শুরুতে দিনে ১০ মিনিট হাঁটুন। দু-তিন দিন পর সময় বৃদ্ধি করুন। এভাবে ১৫-২০-২৫ মিনিট থেকে আধা ঘণ্টায় উন্নীত করুন।
লকডাউন, রমজান ও পরে ঈদের ছুটি। সব মিলিয়ে দীর্ঘ সময় শরীরচর্চা থেকে নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছেন অনেকে। ফলে ওজন বাড়তে পারে। বাড়তে পারে রক্তে চর্বি বা চিনির মাত্রাও। হৃদ্রোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, স্থূলতা, আর্থ্রাইটিস থেকে বাঁচতে শরীরচর্চার কোনো বিকল্প নেই। করোনা সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতেও চাই ফিটনেস। তাই দেরি না করে শুরু করা উচিত শরীরচর্চা।
দীর্ঘ বিরতির পর শরীরচর্চা শুরু করলে আগের মতো শরীর সাড়া দেবে না। এমনকি মাত্র এক সপ্তাহ শরীরচর্চা থেকে বিরত থাকলে মাংসপেশির শক্তি হ্রাস পায়। সে কারণে আগে পাঁচ কিলোমিটার জগিং করতে পারলেও লম্বা বিরতির পর শরীরচর্চা শুরুর প্রথম দিনেই বিপত্তি দেখা দিতে পারে। মাংসপেশিতে ব্যথা ও ইনজুরি হতে পারে, হৃৎপিণ্ডও হঠাৎ তাল মেলাতে পারবে না।
দীর্ঘ বিরতির পর শরীরচর্চা করতে গেলে ক্ষেত্রবিশেষে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। বিশেষত হৃৎপিণ্ডের কর্মক্ষমতা কেমন, রক্তের প্যানেল ঠিক আছে কি না, সেটাও জেনে নেওয়া দরকার। অনেক সময় ভাইরাস আক্রমণের পর হৃদ্পেশিতে প্রদাহ সৃষ্টি হয়। এই অবস্থায় ভারী শরীরচর্চায় মৃত্যুও হতে পারে। সুতরাং সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর কিছুদিন বিশ্রাম নিয়ে শরীরচর্চা শুরু করুন।
কারও যদি আনস্ট্যাবল এনজিনার মতো হৃদ্রোগ থাকে, তাহলে শরীরচর্চা বিশাল ঝুঁকির কারণ হতে পারে। রক্তচাপ অনিয়ন্ত্রিত থাকলেও সতর্কতা অবলম্বন করুন। এ ধরনের রোগ আছে এমন যেকোনো মানুষের জন্য দীর্ঘ বিরতির পর হুট করেই দুই কিলোমিটার জগিংয়ে যাওয়া আত্মঘাতী হতে পারে। ফলে পর্যায়ক্রমে শরীরচর্চার মাত্রা বাড়াতে হবে। শুরুতে দিনে ১০ মিনিট হাঁটুন। দু-তিন দিন পর সময় বৃদ্ধি করুন। এভাবে ১৫-২০-২৫ মিনিট থেকে আধা ঘণ্টায় উন্নীত করুন। চার সপ্তাহ শেষে দেখবেন, আধা ঘণ্টা জোর কদমে হাঁটলেও সমস্যা হচ্ছে না। সপ্তাহে দেড় শ মিনিট শরীরচর্চা করার সক্ষমতা অর্জন করা শারীরিক সুস্থতার জন্য যথেষ্ট।
শুরুতে মাংসপেশির শক্তি বৃদ্ধির ব্যায়ামগুলো করতে হবে। কেননা দুর্বল পেশি নিয়ে শরীরচর্চা করতে গেলে অস্থিসন্ধির ব্যথা সৃষ্টি হতে পারে। শুরুতে মাংসপেশির সামান্য ব্যথা হতেই পারে। তাতে ব্যায়াম ছেড়ে দেওয়া উচিত হবে না, বরং হালকা ব্যায়াম জারি রাখতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে বিকল্প ব্যায়ামের পরিকল্পনা করা যেতে পারে। যেমন হাঁটুতে ব্যথা হলে হাঁটার পরিবর্তে সাঁতার কাটুন।
শরীরচর্চার শুরুতে প্রথমে শরীরকে ওয়ার্মআপ করে নিতে হয়। মাঠে নেমেই দৌড়ানো যাবে না। শুরুতে হাত–পায়ের অস্থিসন্ধিগুলোকে নাড়িয়ে–চাড়িয়ে নিন। সামনে–পেছনে ডানে–বামে স্ট্রেচিং করুন। এরপর ১৫-২০ মিনিট জগিং বা ব্যয়াম শেষে ধীরে ধীরে শরীরকে স্বাভাবিক অবস্থায় নিয়ে আসুন। এটাকে বলে কুলডাউন। এটি আপনার হৃৎপিণ্ড ও ফুসফুসকে স্বাভাবিক অবস্থায় নিয়ে আসবে।
শরীরচর্চা শুরু করলে স্বাস্থ্যকর খাবারের দিকেও নজর দিন। পানিশূন্যতা ঠেকাতে পর্যাপ্ত পানি পান করুন। পুষ্টিকর সুষম খাবার খেতে হবে। আর পর্যাপ্ত নিদ্রা যেন হয়, সেদিকে নজর রাখতে হবে।
* লে. কর্নেল নাসির উদ্দিন আহমদ, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, সিএমএইচ, ঢাকা
লকডাউন, রমজান ও পরে ঈদের ছুটি। সব মিলিয়ে দীর্ঘ সময় শরীরচর্চা থেকে নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছেন অনেকে। ফলে ওজন বাড়তে পারে। বাড়তে পারে রক্তে চর্বি বা চিনির মাত্রাও। হৃদ্রোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, স্থূলতা, আর্থ্রাইটিস থেকে বাঁচতে শরীরচর্চার কোনো বিকল্প নেই। করোনা সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতেও চাই ফিটনেস। তাই দেরি না করে শুরু করা উচিত শরীরচর্চা।
দীর্ঘ বিরতির পর শরীরচর্চা শুরু করলে আগের মতো শরীর সাড়া দেবে না। এমনকি মাত্র এক সপ্তাহ শরীরচর্চা থেকে বিরত থাকলে মাংসপেশির শক্তি হ্রাস পায়। সে কারণে আগে পাঁচ কিলোমিটার জগিং করতে পারলেও লম্বা বিরতির পর শরীরচর্চা শুরুর প্রথম দিনেই বিপত্তি দেখা দিতে পারে। মাংসপেশিতে ব্যথা ও ইনজুরি হতে পারে, হৃৎপিণ্ডও হঠাৎ তাল মেলাতে পারবে না।
দীর্ঘ বিরতির পর শরীরচর্চা করতে গেলে ক্ষেত্রবিশেষে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। বিশেষত হৃৎপিণ্ডের কর্মক্ষমতা কেমন, রক্তের প্যানেল ঠিক আছে কি না, সেটাও জেনে নেওয়া দরকার। অনেক সময় ভাইরাস আক্রমণের পর হৃদ্পেশিতে প্রদাহ সৃষ্টি হয়। এই অবস্থায় ভারী শরীরচর্চায় মৃত্যুও হতে পারে। সুতরাং সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর কিছুদিন বিশ্রাম নিয়ে শরীরচর্চা শুরু করুন।
কারও যদি আনস্ট্যাবল এনজিনার মতো হৃদ্রোগ থাকে, তাহলে শরীরচর্চা বিশাল ঝুঁকির কারণ হতে পারে। রক্তচাপ অনিয়ন্ত্রিত থাকলেও সতর্কতা অবলম্বন করুন। এ ধরনের রোগ আছে এমন যেকোনো মানুষের জন্য দীর্ঘ বিরতির পর হুট করেই দুই কিলোমিটার জগিংয়ে যাওয়া আত্মঘাতী হতে পারে। ফলে পর্যায়ক্রমে শরীরচর্চার মাত্রা বাড়াতে হবে। শুরুতে দিনে ১০ মিনিট হাঁটুন। দু-তিন দিন পর সময় বৃদ্ধি করুন। এভাবে ১৫-২০-২৫ মিনিট থেকে আধা ঘণ্টায় উন্নীত করুন। চার সপ্তাহ শেষে দেখবেন, আধা ঘণ্টা জোর কদমে হাঁটলেও সমস্যা হচ্ছে না। সপ্তাহে দেড় শ মিনিট শরীরচর্চা করার সক্ষমতা অর্জন করা শারীরিক সুস্থতার জন্য যথেষ্ট।
শুরুতে মাংসপেশির শক্তি বৃদ্ধির ব্যায়ামগুলো করতে হবে। কেননা দুর্বল পেশি নিয়ে শরীরচর্চা করতে গেলে অস্থিসন্ধির ব্যথা সৃষ্টি হতে পারে। শুরুতে মাংসপেশির সামান্য ব্যথা হতেই পারে। তাতে ব্যায়াম ছেড়ে দেওয়া উচিত হবে না, বরং হালকা ব্যায়াম জারি রাখতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে বিকল্প ব্যায়ামের পরিকল্পনা করা যেতে পারে। যেমন হাঁটুতে ব্যথা হলে হাঁটার পরিবর্তে সাঁতার কাটুন।
শরীরচর্চার শুরুতে প্রথমে শরীরকে ওয়ার্মআপ করে নিতে হয়। মাঠে নেমেই দৌড়ানো যাবে না। শুরুতে হাত–পায়ের অস্থিসন্ধিগুলোকে নাড়িয়ে–চাড়িয়ে নিন। সামনে–পেছনে ডানে–বামে স্ট্রেচিং করুন। এরপর ১৫-২০ মিনিট জগিং বা ব্যয়াম শেষে ধীরে ধীরে শরীরকে স্বাভাবিক অবস্থায় নিয়ে আসুন। এটাকে বলে কুলডাউন। এটি আপনার হৃৎপিণ্ড ও ফুসফুসকে স্বাভাবিক অবস্থায় নিয়ে আসবে।
শরীরচর্চা শুরু করলে স্বাস্থ্যকর খাবারের দিকেও নজর দিন। পানিশূন্যতা ঠেকাতে পর্যাপ্ত পানি পান করুন। পুষ্টিকর সুষম খাবার খেতে হবে। আর পর্যাপ্ত নিদ্রা যেন হয়, সেদিকে নজর রাখতে হবে।
* লে. কর্নেল নাসির উদ্দিন আহমদ, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, সিএমএইচ, ঢাকা