রাগ মানুষের অন্যতম নেতিবাচক অনুভূতি। এর রয়েছে নানা ধরনের প্রকাশভঙ্গি। মানুষের মধ্যে মতপার্থক্য, তর্ক, দ্বন্দ্ব, মান-অভিমান ইত্যাদি থেকে রাগের উদ্রেগ হয়। এগুলোর কোনোটাই অস্বাভাবিক নয়। তবে সমস্যা হচ্ছে, কীভাবে তা প্রকাশ করা হয়।
খেয়াল করলে দেখা যাবে, সব ক্ষেত্রেই একজন রাগের সময়ে কী বলে, তার চেয়ে কীভাবে বলে, সেটা বেশি গুরুত্ব পায়। তাই প্রতিদিনের জীবনে ছোট ছোট দ্বন্দ্ব ও ঝগড়ার প্রকাশ কীভাবে হচ্ছে, সেদিকে খেয়াল রাখা উচিত। আরও একটি বিষয় মনে রাখতে হবে, রাগ বা অভিমান তার ওপরই করা যায়, যার ওপর অধিকার বোধ রয়েছে।
রাগ সব সময়ই সম্পর্ককে ঘোলাটে মেঘে ঢেকে দেয়। তা সে স্বামী-স্ত্রীর পার্টনারশিপের ক্ষেত্রেই হোক অথবা লিভ ইন পার্টনার বা প্রেমিক-প্রেমিকা। এতে দূরত্ব, ভুল–বোঝাবুঝি তৈরিও হয়। কিন্তু আবার এই রাগ, মান–অভিমান, মতপার্থক্য এগুলো বাদ দিয়েও সম্পর্ক হয় না। তাই সমস্যা বুঝে তা মানিয়ে নিয়ে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে হবে।
স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে রাগ, ঝগড়া, মান–অভিমান—এগুলো অনেক ক্ষেত্রে খুবই সাধারণ ঘটনা যদি পরিস্থিতি দুজনের নিয়ন্ত্রণে থাকে। আর যদি তা নিয়ন্ত্রণে না থাকে, তাহলে পরিস্থিতি কঠিন হতে থাকে।
দাম্পত্য যেহেতু একটি সুদীর্ঘ পথ, তাই এতে বিবাদ, কলহ বা মতপার্থক্য থাকবেই। সুতরাং মতপার্থক্য বা মতভেদের কারণে প্রতিদিনের জীবনযাত্রায় যেন দ্বন্দ্ব তৈরি না হয় বা রাগের উদ্রেগ না হয়, তা খেয়ালে রাখতে হবে। স্বামী-স্ত্রী একছাদের নিচে বসবাস করলেও দুজন ভিন্ন মানুষ। দুটি ভিন্ন পরিবেশ, সংস্কৃতি, শিক্ষা, মূল্যবোধে বেড়ে ওঠা দুজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ। তাই তাঁদের মধ্যে স্বাধীন মতামত গড়ে ওঠে বিয়ের আগেই।
তাই তাঁরা যখন বিয়ের পরে একসঙ্গে থাকতে শুরু করেন, তখন মতপার্থক্যগুলো ক্রমে প্রকট হতে থাকে। এটি খুবই স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। কিন্তু এর কারণে যদি সব সময়ই রাগ, ঝগড়া লেগেই থাকে, তবে তা সম্পর্কের অবনতি ঘটাবে। আবার কখনো কখনো দুজনের বোঝাপড়ার মধ্যে যদি পরিবারের অন্য কেউ তার নিজস্ব মতামত নিয়ে হাজির হন। তখন সমস্যা আরও বাড়ে। এ ক্ষেত্রেও সাবধান হওয়া উচিত। কারণ, এতে রাগ ভিন্ন দিকে প্রবাহিত হতে পারে।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে রাগ মোকাবিলায় ভুল হাতিয়ারই বেছে নেয় মানুষ। তাই কিছু বিষয় এড়িয়ে চলুন বা মানিয়ে চলুন। মনে রাখবেন, ঘরের মানুষের সঙ্গে সব সময় লড়াই করলে সম্পর্ক আর বাঁচানো যায় না। রাগকে বশে রাখা উচিত। অনেকে রাগ প্রকাশ করেন কিন্তু কী জন্য রাগ বা ঝগড়া হচ্ছে, সে সমস্যার মুখোমুখি হতে চান না। আবার অনেকে সমস্যার সমাধান না করে শুধু শুধু রাগ দেখিয়ে যান। এতে সমস্যার সমাধান হয় না, উল্টো দিকের মানুষটাও ভুল বোঝেন।