What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Self-Made গল্পের নাম: ফেরিওয়ালা জামাই (রম্যগল্প) (1 Viewer)

Joined
Apr 9, 2022
Threads
100
Messages
100
Credits
7,417
কোনো এক খাবার রেস্টুরেন্ট এ বসে ফোনে কথা বলছে একজন যুবক। তার কথাগুলো এমন ছিল-

=> হ্যালো শরীফ শোন ঐপাশ থেকে আমার যে দশটি প্লেন আছে সেগুলোকে নিয়ে সুন্দরভাবে পরিষ্কার করে রেখে দে। আজকে রাতুল ভাইর ছেলের জন্মদিন তাই তার ছেলেকে উপহার দিব। এর আগে একবার গাড়ি দিয়েছিলাম সেগুলো পুরাতন হয়ে গিয়েছে এখন প্লেন দিব অনেক খুশি হবে।

আরে মাত্র দশটি প্লেন দিচ্ছি এতে আমার কমে যাবে না আমার কাছে আরও প্লেন আছে দরকার হয় আরও কিনে নিব সমস্যা নাই। তুই সব ঠিক করে রাখ।

হ্যাঁ আমি এখন রেস্টুরেন্ট এ খাওয়া দাওয়া করছি কী আর করব বল আমার ঘরে বউ নেই মেয়ে খুজছি বিয়ের জন্য কিন্তু খুজে পাচ্ছি না।

বাদ দে তুই খাওয়া দাওয়া করে নে রাত্রে রাতুল ভাইর বাড়ি দেখা হবে।

এতক্ষণ ধরে যুবকটির ফোনে কথা বলা শুনছিলেন পাশের টেবিলে বসে থাকা রফিক নামের এক ভদ্রলোক যার আর্থিক অবস্থা বলতে গেলে অনেকটা ভালোই।

কিন্তু তার একটাই চিন্তা তার একমাত্র মেয়ের বিয়ে নিয়ে। কারণ তিনি চান একজন সুপাত্রের হাতে তার মেয়েকে তুলে দিতে।

যে ছেলের আর্থিক অবস্থা এবং চরিত্র খুবই ভাল হবে তার সাথেই তার মেয়েকে বিয়ে দিবেন।

তিনি এতক্ষণ বসে পাশের টেবিলে বসে থাকা ছেলেটির কথাগুলো শুনলেন যা তার কাছে খুব ভালো লেগেছে। যে ছেলে একজনের জন্মদিনে দশটি প্লেন উপহার দিবে তাহলে সে কতবড় ধনী পরিবারের সন্তান। তাই তিনি মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলেন এমন ছেলের সাথেই তার মেয়েকে বিয়ে দিবেন।

এইজন্য তিনি উঠে সেই ছেলেটির পাশের চেয়ারে বসলেন আর বলতে লাগলেন-

=> বাবা তোমার নাম কী?

=> আংকেল আমার নাম তামিম।

=> তা বাবা তুমি থাক কোথায়?

=> এই পাশেই থাকি আংকেল।

=> তোমার বাড়িতে কে কে আছেন?

=> জ্বী আংকেল আমি একাই থাকি।

=> তোমার মা-বাবা কোথায়?

=> উনারা কেউ বেঁচে নেই।

=> ওহ, তা বিয়ে-সাধি করেছে?

=> নাহ আংকেল।

=> বাবা কিছু মনে কর না, আমি পাশের টেবিলে বসে থেকে তোমার ফোনে কথা বলা শুনছিলাম। আর সব শুনে বুঝতে পারি আমি যাকে আমার মেয়ের জামাই হিসেবে খুজছি তাকে আজ পেয়েছি।

=> আমি কিছু বুঝতে পারছি না আংকেল আপনি কী বলছেন?

=> বাবা আমি আমার মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার জন্য ছেলে খুজছি কিন্তু মনের মত কোনো ছেলে খুজে পাচ্ছিলাম না। কিন্তু আজ তোমাকে পেলাম আমি মনে করি তুমি পারবে আমার মেয়েকে সুখী রাখতে। প্লিজ আমার মেয়েটাকে বিয়ে করে নাও।

=> কিন্তু আংকেল এটা কীভাবে সম্ভব। আমি কোথায় আর আপনি কোথায়। এটা আমার দ্বারা সম্ভব না।

=> বাবা আমি সব বুঝতে পেরেছি। আর আমার যা কিছু আছে সব তোমাদেরকে দিয়ে দিব তুমি শুধু রাজি হয়ে যাও আমার মেয়েকে বিয়ে করার জন্য।

=> আচ্ছা আংকেল ঠিক আছে আপনি যা ভালো মনে করেন।

=> আলহামদুলিল্লাহ, এখন থেকে আংকেল না বাবা বলে ডাকবে।

=> আচ্ছা বাবা।

সেদিনই তামিমের সাথে রফিক সাহেবের মেয়ের বিয়ে হয়ে যায় ধুমধাম করে। বিয়েতে রফিক সাহেব জামাই আর মেয়েকে উপহার হিসেবে তার নতুন বাড়িটি দিলেন।

বিয়ের প্রথম রাত তারা রফিক সাহেবের বর্তমান বাড়িতে পার করে।

পরের দিন সকালে....

=> এই তুমি এত সকালে কোথায় ছিল এত বড় টোপলা(কাপড় দিয়ে পেচিয়ে বানানো ব্যাগ) কাধে নিয়ে?

=> কেন কাজে যাচ্ছি।

=> সেটা বুঝলাম কিন্তু এত বড় টোপলা দিয়ে কি করবে এটা ফেলে দাও।

=> এটা ফেললে তাহলে খাব কী আমরা?

=> মানে, কী আছে এই টোপলার ভিতরে?

=> এই দেখ কী আছে

এরপর টোপলার মুখ খুলে দিলে তার ভিতর থেকে বেরিয়ে এলো ছোট ছোট খেলনা গাড়ি, প্লেন,পুতুলসহ আরও অনেক কিছু।

এত খেলনা দেখে তামিমের স্ত্রী বলে-

=> এত খেলনা কীসের জন্য?

=> এই খেলনা গুলো নিয়ে আমি নিউমার্কেট এর সামনে ফুটপাতে বসে বিক্রি করি।

=> কী বল তুমি এসব কেন করবে। তুমি না ধনী পরিবারের ছেলে তোমার নিজের কত সম্পত্তি।

=> কী যে বল তুমি আমি আবার কোটিপতি। একশ টাকা আয় করতে যেয়ে সারাদিন রৌদ্রে পুড়তে হয় আর একদিন কাজ করলে না খেয়ে থাকতে হয় তারা আবার কোটিপতি একটু বেশিই বললে তুমি।

=> কেন বাবা বলেছেন তুমি না কী কার জন্মদিনে দশটি প্লেন উপহার দিয়েছ।

=> ওহ সেটা আমাদের রাতুল ভাইর ছেলের জন্মদিনে উপহার দিয়েছি এই দেখ এই খেলনা প্লেনগুলো। এটা এভাবে টেনে ছেড়ে দিলে অনেক দূর দৌড়ে যাবে বাচ্চারা খুব পছন্দ করে এই খেলনাটা।

=> তারমানে তুমি কোনো ধনী পরিবারের ছেলে না, তুমি একজন ফেরিওয়ালা।আমার মাথা ঘুরছে সব অন্ধকার হয়ে যাচ্ছে,, আব্বা.....

এরপর বউ অজ্ঞান।

মেয়ের ডাক শুনে পাশের ঘর থেকে রফিক সাহেব চলে আসেন মেয়ে জামাইয়ের ঘরে আর এসে দেখেন তার মেয়ে অজ্ঞান হয়ে আছে। তিনি মেয়েকে এভাবে দেখে জামাইয়ের কাছে জিজ্ঞাসা করলেন-

=> কী হয়েছে বাবা?

=> জানি না আব্বা, কথা বলতে বলতে অজ্ঞান হয়ে গিয়েছে।

=> আচ্ছা আমি ডাক্তার ডেকে নিয়ে আসি। আচ্ছা এত খেলনা কী জন্য? নিশ্চয়ই তোমরা বাচ্চা-কাচ্চার পরিকল্পনা করছ। তাই এত খেলনা আগে থেকে কিনে এনেছ?

=> নাহ আব্বা এসব কিছু না।

=> আরে বাবা এখানে লজ্জা পাচ্ছ কেন? এটাই প্রকৃতির নিয়ম একদিন বাবা হবে বাচ্চারা সারা ঘরে দৌড়ে বেড়াবে।

=> নাহ আব্বা সেসব কিছু না। আসলে এই খেলনাগুলো নিয়ে আমি নিউমার্কেট এর সামনে ফুটপাতে বসে বিক্রি করি।

=> কী বলছ বাবা তুমি এসব কেন করবে?

=> আব্বা এটাই আমার জীবিকা নির্বাহের পথ। এটা না করলে আমার ঘরে চুলা জ্বলবে না।

=> কিন্তু তুমি ধনী পরিবারের ছেলে তোমার এসব কেন করতে হবে?

=> কী যে বলেন আব্বা আমি আবার ধনী পরিবারের সন্তান। আমার পরিবার সেই আগে থেকেই ফেরিওয়ালা। আগে আমার দাদা করতেন পরে আমার আব্বা আর এখন আমি করি। এটা আমাদের বংশ পরমপরা।

=> তাহলে সেদিন ফোনে বললে দশটি প্লেন উপহার দিবে সেটা তাহলে কী ছিল?

=> ওহ, সেগুলো এইযে এই প্লেন গুলো। খুব ভালো এগুলো এভাবে টেনে ছেড়ে দিবেন অনেক দূরে দৌড়াবে।

=> তার মানে তুমি একজন ফেরিওয়ালা কোনো বড় ঘরের সন্তান না?

=> জ্বী আব্বা আমি একজন ফেরিওয়ালা।

=> কী বল এসব শেষ পর্যন্ত একজন ফেরিওয়ালার সাথে মেয়ের বিয়ে দিলাম। লোকে আমাকে বলবে ফেরিওয়ালার শশুড়। আমার মাথা ঘুরছে আমাকে কেউ ধরো।

এরপর রফিক সাহেবও মেয়ের মত অজ্ঞান হয়ে যান।

..........সমাপ্ত.......

গল্পের নাম: ফেরিওয়ালা জামাই (রম্যগল্প)

লেখক: মোঃ আব্দুল্লা-হিল-মারুফ তামিম

Copyright: June18,2019 at 10:21 PM

Md. Abdulla-hill-Maruf Tamim
 

Users who are viewing this thread

Back
Top