What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

বিয়ের আগে বিয়ের ছবি (1 Viewer)

বিয়ের আগে হবু বর-কনে দূরে কোথাও কিংবা কাছেই কোনো পছন্দের জায়গায় ছবি তুলতে পারেন। সুন্দর ছবি যেমন হবে, তেমনি নতুন জীবন শুরু করতে যাওয়া দুজন মানুষের বোঝাপড়াও বাড়বে। প্রি-ওয়েডিং ছবির জন্য চাই প্রস্তুতি—পেশাদার আলোকচিত্রীর পরামর্শ...

8fpYlPc.jpg


নতুন জীবন শুরুর গল্প তুলে ধরা হয় প্রি-ওয়েডিং ফটোশুটে। নকশার এ আয়োজনে মডেল হয়েছেন সায়রা ও রেহান স্থান কৃতজ্ঞতা: গ্র্যান্ড সুলতান টি-রিসোর্ট অ্যান্ড গলফ, পোশাক: কিউরিয়াস ও ওটু, সাজ: অরা বিউটি লাউঞ্জ, ছবি: কবির হোসেন

7HY51ps.jpg


ব্যবহার করতে পারেন নানা রকম প্রপস

সূর্য ডোবার ক্ষণে দাঁড়িয়ে আছেন দুজন, হাতে হাত। নতুন জীবন শুরুর গল্প এঁকে নিচ্ছেন একে অপরের চোখে। পাহাড়ের চূড়ায় আলতো বাতাস এ সময় ছুঁয়ে দিয়ে জানিয়ে দিল প্রকৃতির সম্মতির কথাও। পাঁচ মিনিট এভাবেই দাঁড়িয়ে থাকতে হবে দুজনকে আলোকচিত্রীর ছবি তোলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত। এর আগে এক ঘণ্টা সময় লেগেছে সমতল থেকে পাহাড়ের এই উচ্চতায় উঠে আসতে। সারা দিনের কষ্ট সার্থক হবে, ছবি যদি হয় মনের মতো। বিয়ের আগে অনেক হবু দম্পতি ছবি তুলে মুহূর্তগুলোকে ধরে রাখছেন। কিছুটা সময় একান্তেও কেটে যায়। বিয়ের আগে ছবি তোলার এ আয়োজন 'প্রি-ওয়েডিং শুট' নামে পরিচিত। বাড়ি কিংবা চেনা শহর থেকে বেরিয়ে কিছুটা দূরে প্রকৃতিতে ডুব দিয়েও যেমন এই ছবি তোলা যায়, তেমনি স্টুডিওতে মহাসমারোহে ক্যামেরার সামনে দাঁড়ালেও হবে।

ভালোবাসার প্রকাশ বা নতুন জীবন শুরুর গল্পও তুলে ধরা যায় এসব ছবিতে। সময় থাকলে পছন্দের জায়গায় চলে যাওয়া যায়। না হলে সুবিধাজনক যেকোনো স্থানে। প্রাক্‌–বিয়ের ছবি তুলছেন এমন আলোকচিত্রীরা জানালেন, প্রত্যেক ব্যক্তিই আলাদা। দম্পতি হতে যাচ্ছেন যাঁরা, তাঁরাও আলাদা। অনেকে আগ্রহ নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা হেঁটে একটি সুন্দর জায়গায় যান। অনেকের মধ্যে আবার কিছুটা আড়ষ্টতা কাজ করে। চারপাশের সবকিছু ভুলে নিজেদের মধ্যে যখন হারিয়ে যান তাঁরা, ছবিতে চলে আসে প্রাণ।

r4z8N1m.jpg


প্রকৃতির মাঝে একান্তে কাটানো যায় কিছুটা সময়

শৈলী চাকমা-সমুজ্জ্বল দেওয়ান দম্পতি ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বিয়ে করেছেন। প্রি-ওয়েডিং শুট করেন বিয়ের দুদিন আগে। খাগড়াছড়িতে নিজের বাড়িতেই বিয়ের আয়োজন করা হয়েছিল। শৈলী চাকমা বললেন, 'নিজেদের পাশাপাশি খাগড়াছড়ির সৌন্দর্য তুলে ধরতে চেয়েছিলাম। আগে থেকেই এটি ভাবনায় ছিল। ঐতিহ্যবাহী পোশাকেই সেজেছিলেন দুজনে। এক দিনেই ছবি তোলার কাজ শেষ হয়। নিজেদের চাওয়া-পাওয়াগুলো আলোকচিত্রীকে বোঝানো প্রয়োজন। অনেকে চান শুধু নিজেদের সাজসজ্জার ছবি তুলতে। আমি চেয়েছিলাম, সেই দিনের বিশেষ মুহূর্তগুলোকে ছবিবন্দী করে রাখতে। মা আমাকে খাইয়ে দিচ্ছেন, বন্ধুরা আমাকে নিয়ে যাচ্ছে—৩০ বছর পর এই স্মৃতিগুলোই ভালো লাগবে। মনে না থাকলেও ছবি দেখে মনে পড়বে।'

আলোকচিত্রী অভিজিৎ নন্দী শখের বসেই ১০ বছর আগে বিয়ের আগে ছবি তোলা শুরু করেন। আগ্রহ বাড়ল যখন নিজের ভাই-ভাবিকে নিয়ে সেন্ট মার্টিন, বান্দরবানের মতো জায়গায় গিয়ে নিরীক্ষাধর্মী ছবি তুললেন। তাঁর প্রতিষ্ঠান চিত্রগল্পের প্রি-ওয়েডিং ছবিগুলো দেখলেই বোঝা যায়, প্রকৃতিতে হারিয়ে গিয়ে ছবি তোলার কাজটি করতে ভালোবাসেন, ঘুরতে পছন্দ করেন—এমন দম্পতিরাই মূলত অভিজিৎকে বেছে নেন। তিনি বলেন, 'আমার ছবি তোলার সঙ্গে ঘুরে বেড়ানো জড়িত। একটু অন্য রকম জায়গায় চলে যাই আমরা। সারা দিন একসঙ্গে কাটানো, টঙের দোকানে চা পান, শহরের বাইরে কারও বাড়িতে গিয়ে পোশাক বদলানো ইত্যাদি ছোটখাটো মুহূর্ত মিলিয়ে প্রাণবন্ত হয় ছবিগুলো।'

7LEPmUg.jpg


চারপাশের সবকিছু ভুলে নিজেদের মধ্যে যখন হারিয়ে যান তাঁরা, ছবিতে চলে আসে প্রাণ। পোশাক: ওটু ও কিউরিয়াস

বান্দরবানের দামতুয়া ঝরনার দুটি আলাদা শাখা ভিন্ন পথ দিয়ে এসে মিলিত হয় এক জায়গায়। এ ভাবনা নিজের জীবনের সঙ্গে মিলিয়ে ছবিতে তুলে ধরেন মাহফুজ হাসান খান ও জাহান সুলতানা দম্পতি। কেউ কাউকে চিনতেন না। দুজন আলাদা ভিন্ন মানুষ একসঙ্গে মিলিত হলেন। শুরু হলো নতুনভাবে নতুন জীবনের চলা।

বিয়ের তিন বছর আগে থেকেই মাহফুজ হাসান খানের প্রি-ওয়েডিং ছবি তোলার পরিকল্পনা ছিল। জাহান সুলতানার সঙ্গে পরিচয় হওয়ার পর স্মৃতি তৈরি করার ভাবনাটি তিনি জানান। দুজনেই যেহেতু ঘুরতে ভালোবাসেন, তাই শখ পূরণ করেছেন মনের মতো করেই।

সমস্যা ও সমাধান

দেয়ালে ফ্রেমবন্দী সুন্দর মুহূর্ত দেখলে বোঝার উপায় নেই যে এর পেছনে কী ধরনের কষ্ট আছে। কখনো একটি ছবি তোলার জন্য ছয় ঘণ্টা হাঁটতে হয়। আশপাশে মানুষের ভিড়েই ছবি তুলতে হয়। নামতে হয় কাদার মধ্যেও। ছবি তোলার আগে পুরো বিষয়টি নিয়ে আলোকচিত্রীর সঙ্গে কথা বলা দরকার বলে মনে করেন স্ন্যাপশটের প্রধান আলোকচিত্রী জাওয়াদ চৌধুরী।

  • সাধারণত কোনো মেকআপ আর্টিস্ট সঙ্গে থাকেন না ছবি তোলার সময়। নিজেরাই নিজেদের মেকআপ করে থাকেন। বাড়তি সময় লাগার পাশাপাশি মেকআপও অনেক সময় ভালো হয় না। সময় খুব গুরুত্বপূর্ণ এ ক্ষেত্রে। সূর্য ডুবে যায় নিজ সময়ে, কিন্তু ছবি তোলা যায় না। সময়ের বিষয়টিকে অনেকেই হালকাভাবে নেন।
  • জাওয়াদ চৌধুরী জানান, অনেকেই পরিবার থেকে বিয়ের আগে ছবি তোলার সম্মতি পান না। বিয়ের পর শুট করেন, কিন্তু তখন সেই আমেজ আর থাকে না। ছবি তোলার সময় স্বতঃস্ফূর্ততার বিষয়টি খুব গুরুত্বপূর্ণ। তবে বেশির ভাগ জায়গায় মানুষের ভিড় হয়। এতে দম্পতিরা স্বস্তিবোধ করেন না। পোজগুলোরও সাবলীল ভাব চলে যায়, আর ছবিতেও সেটা বোঝা যায়। কী ধরনের সাজপোশাক চাইছেন, সেটা নিয়ে আলোকচিত্রীর সঙ্গে কথা বলা প্রয়োজন। নিজের সঙ্গেও এটা নিয়ে মানসিক বোঝাপড়া দরকার। ব্যক্তিত্ব ও স্থান অনুযায়ী পোশাক বেছে নিতে হবে। কেউ হয়তো শাড়ি পরতে চাইবেন, কেউবা পাশ্চাত্য ধাঁচের পোশাক।
  • আবহাওয়া নিয়েও ভাবা দরকার। কেউ হয়তো বৃষ্টি চাইছেন, কেউ রোদ। সেভাবে চিন্তা করে সময় ও স্থান নির্বাচন করতে হবে। ভোর চারটা থেকে সকাল ছয়টার মধ্যে যদি ছবি তুলতে হয়, তাহলে তৈরি থাকতে হবে আগে থেকেই।
  • ঢাকায় থাকেন, কিন্তু ছবি তুলতে চাইছেন সমুদ্রতটে, তাঁদের এক দিন আগেই সেখানে চলে যাওয়া ভালো। বিশ্রাম নিয়ে ছবি তুললে চেহারায় ক্লান্তি ভাব থাকবে না।
  • যে ধরনের জায়গায় ছবি তুলতে চাইছেন, সে জায়গার সৌন্দর্য যদি কোনো ঋতুর সঙ্গে জড়িত থাকে, আগে থেকেই ভাবনায় রাখুন। শখের দাম লাখ টাকা। সেটা পূরণ করতে চাইলে অপেক্ষাও হয়তো করতে হবে।
  • যদি প্রকৃতির মধ্যে ছবি তুলতে চান, সাজে রাখুন সহজাত ভাব। জমকালো পোশাক ও সাজ অনেক ক্ষেত্রেই সমস্যা তৈরি করে।
  • শারীরিকভাবে শক্তি লাগবেই, মানসিকভাবেও সারা দিন ঘুরে ছবি তোলার আগ্রহ থাকতে হবে।
  • আগে থেকেই আলোকচিত্রীর সঙ্গে সরাসরি সব বিষয়ে কথা বলে রাখা প্রয়োজন।

TLtgsS9.jpg


লেখক: রয়া মুনতাসীর, ঢাকা
 

Users who are viewing this thread

Back
Top