গল্পের নাম- গৃহকর্মী
লেখক- মোঃ আব্দুল্লা-হিল-মারুফ তামিম
(নতুন বছর নতুন গল্প দিয়ে শুরু করলাম সবাইকে ইংরেজী নতুন বছরের শুভেচ্ছা)
আজকে ছুটির দিন ঘরে বসে গান শুনছি তখন দরজার কলিং বেল বেজে উঠলো।আম্মু রান্নাঘর থেকে চিৎকার করে বললেন দরজা খুলতে।উঠে গেলাম দরজা খুলতে।দরজা খুলে দেখি পাশের ফ্লাটের আন্টি দাঁড়িয়ে আছেন।আমি তাকে সালাম দিয়ে ভিতরে আসতে বললাম কিন্তু তিনি আমাকে বললেন তোমার আম্মুকে এক্টু ডেকে দাও কথা আছে।আমি উনাকে ভিতরে বসতে দিয়ে আম্মুকে ডাকতে গেলাম রান্নাঘরে।আম্মু রান্নাঘর থেকে এসে উনার সাথে কথা বলতে লাগলেন আমি আমার ঘরে চলে আসলাম।আমার ঘর আর ড্রইংরুম পাশাপাশি তাই কি কথা হচ্ছে সেটা শুনতে পারবে যে কেউ।তাই আমিও তাদের কথা শোনার জন্য মনোযোগ দিলাম।
তাদের দুজনের কথাপোকথন-
কেমন আছেন ভাবি কিছু বলবেন?(আম্মু)
ভালো আর কই থাকলাম ভাবি।রেখেছি একজন কাজের লোক সে প্রায়ই এমন কামাই করলে কি ভালো লাগে।তা ভাবি আপনাদের বাসায় কি আসছিলো বুয়া?(আন্টি)
(বলে রাখা ভালো তার বাসার কাজের লোক আর আমাদের বাসার কাজের লোক একই জন।আর সেই কাজের লোক বললে খারাপ দেখায় তাকে আমি খালা বলে ডাকি মরিয়ম খালা।আর তার বয়স আনুমানিক ৬০বছর।)
নাহ সে আজকে আসে নাই ভাবি।হয়ত শরীর খারাপ তাই আসে নাই।দেখেনত কেমন বুড়া মানুষ।(আম্মু)
শরীর খারাপ না ছাই এসব হল ইচ্ছা করে কামাই করে।আপনাকেত দেখি কি সুন্দর তার বেতন দিয়ে দেন যত কামাই করুক না কেনো সব টাকা দিয়ে দেন।আমার আবার এমন হয় না যেদিন আসবে না সেদিনের টাকা আমি দেই না।আর আপনাকে দেখি কিছুই বলেন না দুইদিন না আসলেও চুপচাপ থাকেন আমি হলেত ওকে কাজেই রাখতাম না যত্তসব।(আন্টি)
দেখেন ভাবি আমার ঘরে কাজ খুব কম তাকে দিয়ে আমি ঘর পরিষ্কার,কাপড় পরিষ্কার আর পানি আনার কাজ করাই আর আমার ঘরে মাত্র তিনজন মানুষ আপনার ভাই আর ছেলেকে নিয়ে থাকি।আমার বাসায় এত ঝামেলা নাই।আর সবচেয়ে বড় কথা সে যখন আসে আসুক আমার কাজ হলেই হল।আর সে কাজের লোক হলে হবে কি সেও একজন মানুষ আপনার আমার যেমন রক্ত মাংসের শরীর তারও সেই একই রকম শরীর।আর তার বয়সটার দিকেও তাকাতে হবে তার যে বয়স সেই বয়সে তার এমন কাজ করার কথা না কিন্তু পরিস্থিতির শিকার হয়ে কাজ করে সে।আর বললেন না যে একদিন না আসলে আপনি টাকা আটকে রাখেন কিন্তু আমি দিয়ে দেই কারন তার সাথে দিন চুক্তি না আমার কাজের মাধ্যমে তার বেতন সে যখনই করুক না কেনো আমার কাজটা হলেই হল।(আম্মু)
নাহ আমার এসব চলে না আমার সব কিছুর মূল্য আছে ভাই আমার স্বামী খেটেখুটে টাকা কামাই করে আর সেই টাকা যদি কাউকে বিনা কাজ করিয়ে দিয়ে দেই তাহলেত আমার পেট চলবে না।(আন্টি)
সেটা আপনার বিষয় ভাবি আমাদের এমন কোনো চিন্তা ভাবনা নাই।আমি মনে করি সেও মানুষ আমিও মানুষ হয়ত সে থাকে কাঠের ঘরে আর আমি থাকি বড় দালানে।কিন্তু আমাদের থেকে তাদের মন আরো ভালো।এখন এসব বাদ দেন হয়ত কোনো সমস্যা হয়েছে তাই আসতে পারে নাই।এসব নিয়ে চিল্লাপাল্লা করলে আর সমস্যা সমাধান হবে না তাই অপেক্ষা করেন তার জন্য পরেরদিন আসলে জানতে পারবেন কেনো আসে নাই।(আম্মু)
আচ্ছা ঠিক আছে ভাবি আসি।পরে আসবানি রান্না করতে হবে।(আন্টি)
তারপর আন্টি চলে যাবার পর আম্মু আবার তার রান্না করতে লাগলেন তখন আমি আম্মুর কাছে গেলাম।আর তাকে বললাম-
আম্মু আন্টিত ঠিক বলেছেন মরিয়ম খালা প্রতিমাসে দুই-তিনদিন কামাই করেন।তারপরেও তুমি কিছু বল না এমনত কোনো অফিসেও ছুটি দেয় না।(আমি)
শোনো মানুষের সমস্যা থাকতে পারে সবাইত আর সবসময় ভালো থাকে না।আর মরিয়মবুর বয়স হইছে অনেক তার শরীর এখন দুর্বল তারপরেও পরিস্থিতির শিকার হয়ে কাজ করেন।এখন সে যদি এক-দুন দিন ছুটি কাটায় এতে ক্ষতি কিসের তারও রক্ত মাংসের শরীর কোনো সমস্যা না হলে এমন কামাই করে না সে।(আম্মু)
হুম তা ঠিক কিন্তু তাকে আমরা সবদিনের বেতন দিয়ে দেই ঠিকমত এর কি হবে সে কাজ না করে বেতন নিচ্ছে।(আমি)
এই কথাটাত আমার তোমাকে বলা উচিত তুমি স্কুলে থাকতে সবসময় স্কুলে যেতে না সপ্তাহে একদিন যেতে কিনা তাও সন্দেহ আর এখন কলেজে উঠেও তাই করছো।কই তখন মনে হয় না আমি এখানে যাই না কিন্তু বেতনগুলা ঠিকমত দিয়ে দিতে হয়। আর এখানে কাজের বুয়া একদিন আসেনি বলে এতকিছু বলছ।(আম্মু)
মাথা নিচু করে চুপ(আমি)
শোনো মানুষকে ভালোবাসতে জানলে উপরে আল্লাহ তোমাকে ভালোবাসবেন।তাই কোনোদিন কাউকে কষ্ট দিবানা সে যাই করুক না কেন চেষ্টা করবা তাকে সাহায্য করার জন্য।এরজন্য হয়ত তোমার সম্পত্তি থেকে কমে যাবে কিন্তু দেখবা আল্লাহ তোমাকে আবার সম্পুর্ণ করে দিবেন।তাই দোয়া করি যেন অনেক বড় হও আর সবসময় আমার এই কথাটা মনে রাখবা বুঝতে পেরেছো।এখন যাও গোসল করে আসো রান্না শেষ প্রায় এরপরে খেতে হবে।(আম্মু)
আম্মু কথা শুনে ঘরে চলে এলাম আর ভাবতে লাগলাম এমন মা পাওয়া আসলেই ভাগ্যের বিষয়।যিনি শুধু নিজের সন্তান এর জন্য নয় বাইরের মানুষের ভালো চায়।সবাই আমার আম্মুর জন্য দোয়া করবেন।
বিঃদ্রঃ-উক্ত কথাগুলি সম্পুর্ণ সত্য।গত দুইদিন আগে আমাদের বাসার গৃহকর্মী মরিয়ম খালা না আসাতে পাশের বাসার আন্টি এসব বলেন।তাই নিয়েই লিখে ফেললাম।আর আপনাদের কাছে একটাই অনুরোধ কখনও আপনার বাসার গৃহকর্মীকে ছোট করে দেখবেন না।কারন তাদের জন্য আপনার ঘর কাপড় সব পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকে।তাদের সমস্যা থাকতে পারে আপনিও মানুষ তারাও মানুষ তাই সেভাবে বিচার করুন।ধন্যবাদ
সমাপ্ত..................
লেখক- মোঃ আব্দুল্লা-হিল-মারুফ তামিম
(নতুন বছর নতুন গল্প দিয়ে শুরু করলাম সবাইকে ইংরেজী নতুন বছরের শুভেচ্ছা)
আজকে ছুটির দিন ঘরে বসে গান শুনছি তখন দরজার কলিং বেল বেজে উঠলো।আম্মু রান্নাঘর থেকে চিৎকার করে বললেন দরজা খুলতে।উঠে গেলাম দরজা খুলতে।দরজা খুলে দেখি পাশের ফ্লাটের আন্টি দাঁড়িয়ে আছেন।আমি তাকে সালাম দিয়ে ভিতরে আসতে বললাম কিন্তু তিনি আমাকে বললেন তোমার আম্মুকে এক্টু ডেকে দাও কথা আছে।আমি উনাকে ভিতরে বসতে দিয়ে আম্মুকে ডাকতে গেলাম রান্নাঘরে।আম্মু রান্নাঘর থেকে এসে উনার সাথে কথা বলতে লাগলেন আমি আমার ঘরে চলে আসলাম।আমার ঘর আর ড্রইংরুম পাশাপাশি তাই কি কথা হচ্ছে সেটা শুনতে পারবে যে কেউ।তাই আমিও তাদের কথা শোনার জন্য মনোযোগ দিলাম।
তাদের দুজনের কথাপোকথন-
কেমন আছেন ভাবি কিছু বলবেন?(আম্মু)
ভালো আর কই থাকলাম ভাবি।রেখেছি একজন কাজের লোক সে প্রায়ই এমন কামাই করলে কি ভালো লাগে।তা ভাবি আপনাদের বাসায় কি আসছিলো বুয়া?(আন্টি)
(বলে রাখা ভালো তার বাসার কাজের লোক আর আমাদের বাসার কাজের লোক একই জন।আর সেই কাজের লোক বললে খারাপ দেখায় তাকে আমি খালা বলে ডাকি মরিয়ম খালা।আর তার বয়স আনুমানিক ৬০বছর।)
নাহ সে আজকে আসে নাই ভাবি।হয়ত শরীর খারাপ তাই আসে নাই।দেখেনত কেমন বুড়া মানুষ।(আম্মু)
শরীর খারাপ না ছাই এসব হল ইচ্ছা করে কামাই করে।আপনাকেত দেখি কি সুন্দর তার বেতন দিয়ে দেন যত কামাই করুক না কেনো সব টাকা দিয়ে দেন।আমার আবার এমন হয় না যেদিন আসবে না সেদিনের টাকা আমি দেই না।আর আপনাকে দেখি কিছুই বলেন না দুইদিন না আসলেও চুপচাপ থাকেন আমি হলেত ওকে কাজেই রাখতাম না যত্তসব।(আন্টি)
দেখেন ভাবি আমার ঘরে কাজ খুব কম তাকে দিয়ে আমি ঘর পরিষ্কার,কাপড় পরিষ্কার আর পানি আনার কাজ করাই আর আমার ঘরে মাত্র তিনজন মানুষ আপনার ভাই আর ছেলেকে নিয়ে থাকি।আমার বাসায় এত ঝামেলা নাই।আর সবচেয়ে বড় কথা সে যখন আসে আসুক আমার কাজ হলেই হল।আর সে কাজের লোক হলে হবে কি সেও একজন মানুষ আপনার আমার যেমন রক্ত মাংসের শরীর তারও সেই একই রকম শরীর।আর তার বয়সটার দিকেও তাকাতে হবে তার যে বয়স সেই বয়সে তার এমন কাজ করার কথা না কিন্তু পরিস্থিতির শিকার হয়ে কাজ করে সে।আর বললেন না যে একদিন না আসলে আপনি টাকা আটকে রাখেন কিন্তু আমি দিয়ে দেই কারন তার সাথে দিন চুক্তি না আমার কাজের মাধ্যমে তার বেতন সে যখনই করুক না কেনো আমার কাজটা হলেই হল।(আম্মু)
নাহ আমার এসব চলে না আমার সব কিছুর মূল্য আছে ভাই আমার স্বামী খেটেখুটে টাকা কামাই করে আর সেই টাকা যদি কাউকে বিনা কাজ করিয়ে দিয়ে দেই তাহলেত আমার পেট চলবে না।(আন্টি)
সেটা আপনার বিষয় ভাবি আমাদের এমন কোনো চিন্তা ভাবনা নাই।আমি মনে করি সেও মানুষ আমিও মানুষ হয়ত সে থাকে কাঠের ঘরে আর আমি থাকি বড় দালানে।কিন্তু আমাদের থেকে তাদের মন আরো ভালো।এখন এসব বাদ দেন হয়ত কোনো সমস্যা হয়েছে তাই আসতে পারে নাই।এসব নিয়ে চিল্লাপাল্লা করলে আর সমস্যা সমাধান হবে না তাই অপেক্ষা করেন তার জন্য পরেরদিন আসলে জানতে পারবেন কেনো আসে নাই।(আম্মু)
আচ্ছা ঠিক আছে ভাবি আসি।পরে আসবানি রান্না করতে হবে।(আন্টি)
তারপর আন্টি চলে যাবার পর আম্মু আবার তার রান্না করতে লাগলেন তখন আমি আম্মুর কাছে গেলাম।আর তাকে বললাম-
আম্মু আন্টিত ঠিক বলেছেন মরিয়ম খালা প্রতিমাসে দুই-তিনদিন কামাই করেন।তারপরেও তুমি কিছু বল না এমনত কোনো অফিসেও ছুটি দেয় না।(আমি)
শোনো মানুষের সমস্যা থাকতে পারে সবাইত আর সবসময় ভালো থাকে না।আর মরিয়মবুর বয়স হইছে অনেক তার শরীর এখন দুর্বল তারপরেও পরিস্থিতির শিকার হয়ে কাজ করেন।এখন সে যদি এক-দুন দিন ছুটি কাটায় এতে ক্ষতি কিসের তারও রক্ত মাংসের শরীর কোনো সমস্যা না হলে এমন কামাই করে না সে।(আম্মু)
হুম তা ঠিক কিন্তু তাকে আমরা সবদিনের বেতন দিয়ে দেই ঠিকমত এর কি হবে সে কাজ না করে বেতন নিচ্ছে।(আমি)
এই কথাটাত আমার তোমাকে বলা উচিত তুমি স্কুলে থাকতে সবসময় স্কুলে যেতে না সপ্তাহে একদিন যেতে কিনা তাও সন্দেহ আর এখন কলেজে উঠেও তাই করছো।কই তখন মনে হয় না আমি এখানে যাই না কিন্তু বেতনগুলা ঠিকমত দিয়ে দিতে হয়। আর এখানে কাজের বুয়া একদিন আসেনি বলে এতকিছু বলছ।(আম্মু)
মাথা নিচু করে চুপ(আমি)
শোনো মানুষকে ভালোবাসতে জানলে উপরে আল্লাহ তোমাকে ভালোবাসবেন।তাই কোনোদিন কাউকে কষ্ট দিবানা সে যাই করুক না কেন চেষ্টা করবা তাকে সাহায্য করার জন্য।এরজন্য হয়ত তোমার সম্পত্তি থেকে কমে যাবে কিন্তু দেখবা আল্লাহ তোমাকে আবার সম্পুর্ণ করে দিবেন।তাই দোয়া করি যেন অনেক বড় হও আর সবসময় আমার এই কথাটা মনে রাখবা বুঝতে পেরেছো।এখন যাও গোসল করে আসো রান্না শেষ প্রায় এরপরে খেতে হবে।(আম্মু)
আম্মু কথা শুনে ঘরে চলে এলাম আর ভাবতে লাগলাম এমন মা পাওয়া আসলেই ভাগ্যের বিষয়।যিনি শুধু নিজের সন্তান এর জন্য নয় বাইরের মানুষের ভালো চায়।সবাই আমার আম্মুর জন্য দোয়া করবেন।
বিঃদ্রঃ-উক্ত কথাগুলি সম্পুর্ণ সত্য।গত দুইদিন আগে আমাদের বাসার গৃহকর্মী মরিয়ম খালা না আসাতে পাশের বাসার আন্টি এসব বলেন।তাই নিয়েই লিখে ফেললাম।আর আপনাদের কাছে একটাই অনুরোধ কখনও আপনার বাসার গৃহকর্মীকে ছোট করে দেখবেন না।কারন তাদের জন্য আপনার ঘর কাপড় সব পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকে।তাদের সমস্যা থাকতে পারে আপনিও মানুষ তারাও মানুষ তাই সেভাবে বিচার করুন।ধন্যবাদ
সমাপ্ত..................