গল্পের নাম: ইভটিজিং
লেখক: মোঃ আব্দুল্লা-হিল-মারুফ তামিম
..............................................................................
কোনো এক মহিলা কলেজের সামনে দাঁড়িয়ে আড্ডা দিচ্ছে রিয়াজ এবং তার বন্ধুরা। যাদেরকে এক কথায় এলাকার সবাই বখাটে বলে থাকে। সারাদিন বন্ধুরা মিলে আড্ডা দেওয়া,নেশা করা এবং এলাকার মেয়েদেরকে বিরক্ত করা তাদের কাজ। কোনো এক অজানা কারণে তাদেরকে এলাকার কেউ কিছু বলে না শুধু মুখ বুজে সহ্য করে যায়।
প্রতিদিনের মত আজকেও কলেজের সামনে এসে দাঁড়িয়ে আড্ডা দিচ্ছে এবং মেয়েদেরকে দেখে বাজে কথা বলছে।
এভাবে বেশ কয়েকদিন কেটে যায় কিন্তু তাদের কোনো পরিবর্তন হল না আগের মতোই রয়ে গিয়েছে।
একদিন সন্ধ্যাবেলায় গলির মোড়ে চায়ের দোকানে বসে আড্ডা দিচ্ছিল তখনই রিয়াজকে উদ্দেশ্য করে তার একজন বন্ধু বলে " মামা দেখ পিছনে তাকিয়ে"
রিয়াজ পিছনে তাকিয়ে দেখে একটি মেয়ে একা একা হেটে যাচ্ছে বেশ পর্দার সাথে। রিয়াজ পিছন থেকে মেয়েটিকে ডাক দেয় এবং বাজে কথা বলে, কিন্তু মেয়েটি তাকে পাত্তা না দিয়ে সোজা হেটে চলে যায়।
মেয়েটি তাকে পাত্তা না দিয়ে চলে যাওয়াতে তার সম্মানে লাগে তাই সে এবং তার বন্ধুরা মিলে মেয়েটির পিছু নেয়।
মেয়েটি তাদের অবস্থান বুঝতে পেরে দ্রুত পায়ে হেটে চলেছে। এদিকে পিছন থেকে রিয়াজ এবং তার বন্ধুরা মিলে মেয়েটিকে বাজে কথা বলে যাচ্ছে।
এখন রাত হয়ে গিয়েছে তাছাড়া আশেপাশে লোকজনও নেই তেমন একটা এজন্য মেয়েটিরও এখন ভয় করছে সে কী করবে ভেবে পাচ্ছে না।
রিয়াজ এবং তার বন্ধুরা জোরে হেটে গিয়ে মেয়েটিকে ঘিরে ফেলে।
মেয়েটি এখন ভয় পাচ্ছে হয়ত আজই তার উপর দিয়ে বয়ে যাবে বড় কোনো বিপদ। তাই মেয়েটিও চুপ করে দাঁড়িয়ে ভয়ে কাপছে এবং প্রহর গুনছে এই বুঝি হায়েনাগুলো তার উপর ঝাপিয়ে পড়বে।
এবার রিয়াজ হাত বাড়িয়ে মেয়েটির মাথার উপর থেকে ওড়না টেনে সরিয়ে ফেলে কিন্তু সে যা দেখল তা দেখে বড় ধরনের ধাক্কা খেল।
এতক্ষণ ওড়না দিয়ে মুখ ঢেকে রাখার জন্য মেয়েটিকে চিন্তে পারে নাই। যেই ওড়নাটিকে সরিয়ে ফেলে তখন সে দেখে মেয়েটি আর কেউ নয় তারই নিজের ছোট বোন।
রিয়াজের ছোটবোনকে দেখে তার বন্ধুরা নিজেদের দিকে ছিঃ ছিঃ করতে করতে দৌড়ে চলে যায়।
এদিকে রিয়াজ চুপচাপ মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকে আর তার ছোটবোন অঝোরে কান্না করতে থাকে।
এবার তার ছোটবোন তাকে বলল-
ছোটবোন: ছিঃ ভাইয়া তুমি শেষ পর্যন্ত নিজের বোনকেও ছাড়লে না। এতদিন জানতাম তুমি খুব খারাপ কিন্তু না তুমি একটা নোংড়া মানুষ। তোমার কাছে আমি নিজেও সুরক্ষিত না। যে ভাই নিজের বোনের সাথে এসব করতে পারে সে আসলে ভাই না সে একটা পশুর সমান। তোমাকে ভাইয়া বলতেও আমার ঘৃণা করছে। আজ থেকে আমার কোনো ভাই নেই।
বোনের এমন কথা শুনে রিয়াজ বোনের পাঁ জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে বলে-
রিয়াজ: আমাকে ক্ষমা করে দে বোন। আমার ভুল হয়ে গিয়েছে। আমি আর কোনোদিন এমন কাজ করব না এবং ঐসব বাজে বন্ধুদের সাথেও মিশব না, আমাকে এবারের মতো ক্ষমা করে দে।
ছোটবোন: আচ্ছা ক্ষমা করতে পারি এক শর্তে।
রিয়াজ: কী শর্ত?
ছোটবোন: এতদিন যত মানুষের সাথে খারাপ আচারণ করেছ তাদের সবার কাছে ক্ষমা চাইতে হবে, না হলে আমিও তোমাকে ক্ষমা করব না।
রিয়াজ: আচ্ছা ক্ষমা চেয়ে নিব। এখন চল বাসায় যাই দুই ভাইবোন একসাথে।
এরপর দুইভাইবোন একসাথে বাসায় যায় এবং সেদিনের পর থেকে রিয়াজ এবং তার বন্ধুরা আর কোনো খারাপ কাজ করে নাই। এতদিন যাদের ক্ষতি করেছে তাদের সবার কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছে। এখন সবাই তাদেরকে পছন্দ করে।
সমাপ্ত...
"বিঃদ্রঃ অনেক স্কুল,কলেজ এবং কোচিং এর সামনে দেখা যায় কিছু ছেলেরা বসে আড্ডা দেয় এবং মেয়েদের দেখলেই বাজে ইঙ্গিত দেয়। কিন্তু তারা কী এতটুকু বোঝে না যে তাদের ঘরেও বোন আছে,যদি তাদের বোনকে কেউ কিছু বলে তখন তাদের কেমন লাগবে? তাই এসব কাজ থেকে বিরত থাকাই ভালো হবে।"
Copyright: October 16,2019 at 09:30 PM.
Maruf Tamim (Author).
লেখক: মোঃ আব্দুল্লা-হিল-মারুফ তামিম
..............................................................................
কোনো এক মহিলা কলেজের সামনে দাঁড়িয়ে আড্ডা দিচ্ছে রিয়াজ এবং তার বন্ধুরা। যাদেরকে এক কথায় এলাকার সবাই বখাটে বলে থাকে। সারাদিন বন্ধুরা মিলে আড্ডা দেওয়া,নেশা করা এবং এলাকার মেয়েদেরকে বিরক্ত করা তাদের কাজ। কোনো এক অজানা কারণে তাদেরকে এলাকার কেউ কিছু বলে না শুধু মুখ বুজে সহ্য করে যায়।
প্রতিদিনের মত আজকেও কলেজের সামনে এসে দাঁড়িয়ে আড্ডা দিচ্ছে এবং মেয়েদেরকে দেখে বাজে কথা বলছে।
এভাবে বেশ কয়েকদিন কেটে যায় কিন্তু তাদের কোনো পরিবর্তন হল না আগের মতোই রয়ে গিয়েছে।
একদিন সন্ধ্যাবেলায় গলির মোড়ে চায়ের দোকানে বসে আড্ডা দিচ্ছিল তখনই রিয়াজকে উদ্দেশ্য করে তার একজন বন্ধু বলে " মামা দেখ পিছনে তাকিয়ে"
রিয়াজ পিছনে তাকিয়ে দেখে একটি মেয়ে একা একা হেটে যাচ্ছে বেশ পর্দার সাথে। রিয়াজ পিছন থেকে মেয়েটিকে ডাক দেয় এবং বাজে কথা বলে, কিন্তু মেয়েটি তাকে পাত্তা না দিয়ে সোজা হেটে চলে যায়।
মেয়েটি তাকে পাত্তা না দিয়ে চলে যাওয়াতে তার সম্মানে লাগে তাই সে এবং তার বন্ধুরা মিলে মেয়েটির পিছু নেয়।
মেয়েটি তাদের অবস্থান বুঝতে পেরে দ্রুত পায়ে হেটে চলেছে। এদিকে পিছন থেকে রিয়াজ এবং তার বন্ধুরা মিলে মেয়েটিকে বাজে কথা বলে যাচ্ছে।
এখন রাত হয়ে গিয়েছে তাছাড়া আশেপাশে লোকজনও নেই তেমন একটা এজন্য মেয়েটিরও এখন ভয় করছে সে কী করবে ভেবে পাচ্ছে না।
রিয়াজ এবং তার বন্ধুরা জোরে হেটে গিয়ে মেয়েটিকে ঘিরে ফেলে।
মেয়েটি এখন ভয় পাচ্ছে হয়ত আজই তার উপর দিয়ে বয়ে যাবে বড় কোনো বিপদ। তাই মেয়েটিও চুপ করে দাঁড়িয়ে ভয়ে কাপছে এবং প্রহর গুনছে এই বুঝি হায়েনাগুলো তার উপর ঝাপিয়ে পড়বে।
এবার রিয়াজ হাত বাড়িয়ে মেয়েটির মাথার উপর থেকে ওড়না টেনে সরিয়ে ফেলে কিন্তু সে যা দেখল তা দেখে বড় ধরনের ধাক্কা খেল।
এতক্ষণ ওড়না দিয়ে মুখ ঢেকে রাখার জন্য মেয়েটিকে চিন্তে পারে নাই। যেই ওড়নাটিকে সরিয়ে ফেলে তখন সে দেখে মেয়েটি আর কেউ নয় তারই নিজের ছোট বোন।
রিয়াজের ছোটবোনকে দেখে তার বন্ধুরা নিজেদের দিকে ছিঃ ছিঃ করতে করতে দৌড়ে চলে যায়।
এদিকে রিয়াজ চুপচাপ মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকে আর তার ছোটবোন অঝোরে কান্না করতে থাকে।
এবার তার ছোটবোন তাকে বলল-
ছোটবোন: ছিঃ ভাইয়া তুমি শেষ পর্যন্ত নিজের বোনকেও ছাড়লে না। এতদিন জানতাম তুমি খুব খারাপ কিন্তু না তুমি একটা নোংড়া মানুষ। তোমার কাছে আমি নিজেও সুরক্ষিত না। যে ভাই নিজের বোনের সাথে এসব করতে পারে সে আসলে ভাই না সে একটা পশুর সমান। তোমাকে ভাইয়া বলতেও আমার ঘৃণা করছে। আজ থেকে আমার কোনো ভাই নেই।
বোনের এমন কথা শুনে রিয়াজ বোনের পাঁ জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে বলে-
রিয়াজ: আমাকে ক্ষমা করে দে বোন। আমার ভুল হয়ে গিয়েছে। আমি আর কোনোদিন এমন কাজ করব না এবং ঐসব বাজে বন্ধুদের সাথেও মিশব না, আমাকে এবারের মতো ক্ষমা করে দে।
ছোটবোন: আচ্ছা ক্ষমা করতে পারি এক শর্তে।
রিয়াজ: কী শর্ত?
ছোটবোন: এতদিন যত মানুষের সাথে খারাপ আচারণ করেছ তাদের সবার কাছে ক্ষমা চাইতে হবে, না হলে আমিও তোমাকে ক্ষমা করব না।
রিয়াজ: আচ্ছা ক্ষমা চেয়ে নিব। এখন চল বাসায় যাই দুই ভাইবোন একসাথে।
এরপর দুইভাইবোন একসাথে বাসায় যায় এবং সেদিনের পর থেকে রিয়াজ এবং তার বন্ধুরা আর কোনো খারাপ কাজ করে নাই। এতদিন যাদের ক্ষতি করেছে তাদের সবার কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছে। এখন সবাই তাদেরকে পছন্দ করে।
সমাপ্ত...
"বিঃদ্রঃ অনেক স্কুল,কলেজ এবং কোচিং এর সামনে দেখা যায় কিছু ছেলেরা বসে আড্ডা দেয় এবং মেয়েদের দেখলেই বাজে ইঙ্গিত দেয়। কিন্তু তারা কী এতটুকু বোঝে না যে তাদের ঘরেও বোন আছে,যদি তাদের বোনকে কেউ কিছু বলে তখন তাদের কেমন লাগবে? তাই এসব কাজ থেকে বিরত থাকাই ভালো হবে।"
Copyright: October 16,2019 at 09:30 PM.
Maruf Tamim (Author).