What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

শিশুর দৃষ্টিত্রুটির চিকিৎসা (1 Viewer)

gAoLyIK.jpg


দুই চোখের মাধ্যমে কোনো বস্তু দেখার বিষয়টি কয়েকটি ধাপে সম্পন্ন হয়। প্রথমত আলোকরশ্মি চোখে আপতিত হয়ে রেটিনায় মিলিত হয়। দ্বিতীয় ধাপে রেটিনায় আপতিত আলোকরশ্মি একধরনের মিথস্ক্রিয়ার অবতারণা করে। এটিকে বলা হয় ফটোকেমিক্যাল রিঅ্যাকশন। ফটোকেমিক্যাল রিঅ্যাকশনের ফলে রেটিনার স্নায়ু বা ফটোরিসেপ্টর উজ্জীবিত হয় এবং একধরনের ইলেকট্রিক সিগন্যাল তৈরি হয়। এই সিগন্যাল অপ্টিক নার্ভ নামক স্নায়ুর মাধ্যমে মস্তিষ্কে পৌঁছায়। সর্বশেষ মস্তিষ্কে সেই সিগন্যালকে বিশ্লেষণ করে বস্তুর ইমেজ বা অবয়ব তৈরি করে।

চোখে আপতিত হওয়ার পর আলোকরশ্মি প্রথমে কর্নিয়ায় এবং পরে চোখের অভ্যন্তরে বিদ্যমান প্রাকৃতিক লেন্সে দিক পরিবর্তন করে রেটিনায় মিলিত হয়। স্বচ্ছ কোনো মাধ্যমের ভেতর দিয়ে অতিক্রম করার সময় আলোর এ দিক পরিবর্তনকে বলা হয় প্রতিসরণ বা রিফ্রেকশন। কর্নিয়া ও বিদ্যমান প্রাকৃতিক লেন্সের পৃষ্ঠতলের বক্রতা এবং ঘনত্ব (রিফ্রেক্টিভ ইনডেক্স) মূলত চোখের রিফ্রেকশনে মূল ভূমিকা পালন করে। দৃষ্টি সমস্যা বলতে রিফ্রেকশনে কোনো ধরনের ত্রুটিকে বোঝায়।

রিফ্রেকশনের ত্রুটির কারণে আলোকরশ্মি আপতিত হয়ে রেটিনার ওপরে মিলিত না হয়ে সামনে অথবা পেছনে মিলিত হয়। আপতিত আলোকরশ্মি রেটিনার সামনে মিলিত হলে তাকে মায়োপিয়া এবং পেছনে মিলিত হলে হাইপারমেট্রোপিয়া বলে। মায়োপিয়ায় মাইনাস পাওয়ারের লেন্স বা চশমা এবং হাইপারমেট্রোপিয়ায় প্লাস পাওয়ারের লেন্স বা চশমা ব্যবহার করতে হয়। এ ছাড়া একধরনের রিফ্রেকটিভ এরর বা ত্রুটি আছে, যেখানে কিছু মিলিত বিন্দু রেটিনার সামনে এবং কিছু মিলিত বিন্দু রেটিনার পেছনে থাকে। এ সমস্যাকে বলা হয় এস্টিগমাটিজম। এ ক্ষেত্রে সিলিনড্রিক্যাল লেন্স ব্যবহার করতে হয়।

পরিবারে কারও দৃষ্টিত্রুটি থাকলে কিংবা পরিবেশের প্রভাবে দৃষ্টিত্রুটি হতে পারে। টানা দীর্ঘ সময় ধরে কাছের কাজ করলে যেমন টানা দীর্ঘ সময় পড়াশোনা, ছবি আঁকা ইত্যাদি শিশুদের ক্ষেত্রে দৃষ্টি সমস্যার কারণ হতে পারে। সময়ের আগে শিশুর জন্ম হলে তার মায়োপিয়ার ঝুঁকি বেশি।
লক্ষণ

দৃষ্টিত্রুটির প্রধান লক্ষণ ঝাপসা দেখা। শিশুদের বেলায় স্কুলে বোর্ডের লেখা, টিভির স্ক্রলের লেখা বা স্কোর দেখা, রাস্তার পাশে সাইনবোর্ডে লেখা বা ছবি ঝাপসা দেখা, খুব কাছ থেকে টিভি দেখা; পড়তে পড়তে লেখা ঝাপসা হয়ে আসা, চোখব্যথা বা মাথাব্যথা কিংবা চোখ জ্বালাপোড়া ইত্যাদি লক্ষণ থেকে অনুমান করা হয়, শিশুর দৃষ্টিসমস্যা থাকতে পারে।

দৃষ্টি সমস্যা সন্দেহ হলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। দৃষ্টি সমস্যা থাকলে ছোট–বড় সবারই উচিত চশমা ব্যবহার করা। বিষয়টি শিশুদের বেলায় অধিকতর জরুরি। কারণ, শিশুদের দৃষ্টি সমস্যায় চশমা ব্যবহার না করলে অনেক সময় এমব্লায়োপিয়া বা স্থায়ী দৃষ্টি সমস্যা এবং ট্যারা চোখ বা স্কুইন্টের মতো দীর্ঘমেয়াদি জটিলতা দেখা দিতে পারে। ৬ থেকে ১২ মাস পরপর নিয়মিত দৃষ্টি পরীক্ষা করাতে হবে।

লেখক: ডা. মো. ছায়েদুল হক, সাবেক সহযোগী অধ্যাপক, জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল
 

Users who are viewing this thread

Back
Top