What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

রাজত্ব করতে ফিরেছে স্ক্রাঞ্চি (1 Viewer)

কয়েক বছর ধরে শুধু অ্যাকসেসরিজ নয়, সমগ্র ফ্যাশনের সবচেয়ে বড় ট্রেন্ড স্ক্রাঞ্চি। সাময়িক বিরতি দিয়ে অ্যাকসেসরিজ ট্রেন্ডে ফিরে এসেছে স্ক্রাঞ্চি, অন্য সব সময়ের চেয়ে আরও বেশি জনপ্রিয়তা নিয়ে।

TDvLMTI.png


সাধারণত ফ্যাশনে একটি ট্রেন্ডের পুনরাবৃত্তি ঘটতে দুই দশকের মতো সময় লাগে। কিন্তু এটি মাত্র এক যুগের ব্যবধানে ফিরে এল। পিন্টারেস্টের একটি প্রতিবেদনে সম্প্রতি বলা হয়েছে, ২০২০ সালে সব ট্রেন্ডের ভেতর শীর্ষ স্থানে এখন স্ক্রাঞ্চি। এই ট্রেন্ডসেটার ওয়েবসাইটের খোঁজ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৩০৯ শতাংশে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে #স্ক্রাঞ্চিআরব্যাক নিয়ে প্রায় পঁচাত্তর হাজারের বেশি পোস্ট আপলোড হয়েছে। হালের টিন ফ্যাশন ম্যানিয়াক ভিস্কো গার্লের পাশাপাশি এটি এখন হেইলি বিবার, বেলা হাদিদ, কাইলি জেনার, সেলেনা গোমেজের মতো সেলিব্রিটিদের সবচেয়ে পছন্দের হেয়ার অ্যাকসেসরিজ। যতই দিন যাচ্ছে, এর জনপ্রিয়তা কেবল বেড়েই চলেছে। অতিমারির এই সময়ে কোয়ারেন্টিন হেয়ারস্টাইল ট্রেন্ডও স্ক্রাঞ্চির দখলে।

BGs029s.png


ছবি: ইনস্টাগ্রাম

স্ক্রাঞ্চির আবির্ভাব ঘটে আশির দশকে। ১৯৮৬ সালে। স্রষ্টা রমি রেভসন। আমেরিকান নাইট ক্লাবের শিল্পী এবং পিয়ানিস্ট রেভসন প্লাস্টিক ও ধাতব হেয়ার ব্যান্ডের বিকল্প খুঁজছিলেন। এমন এক ব্যান্ড, চুলের কোনো ক্ষতি করবে না। কিন্তু সেই সময় কোথাও এ ধরনের হেয়ার ব্যান্ড পাওয়া যেত না। উপায় না দেখে নিজেই নেমে গেলেন কিছু একটা করতে। নিজের প্যান্টের কোমরের ইলাস্টিক দিয়ে বানিয়ে ফেলেন এক নতুন ধরনের হেয়ার ব্যান্ড। একটি ইলাস্টিককে কাপড় দিয়ে মুড়ে বানানো হয় ব্যান্ডটি। নিজের পোষা পুডল কুকুরের নামে ব্যান্ডটির নাম রাখেন 'স্কুঞ্চি'। তবে নামটি খুব তাড়াতাড়ি পরিবর্তিত হয়ে দাঁড়ায় 'স্ক্রাঞ্চি'। কারণ, এই ব্যান্ডের ইলাস্টিকের পাশে কাপড় 'স্ক্রাঞ্চড আপ' অর্থাৎ কুঁচকে থাকে। ১৯৮৭ সালে নিজের নামে স্ক্রাঞ্চি পেটেন্ট করার পর আস্তে আস্তে এর পরিচিতি বাড়তে থাকে। মজার ব্যাপার হলো, রেভসনের বানানো প্রথম প্রোটোটাইপ স্ক্রাঞ্চি আর সেটি বানাতে যে সেলাই মেশিন ব্যবহার করা হয়, সেগুলো বর্তমানে স্মিথসোনিয়ান মিউজিয়ামে সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে। এ থেকেই এই অ্যাকসেসরিজের ঐতিহাসিক গুরুত্ব সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।

আশি ও নব্বইয়ের দশকে চুলের প্রতি 'কোমল আচরণের' জন্য এর জনপ্রিয়তা ক্রমেই বাড়তে থাকে। সেই সময়ের বিখ্যাত সব সেলিব্রিটি যেমন ম্যাডোনা, পলা আবদুল, ডেমি মুর, জ্যানেট জ্যাকসনদের 'গো টু' হেয়ার অ্যাকসেসরিজ ছিল স্ক্রাঞ্চি। 'ফুল হাউস', 'ফ্রেন্ডস'-এর মতো সিটকম, 'হেদার'-এর মতো আরও অনেক 'কামিং অব এজ' মুভি থেকে শুরু করে সবখানে ছিল স্ক্রাঞ্চির ছড়াছড়ি।

VTWgatX.png


ছবি: ইনস্টাগ্রাম

এমনকি অলিম্পিকের ময়দানে অ্যাথলেটদের, বিশেষ করে জিমন্যাস্ট ও ফিগার স্কেটারদের পছন্দের একমাত্র হেয়ার অ্যাকসেসরিজ এই স্ক্রাঞ্চি। তবে 'ওয়াই টু কে'র (ইয়ার অব টুথাউজেন্ড) মাঝামাঝিতে এসে এর জনপ্রিয়তা কমে আসে। এর জন্য অবশ্য দায়ী ক্যারি ব্র্যাডশ! 'সেক্স অ্যান্ড দ্য সিটি'র প্রধান চরিত্র ক্যারি ব্র্যাডশ একটি এপিসোডে স্ক্রাঞ্চি নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেন। এই মন্তব্যের জন্যই ফ্যাশন থেকে হারিয়ে যায় রেভসনের স্ক্রাঞ্চি।

ফ্যাশন সমালোচকদের মতে, এই জনপ্রিয়তার রহস্য এর কোমল স্বভাব এবং নানা রকম স্টাইলিংয়ের সুযোগ। প্লাস্টিক রাবার ব্যান্ড চুল ড্যামেজের জন্য দায়ী। কিন্তু স্ক্রাঞ্চিতে চুলের কোনো ক্ষতি হয় না। এ জন্য অনেক হেয়ার এক্সপার্ট স্ক্রাঞ্চি দিয়ে চুল বেঁধে ঘুমানোর পরামর্শ দেন।

সাধারণ একটি সাজকে অনায়াসে স্পাইস আপ করতে পারে এটি। মিক্স বা ম্যাচ—যেকোনোভাবেই স্ক্রাঞ্চি পরা যেতে পারে যেকোনো পোশাকের সঙ্গে। ওয়েস্টার্ন টু এথনিক সব ধরনের লুকের সঙ্গে সহজেই মানিয়ে যায়। শুধু স্ক্রাঞ্চি পরেও অনেকগুলো লুক তৈরি করা যায়। স্লিক হাই পনিটেইল, লো পনিটেইল, হাফ বান, সাইড পনিটেইল মেসি বান, স্পেস বান সব রকমের হেয়ার স্টাইল করা যাবে স্ক্রাঞ্চি দিয়ে। পোশাকের পাশাপাশি জুতা, বেল্ট, ব্যাগ, এমনকি লিপস্টিকের সঙ্গেও ম্যাচিং করে পরা যেতে পারে। এখন অবশ্য মাস্কের সঙ্গেও ম্যাচ করে অনেকে স্ক্রাঞ্চি পরছেন। কোয়ার্কি লুক আনতে চাইলে ম্যাচিং না করে যেকোনো রং এবং ডিজাইনের স্ক্রাঞ্চি বেছে নিতে পারেন।

TtZylcN.png


ছবি: ইনস্টাগ্রাম

কয়েক বছর আগে ভেলভেট ফেব্রিকের কালো, সাদা, বেগুনি এবং লাল রঙের মতো ক্ল্যাসিক রঙের স্ক্রাঞ্চি দিয়ে এই ট্রেন্ডের পুনরাবির্ভাব ঘটে। এখন প্যাটার্ন এবং ফেব্রিক দুইয়ের বেশ পরিবর্তন হয়েছে। নামজাদা সব ফ্যাশন ব্র্যান্ডও এখন নানা ধরনের স্ক্রাঞ্চি বানাচ্ছে। প্যাটার্নে এসেছে ফ্যাশনেবল ফ্লোরাল, ফ্রুট এবং অ্যানিমেল প্রিন্ট। বাদ যাচ্ছে না চেক ও পলকা ডট। একরঙা ডিপ কালার শেড যেমন আছে, তেমনি পাওয়া যাচ্ছে লাইট কালার শেডেও। কটন, সিল্ক, সাটিন, অরগাঞ্জা, জর্জেট, জ্যাকারড, চারমিউস, সফট লেদারের স্ক্রাঞ্চি পাওয়া যাচ্ছে। সাধারণ স্ক্রাঞ্চির পাশাপাশি শর্ট বো এবং লং বো স্টাইলের জয়জয়কার এখন সবখানেই। টুইগি এবং জাম্বো সাইজ স্ক্রাঞ্চির ব্যবহারও বেশ লক্ষণীয়।

স্ক্রাঞ্চি শুধু হেয়ার অ্যাকসেসরিজ নয়, হ্যান্ড ব্রেসলেট হিসেবেও বেশ নাম করেছে। ২০১৯ সালের অস্কার অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানের রেড কার্পেটে 'অ্যাকুয়াম্যান'-এর জেসন মোমোয়া তাঁর ফেন্দি কোর্টের সঙ্গে ম্যাচ করে হাতে একটি টুইগি স্ক্রাঞ্চি পরেছিলেন। এরপর থেকে লম্বা চুলের ছেলেরাও মজেছে স্ক্রাঞ্চির মায়ায়। এ থেকে বোঝা যায় স্ক্রাঞ্চি ফিরেছে রাজত্ব করতে, হারিয়ে যেতে নয়।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top