Please follow forum rules and posting guidelines for protecting your account!

মুসলমানদের দলে দলে বিভক্ত হওয়া ইসলামে নিষেধ। (1 Viewer)

Welcome to Nirjonmela Desi Forum !

Talk about the things that matter to you!! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today!

billionbd2024

Member
Joined
Jan 8, 2024
Threads
19
Messages
177
Visit site
Credits
7,784
মুসলমানদের দলে দলে বিভক্ত হওয়া ইসলামে নিষেধ। এই নির্দেশনা কোনো আলেমের নয়, স্বয়ং মহান রাব্বুল আলামিনের। ইরশাদ হয়েছে,
'আর তোমরা সকলে আল্লাহর রজ্জুকে দৃঢ়ভাবে ধারণ করো এবং পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না।' (সুরা আলে ইমরান: ১০৩)

সুতরাং এই নির্দেশ মানতে হবে। বস্তুত মহান আল্লাহর একটি নির্দেশও না মানার কোনো সুযোগ মুমিনের নেই। আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের দেওয়া হুকুম-আহকাম অহংকার করে অমান্য করার পাশাপাশি তা গ্রহণে অস্বীকৃতি জানালে ইমামদের ঐকমত্যের ভিত্তিতে সে আর মুমিন থাকবে না। মুখে ঈমানের কথা বলে অন্তরে বা গোপনে তা অস্বীকার করাও কুফরি। আর তার শাস্তি হিসেবে ইরশাদ হয়েছে—
'যে কেউ আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের অবাধ্যতা করে এবং তাঁর নির্ধারিত সীমা অতিক্রম করে, আল্লাহ তাকে আগুনে নিক্ষেপ করবেন। সেখানে সে চিরকাল থাকবে। তার জন্য রয়েছে অপমানজনক শাস্তি। (সুরা আন-নিসা: ১৩-১৪)

যারা দীনের মধ্যে মতভেদ, ফিরকা বা দল-উপদল সৃষ্টি করে, রাসুলুল্লাহ (স.) তাদের থেকে দায়িত্বমুক্ত। আল্লাহ তাআলা বলেন—
'নিশ্চয়ই যারা নিজেদের দীনকে (বিভিন্ন মতে) খণ্ড-বিখণ্ড করেছে এবং বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়েছে তাদের কোনো দায়িত্ব তোমার নয়।' (সুরা আনআম: ১৫৯)

মতপার্থক্য থাকতে পারে, কিন্তু ফেরকা সৃষ্টি করা যাবে না। সাহাবি ও তাবেঈনদের যুগেও মতের মিল-অমিল ছিল, কিন্তু তাঁরা ফেরকাবন্দী হননি বা দলে দলে বিভক্ত হয়ে যাননি। কারণ, তাঁদের সকলের আনুগত্য ও আকিদার মূল কেন্দ্র ছিল এক। আর তা হলো কোরআন ও সুন্নাহ। অথচ, মুসলমনারা আজ ফেরকা সৃষ্টি তো করেই যাচ্ছে, উপরন্তু নিজ নিজ ফেরকা নিয়ে সন্তুষ্টির ঢেকুর তুলছে। ভাবছে, শুধুমাত্র তারাই হেদায়েতপ্রাপ্ত। কোরআনে সে কথাটিও তুলে ধরা হয়েছে এভাবে—
'যারা তাদের ধর্মে বিভেদ সৃষ্টি করেছে এবং অনেক দলে বিভক্ত হয়ে পড়েছে, প্রত্যেক দলই নিজ নিজ মতবাদ নিয়ে উল্লাসিত। (সুরা রুম ৩০: ৩২)

তারা ভেবে দেখে না যে, আল্লাহ তাআলা সেই বিভক্তির মধ্য দিয়েও শাস্তির স্বাদ আস্বাদন করাতে পারেন। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা সে প্রসঙ্গে বলছেন—
'(হে নবী!) আপনি বলে দিন- তিনি এ ব্যাপারে ক্ষমতাবান যে, তোমাদের ওপর কোনো আজাব তিনি উপর থেকে বা তোমাদের পায়ের নীচ থেকে অথবা বিভিন্ন দল ও উপদলে বিভক্ত করে তোমাদের সবাইকে মুখোমুখি করে দিবেন এবং পরস্পরকে আক্রমণের স্বাদ আস্বাদন করাবেন।' (সুরা আনআম: ৬৫)

উক্ত আয়াতের বাস্তব চিত্র বর্তমানে দিবালোকের মতোই পরিস্কার। যখন মুসলিমরা নিজেদের মত নিয়ে বিভেদের রাস্তা তৈরি করতে শুরু করেছে, তখন থেকে মুসলিম বিশ্ব রাজত্ব হারাতে শুরু করেছে। জুলুম, নির্যাতন ও নিপীড়নে নিপতিত হয়েছে।

সুতরাং দল-উপদল করে আল্লাহর হুকুমের অবাধ্য হওয়া যাবে না, মুসলমানদেরকে দ্বিধায় ফেলা যাবে না, ফেতনা সৃষ্টি করা যাবে না। বর্তমানে সম্মিলিতভাবে এই বড় হুকুমটির উপেক্ষা চলছে। তাই অশান্তির ঢেউও সম্মিলিতভাবে গ্রাস করছে। মুসলমানদের মধ্যে বিভিন্ন মতের মানুষ থাকবে। আল্লাহ সব জেনেই ঘোষণা দিয়েছেন যে, মুসলিম হিসেবে এক হও। তাই মহান প্রভুকে সন্তুষ্ট করার জন্য ঐক্যবদ্ধ হওয়ার বিকল্প নেই। আর তাঁরই পছন্দ-অপছন্দ অনুযায়ী মুমিন মুসলমানদের জীবন যাপন করা জরুরি।

রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, আল্লাহ তাআলা তিন কাজে তোমাদের প্রতি খুশি হন, আর তিন কাজ অপছন্দ করেন। যে তিনটি কাজে খুশি হন তা হলো- ১. আল্লাহর ইবাদত করবে এবং তাঁর সাথে কাউকে শরিক করবে না। ২. আল্লাহর রশিকে শক্তভাবে আঁকড়ে ধরবে এবং দলে দলে বিভক্ত হবে না। ৩. যারা তোমাদের দায়িত্বশীল হবে তাদের কল্যাণ কামনা করবে।

আর যে তিনটি কাজ তিনি অপছন্দ করেন তা হল- ১. অনর্থক কথা-বার্তা বলা। ২. সম্পদ নষ্ট করা এবং ৩. বেশি বেশি প্রশ্ন করা। (সহিহ মুসলিম: ৪৫৭৮; মুসনাদে আহমদ: ৮৭৯৯)

তাই সবাই মিলে একই কাতারে আবদ্ধ হয়ে তাঁরই দাসত্ব করতে হবে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, 'এই যে তোমাদের জাতি, এ তো একই জাতি, আর আমি তোমাদের পালনকর্তা, অতএব তোমরা (ঐক্যবদ্ধভাবে) আমারই দাসত্ব করো।' (সুরা তওবা: ৯২)

মুসলিম সমাজে প্রায়ই পরস্পর বিচ্ছিন্ন হওয়ার কুফল নিয়ে আলোচনা করতে দেখা যায়, বস্তুত তারও আগে যেটি আলোচনা করা উচিত, সেটি হচ্ছে- এই নির্দেশ যিনি দিয়েছেন, তিনি কে? কার নির্দেশকে উপেক্ষা করে নিজ দলে আহ্বান করছেন ধর্মীয় নেতারা। অথচ অভিন্ন থাকার মূলমন্ত্র হচ্ছে- নিজের পরিচয় বিশুদ্ধ করা। 'মুসলমান' পরিচয়টাই মুসলিম উম্মাহর সবচেয়ে বড় পরিচয় হওয়া উচিত। নেতাদের উচিত ছিল- সেদিকটা বিশুদ্ধ করার জন্যই কাজ করা। এই বোধ সঞ্চার করার জন্যই তো আল্লাহ তাআলা মুমিনদের অন্য মুমিনের ভাই হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
'নিশ্চয়ই মুমিনরা পরস্পর ভাই ভাই।' (সুরা হুজরাত: ১০)

জাহেলি যুগে আউস ও খাজরাজ গোত্রদ্বয়ের মধ্যে যুদ্ধ, রক্তক্ষয়ী বিগ্রহ ও কঠিন শত্রুতা ছিল। অতঃপর যখন গোত্রদ্বয় ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হয়, তখন আল্লাহ তাআলার অনুগ্রহে তারা পূর্বের সবকিছু ভুলে গিয়ে ভাই-ভাইয়ে পরিণত হয়ে যায়। আল্লাহ তাআলা সেই অনুগ্রহের কথা স্মরণ করে দিয়ে বলেন—
'তিনি তোমাকে স্বীয় সাহায্য ও মুমিনদের দ্বারা শক্তিশালী করেছেন, এবং তিনি তাদের পরস্পরের হৃদয়ের মধ্যে প্রীতি স্থাপন করেছেন। পৃথিবীর যাবতীয় সম্পদ ব্যয় করলেও তুমি তাদের হৃদয়ে প্রীতি স্থাপন করতে পারতে না; কিন্তু আল্লাহ তাদের মধ্যে প্রীতি স্থাপন করেছেন।' (সুরা আনফাল: ৬২-৬৩)

অতএব ইসলামের নামে দল-উপদল সৃষ্টি না করে সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বসবাস করা মুসলিম উম্মাহর একান্ত কর্তব্য। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার তাওফিক দান করুন। আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করার কঠিন গুনাহ ও শাস্তি থেকে নিজেদের রক্ষা করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top