What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Self-Made গল্পের নাম- রাত ৩টা (1 Viewer)

Joined
Apr 9, 2022
Threads
100
Messages
100
Credits
7,417
গল্পের নাম- রাত ৩টা

লেখা- মোঃ আব্দুল্লা-হিল-মারুফ তামিম

…………...……………………………………………

কচ কচ শব্দে হঠাৎ ঘুম ভেঙে যায়। শব্দটা খুব কাছে থেকেই আসছে। চোখ খুলে দেখি পাশে সুমী নেই।

"সুমী আমার স্ত্রী, পারিবারিকভাবেই আমাদের বিয়ে হয়েছে আজ একমাস হতে চলল।"

কিন্তু এত রাত্রে সুমী কোথায় যেতে পারে হয়ত বাথরুমে গিয়েছে তাই আর কিছু না ভেবে ঘুমিয়ে পড়লাম। কিছুক্ষণ পর আবার সেই কচ কচ শব্দ শুনতে পেলাম। আর এই শব্দটা মনে হচ্ছে আমার খাটের নিচে থেকে আসছে। এবার চোখ খুলে দেখি সুমী এখনও আসে নি৷ তাই এবার হাতড়ে মোবাইলটা নিলাম। মোবাইল চালিয়ে দেখলাম এখন রাত ৩টা বাজে। কিন্তু এতক্ষণ বাথরুমে কি করছে সে। তাকে খুজতে খাট থেকে নেমে ঘরের লাইট জ্বালাতে যাই কিন্তু কারেন্ট নেই। তাই ফোনের ফ্ল্যাশ লাইট জ্বালিয়ে বাথরুমের দিকে যাই কিন্তু সেখানে তাকে পেলাম না। এবার যাই বারান্দায় কিন্তু সেখানেও সে নেই। আমার খুব চিন্তা হতে থাকে এত রাত্রে সে কোথায় গিয়েছে। তখন মনে পড়ল খাটের নিচে কিছু কচ কচ শব্দ আসছিল। তাই খাটের নিচে দেখতে গেলাম কি আছে সেখানে। কিন্তু খাটের নিচে ঘুটঘুটে অন্ধকার আমার হাতের ফোনের চার্জ শেষ হয়ে গিয়েছে হঠাৎ করে অথচ আমার ফোনে ফুল চার্জ ছিল। আমার এখন একটু একটু ভয় হচ্ছে। তবুও মনে সাহস নিয়ে খাটের নিচে মাথা ঢুকিয়ে দিয়ে দেখার চেষ্টা করি। বাইরে থেকে কিছুটা আলো আসাতে খাটের নিচে হাল্কা পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে। নিচে চারপাশ চোখ বুলালাম কিন্তু একপাশে আমার চোখ আটকে যায়। সেখানে দেখি সুমী বসে আছে আর কি যেন করছে অন্ধকার হওয়ার কারণে বুঝতে পারছি না। আমি এবার সুমীকে ডাক দিলাম কিন্তু সুমী কোনো সাড়া দিচ্ছে না। এভাবে কয়েকবার ডাকার পর যখন কোনো সাড়া দিচ্ছে না দেখে আমি তার কাধে হাল্কা ধাক্কা দেই। এরপর সে পিছন ফিরে আমার দিকে তাকায়। হাল্কা আলোয় তার চেহারা দেখে আমি অনেক ভয় পেয়ে যাই। ভয় পেয়ে খুব দ্রুত খাটের নিচে থেকে বেরিয়ে আসি। কি বিদঘুটে একটা চেহারা, সারামুখে রক্ত আর বড় বড় দাত কি ভয়ংকর।

আমি খাটের নিচে থেকে বেরিয়ে আসার পর সুমীও খাটের নিচে থেকে বেরিয়ে আমার কাছে আসতে থাকে আর বলতে থাকে " এতক্ষণ বিড়ালের মাংস খেয়েছি কোনো স্বাদ পাই নাই এবার তোকে খাব। তোর মাংসে খুব টেস্ট হবে।"

এই বলে আমার কাছে প্রায় চলে আসে আর আমি সেই সময় দৌড়ে ঘর থেকে বেরিয়ে আম্মু-আব্বুর ঘরের দিকে চলে যাই।

আব্বু-আম্মু আমাকে একটা পেত্নীর সাথে বিয়ে দিয়েছেন শেষ পর্যন্ত। আমি আব্বু-আম্মুর ঘরে যেয়ে তাদের ঘরের দরজা খোলা পাই, তাই দ্রুত ঢুকে দরজা লাগিয়ে দেই। দরজা লাগিয়ে পিছন ফিরে দেখি আম্মু খাটের উপরে বসে আছেন। আমি আম্মুর কাছে যেয়ে আম্মুকে ডাক দেই। আম্মু পিছন ফিরে তাকালেন। আম্মুর চেহারা দেখে আমি আবার ভয় পেয়ে যাই। কারণ আম্মুর সারা মুখে রক্ত আর হাতে একটা মানুষের মাথা। খেয়াল করে দেখলাম এটা আমার আব্বুর মাথা। তারমানে আম্মু আমার আব্বুকে মেরে ফেলেছে। আম্মু এবার আমাকে বললেন " আয় বাবা আমার কাছে আয়। এতক্ষণ তোর বাবার মাংস খেলাম এখন তোর মাংস খাব।" এই বলেই আম্মু উঠে দাঁড়ায়। আমি এবার এক দৌড়ে বাসা থেকে বেরিয়ে নিচে চলে আসি। সেখানে এসে দারোয়ানকে দেখতে পাই গেটে বসে আছেন। তিনি আমাকে দেখে জানতে চান কি হয়েছে আমার। এরপর আমি তাকে সব খুলে বলি। সব শুনে তিনি আমাকে তার ঘরে নিয়ে বসান আর উনি বাইরে চলে যান। কিছুক্ষণ পর উনি ফিরে আসেন হাতে একটা বড় ছুরি নিয়ে। তার হাতে ছুরি দেখে আমি জানতে চাইলাম এটা দিয়ে কি করবেন। তিনি উত্তর দিলেন " স্যার অনেক রাত হয়ে গেছে খাওয়া দাওয়া করি নাই এখনও পর্যন্ত তাই এবার আপনাকে খাব।" এই কথা বলে সে বিদঘুটে হাসি শুরু করে দেয় আর আমার দিকে এগিয়ে আসতে থাকে। আমি বাঁচার জন্য পথ খুজতে থাকি। পাশে টেবিলে পানি ভর্তি জগ দেখতে পাই সেটাকে তার উপর ছুড়ে মারি। আকস্মিক হামলায় সে তাল সামলাতে না পেরে উপুড় হয়ে পড়ে যায় আর দুর্ভাগ্যবশত তার হাতের ছুড়িটা তার পেটের ভিতর ঢুকে পিছন থেকে বেরিয়ে আসে। কিছুক্ষণের মধ্যেই তার মৃত্যু হয়। আমি এই ঘটনায় আরও বেশি ভয় পেয়ে যাই। তাই বাসা ছেড়ে পালিয়ে আমার বন্ধু আকাশের বাসায় চলে আসি। কিছুক্ষণ দরজা ধাক্কানোর পর আকাশ এসে দরজা খুলল। দরজা খোলার সাথে সাথে আমি খুব দ্রুত ভিতরে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দেই। আমার এমন অবস্থা দেখে আকাশ জানতে চায় কি হয়েছে আমার। আমি আকাশকে সব খুলে বলি। সবশুনে আকাশ আজকে রাতটা আমাকে তার বাসায় থাকতে বলে। আমিও একটু শান্তির নিঃশ্বাস ফেলি। কিছুক্ষণ পর আকাশ আমাকে রাতের খাবার খাওয়ার জন্য ভিতরে আসতে বলে। অবশ্য এখন রাতের খাবার খাওয়ার সময় না কিন্তু এত দৌড়াদৌড়ি করে আমার খুব ক্ষুধা লেগেছিল তাই তার সাথে খাওয়ার জন্য খাবারের টেবিলে যাই। কিন্তু সেখানে যেয়ে আমি অবাক কারণ খাবার টেবিলের উপর আকাশের স্ত্রী শুয়ে আছেন আর তার পেট কেটে ফেলা হয়েছে সারা টেবিলে রক্তাক্ত। আকাশ এবার আমাকে উদ্দেশ্য করে বলল " নে খাওয়া শুরু কর, এই নে তোর ভাবির হাত খুব টেস্টি।" এই কথা বলে আমাকে একটা হাত কেটে দিল আর অন্য একটা হাত নিয়ে আকাশ খাওয়া শুরু করল। আমি এবারও দৌড়ে আকাশের বাসা থেকে বাইরে চলে এলাম৷ এবার ঠিক করলাম আর কারও বাসায় যাব না রাতটা রাস্তায় পার করব সকালে দেখা যাবে কি হয় আর পারছি না দৌড়াতে। রাস্তায় হাটতে থাকি একা একা। কিছুদুর হাটার পর একটা ট্রাফিক পুলিশ বক্সের ওখানে চোখ যায়। সেখানে একটা ডিজিটাল ঘড়ি আছে আর সেই ঘড়িতে এখন রাত ৩টা বাজে। তারমানে সময় এখনও পরিবর্তন হয় নাই। আমি বাসা থেকে যে সময় দেখে এসেছি সেই সময় এখনও চলছে। তাহলে কি আজকে এই রাত শেষ হবে না? রাস্তায় একপাশে বসে আছি আর এসব ভাবছি কি হয়ে গিয়েছে আজকে আমার সাথে, এই রাতের কথা আমি কোনোদিনও ভুলব না। এটা আমার কাছে একটা "অভিশপ্ত রাত" হিসাবে থাকবে।

আমার ভাবনার পতন ঘটে কারও ডাক শুনে। মাথা তুলে তাকিয়ে দেখি চারজন পুলিশ দাঁড়িয়ে আছেন। রাতের শহরে একা একা চলাফেরা করলে পুলিশ ধরতেই পারে এটা স্বাভাবিক বিষয়৷ কিন্তু আমাকে অবাক করে দিয়ে তারা বলল " মারুফ তামিম আপনার বাড়ির দারোয়ানকে খুনের অপরাধে আমরা আপনাকে গ্রেফতার করলাম, আমাদের সাথে আপনাকে থানায় যেতে হবে।" তাদের কথা শুনে আমি আকাশ থেকে পড়লাম এ কিভাবে সম্ভব দারোয়ান নিজেই নিজের ছুড়িতে আঘাত পেয়ে মারা গিয়েছে কিন্তু দোষী সাব্যস্ত হলাম আমি। তাদেরকে আমি বুঝানোর চেষ্টা করলাম কিন্তু তারা আমার কথা কিছু শুনতে চাইছে না। আমাকে জোর করে ধরে থানায় নিয়ে যাওয়া হল।

থানায় আসার পর......

আমাকে লকআপের ভিতর আটকে রাখা হয়েছে। বাইরে পুলিশেরা বসে বসে আড্ডা দিচ্ছে। আর এদিকে আমি বলে যাচ্ছি "আমি কিছু করি নাই আমি নির্দোষ।" কিন্তু তারা আমার কোনো কথা শুনছেন না। কিছুক্ষণ পর আমার লকআপের দরজা খোলা হয়। আমি ভেবেছি হয়ত আমাকে তারা ছেড়ে দিবে। কিন্তু না ৭-৮ জন পুলিশ আমার লোকআপের মধ্যে ঢুকে এরপর কিছু বুঝে উঠার আগেই তারা আমার উপর ঝাপিয়ে পড়েন। তারা একে একে আমাকে খেয়ে ফেলার চেষ্টা করছে। আমি বাঁচার চেষ্টা করছি কিন্তু কিছুই করতে পারছি না।

"কী হল আপনার এমন ছটফট করছেন কেন? এই যে শুনছেন কী হল আপনার, এমন করছেন কেন?"

কারও ডাকে আমার ঘুম ভেঙে যায়৷ পাশে তাকিয়ে দেখি আমার স্ত্রী সুমী বসে আছে। চারপাশে তাকিয়ে দেখলাম আমি আমার ঘরেই বিছানায় শুয়ে আছি। তারমানে আমি এতক্ষণ স্বপ্ন দেখছিলাম। সারা শরীর ঘেমে গিয়েছে আমার। এবার সুমী আমাকে জিজ্ঞাসা করল-

সুমী: কী স্বপ্ন দেখছিলেন?

আমি: হুম, খুব ভয়ের স্বপ্ন।

সুমী: ওহ আচ্ছা, এখন শুয়ে পড়েন সব ঠিক হয়ে যাবে।

আমি: হুম।

এরপর শুয়ে পড়লাম। কিন্তু হঠাৎ ঘড়িতে চোখ যায় আর সেখানে দেখি এখন রাত ৩টা বাজে। তখনই মনে পড়ে যায় স্বপ্নে দেখা সময়ের কথা। আমি সুমীকে ডাক দিয়ে বললাম-

আমি: সুমী বাইরে মনে হয় সকাল হতে চলল, কিন্তু ঘড়িতে এখনও ৩টা বাজে কেন?

সুমী: কই ৩টা বাজে এখন ৪টার বেশি বাজে আর ঐ ঘড়িটার ব্যাটারী শেষ হয়ে গিয়েছে। আপনাকে আনার জন্য বলেছিলাম ব্যাটারী, কিন্তু আপনি নিয়ে আসেন নাই আর এখন বলছেন রাত ৩টা বাজে কেন?

আমি: আচ্ছা, ঘুমাও আগামীকাল নিয়ে আসব।

এরপর দুজনেই ঘুমিয়ে পড়লাম।

সমাপ্ত......

(গল্পটি সম্পুর্ণ কাল্পনিক।ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন। গল্পটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।)

Copyright: Maruf Tamim (Author).
 

Users who are viewing this thread

Back
Top