^^^^অনুবাদকের কথা^^^^
বাংলা অনুবাদকৃত আমার এই লিখাটি BAAT EK RAAT KI শিরোনামে CensorShip এ অনেক আগে প্রকাশিত হয়েছিল। মূল হিন্দী লিখাটি সে সময় অনেক প্রশংসিত ছিল এবং পুরষ্কার প্রাপ্ত হয়েছিল। আমি ২০১৪ সালে প্রথমবার উপন্যাসটি পড়ি এবং আমার এটি বাংলা ভাষাভাষিদের জন্য অনুবাদ করার ইচ্ছা জাগে। এরপর অনেকগুলো বছর কেটে যায়। কিন্তু অনুবাদের কাজ আর ধরা হয়নি। কিন্তু ২০১৯ এর মাঝামাঝি এসে এখন অনুবাদ করার ইচ্ছা জেগেছে এবং উপন্যাসটির বেশিরভাগ বিষয় আরও বড় করা যায় বুঝতে পারার পর একে আরও হৃদয়গ্রাহ্য করার জন্য আমি মূল গল্পকে অপরিবর্তিতে রেখে নিজ থেকে প্রায় ৮০ ভাগ উপাদান যোগ করে পুনর্লিখন করেছি। যা উপন্যাসের সাইজকে আরও বড় ও মনোমুগ্ধকর করে তুলবে। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে আর আপনাদের সমর্থন পেলে আমি সম্পূর্ণ উপন্যাসটির কাজ শেষ করে ফেলবো। তো চলুন এবার! এক অভূতপূর্ব ইরোটিক সাইকো থ্রিলারের সাহিত্যরস আস্বাদন করুন।
মেমসাহেব রাত অনেক হয়ে গেছে। আপনি কয়টা পর্যন্ত থাকবেন?" রাজকুমার জিজ্ঞেস করল।
"এই তো কাকা, যাচ্ছি।" পদ্মিনী টেবিলের উপর রাখা এলোমেলো কাগজগুলোকে একটা ফাইলের মধ্যে রাখতে রাখতে বলল।
পদ্মিনী অফিসের চকিদারকে "কাকা" বলে সম্বোধন করে।
যখন পদ্মিনী তার কেবিন থেকে বের হয়ে অফিসের বাইরের সুনসান নিরবতাকে দেখলো তখনই ভয়ে তার গলা শুকিয়ে গেল।
ওহ! কত দেরী হয়ে গেল। কিন্তু কি করবো? এই এসাইনমেন্টও তো শেষ করারও জরুরী ছিল। নইলে সাক্সেনা তো আমার জানই বের করতে ফেলতো কালকে। ইশ্বর এমন বস কাউকে যেন না দেন! পদ্মিনী পার্কিং লট এর দিকে দ্রুত এগুতে এগুতে বিড়বিড় করে বলছিল।
গাড়িতে বসেই সে তার বাবাকে ফোন করল। "আব্বু আমি আসছি! ২০ মিনিটের মধ্যে বাসায় পৌছে যাবো।"
পদ্মিনী বিবাহিতা হয়েও গত ৫ মাস ধরে নিজের বাবার বাড়িতে থাকছে। কারণ অনেকটাই দুঃখজনক। ওর স্বামী সুরেশ ওকে যৌতুকের জন্য বকা ঝকা করতো। প্রতিদিনই তার নিত্য নতুন ডিমান্ড থাকতো। দাবী দাওয়া মিটাতে মিটাতে পদ্মিনীর পরিবার ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। যখন পানি মাথার উপর দিয়ে গড়ানো শুরু করলে তখন পদ্মিনী নিজের শ্বশুড়বাড়ি (দিল্লী) থেকে বাবার বাড়ি (দেরাধুন) চলে আসে।
"উহ! আজ অনেক ঠান্ডা। রাস্তাও অনেকটা নিরব। আমার অফিসে আজ এতটা দেরী করাটা আসলে উচিত হয় নি।"
রাত ১০:৩০ বাজছে। শীতকালে জানুয়ারী মাসে সব মানুষ এ সময় যার যার বাসায় লেপের নিচে ঢুকে যায়।
প্রথম বার পদ্মিনী এতটা সময় পর্যন্ত বাসার বাইরে ছিল। গাড়ি চালানোর সময় ওর বুক ধক-ধক করছিল। যে রাস্তা দিনের বেলা এত পরিচিত সেটা রাতের বেলায় কোন ভয়ংকর জায়গার চেয়ে ওর কাছে এখন কিছু কম মনে হচ্ছিল না।
পদ্মিনীর হাত স্টিয়ারিং এর উপর কাঁপছিল। "অল ইজ ওয়েল। অল ইজ ওয়েল।" বার বার ও বলছিল।
হঠাত ও রাস্তায় একটা ছায়া দেখতে পেল। পদ্মিনী প্রথমে তো স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল এই ভেবে যে যাক, এই নিরব রাস্তায় অন্তত কাউকে সে দেখতো তো পেল। কিন্তু হঠাৎ ওর স্বস্তি ভয়ে রূপান্তরিত হল। কারণ ঐ ছায়াটা একেবারে রাস্তার মাঝখানে চলে এসেছিল আর হাত নাড়িয়ে গাড়ি থামানোর ইশারা করছিল।
পদ্মিনীর বুঝে আসলো না যে কি করবে। যখন ও সেই ছায়াটার কাছে পৌছালো তখন দেখতে পেল এক ৩৫-৩৬ বছরের স্বাস্থ্যবান লোক ওকে গাড়ি থামানোর ইশারা করছিল।
পদ্মিনীর বুঝে আসছিল না কি করবে না করবে। কিন্তু ঐ লোকটা ঠিক একদম ওর গাড়ির সামনে এসে পড়ে। না চাইতেও পদ্মিনীর ব্রেক লাগাতে হয়।
যেই মাত্র গাড়ি থামলো সে লোকটি পদ্মিনীর গাড়িতে জোরে জোরে থাপ্পর মারতে লাগলো। সে অনেকটাই ভীত মনে হচ্ছিল। পদ্মিনীও ওর চেহারায় ভয়ের ছাপ দেখতে পাচ্ছিল। পদ্মিনী ওর গাড়ির জানালার কাচ কিছুটা নিচে নামালো আর জিজ্ঞেস করলো "কি ব্যাপার? তুমি কি পাগল নাকি?"
"ম্যাডাম দয়াকরে আমাকে একটু লিফট দিন। আমার প্রাণের ভয় আছে। কেউ আমাকে মারতে চায়।" " আমার কাছে এই ফালতু কথার শোনার সময় নেই। " পদ্মিনীর মুখ থেকে এই কথা বের হওয়া মাত্রই ঐ লোকটার চিৎকার চারদিকে ছড়িয়ে পড়লো।
একটা মুখোশধারী ছায়া ঐ লোকাটাকে পেছন থেকে বারবার চাকু মারতে যাচ্ছিল।
"ওহ গড" পদ্মিনীর পুরো শরীর এই দৃশ্য দেখে থর থর করে কাঁপছিলো।
ও এতটাই ভয় পেয়ে গিয়েছিল যে ও গাড়িকে স্টার্ট দেবার বদলে বার বার ব্রেক দিচ্ছিল। ওর মনে হচ্ছিল গাড়ি আর স্টার্টই হবে না। ও গাড়ি থেকে নেমে সোজা ঐ ছায়ার বিপরীত দিকে দৌড় দেয়।
যে ছায়াটা সে লোকটিকে মারছিল সে ঝটপট এগিয়ে আসে আর পদ্মিনীকে জেপে ধরে।
"ছাড়ো আমাকে…. আমি তোমার কি ক্ষতি করেছি?"
"ক্ষতি তো সে লোকটাও আমার কিছু করে নি!"
"তাহলে.. তাহলে তুমি ও কে কেন মারলে?"
"আমি মানুষ খুন করতে পছন্দ করি।" "ওহ গড! তুমি কি সেই সিরিয়াল কিলার?
হ্যা! আমিই সেই সিরিয়াল কিলার। আয় তোকে জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে আরাম করে খাই। তোর মত সুন্দর পরীকে মারতে আমার অনেক মজা লাগবে।
বাঁচাও… এর চেয়ে বেশি পদ্মিনী আর চিৎকার করতে পারলো না। কারণ ঐ ছায়াটা তাকে জাপটে ধরে।
হে ঈশ্বর আমি কোন বিপদে পড়ে গেলাম। এই পাগল সিরিয়াল কিলারের পরবর্তী শিকার যে আমি হবো এটা আমি চিন্তাও করতে পারি নি। যদি পাষন্ডটার চেহারাটা একটিবার দেখতে পেতাম।
গত দু'মাসে চারটা খুন হয়েছে। তার মধ্যে ৩ জন পুরুষ ও একটি কলেজে পড়ুয়া মেয়ে। পুরো ধেরাধোনে সবাই আতংকের মধ্যে আছে। ওর বাবা ওকে প্রতিদিন বলেন যে কখনও সন্ধ্যা ৬ টার বেশি দেরী না হয়। পদ্মিনীও এই ঘটনাতে অনেকটাই ভীত ছিল কিন্তু কাজে ব্যস্ত থাকার কারণে তখন খেয়াল করতে পারে নি।
জঙ্গলের ভিতরে পদ্মিনীকে নিয়ে গিয়ে সে জিজ্ঞেস করলো,' বল তোর কোথায় ধার চাকু ঢুকাবো?
দয়াকরে আমাকে যেতে দেও। আমি তোমার কি ক্ষতি করেছি। আমার ব্যাগে যত টাকা আছে সব রেখে দেও। আমার গাড়িও রেখে দেও। কিন্তু আমাকে মেরো না। প্লিজ!
ওসব তুই রাখ। আমার ওসব লাগবে না। আমার তো কেবল তোকে মেরে শান্তি লাগবে। আচ্ছা তোর কাছে আর কিছু আছে আমাকে দেবার মতো?
পদ্মিনী বুঝতে পারছিল যে আর কিছু মানে টা কি। কিন্তু সে বলল, আমার কাছে আর কিছু নেই। আমাকে যেতে দেও।
পদ্মিনীর গালে চাকু রেখে সে বলল, "তাহলে তো এখন এখান থেকে তোর লাশই বাইরে যাবে"
আচ্ছা দাঁড়াও তুমি যদি চাও তো আমি তোমাকে ব্লো জব দিতে পারবো।
ওটা কি?
ব্লো জব মানে ব্লো জব। পদ্মিনী থতমত খেয়ে বলল।
এতে কি করে? আমাকে আগে বোঝা এটা কি, তারপর আমি ভাববো যে কি করা যায়,নইলে আমি তোকে এখনই কাটবে। অযথা মজা নষ্ট করিস না।
পদ্মিনী কিছু বলছিল না। ও বুঝতে পারছিলো না যে এ পিশাচকে কিভাবে বুঝাবে। ও শুধু বেঁচে থাকতে চাইছিল তাই সে এ প্রস্তাব দিয়েছিল। কি নিশ্চয়তা আছে যে ওটা করার পর ওকে ছেড়ে দেবে। এর তো মানুষ মারতে ভালো লাগে।
কি ভাবছিস?কিছু বলবি নাকি কেটে টুকরো করে ফেলবো?
দেখ আমি এর মানে জানি না। যা করার কর।
আগে আমাকে বোঝা। যদি তুই আমাকে বোঝাতে পারিস তবে কথা দিলাম তোকে ছেড়ে দিবো।
তুমি মিথ্যা বলছো। তোমার কথা আমি বিশ্বাস করি না। তুমি ঐ কলেজ পড়ুয় মেয়েটাকে এমনিই খুন করেছ।
কোন কলেজ পড়ুয়া মেয়ে?
আচ্ছা তার মানে তুমি মানুষদের মেরে ভুলেও যাও । সে মেয়েটার কথা বলছি যাকে তুমি মেরে বাস স্ট্যান্ডের পিছনে ফেলে দিয়েছ।
ওহ আচ্ছা। যদি ও আমাকে কোন প্রস্তাব দিতো তবে হয়তো বা আমি জ্যান্ত ছেড়ে দিতাম।
আচ্ছা কোন কাপড় পড়েছিল সে মেয়েটা সেদিন যেদিন তুমি ওকে মেরেছিলে? পদ্মিনীর সন্দেহ হচ্ছিল েএই মুখোশধারী কি সত্যিই সে সিরিয়াল কিলার নাকি।
দেখ আমি তোকে এখানে মারতে এনেছি, তোর সাথে কোন কুইজ খেলার জন্য নয়।
অনেক হয়েছে মনে হয় তোকে এখন খতম করতেই হবে। এটা বলেই ও পদ্মিনীর গলায় চাকু রেখে দিলো।
থামো।
কি হয়েছে? আমি কিচ্ছু শুনতে চাই না। যদি ঐ ব্লো জবের মানে বোঝাস তবে থামছি নইলে তুই গেছিস!
আচ্ছা গলা থেকে চাকু সরাও।
হ্যা নে বল এখন।
তুমি সব জানো তাই না? পদ্মিনী চাপা কণ্ঠে বলল।
দ্যাখ আমার কাছে ফালতু সময় নষ্ট করার মতো সময় নেই। তুই বলবি নাকি ঐ লোকটার মতো তোকেও মেরে ফেলবো?
বলছি। আমাকে একটু সময় দাও।
জলদি বল। নইলে আর কখনও বলতে পারবি না।
ব্লো জব মানে হল মুখে ওটা নিয়ে চুষা।
ওটা মানে কিরে? পরিষ্কার করে বল।
এর বেশি আমি জানি না।
আচ্ছা যা বাদ দে। শুরু কর তোর ব্লো জব।
কি নিশ্চয়তা আছে যে এর পরে তুমি আমাকে ছেড়ে দিবে?
বললাম না তোকে আমি। চল তাড়াতাড়ি কর।
ওটা বের কর।
তুই নিজে বের করে নে।
নিজে বের করে দেও নইলে আমি করবো না।
যদি তাই হয় তো তোকে বাচিঁয়ে রাখার দরকার টা কি? এখনি কেটে টুকরো করি তোকে। ও আবারও পদ্মিনীর গলায় চাকু রেখে দিলো।
থামো থামো। বের করছি। পদ্মিনী চাপা কণ্ঠে বলল।
পদ্মিনীর কাঁপা কাঁপা হাত ঐ মুখোশধারীর প্যান্টের চেইনের দিকে এগুতে লাগলো।
ও ধীরে ধীরে চেইন খোলা শুরু করল। একটু খোলার পর পরই চেইন আটকে গেল।
এটা আটকে গেছে। আমি খুলতে পারছি না।
জোরে টান দে খুলে যাবে।
পদ্মিনী চেষ্টা করলো কিন্তু খুললো না।
উফ! সর তুই। আমাকে খুলতে দে।
ও এক ঝটকায় চেইন খুলে ফেললো আর বলল, নে এবার শুরু কর।
পদ্মিনী নিজের জীবন বাঁচাতে বলে তো দিল যে ব্লো জব দিবে কিন্তু ও দ্বিধায় পড়ে গেল। কি করবো এখন? মন মানছে না এসব করতে। কিন্তু এসব না করলে ও অবশ্যই আমাকে মেরে ফেলবে। কিন্তু এসব করার পরেও ও যদি আমাকে মেরে ফেলে তো?
জলদি কর। আমার কাছে সারারাত ফুরসত নাই।
বাংলা অনুবাদকৃত আমার এই লিখাটি BAAT EK RAAT KI শিরোনামে CensorShip এ অনেক আগে প্রকাশিত হয়েছিল। মূল হিন্দী লিখাটি সে সময় অনেক প্রশংসিত ছিল এবং পুরষ্কার প্রাপ্ত হয়েছিল। আমি ২০১৪ সালে প্রথমবার উপন্যাসটি পড়ি এবং আমার এটি বাংলা ভাষাভাষিদের জন্য অনুবাদ করার ইচ্ছা জাগে। এরপর অনেকগুলো বছর কেটে যায়। কিন্তু অনুবাদের কাজ আর ধরা হয়নি। কিন্তু ২০১৯ এর মাঝামাঝি এসে এখন অনুবাদ করার ইচ্ছা জেগেছে এবং উপন্যাসটির বেশিরভাগ বিষয় আরও বড় করা যায় বুঝতে পারার পর একে আরও হৃদয়গ্রাহ্য করার জন্য আমি মূল গল্পকে অপরিবর্তিতে রেখে নিজ থেকে প্রায় ৮০ ভাগ উপাদান যোগ করে পুনর্লিখন করেছি। যা উপন্যাসের সাইজকে আরও বড় ও মনোমুগ্ধকর করে তুলবে। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে আর আপনাদের সমর্থন পেলে আমি সম্পূর্ণ উপন্যাসটির কাজ শেষ করে ফেলবো। তো চলুন এবার! এক অভূতপূর্ব ইরোটিক সাইকো থ্রিলারের সাহিত্যরস আস্বাদন করুন।
মেমসাহেব রাত অনেক হয়ে গেছে। আপনি কয়টা পর্যন্ত থাকবেন?" রাজকুমার জিজ্ঞেস করল।
"এই তো কাকা, যাচ্ছি।" পদ্মিনী টেবিলের উপর রাখা এলোমেলো কাগজগুলোকে একটা ফাইলের মধ্যে রাখতে রাখতে বলল।
পদ্মিনী অফিসের চকিদারকে "কাকা" বলে সম্বোধন করে।
যখন পদ্মিনী তার কেবিন থেকে বের হয়ে অফিসের বাইরের সুনসান নিরবতাকে দেখলো তখনই ভয়ে তার গলা শুকিয়ে গেল।
ওহ! কত দেরী হয়ে গেল। কিন্তু কি করবো? এই এসাইনমেন্টও তো শেষ করারও জরুরী ছিল। নইলে সাক্সেনা তো আমার জানই বের করতে ফেলতো কালকে। ইশ্বর এমন বস কাউকে যেন না দেন! পদ্মিনী পার্কিং লট এর দিকে দ্রুত এগুতে এগুতে বিড়বিড় করে বলছিল।
গাড়িতে বসেই সে তার বাবাকে ফোন করল। "আব্বু আমি আসছি! ২০ মিনিটের মধ্যে বাসায় পৌছে যাবো।"
পদ্মিনী বিবাহিতা হয়েও গত ৫ মাস ধরে নিজের বাবার বাড়িতে থাকছে। কারণ অনেকটাই দুঃখজনক। ওর স্বামী সুরেশ ওকে যৌতুকের জন্য বকা ঝকা করতো। প্রতিদিনই তার নিত্য নতুন ডিমান্ড থাকতো। দাবী দাওয়া মিটাতে মিটাতে পদ্মিনীর পরিবার ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। যখন পানি মাথার উপর দিয়ে গড়ানো শুরু করলে তখন পদ্মিনী নিজের শ্বশুড়বাড়ি (দিল্লী) থেকে বাবার বাড়ি (দেরাধুন) চলে আসে।
"উহ! আজ অনেক ঠান্ডা। রাস্তাও অনেকটা নিরব। আমার অফিসে আজ এতটা দেরী করাটা আসলে উচিত হয় নি।"
রাত ১০:৩০ বাজছে। শীতকালে জানুয়ারী মাসে সব মানুষ এ সময় যার যার বাসায় লেপের নিচে ঢুকে যায়।
প্রথম বার পদ্মিনী এতটা সময় পর্যন্ত বাসার বাইরে ছিল। গাড়ি চালানোর সময় ওর বুক ধক-ধক করছিল। যে রাস্তা দিনের বেলা এত পরিচিত সেটা রাতের বেলায় কোন ভয়ংকর জায়গার চেয়ে ওর কাছে এখন কিছু কম মনে হচ্ছিল না।
পদ্মিনীর হাত স্টিয়ারিং এর উপর কাঁপছিল। "অল ইজ ওয়েল। অল ইজ ওয়েল।" বার বার ও বলছিল।
হঠাত ও রাস্তায় একটা ছায়া দেখতে পেল। পদ্মিনী প্রথমে তো স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল এই ভেবে যে যাক, এই নিরব রাস্তায় অন্তত কাউকে সে দেখতো তো পেল। কিন্তু হঠাৎ ওর স্বস্তি ভয়ে রূপান্তরিত হল। কারণ ঐ ছায়াটা একেবারে রাস্তার মাঝখানে চলে এসেছিল আর হাত নাড়িয়ে গাড়ি থামানোর ইশারা করছিল।
পদ্মিনীর বুঝে আসলো না যে কি করবে। যখন ও সেই ছায়াটার কাছে পৌছালো তখন দেখতে পেল এক ৩৫-৩৬ বছরের স্বাস্থ্যবান লোক ওকে গাড়ি থামানোর ইশারা করছিল।
পদ্মিনীর বুঝে আসছিল না কি করবে না করবে। কিন্তু ঐ লোকটা ঠিক একদম ওর গাড়ির সামনে এসে পড়ে। না চাইতেও পদ্মিনীর ব্রেক লাগাতে হয়।
যেই মাত্র গাড়ি থামলো সে লোকটি পদ্মিনীর গাড়িতে জোরে জোরে থাপ্পর মারতে লাগলো। সে অনেকটাই ভীত মনে হচ্ছিল। পদ্মিনীও ওর চেহারায় ভয়ের ছাপ দেখতে পাচ্ছিল। পদ্মিনী ওর গাড়ির জানালার কাচ কিছুটা নিচে নামালো আর জিজ্ঞেস করলো "কি ব্যাপার? তুমি কি পাগল নাকি?"
"ম্যাডাম দয়াকরে আমাকে একটু লিফট দিন। আমার প্রাণের ভয় আছে। কেউ আমাকে মারতে চায়।" " আমার কাছে এই ফালতু কথার শোনার সময় নেই। " পদ্মিনীর মুখ থেকে এই কথা বের হওয়া মাত্রই ঐ লোকটার চিৎকার চারদিকে ছড়িয়ে পড়লো।
একটা মুখোশধারী ছায়া ঐ লোকাটাকে পেছন থেকে বারবার চাকু মারতে যাচ্ছিল।
"ওহ গড" পদ্মিনীর পুরো শরীর এই দৃশ্য দেখে থর থর করে কাঁপছিলো।
ও এতটাই ভয় পেয়ে গিয়েছিল যে ও গাড়িকে স্টার্ট দেবার বদলে বার বার ব্রেক দিচ্ছিল। ওর মনে হচ্ছিল গাড়ি আর স্টার্টই হবে না। ও গাড়ি থেকে নেমে সোজা ঐ ছায়ার বিপরীত দিকে দৌড় দেয়।
যে ছায়াটা সে লোকটিকে মারছিল সে ঝটপট এগিয়ে আসে আর পদ্মিনীকে জেপে ধরে।
"ছাড়ো আমাকে…. আমি তোমার কি ক্ষতি করেছি?"
"ক্ষতি তো সে লোকটাও আমার কিছু করে নি!"
"তাহলে.. তাহলে তুমি ও কে কেন মারলে?"
"আমি মানুষ খুন করতে পছন্দ করি।" "ওহ গড! তুমি কি সেই সিরিয়াল কিলার?
হ্যা! আমিই সেই সিরিয়াল কিলার। আয় তোকে জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে আরাম করে খাই। তোর মত সুন্দর পরীকে মারতে আমার অনেক মজা লাগবে।
বাঁচাও… এর চেয়ে বেশি পদ্মিনী আর চিৎকার করতে পারলো না। কারণ ঐ ছায়াটা তাকে জাপটে ধরে।
হে ঈশ্বর আমি কোন বিপদে পড়ে গেলাম। এই পাগল সিরিয়াল কিলারের পরবর্তী শিকার যে আমি হবো এটা আমি চিন্তাও করতে পারি নি। যদি পাষন্ডটার চেহারাটা একটিবার দেখতে পেতাম।
গত দু'মাসে চারটা খুন হয়েছে। তার মধ্যে ৩ জন পুরুষ ও একটি কলেজে পড়ুয়া মেয়ে। পুরো ধেরাধোনে সবাই আতংকের মধ্যে আছে। ওর বাবা ওকে প্রতিদিন বলেন যে কখনও সন্ধ্যা ৬ টার বেশি দেরী না হয়। পদ্মিনীও এই ঘটনাতে অনেকটাই ভীত ছিল কিন্তু কাজে ব্যস্ত থাকার কারণে তখন খেয়াল করতে পারে নি।
জঙ্গলের ভিতরে পদ্মিনীকে নিয়ে গিয়ে সে জিজ্ঞেস করলো,' বল তোর কোথায় ধার চাকু ঢুকাবো?
দয়াকরে আমাকে যেতে দেও। আমি তোমার কি ক্ষতি করেছি। আমার ব্যাগে যত টাকা আছে সব রেখে দেও। আমার গাড়িও রেখে দেও। কিন্তু আমাকে মেরো না। প্লিজ!
ওসব তুই রাখ। আমার ওসব লাগবে না। আমার তো কেবল তোকে মেরে শান্তি লাগবে। আচ্ছা তোর কাছে আর কিছু আছে আমাকে দেবার মতো?
পদ্মিনী বুঝতে পারছিল যে আর কিছু মানে টা কি। কিন্তু সে বলল, আমার কাছে আর কিছু নেই। আমাকে যেতে দেও।
পদ্মিনীর গালে চাকু রেখে সে বলল, "তাহলে তো এখন এখান থেকে তোর লাশই বাইরে যাবে"
আচ্ছা দাঁড়াও তুমি যদি চাও তো আমি তোমাকে ব্লো জব দিতে পারবো।
ওটা কি?
ব্লো জব মানে ব্লো জব। পদ্মিনী থতমত খেয়ে বলল।
এতে কি করে? আমাকে আগে বোঝা এটা কি, তারপর আমি ভাববো যে কি করা যায়,নইলে আমি তোকে এখনই কাটবে। অযথা মজা নষ্ট করিস না।
পদ্মিনী কিছু বলছিল না। ও বুঝতে পারছিলো না যে এ পিশাচকে কিভাবে বুঝাবে। ও শুধু বেঁচে থাকতে চাইছিল তাই সে এ প্রস্তাব দিয়েছিল। কি নিশ্চয়তা আছে যে ওটা করার পর ওকে ছেড়ে দেবে। এর তো মানুষ মারতে ভালো লাগে।
কি ভাবছিস?কিছু বলবি নাকি কেটে টুকরো করে ফেলবো?
দেখ আমি এর মানে জানি না। যা করার কর।
আগে আমাকে বোঝা। যদি তুই আমাকে বোঝাতে পারিস তবে কথা দিলাম তোকে ছেড়ে দিবো।
তুমি মিথ্যা বলছো। তোমার কথা আমি বিশ্বাস করি না। তুমি ঐ কলেজ পড়ুয় মেয়েটাকে এমনিই খুন করেছ।
কোন কলেজ পড়ুয়া মেয়ে?
আচ্ছা তার মানে তুমি মানুষদের মেরে ভুলেও যাও । সে মেয়েটার কথা বলছি যাকে তুমি মেরে বাস স্ট্যান্ডের পিছনে ফেলে দিয়েছ।
ওহ আচ্ছা। যদি ও আমাকে কোন প্রস্তাব দিতো তবে হয়তো বা আমি জ্যান্ত ছেড়ে দিতাম।
আচ্ছা কোন কাপড় পড়েছিল সে মেয়েটা সেদিন যেদিন তুমি ওকে মেরেছিলে? পদ্মিনীর সন্দেহ হচ্ছিল েএই মুখোশধারী কি সত্যিই সে সিরিয়াল কিলার নাকি।
দেখ আমি তোকে এখানে মারতে এনেছি, তোর সাথে কোন কুইজ খেলার জন্য নয়।
অনেক হয়েছে মনে হয় তোকে এখন খতম করতেই হবে। এটা বলেই ও পদ্মিনীর গলায় চাকু রেখে দিলো।
থামো।
কি হয়েছে? আমি কিচ্ছু শুনতে চাই না। যদি ঐ ব্লো জবের মানে বোঝাস তবে থামছি নইলে তুই গেছিস!
আচ্ছা গলা থেকে চাকু সরাও।
হ্যা নে বল এখন।
তুমি সব জানো তাই না? পদ্মিনী চাপা কণ্ঠে বলল।
দ্যাখ আমার কাছে ফালতু সময় নষ্ট করার মতো সময় নেই। তুই বলবি নাকি ঐ লোকটার মতো তোকেও মেরে ফেলবো?
বলছি। আমাকে একটু সময় দাও।
জলদি বল। নইলে আর কখনও বলতে পারবি না।
ব্লো জব মানে হল মুখে ওটা নিয়ে চুষা।
ওটা মানে কিরে? পরিষ্কার করে বল।
এর বেশি আমি জানি না।
আচ্ছা যা বাদ দে। শুরু কর তোর ব্লো জব।
কি নিশ্চয়তা আছে যে এর পরে তুমি আমাকে ছেড়ে দিবে?
বললাম না তোকে আমি। চল তাড়াতাড়ি কর।
ওটা বের কর।
তুই নিজে বের করে নে।
নিজে বের করে দেও নইলে আমি করবো না।
যদি তাই হয় তো তোকে বাচিঁয়ে রাখার দরকার টা কি? এখনি কেটে টুকরো করি তোকে। ও আবারও পদ্মিনীর গলায় চাকু রেখে দিলো।
থামো থামো। বের করছি। পদ্মিনী চাপা কণ্ঠে বলল।
পদ্মিনীর কাঁপা কাঁপা হাত ঐ মুখোশধারীর প্যান্টের চেইনের দিকে এগুতে লাগলো।
ও ধীরে ধীরে চেইন খোলা শুরু করল। একটু খোলার পর পরই চেইন আটকে গেল।
এটা আটকে গেছে। আমি খুলতে পারছি না।
জোরে টান দে খুলে যাবে।
পদ্মিনী চেষ্টা করলো কিন্তু খুললো না।
উফ! সর তুই। আমাকে খুলতে দে।
ও এক ঝটকায় চেইন খুলে ফেললো আর বলল, নে এবার শুরু কর।
পদ্মিনী নিজের জীবন বাঁচাতে বলে তো দিল যে ব্লো জব দিবে কিন্তু ও দ্বিধায় পড়ে গেল। কি করবো এখন? মন মানছে না এসব করতে। কিন্তু এসব না করলে ও অবশ্যই আমাকে মেরে ফেলবে। কিন্তু এসব করার পরেও ও যদি আমাকে মেরে ফেলে তো?
জলদি কর। আমার কাছে সারারাত ফুরসত নাই।