শিবনাথ সাহা কটিয়াদীর ও বাজিতপুর অঞ্চলের একটি পরিচিত নাম। ১২৫৫ সালের ১৭ আষাঢ় জোয়ারিয়া কুড়িখাই গ্রামে শিবনাথ সাহা জন্ম গ্রহন করেন। তার পিতার নাম কার্তিক চন্দ্র সাহা, দাদা যাত্রাবর সাহা। শিবনাথ সাহারা ছিলেন দুই ভাই শম্ভুনাথ সাহা ও শিবনাথ সাহা। শিবনাথ সাহার বাবা ও ঠাকুরদার আমলে অর্থনৈতিক অবস্থা তেমন ভাল ছিলনা। তার সময়ই অর্থনৈতিক প্রসার ঘটে এবং তিনি তালুকদার হন। তিনি বাজিতপুরের আলিয়াবাদে বিয়ে করেন।
স্ত্রীর নাম কালীসন্দুরী সাহা। তার পারিবারিক উত্তরসূরীগণ (বর্তমানে কটিয়াদী বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বাবু দিলীপ কুমার সাহা, রতন কুমার সাহা, উত্তম সাহা , বিশ্বনাথ সাহা, কৃষ্ণ পদ সাহা প্রমূখ) মনে করেন এক মাহেন্দ্রক্ষণে মনুষ্য রুপী দুই দেব-দেবী কালি ও শিবের মিলন ঘটে। কিন্তু তাদের কোন পুত্র সন্তান হয়নি। বাবু শিবনাথ সাহা ও কালি সুন্দরীর ঘরে তিন কন্যা সন্তান জন্ম গ্রহন করেন। তাদের নাম বিদ্যাসুন্দরী সাহা, জগৎতারা সাহা ও জয়াদূর্গা সাহা। পুত্র সন্তানের জন্য হয়তো এই দম্পতির অন্তরে একটু দীর্ঘশ্বাস লুকানো ছিল, তাই শিবনাথ সাহা তার অগ্রজ শম্ভুনাথ সাহার ৪র্থ ছেলে সুরেন্দ্রনাথ সাহাকে দত্তক আনেন।
বাবু শিবনাথ সাহা অনেক জনহিতকর কাজ করেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য স্ত্রীর নামে বাজিতপুরে কালিতারা পাঠশালা, বনগ্রামে পিতার নামে কার্তিক চন্দ্র সাহা লাইব্রেরী, ধুলদিয়ায় শিবনগর, কামালপুরে পূজামন্ডপ এবং ইংরেজী ১৯১৮ সনে গোবিন্দপুর উচ্চ বিদ্যালয় স্থাপন করেন যা পরবরতীকালে সরারচর শিবনাথ উচ্চ বিদ্যালয় নাম ধারণ করে। তিনি ১৯২০ সনের ২০শে সেপ্টম্বর একটি ট্রাষ্ট গঠন করেন। এই শিক্ষানুরাগী শিবনাথ সাহা বাংলা ১৩৩১ সনের ১৭ই আষাঢ় নিজ বাসভবনে মৃত্যু বরণ করেন। তার বাড়ীর পাশেই নদীর পাড়ে শিবসাহা শ্মশানঘাট। সেখানেই দীর্ঘ উঁচু শিবসাহা মঠ।
লক্ষণ সাহা জমিদার বাড়ির সামনে একটি চমৎকার পুকুর রয়েছে। এককালে পুকুরের চার কোনায় চারটি মঠ সাদৃশ্য প্রার্থনাগৃহ ছিল। বর্তমানে এই একটিই মোটামুটি ভালো ভাবে টিকে আছে। দুটি ধ্বংস হয়ে গেছে, আর অন্য আরেকটির ভগ্নাবশেষ দেখা যায় এক কোনায়।
ছবি তোলার স্থান : ডাংগা, পলাশ, নরসিংদী, বাংলাদেশ GPS coordinates : 23°53'55.3"N 90°35'39.6"E ছবি তোলার তারিখ : ২৮/০৪/২০১৭ ইং
মঠ আকৃতির এই শিব মন্দিরটির ভিতরে একটি মাঝারি আকারের শিবলিঙ্গ আছে। দেখে আমার মনে হয়েছে শিবলিঙ্গটি সিমেন্ট-বালির তৈরি। মঠের বাহিরের দেয়ালে নানান দেব দেবীর মূর্তির অবয়ব তৈরি করা ছিল। সময়ের আবর্তে সেগুলি নষ্ট হয়ে গেলেও এখনো দুই-একটি মোটামুটি অক্ষত আছে।
যদিও এটি শিব মন্দির কিন্তু দেখতে মঠ (স্মৃতি-মন্দির) এর আকৃতি বলে এই এ্যালবামে রাখলাম।
মঠ বা শিব মন্দিরটি কে বা কারা কখন তৈরি করেছে কিছুই আমি জানি না।
ছবি তোলার স্থান : পাঁচদোনা, নরসিংদী, বাংলাদেশ। GPS coordinates : 23°53'23.5"N 90°39'48.0"E ছবি তোলার তারিখ : ২৮/০৪/২০১৭ ইং