বারান্দা বা জানালার বাইরে ইলশেগুঁড়ি বা মুষলধারে বৃষ্টির সঙ্গে গোপন যোগসাজশ আছে হেঁশেলের। বৃষ্টির দিনে খিচুড়ি ছাড়া অনেকের চলেই না। আর এখন সময়টা বৃষ্টির। মহামারিকালে লকডাউনে বৃষ্টিবন্দী ঘরেও ছোট ছোট উদ্যাপন একঘেয়ে জীবনে আঁকতে পারে ক্ষণিকের রংধনু।
এমন বর্ষায় এক প্লেট ধোঁয়া ওঠা খিচুড়ি আপনার ‘মুডের সুইচ অন’ করে দিতে পারে। ব্যাচেলররা আরও ভালো বলতে পারবে খিচুড়ির মাহাত্ম্য। সেই খিচুড়ি ‘ল্যাটকা’ হবে, না ঝরঝরে, তা নিয়ে রয়েছে নানা মুনির নানা মত। সে যে খিচুড়িই হোক, তার সঙ্গে খাতির জমাতে পারে ডিমভাজা, বেগুনভাজা। সেই পাতে কাঁচা পেয়াজের সঙ্গে শর্ষের তেল দিয়ে শুকনা মরিচের ভর্তা হলে তো কথাই নেই। তেমনি কথা হবে না ইলিশভাজা বা কষা গরুর মাংস হলে। সাময়িকভাবে হলেও পৃথিবীর সব দুঃখ ভুলিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। কেবল খেতে সুস্বাদু, তাই-ই নয়; পুষ্টিগুণেও অনন্য খিচুড়ি। জেনে নেওয়া যাক খিচুড়ির পুষ্টিগুণ।
চটজলদি ঘরে থাকা জিনিসেই বানিয়ে নিতে পারেন এমন সুস্বাদু খিচুড়ি
* খিচুড়িতে থাকে ভাতের শর্করা, ডালের প্রোটিন আর সবজির ভিটামিন। তাই সুষম পুষ্টিতে অনন্য এ খাবার।
* খিচুড়িতে ব্যবহৃত ডাল, যেমন মুগ বা মসুর বা ছোলা ফাইবারের ভালো উৎস। এতে ফলিক অ্যাসিড, ম্যাগনেশিয়াম, তামা, পটাশিয়ামসহ উপকারী অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট রয়েছে। ডাল প্রোটিনের চাহিদা মেটানোসহ হজমে সহায়তা করে।
* খিচুড়িতে একই সঙ্গে শর্করা, ক্যালসিয়াম, আমিষ, ভিটামিনসহ অন্য বেশ কয়েকটি অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট বিদ্যমান থাকায় একে শক্তিবর্ধক ও স্বাস্থ্যকর খাবার হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
মুচমুচে সবজি আর বিন্নি চালের নরম খিচুড়ি
* খিচুড়ি প্রোটিন ও কার্বোহাইড্রেটের সমতা রক্ষা করে। এ জন্যই পরিপূর্ণ আহার বলা হয়। খিচুড়িতে যেহেতু ডাল থাকে, তাই এ ডালে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে খাদ্য–আঁশ, ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়াম ও অত্যাবশ্যকীয় অ্যামিনো অ্যাসিড। কম খরচে সব বয়সের, সব মানুষের ভালো মানের খাবার বলতে এককথায় খিচুড়ি।
শর্ষের তেলে ভুনা খিচুড়ি-গরুর মাংস
* খিচুড়ি বেশ সহজপাচ্য। তাই অল্প সময়েই শরীরের দুর্বলতা কাটিয়ে শক্তি জোগায়। ছয় মাসের শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ—সবাই খেতে পারে খিচুড়ি।
* মুগ ডালের খিচুড়ি রক্তের শর্করার মাত্রা হ্রাস করতে ও ডায়াবেটিসকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক।
* প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট থাকায় খিচুড়ি বদহজম, ডায়রিয়া, অ্যাসিডিটিতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য আদর্শ খাবার। এ ছাড়া সার্জারি, সংক্রমণ বা জ্বর থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার জন্য খিচুড়ি খুব ভালো। অসুস্থ রোগীদের জন্য এটি সুষম ও স্বাস্থ্যকর খাবার।