What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

ডাকসাইটে ৩ নারী উদ্যোক্তার গল্প (1 Viewer)

উদ্যোক্তা হওয়ার পথটা নারীদের জন্য বন্ধুর হলেও অনেকে নিজেদের একাগ্রতায় হয়েছেন সফল, অনুকরণীয়। ইতিহাসের সফল এমন নারী উদ্যোক্তাদের কথা জেনে নেওয়া যাক।

১. ম্যাডাম সি জে ওয়াকার

এই ম্যাডামের প্রকৃত নাম ছিল সারাহ ব্রিডলাভ। ১৮৬৭ সালের ডিসেম্বরে লুইজিয়ানায় তাঁর জন্ম। ৭ বছর বয়সে মা–বাবা—দুজনকেই হারিয়েছিলেন তিনি। ১৪ বছর বয়সেই তাঁর বিয়ে হয়ে গিয়েছিল। আর বিয়ের ছয় বছরের মাথায় হারান স্বামীকে। এর পরই শুরু হয় সারাহর সংগ্রামী জীবন।

YTfT0S2.jpg


ম্যাডাম সি জে ওয়াকার

প্রথমে কাপড় কাচা ও রান্নার কাজ নিয়েছিলেন সারাহ। ১৯০৪ সালে চুলের সুরক্ষাপণ্য তৈরির একটি প্রতিষ্ঠানে কাজ শুরু করেছিলেন তিনি। এরপর নিজেই নতুন এক ধরনের 'হেয়ার–গ্রোয়িং টনিক' উদ্ভাবন করেন তিনি। এরপর শুরু করেছিলেন সেই নতুন পণ্য বাজারজাতকরণের কাজ।

১৯০৬ সালে চার্লস জোসেফ ওয়াকারকে বিয়ের পর সারাহ নিজের নাম রাখেন ম্যাডাম সি জে ওয়াকার। কৃষ্ণাঙ্গ নারীদের চুলের যত্নে বিস্তৃত পরিসরে উৎপাদন করতে শুরু করেছিলেন হেয়ার টনিক। এটি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল এবং ম্যাডাম সি জে ওয়াকারকে অন্যতম ধনী ব্যক্তিতে পরিণত করেছিল।

ব্যবসা এতটাই ভালো চলছিল যে মৃত্যুর সময়ে ম্যাডাম সি জে ওয়াকারের বার্ষিক আয় ছিল প্রায় ৫ লাখ ডলার। তাঁর ব্যক্তিগত আর্থিক সম্পদ ছিল ১০ লাখ ডলারের মতো। ম্যাডাম সি জে ওয়াকার যেমন বিপুল পরিমাণ অর্থ রোজগার করেছিলেন, তেমনি দানও করতেন হাত খুলে। প্রায় ৪০ হাজার নর–নারীকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিয়ে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলার পেছনে ভূমিকা রেখেছিলেন ম্যাডাম সি জে ওয়াকার। এ ছাড়া কৃষ্ণাঙ্গ শিক্ষার্থীদের নিয়মিত আর্থিক সহায়তাও দিতেন তিনি।

২. মার্গারেট হারডাব্রুক

MWRvoEK.jpg


১৬৫৯ সালে নেদারল্যান্ডস থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে (তৎকালীন নিউ আমস্টারডাম) গিয়েছিলেন ২২ বছর বয়সী মার্গারেট হারডাব্রুক। কাজের ব্যাপারে তিনি উচ্চাকাঙ্ক্ষী ছিলেন। শুরুতে এক আত্মীয়ের হয়ে ঋণের কিস্তি তোলার কাজ নিয়েছিলেন মার্গারেট। তাঁর বিয়ে হয়েছিল স্থানীয় ধনী ব্যবসায়ী পিটার ডি ভ্রাইসের সঙ্গে। তবে ধনী পরিবারে বিয়ে হওয়ার পরও কাজ চালিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। বেশ কয়েকজন ডাচ ব্যবসায়ীর প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছিলেন তিনি। এ ছাড়া তিনি ভোজ্যতেলের মতো পণ্য স্থানীয়দের কাছে বিক্রি করতেন এবং নেদারল্যান্ডস থেকে আমদানি করতেন বিশেষ পশম।

পিটার ১৬৬১ সালে মারা যান। হারডাব্রুক এরপর পিটারের সম্পদের মালিক হয়েছিলেন এবং সেই ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করেন। নেদারল্যান্ডসে নিজের পশমের ব্যবসা বড় করে তুলেছিলেন মার্গারেট। ডাচ সমাজে সে সময় ব্যবসার পরিচালক হিসেবে নারীদের সহজভাবে নেওয়া হতো না। এ ক্ষেত্রে পুরুষদের যেভাবে দেখা হতো, নারীদের সেভাবে স্বাগত জানানো হতো না।

ফলে হারডাব্রুকের জন্য ব্যবসার কাজ চালানো বেশ কঠিন ছিল। তারপরও ওই সময় নিউইয়র্কের ডাচ নাগরিকদের মধ্যে ব্যবসায়ী হিসেবে সফল হয়েছিলেন মার্গারেট। তিনি অভিধা পেয়েছিলেন 'শি–মার্চেন্টস' হিসেবে।

একপর্যায়ে নিজে জাহাজও কিনে ফেলেন মার্গারেট। জাহাজটির নাম ছিল 'কিং চার্লস'। এ ছাড়া উপনিবেশ অঞ্চলের নানা স্থাবর সম্পদও কিনে ফেলেছিলেন মার্গারেট। দ্বিতীয় বিয়ে করলে তৎকালীন সময়ে নারীর নামে থাকা সম্পদ হাতছাড়া হওয়ার ভয় ছিল। তবে ফ্রেডেরিক ফিলিপসকে বিয়ের পরও আইনিভাবে নিজের সম্পত্তি নিজের হাতেই রাখার ব্যবস্থা করেছিলেন মার্গারেট। এর মধ্য দিয়ে ওই সময়কার পুরুষতান্ত্রিক ঐতিহ্য ভেঙেছিলেন তিনি। ১৬৯১ সালে যখন হারডাব্রুকের মৃত্যু হয়, তখন তিনি ছিলেন নিউইয়র্কের সবচেয়ে ধনী নারীদের একজন।

৩. এলিজাবেথ হবস কেকলে

qDWuhgo.jpg


এলিজাবেথ হবস কেকলে

ঊনবিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে জনপ্রিয় পোশাক নির্মাতা হিসেবে খ্যাতি ছিল এলিজাবেথ হবস কেকলের। দাস হিসেবে ১৮১৮ সালে ভার্জিনিয়ায় জন্ম হয়েছিল তাঁর। সেই দাস জীবনেই পোশাক সেলাইয়ের কাজ শিখেছিলেন এলিজাবেথ। তখন থেকেই পোশাক তৈরির কাজ শুরু করেছিলেন তিনি। তখন শ্বেতাঙ্গ ও মুক্ত কৃষ্ণাঙ্গ নারীদের জন্য পোশাক তৈরি করতেন এলিজাবেথ। তাঁদের কাছ থেকে পাওয়া মজুরির বেশির ভাগটাই চলে যেতে এলিজাবেথের মালিকের হাতে। বাকিটা জমাতে পারতেন তিনি। শেষে তাঁরই কিছু ক্রেতা তাঁকে ১২০০ ডলার ঋণ দেয় নিজের মুক্তি কেনার জন্য। স্বাধীনতা কিনে ছেলেকে নিয়ে ওয়াশিংটন ডিসিতে চলে গিয়েছিলেন এলিজাবেথ। সেখানেই নতুন করে পোশাক তৈরির উদ্যোগ নিয়েছিলেন তিনি।

এলিজাবেথের সবচেয়ে বিখ্যাত খদ্দের ছিলেন মেরি টড লিংকন। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকনের স্ত্রী এই মেরি। এলিজাবেথের তৈরি করা পোশাক পরেই লিংকনের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় অভিষেক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন মেরি। ওই সময় পোশাক নির্মাতা হিসেবে এলিজাবেথের সুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছিল মার্কিন মুলুকে। যদিও সেই সুসময় বেশি দিন থাকেনি। আত্মজীবনী লেখা নিয়ে একসময় প্রেসিডেন্টের পরিবারের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হয়েছিল এলিজাবেথের, তাঁর খ্যাতিতেও লেগেছিল কালির ছিটা।

তবে তত দিনে পোশাক নির্মাতা হিসেবে নিজের অবস্থান শক্ত করে ফেলেছিলেন এলিজাবেথ হবস কেকলে। ওহিওর উইলবারফোর্স ইউনিভার্সিটির গার্হস্থ্য বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন তিনি। এ ছাড়া ১৮৯৩ সালে শিকাগো ওয়ার্ল্ডস ফেয়ারে পোশাক প্রদর্শনীর আয়োজন করেছিলেন এলিজাবেথ। ১৯০৭ সালে তিনি মারা যান।

* তথ্যসূত্র: স্টিল মিউজিয়াম ডট ওআরজি, উইমেন হিস্ট্রি ব্লগ ডট কম, সিএনএন, র‌্যাডক্লিফ ডট হার্ভার্ড ডট এডু, মেন্টাল ফ্লস, স্লেট ডট কম, হিস্ট্রি ডট কম, গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস, স্যালন ডট কম ও ফোর্বস
 

Users who are viewing this thread

Back
Top