What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

লজ্জা বা দুঃখ নয়, ডিভোর্সে হবে পার্টি! (1 Viewer)

Laal

Exclusive Writer
Story Writer
Joined
Mar 4, 2018
Threads
103
Messages
3,574
Credits
23,646
Lollipop
Red Apple
বিয়ে মানে নারী-পুরুষ একে অপরের সঙ্গে বন্ধনে আবদ্ধ হয় চিরকালের জন্য। অনেক সময় সম্পর্কের ফাটল ধরে, ঘটে বিবাহবিচ্ছেদ, যা আমাদের সমাজে ভালোভাবে নেওয়া হয় না। তাই সংসার টিকিয়ে রাখতে অনেকেই নীরবে সহ্য করে নানা কষ্ট। কিন্তু মৌরিতানিয়ার পরিস্থিতি এমন নয়। এখানে কোনো নারীর ডিভোর্স হলে কান্নার রোল ওঠে না, তাকে লজ্জায় মুখ লুকাতে হয় না, পদে পদে অপমানিত হতে হয় না। বরং এখানে ডিভোর্সের পর চলে পার্টি!

avT7znwQ.jpg

প্রায় শতভাগ মুসলমানের দেশ মৌরিতানিয়ায় প্রায়ই ডিভোর্সের ঘটনা ঘটে। এখানে একেকজন ব্যক্তি ৫ থেকে ১০টি বিয়ের প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যান, এমনকি কেউ কেউ ২০বারও বিয়ে করেছেন বলে শোনা যায়। এখানে বিবাহবিচ্ছেদকে উদযাপন করা হয় এবং সবাইকে আরও জানিয়ে দেওয়া হয় যে এই নারী এখন মুক্ত এবং পুনরায় বিবাহ করতে পারেন। শতকের পর শতক ধরে দেশটিতে এমন রীতিই চলে এসেছে; ডিভোর্স পার্টিতে এসে নারীরা একসাথে বসে খাওয়াদাওয়া করেন, গান গান এবং নাচেন। তবে বর্তমানে সেলফি প্রজন্মের কাছে এই পার্টির ধরন কিছুটা বদলেছে। আজকাল তারা ডিভোর্স পার্টিতে কেক নিয়ে আসে এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় এই উদযাপনের ছবি পোস্টও করে; সেইসঙ্গে ঐতিহ্যবাহী খাবার ও সঙ্গীত তো আছেই।
"তরুণী, ডিভোর্সি নারী এখানে কোনো সমস্যার বিষয় না।" বরং এখানে ডিভোর্সি নারীদের আরও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন হিসেবে দেখা হয় বলে তাদের চাহিদা আরও বেশি- "ডিভোর্স এখানে নারীর মূল্য বাড়াতে পারে"।

মৌরিতানিয়ার অনেক নারীই মনে করেন, ডিভোর্সের ফলে তারা এক ধরনের স্বাধীনতা পান যা বিয়ের আগের বা বিয়ে করার পর পাননি, বিশেষ করে প্রথম বিয়ের ক্ষেত্রে। ডিভোর্সের নিয়ে মৌরিতানিয়ানদের এমন অকপটতা- যা বেশ আধুনিক চিন্তা বলেই মনে হয়- এর সাথে প্রথম বিয়ের প্রথাগত রীতিনীতি জড়িত। দেশটিতে মা-বাবারাই তাদের মেয়েদের জন্য পাত্র নির্বাচন করেন এবং খুব অল্প বয়সেই মেয়েদের বিয়ে দিতে চান। এক তৃতীয়াংশেরও বেশি মেয়ের ১৮ বছর বয়সের আগেই বিয়ে হয়ে যায়, ফলে জীবনসঙ্গী বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের কোনো মতামত থাকে না।
মৌরিতানিয়ায় ডিভোর্সের পর সন্তানের অভিভাবকত্বের ক্ষেত্রেও নারীরাই প্রাধান্য পান। যদিও আইনত পুরুষেরা সন্তানের ভরনপোষণের খরচ দেওয়ার কথা, কিন্তু খুব কম ক্ষেত্রেই আইন মানা হয়। ফলে শেষ পর্যন্ত নারীদের ওপরেই সেই আর্থিক চাপ এসে পড়ে।
কোনো নারী যদি কখনো ডিভোর্স নেওয়ার কথা চিন্তা নাও করেন এবং তারপরেও যদি এটা হয়ে যায়, তাহলেও সামনে এগিয়ে যাওয়া সহজ হয় মৌরিতানিয়ার নারীদের পক্ষে; অন্তত অন্যান্য দেশের তুলনায় তো সহজ বটেই। সমাজবিজ্ঞানী আল কাত্তাব বলেন, কারণ সমাজ এই নারীদেরকে নিন্দা করার বদলে বরং সহায়তা করে। "তারা বিষয়টাকে খুব সহজ করে তোলে, তাই অতীত ভুলে সহজেই সামনে এগিয়ে যাওয়া যায়", বলেন তিনি।

WvTz943B.jpg

ডিভোর্সি নারীকে সহমর্মিতা দেখানোরই একটা উপায় হলো ডিভোর্স পার্টি। নিজের ডিভোর্স পার্টির দিনে মৌরিতানিয়ান তরুণী জিলানি গালে ফাউন্ডেশন লাগিয়ে, আইব্রোটে সোনালি রঙ করে সেজেছিলেন। গাড় নীল রঙ এর মেলাফা গায়ে জড়িয়ে তিনি সামনের দরজা দিয়ে বাইরে বেরিয়ে এলেন পার্টিতে যোগ দিতে। তাদের পাথরে তৈরি বাড়ির লিভিং রুমে এই পার্টির আয়োজন করেছেন তার এক বন্ধুর মা। পার্টিতে আসা নারীরা ক্যানড ক্রিমের মধ্যে খেজুর ভিজিয়ে রেখেছিলেন। এছাড়াও তারা রুটি দিয়ে উটের মাংস খাচ্ছিলেন। এর বাইরে ভাতের একটি আইটেমও ছিল। আরও অনেক নারীরা এসে জড়ো হতেই তারা গান গাইতে শুরু করলেন। যাদের আগেপরে অনেকবার ডিভোর্স হয়েছে এবং এরকম অনেক পার্টিতেও গিয়েছেন, তারা প্রথমে ভালোবাসার গান গাইলেন এবং তারপরে নাত ও নাশিদ গাইলেন। আনন্দ, বিষাদ, দুঃখের গান- সব রকম গানই ছিল; সেই সঙ্গে ছিল ড্রাম ও হাততালির আওয়াজ।

অনেক জায়গায়ই ডিভোর্সি নারীদের নিয়ে সামাজিক কুসংস্কার এত বেশি যে ডিভোর্স মানেই মৃত্যুসম মনে করা হয়। আর মৌরিতানিয়ায় এটা আনন্দের সাথে ঘোষণা করা হয়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করা হয়।
 
Last edited:

Users who are viewing this thread

Back
Top