What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

একটি সভ্য শিক্ষিত বেড়াল by Nirjon Ahmed (1 Viewer)

Ochena_Manush

Mega Poster
Elite Leader
Joined
Aug 12, 2022
Threads
257
Messages
17,616
Credits
362,761
LittleRed Car
Automobile
Strawberry
Audio speakers
আমাদের বাড়িওয়ালা নেই, বাড়িওয়ালী আছে। নেই বলতে ইহলোকে নেই, এমনটা নয়- তিনি রাজার হালেই আছেন, কিন্তু বাড়ির দেখাশোনার ভার দিয়েছেন নিজের স্ত্রীকে। তিনিই সর্বেসর্বা- ভাড়াটিয়া পছন্দ করেন, ভাড়া দেন, ভাড়া আদায় করেন- যাবতীয় দেখভালের দায়িত্ব তার উপরেই। বাড়ির মালিক ভদ্রলোক এক সরকারী অফিসের কেরানী। সামান্য বেতনের কেরানীগিরি করে তিনি কী করে ঢাকায় তিনটা আটতলা অট্টালিকার মালিক হলেন, সে ভাবনা দুদকের। এ নিয়ে ভেবে আমরা কূল পাই না, ভাবি না তাই। আমাদের দায়িত্ব শুধু মাস শেষে বাড়ি ভাড়া দেয়া।
এর আগে যে বাসায় ছিলাম, সেখান থেকে বের করে দিয়েছে আমাদের। আমরা আটজন একটা ব্লক নিয়ে থাকতাম, দুটো রুম, চার জন করে একটা রুমে। এক শনিবার সকালে, বাড়িওয়ালা এসেছিলেন বকেয়া ভাড়া আদায়ের জন্য। সেসময় ছিলাম না কেউ। বান আর ঋদ্ধ ছিল ঘরে। সারারাত শালারা গাঁজা টেনেছে। দরজা খুলে বাড়িওয়ালাকে দেখেই ঋদ্ধ বলে উঠেছিল, "শালা মাদারচোদ, সারা মাস খবর নেই, বাথরুমের ট্যাপ থেকে স্বচ্ছ পানি নাকি ড্রেনের পানি পড়ে- সেদিকে নজর নেই। দিনে আটবার কারেন্টের লাইন কেটে যায়। শালা মাদারি, লিফটের ব্যবস্থাও করিস নাই- এই আটতলা পর্যন্ত পায়ে হেঁটে উঠতে হয়। আর তুই শালা মাস শেষ হতেই এসেছিস ভাড়ার টাকা চাইতে? বেশি ত্যারেং ব্যারেং করলে শালা গোয়ার উপর কর্পোরেশনের ট্রাক চালিয়ে দেব!"
সাথে সাথেই কেটে পড়েছিল বাড়িওয়ালা। বিকেল বেলায় বাসার দারোয়ান এসে বাসা ছাড়ার নোটিশ দিয়ে গিয়েছিল আমাদের। না ছাড়লে, পুলিশের দ্বারস্থ হবে- একথা বলতেও ভোলেনি।
অগত্যা পাল্টাতে হল বাসা। বাসা খোঁজার দায়িত্ব অবশ্য ঋদ্ধ পালন করেছে, যেহেতু তার ভুলেই বাসা ছাড়তে হলো। সে'ই এই বাসা খুঁজে বের করেছে।
প্রথম দিন দেখা করতে গেলাম বাড়িওয়ালীর সাথে। চার তলায় থাকেন। দরজা খুলে দিয়েছিল কাজের মেয়ে। বাড়িওয়ালীকে যেমন দজ্জাল চেহারার ভেবেছিলাম, দেখতে তেমন নন। অনেকটা সাহারা খাতুনের মতন চেহারা।
আমাদের বসতে পর্যন্ত বললেন না। ঋদ্ধির দিকে কটমট করে তাকালেন, ঠিক যেভাবে মাস্টারমশাইরা 'পড়া না পাওয়া' ছাত্রের দিকে তাকায়। ঋদ্ধির চুল লম্বা, ঘাড় পর্যন্ত- এটাই হয়ত এমন করে তাকানোর কারণ।
বললেন, "আমি ব্যাচেলর ভাড়া দেয়ার পক্ষপাতী না। প্রত্যেকটা ইউনিটে ফ্যামিলি আছে। কারো কারো মেয়ে বড়ও হয়েছে। তাছাড়া আমার নিজেরই মেয়ে আছে। কিন্তু তোমরা এমন ভাবে ধরলে, আর এত উপরে কেউ ভাড়া নিতেও চায় না..."
ভদ্রমহিলা বিরতি দিলেন কথার মাঝে। চোখ বন্ধ করে ভাবলেন কিছুক্ষণ, তারপর আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, "তোমাদের নামে যেন কোন অভিযোগ না শুনি!"
তারপর দরজা পর্যন্ত এগিয়ে এলেন তিনি। 'আচ্ছা আসি' বলে বিদায় নিচ্ছিলাম, হঠাৎ বললেন, "বড় চুল মেয়েদের মানায়। ছেলেদের চুল ছোট রাখাই উচিৎ!"
কথাটা ঋদ্ধিকেই বলা। ভদ্রমহিলা দরজাটা লাগাতেই ঋদ্ধি ফেটে পড়ল। বলল, "মাদারি! বাড়িভাড়া দিয়েছে, মাথা তো কিনে নেয়নি। এমন ভাব করল, যেন চুলটা আমার মাথায় নেই, তার মাথায় আছে! আমি চুল রাখব কি রাখব না, সে উপদেশ তার কাছে চেয়েছি আমি?"
হাসি চেপে বললাম, "ভাই, চুপ যা। এসব কথা আমাকে বলছিস, বল। ভুলেও আবার ওর মুখের উপর বলতে যাস না। নাহলে আগেরটার মত এই বাসাও ছাড়তে হবে!"
চুপচাপ ঘরে চলে এলাম আমরা। ঘরে ঢুকতেই ঋদ্ধি বলল, "আদমের গন্দম খাওয়ার গল্পটা জানিস তো?"
"জানব না কেন?"
বলল, "আদমকে বলা হয়েছিল, সে যা ইচ্ছা খেতে পারে, শুধু গন্দম ছাড়া। তাকে যদি গন্দমের ব্যাপারে না বলা হত, নিষেধ যদি না করা হত, তাহলে সে কোনদিন গন্দম খেত না। পৃথিবীতে কত ফল আছে, হয়ত গন্দমের দিকে ওর নজরই পড়ত না।


তুই আদম হাওয়ার রূপকথায় বিশ্বাস করিস নাকি?", বান বলে উঠল। সে রুমেই ছিল।
ঋদ্ধি চুল ঝাঁকিয়ে, মাথা দুলিয়ে বলল, "বিশ্বাস অবিশ্বাসের প্রশ্ন আসছে না। আমি শুধু গল্পটার কথা বলছি। বাড়িওয়ালীর সাথে কথা বলে, আদমের সেই গন্দম খাওয়ার কথা মনে পড়ল। সে আমাদের ওর মেয়েদের সাথে লটরপটর করতে বারণ করেছে! লটরপটর করতাম না, বিশ্বাস কর। তাকাতামই না! কোথাকার কোন মেয়ে, চোদার টাইম আছে? এখন করব। বারণ না করলেই করতাম না!"
ঋদ্ধির কথা শুনে হেসে ফেললাম। বললাম, "নদীকে বলতে হবে, তুই বাড়িওয়ালীর মেয়ের সাথে প্রেম করতে বধ্য-পরিকর! দেখি, ও কী বলে!"
নদীর কথা শুনতেই ঋদ্ধি হেসে ফেলল। বলল, "বলিস। আমি ওকে ভয় পাই নাকি?"
নদী ওর প্রেমিকা। ঋদ্ধিকে দেখলেই মনে হয় খ্যাপাটে- কোন কাজেই সে স্থির থাকতে পারে না, যখন তখন রেগে ওঠে, মুখের ভাষা খারাপ করে গালিগালাজ করে। নদীর মত একজন যে এই ঋদ্ধিতেই ডুবে যাবে, কে জানত!
পরদিন ঋদ্ধি বাইরে থেকে এসে বলল, "ধুর ধুর, বাড়িওয়ালার মেয়েকে দেখলাম। মেয়ে তো না, আন্টি। একটা বাচ্চা আছে। তার জন্য আবার আমাদের সাবধান করল!"
বান বলল, "তুই কীভাবে বললি, ওটাই বাড়িওয়ালীর মেয়ে?"
"একসাথে একরিক্সায় এলো কোথা থেকে যেন। ওটাই মেয়ে, আমিও সিওর!"

শুধু শুনে গেলাম কথা গুলো। বাড়িওয়ালীর মেয়ে নিয়ে কোন আগ্রহ নেই। ঋদ্ধিরও নেই জানি- সে শুধু সেদিনের অপমানের প্রতিশোধ নিতে চাইছে। পারছে না বেচারা।
কী একটা পূজা সেদিন। শুদ্ধ আমাদের পিপকে মাল খাওয়াতে চেয়েছিল। কিন্তু মাল খাওয়ানোর ভয়েই বোধহয়, ব্যাটা ফোন বন্ধ করে রেখেছে।
সন্ধ্যায় বাইরে যাবো হাওয়া খেতে- দরজা খুলতেই সাদা ধপধপে একটা বিড়াল ঢুকে পড়ল ফ্ল্যাটে। এমন সুন্দর বিড়াল বাপের জন্মে দেখিনি।
ঋদ্ধি দেখেই বলল, "সাহেব বেড়াল রে ভাই!"
বেড়ালটা চুপচাপ এসে দাঁড়াল দেয়াল ঘেষে- ডাকাডাকি করছিল না। ঋদ্ধি হাত বাড়াতেই কোলে গিয়ে উঠল। শরতের মেঘের মতো দেহে হাত বুলিয়ে দিতে বলল, "আমার একটা বান্ধবী আছে। বিদেশী বেড়াল পোষে। বাচ্চা বিক্রির টাকা দিয়ে ও কাশ্মির ঘুরে এসেছে!"
"এইটার দাম কত হতে পারে রে?", জিজ্ঞেস করলাম।
"জানি না। কিন্তু কম হবে না। কোন দুলালীর বেড়াল হতে পারে। চল কাঁটাবনে নিয়ে যাই, একশো টাকা হলেও তো পাওয়া যাবে!"
বেড়ালটাকে সত্যি সত্যি বিক্রি করার চিন্তা আমার মাথায় আসেনি। আশেপাশের কারো বেড়াল হতে পারে, বিক্রি করে দেয়াটা অমানবিক হবে।
বললাম, "কাল সকাল পর্যন্ত দেখি, যদি কেউ খুঁজতে না আসে, বিক্রি করে দেব কাঁটাবনে, কী বলিস!"
ঋদ্ধি জবাব না দিয়ে বেড়ালটাকে আদর করতে লাগল।
সে রাতে কেউ এলো না বেড়ালের খোঁজে। সাহেব বেড়াল হলেও, দেখলাম, আমাদের বাঙ্গালী খাবারে অরুচি নেই কোন। একটা প্লেটে ভাত দিতেই কোন দ্বিধা ছাড়াই খেয়ে নিল। রাতে ঘুমালো আমার সাথে। আমার বিছানায়।
সকালে বেড়ালটাকে নিয়ে কাঁটাবনে যাওয়ার কথা। কিন্তু উঠে ঋদ্ধিকে দেখলাম না। বেড়ালটা আমার টেবিলের উপরে বসে ক্যালেন্ডারের দিকে তাকিয়ে আছে একমনে। শিক্ষিত সভ্য সাহেব বেড়াল!
 
Last edited:

Users who are viewing this thread

Back
Top