What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

ঘরবন্দী সময়ে প্রবীণদের যত্ন (1 Viewer)

33mabWU.jpg


করোনাভাইরাসের প্রকোপে 'নিউ নরমাল' সময়ে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সব হিসাবই যেন পাল্টে গেছে। কিছুই আর আগের মতো নেই। জীবনযাপন, সম্পর্ক, খাদ্যাভাস থেকে শুরু করে এই সময়ে সবকিছুতেই প্রয়োজন বাড়তি যত্নের। ঘরের বিভিন্ন বয়সী মানুষের সঙ্গে সঙ্গে ঘরের প্রবীণদের প্রতিও রাখতে হবে বাড়তি খেয়াল, নেওয়া চাই বাড়তি যত্ন। ষাটোর্ধ্ব এসব মানুষ পরিবারের কয়েক প্রজন্মের সঙ্গে একই ছাদের নিচে বসবাস করেন। তাঁদের চাওয়া-পাওয়া এবং জীবনযাপনও হয় অন্যদের চেয়ে আলাদা। ফলে একটু বাড়তি যত্ন তাঁরা দাবি করতেই পারেন। ঘরবন্দী সময়ে প্রবীণদের যত্ন নিচের বিষয়গুলো খেয়াল রাখা জরুরি।

তাঁদের প্রতি হতে হবে শ্রদ্ধাশীল

প্রবীণদের প্রতি সব সময়ই শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন করা জরুরি। তাঁদের দিয়ে আর কিছুই হবে না, এমন মনোভাব পোষণ করা অবশ্যই উচিত নয়। করোনাকালের 'নিউ নরমাল' বিষয়ে তাঁদের জানাতে হবে। নতুন ধারার এই জীবনযাপনের সঙ্গে তাঁদের অভ্যস্ত করে তোলা প্রয়োজন। বিরক্ত প্রকাশ না করে তাঁদের বিভিন্ন প্রশ্নের যথাযথ উত্তর দেওয়া উচিত। তাঁদের চিন্তা, ধারণা ও চাহিদার প্রতি সম্মান দেখালেই তাঁরা বরং নিজেকে মানিয়ে নিতে পারবেন দ্রুতই। তা যদি না হয়, তবে তাঁরা ভুগতে পারেন মানসিক চাপ ও বিষাদে, যা আপনার দৈনন্দিন সমস্যাগুলোকে বরং বাড়িয়ে তুলবে।

eZmlVOA.jpg


মানতে হবে নিয়ম

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রবীণদের মৃত্যুর হারই সবচেয়ে বেশি। ফলে কোভিড থেকে সুরক্ষা পেতে হলে সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাটা সবার জন্যই জরুরি। প্রবীণদের ক্ষেত্রে সেটা আরও বেশি জরুরি। বিনা প্রয়োজনে ঘরের বাইরে না যাওয়া, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, হাত ধোয়া, পরিচ্ছন্ন থাকা ইত্যাদি বিষয়ে প্রবীণদেরও অংশ নেওয়ার বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। তাঁদের এসব বিষয়ে সচেতন করে তোলাও জরুরি।

তাঁরা যেন বিচ্ছিন্ন না হয়ে যান

করোনা থেকে বেঁচে থাকতে গিয়ে হরেক রকম নিয়ম মানার বাধ্যবাধকতায় এসব মানুষ যেন বিচ্ছিন্ন না হয়ে যান, সে বিষয়ে খেয়াল রাখাও জরুরি। প্রবীণদের অফিস কিংবা ঘরের তেমন কাজ না থাকার কারণে তাঁরা সচরাচর বাইরে বের হতে, সমবয়সীদের সঙ্গে আড্ডা দিতে কিংবা সকালে হাঁটতে চান। করোনার সামাজিক দূরত্ব বিধির কারণে এর কিছুই এখন হয় না প্রায়। ফলে তাঁরা বিচ্ছিন্ন ও একাকী বোধ করতে পারেন। প্রবীণদের এ অবস্থা থেকে মুক্তি দিতে তাঁদের সময় দিন, তাঁদের সঙ্গে গল্প করুন। পাশাপাশি অডিও বা ভিডিও কলের মাধ্যমে তাঁদের বন্ধু ও দূরের আত্মীয়দের সঙ্গে কথা বলিয়ে দিন। অনলাইন ব্যবহারে তাঁদের অভ্যস্ত করে তুললে তাঁরা বরং একাকী বোধ করবেন না।

PiHuINv.jpg


প্রবীণদের স্বাস্থ্যের প্রতি হতে হবে যত্নশীল

এই বয়সের মানুষের বাড়তি যত্ন, খাবার, পুষ্টি, বিশ্রাম ও ব্যায়ামের বিষয়টি মাথায় রাখতে হয়। ফলে ঘরবন্দী সময়ে প্রবীণদের স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নশীল হওয়া খুবই জরুরি। ঘরের বিভিন্ন কাজ ও ব্যস্ততার ফাঁকে তাঁদের দৈনন্দিন পুষ্টির বিষয়টি যেন ভুলে না যাই। তাঁদের জন্য পর্যাপ্ত খাবার, শাকসবজি বা ফল যেন বাসায় থাকে। তাঁদের প্রতিদিনকার বিশ্রাম এবং ঘুমে যেন ব্যাঘাত না ঘটে, এ বিষয়ও মাথায় রাখা প্রয়োজন। ঘর থেকে বাইরে বেরুতে মানা, ফলে তাঁদের প্রতিদিনকার ব্যায়াম বা শারীরিক পরিশ্রমও হয় না। বাসায় বসেই যেন তাঁরা বিভিন্ন সহজ ব্যায়াম করতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে হবে। তাঁদের যোগব্যায়াম কিংবা মেডিটেশনেও অভ্যস্ত করে তুলতে পারেন।

চিকিৎসার ব্যাপারে খেয়াল রাখুন

করোনার কারণে হরহামেশাই লকডাউন হয়ে যায় সব। যোগাযোগ চলাচল সবই যখন বন্ধ, তখন তাঁদের নিয়মিত চিকিৎসার বিষয়ে বাড়তি খেয়াল রাখা উচিত। এখন অনলাইনেই ডাক্তাররা রোগী দেখে থাকেন, ফলে টেলিমেডিসিনের মতো নতুন বিষয়ের সঙ্গে নিজেদের এবং তাঁদের সবারই অভ্যস্ত হয়ে উঠতে হবে। নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে হবে ডাক্তারের সঙ্গে। পাশাপাশি প্রবীণদের অনেকেই নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগে থাকেন, তাই ওষুধ তাঁদের জীবনের একটি অংশ হয়ে যায়। এই সময়ে তাঁদের ওষুধের যেন সংকট তৈরি না হয়, সে জন্য অন্তত এক মাসের জন্য বাড়তি ওষুধ কিনে রাখা প্রয়োজন।

MsWoqCK.jpg


বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করুন তাঁদের

ঘরে বসে থাকতে থাকতে প্রবীণদের যেন একঘেয়েমিতে পেয়ে না বসে, সে জন্য তাঁদের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করুন। তাঁরা যদি আগ্রহী হন, তবে তাঁদের ঘরের বিভিন্ন সহজ কাজ, যেমন ঘরের গাছে পানি দেওয়া, ছবির অ্যালবাম সাজিয়ে রাখা, তাঁদের জিনিসপত্র গোছানো, বুকশেলফ পরিষ্কার করা বা গুছিয়ে রাখা ইত্যাদির সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে পারেন। পাশাপাশি পরিশ্রম করতে হয় না, এমন বিভিন্ন মজার ইনডোর খেলা, যেমন ক্যারম, দাবা, লুডু বা কার্ড খেলায় ঘরের অন্যদের সঙ্গে তাঁদেরও যুক্ত করতে পারেন। এ ছাড়া তাঁদের নিজস্ব কোনো শখ বা আগ্রহের বিষয়েও আগ্রহী করে তুলতে পারেন। এসবের মাধ্যমে তাঁদের সময় যেমন কাটবে আনন্দে, তেমনি ঘরে থাকার একঘেয়েমি থেকেও তাঁরা মুক্তি পাবেন।

XJn8qXS.jpg


ইতিবাচক থাকুন

সবশেষে বলি, ইতিবাচক থাকুন। কঠিন সময় আসবে। সেই বন্ধুর সময় চলেও যাবে। নানান কাজ, ব্যস্ততা ও ঝামেলার মধ্যে থাকলেও প্রবীণদের বিষয়ে ইতিবাচক মানসিকতার প্রকাশ করুন। ধৈর্য ধারণ করে, নিজের মতো উপায় বের করে ঘরে ও পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি করুন। এমন কিছু করবেন না বা বলবেন না, যাতে পরিবারের প্রবীণতম সদস্যরা মনে ব্যথা পান। বরং তাঁদের বিশাল অভিজ্ঞতার ঝুলি থেকে বুদ্ধি নিয়েই দমবন্ধ এই সময়গুলো পার করুন না।

* মো. আবদুল্যা আল মামুন
 

Users who are viewing this thread

Back
Top