চক্রব্যূহে শ্রীতমা - Bumba_1
গত পরশু নতুন অফিসের অ্যাপোয়েন্টমেন্ট লেটার আসার পর থেকেই এই চাকরিটা গ্রহণ করবে কিনা এটা ভেবে কিছুটা দোনামোনায় ভুগছিলো অরুণ।
তপনবাবু (অরুণের পিতৃদেব) ওকে আশ্বস্ত করে বলেছিলেন "জীবনে এরকম সুযোগ বারবার আসেনা, you have to take the chance" .. এর সঙ্গে অরুণের মা সরলা দেবী এবং তার পুরনো অফিসের সহকর্মীরাও তাকে এই সুযোগটা নিতে বলায় আর দ্বিমত করেননি অরুণ।
অরুণ রায় ... বছর চল্লিশের একজন সাধারণ মাঝবয়সী পুরুষ। 'সাধারণ' কথাটা এজন্যই ব্যবহার করলাম কারণ, অরুণবাবুর চেহারার মধ্যে আলাদা কোনো বিশেষত্ব নেই যা দিয়ে ওকে অন্যের থেকে আলাদা করা যায়। ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি উচ্চতার কিছুটা শীর্ণকায় একজন মানুষ। বংশ-পরম্পরায় মাথায় টাক পড়ে যাওয়ার প্রবণতা থাকার জন্যই হয়তো এই বয়সে মাথার পেছনদিকে মাত্র কয়েকগাছা চুল বিদ্যমান। মধ্যবিত্ত পরিবারের একজন ছেলে। অরুণের বাবা তপনবাবু প্রাইমারি স্কুলের একজন শিক্ষক ছিলেন। বছর দশেক আগে অবসর গ্রহণ করেছেন। চেহারার মতন পড়াশোনাতে কিন্তু সাধারণ ছিলনা অরুণ। উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পর প্রবেশিকা পরীক্ষায় বসে 'জুট টেকনোলজিতে' তে চান্স পায় অরুণ। তারপর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জুট টেকনোলজিতে স্নাতক হয়ে বেরোনোর পর বাড়ির কাছেই 'হেস্টিংস জুট ওয়ার্কস' এ ওভারশিয়ার পদে চাকুরী গ্রহণ করে। কিন্তু জীবনে বিশেষ করে চাকরির ক্ষেত্রে উচ্চাকাঙ্ক্ষা না থাকার জন্য এখনো পর্যন্ত কর্মজীবন খুব একটা সুখকর হয়নি অরুণবাবুর। কর্মজীবনের বিগত ১২ বছরের মধ্যে মাত্র একবারই পদোন্নতি হয়ে সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট পদে উঠতে পেরেছে অরুণবাবু। বেতনও যে খুব একটা বেড়েছে তাও নয়। সামান্য কিছু পেনশন সম্বল করে পিতৃদেবের অবসর গ্রহণের পর পুরো সংসারের দায়িত্ব তাই অরুণবাবুর কাঁধে এসে পড়ে। তখনো দুই বোনের বিয়ে হয়নি। এত কিছুর মধ্যে নিজের দিকে খুব একটা তাকানোর সময় পায়নি অরুণ। একটা সময় ভেবেছিল বিয়ে-থা আর করবে না, এই ভাবেই কাটিয়ে দেবে বাকিটা জীবন। তারপর দুই অবিবাহিতা বোনের বিয়ে দেওয়ার পর অবশেষে কিছুটা বেশী (৩৮) বয়সেই বিয়েটা হয়েই গেলো অরুণবাবুর। আসলে জন্ম-মৃত্যু-বিবাহ এগুলোতো আমাদের কারোর হাতে থাকে না, উপর থেকেই ঠিক হয়ে আসে। উনার শ্বশুরবাড়ির কোনো দূর সম্পর্কের আত্মীয়ার সঙ্গে সম্বন্ধটা করেছিল অরুণবাবুর এক মাসি।
যাইহোক, আবার বর্তমানে ফিরে আসি। বাড়ির খুব কাছে অফিস বলে এত বছর যাহোক করে তাও চালিয়ে নিচ্ছিলো, কিন্তু বিয়ের পর থেকে এত কম বেতনে সংসার চালানো কষ্টকর হয়ে উঠছিল। তাই কিছুদিন আগে রুপনারায়নপুরের কাছাকাছি সুন্দরনগর এলাকায় একটি চটকলে (জুট ওয়ার্কস) চাকরির জন্য আবেদন করে অরুণবাবু। সেখান থেকেই গত পরশু অ্যাপোয়েন্টমেন্ট লেটার এসেছে। এই নতুন চাকরিতে দায়িত্বও যেমন অনেক বেশি ঠিক তেমনি স্যালারি আগের অফিসের থেকে প্রায় দ্বিগুণ। এখানে 'কোয়ালিটি কন্ট্রোলের' ইনচার্জের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে অরুণবাবুকে। প্রথমে অরুণ একাই যেতে চেয়েছিল ওখানে, সপ্তাহান্তে বাড়িতে আসার কথা ভাবা হয়েছিল। পরে সবাই মিলে ঠিক করা হয় সপরিবারে নতুন চাকরি ক্ষেত্রে যাওয়াটাই বাঞ্ছনীয় হবে। সবাই নতুন চাকরির জন্য উৎসাহিত করলেও অরুণের মনটা খচখচ করছিলো শ্রীতমার জন্য। যদিও ফোনে এর মধ্যে অনেকবার কথা হয়েছে দুজনের মধ্যে নতুন চাকরির ব্যাপারে কিন্তু সামনা সামনি এই ব্যাপারে কথা বলতে পারলে আরো ভালো হতো। গত সপ্তাহে ওদের একমাত্র ছেলে বুকানের অন্নপ্রাশন হলো। বেচারি দু'দিন হলো একটু বিশ্রামের জন্য বাপের বাড়ি গিয়েছে এর মধ্যে আবার যাওয়ার জন্য তোড়জোড় শুরু করে দিতে হবে।
শ্রীতমা রায়। ডাকনাম মউ ... এই গল্পের নায়িকা এবং অরুণের স্ত্রী। বিয়ের আগে পদবী 'ব্যানার্জি' ছিলো। শ্রীরামপুর কলেজে ইতিহাস অনার্স নিয়ে পড়াশোনা করেছে। সঙ্গে গান এবং নাচ দুটোরই চর্চা ভালোমতো ছিলো একসময়। পরবর্তীকালে নাচ ছেড়ে দিলেও গানের চর্চা এখনো কিঞ্চিৎ আছে। মুখশ্রী ডানা কাটা পরীদের মতো না হলেও ব্রাউন কালারের মণিযুক্ত গভীর চোখ দুটির দিকে তাকিয়ে থাকলে চোখ ফিরিয়ে নেওয়া দুঃসাধ্য ব্যাপার। ঈষৎ বোঁচা নাক এবং পুরু ঠোঁট সমগ্র মুখমন্ডলের মধ্যে কোথাও যেনো একটি আদুরে অথচ কামুকী ভাবের সৃষ্টি করেছে। হাসলে গালে পড়া দুটো টোল শ্রীতমার মুখের ইউএসপি বলা চলে। উচ্চতা আনুমানিক ৫ ফুট ৪ ইঞ্চির মতো হবে, প্রায় অরুণবাবুর উচ্চতার কাছাকাছি। গায়ের রঙ দুধে আলতা না হলেও ফর্সার দিকেই বলা চলে। বারগেন্ডি কালারের চুল কাঁধের নিচ পর্যন্ত সুন্দর করে ছাঁটা। মউ ওরফে শ্রীতমা শরীরের সবথেকে উত্তেজক অঙ্গগুলির মধ্যে একটি হলো ওর ভরাট স্তনজোড়া .. মনে হয় যেনো দুটো বড় সাইজের বাতাবী লেবু কেটে এনে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। ঈষৎ চর্বিযুক্ত তলপেটের মাঝখানে গভীর নাভির চেরার দিকে একবার চোখ চলে গেলে ফিরিয়ে নেওয়া যায় না সহজে। যদিও শ্রীতমা নাভির নিচে শাড়ি পড়েনি এখনো পর্যন্ত। কলাগাছের কান্ডের মত দুটো সুগঠিত থাই আর নিতম্বজোড়া যেনো উল্টানো কলসি। নাচ ছেড়ে দেওয়ার পর কিছুটা মাংস লেগেছে কোমরের নিচে। শ্রীরামপুরের একটি অভিজাত পাড়ায় পৈত্রিক ভিটে। বাবা গত হয়েছে বেশ কয়েক বছর আগে। তার বছর পঞ্চান্নের মা দেবযানি দেবী উনার ছেলে-বৌমাকে নিয়ে ওখানেই থাকেন। বিয়ের পর মেয়ে শ্রীতমা মাঝে মাঝে বাপের বাড়িতে গিয়ে থাকে মায়ের কাছে.. এখন যেরকম আছে ওর ৬ মাসের শিশুপুত্র বুকানকে নিয়ে। তবে, আজ রাতে শ্রীতমার শ্বশুর বাড়ি ফিরে আসার কথা। কাল ভোরবেলা রওনা হবে ওরা সুন্দরনগরের উদ্দেশ্যে।
(ক্রমশ)
ভালো লাগলে লাইক, রেপু এবং কমেন্ট দিয়ে উৎসাহিত করবেন এটুকুই আশা।