
হাতের তালুয় মুছে নাক চেপে ধরে যুবতি। ছিদ্রের অপর পাশে তড়িৎবেগে চেপে রাখা ঠোঁট মিশিয়েই পিঠ সোজা করে ফেলে।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top