What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

সুডৌল মুখের জন্য ফেস ইয়োগা (1 Viewer)

মুখত্বকের যত্নে কত প্রকরণ ও প্রসাধন ব্যবহার করা হয় তার ইয়ত্তা নেই। এমনকি কাঙ্ক্ষিত স্লিমিং, টোনিং, রিশেপড ফেস পাওয়ার জন্যও আছে নানা উপায়। যদিও ফেস রিশেপিং ও কনটুরিংয়ের সবচেয়ে সহজসাধ্য ও প্রাকৃতিক পদ্ধতি হলো ফেস ইয়োগা।

EX15zke.png


প্রাকৃতিক ও সহজাতভাবে নির্মেদ ও সুডৌল মুখের জন্য বর্তমানে ফেস ইয়োগা খুবই আলোচিত। হলিউডের মেগান মার্কেল, কিম কার্দাশিয়ান থেকে শুরু করে বলিউডের নামকরা সেলিব্রেটিদের কাছেও সমান জনপ্রিয়। শরীর ঠিক রাখতে যোগাসন বর্তমান দশকে সবার কাছে যে নির্ভরতার জায়গা পেয়েছে, তা থেকেই ফেস ইয়োগার যাত্রা শুরু।

OeLkERW.png


ফুমিকো তাকাতসু নামের জাপানের এক শিক্ষিকা প্রথম ফেস ইয়োগার প্রচলন শুরু করেন। ফুমিকো ৩০ বছর বয়সেও সুন্দর ত্বক ও চেহারার অধিকারী ছিলেন, কিন্তু এক গাড়ির দুর্ঘটনা তাঁর জীবন ও চেহারা দুটিরই পরিবর্তন করে দেয়। ফুমিকো তাঁর ওয়েবপেজে ফেস ইয়োগার জন্ম সম্পর্কে লেখেন, 'শরীর ঠিক রাখতে আমি নিয়মিত ব্যায়াম করতে পারলে, চেহারা ঠিক রাখতেও সেটা করতে পারব।'

ফুমিকো কয়েক সপ্তাহ মুখে ছোট ছোট এক্সারসাইজ করতে থাকলেন এবং আকর্ষণীয় পরিবর্তন লক্ষ করলেন। ধীরে ধীরে তাঁর এ পদ্ধতি এতটাই জনপ্রিয়তা পেল যে তিনি ফেস ইয়োগার ওপর পরপর ছয়টি বই লিখে ফেললেন, যার একটি জাপানের সর্বাধিক বিক্রিত বই হিসেবে জাতীয় মর্যাদা পায়।

exWcCBl.png


ফেস ইয়োগা নিয়ে কাজ করার প্রধান মন্ত্র হলো মুখের ঘুমন্ত সুপ্ত মাংসপেশিকে জাগ্রত করা। এতে মুখের রক্ত সঞ্চালন বেড়ে যায়, যা ত্বকে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট সরবরাহকারী হিসেবেও কাজ করে। আবার দৈনন্দিন জীবনে বেশি ব্যবহৃত ফেসিয়াল টিস্যু ও মাংসপেশিগুলো যা সাধারণত মুখের বলিরেখার জন্য দায়ী, সেগুলোতে আরাম পৌঁছায়। সাধারণত ৩০–এর পরই বয়সের ছাপ, মুখে বলিরেখা, লাফলাইনের প্রকাশিত দাগ, ভ্রু ও কপালের মাঝামাঝিতে কুঞ্চিত পেশি, জ লাইন ঝুলে যাওয়া বা সরু আকৃতির চোয়াল—এসব দৃশ্যমান হতে শুরু করে। শরীরে অতিরিক্ত মেদ ব্যায়াম বা ইয়োগা যেভাবে করে কমায়, মুখের ও ঘাড়ের অতিরিক্ত চর্বি কমাতে সমান যত্নশীল থাকা উচিত।

লক্ষ করে থাকবেন, অনেক বয়স্ক লোককে গোমড়ামুখো মনে হয়। কারণ, তাঁদের ঠোঁটের চারদিকের চামড়া বয়সের সঙ্গে কিছুটা ঝুলে আসে। মনে তারুণ্য থাকলেও বয়সের ছাপ আগেই ইঙ্গিত দিয়ে দেয়। সে ক্ষেত্রে ফেস ইয়োগা হলো তারুণ্য ধরে রাখার অভিনব কৌশল। ফেস ইয়োগার বিভিন্ন অঙ্গবিন্যাস মুখের ত্বককে প্রাকৃতিকভাবেই টোনিং ও কন্টুরিং করে, কম ব্যবহৃত ফেসিয়াল টিস্যুতে রক্ত চলাচল বাড়ায়।

029xXxN.png


ফলে সহজে মেদ জমে না, ভ্রু ও জ লাইন উত্তোলিত করে, চিকবোনকে স্কাল্পিং করে মুখের প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনে। আধুনিক জীবনে আমাদের বেশির ভাগ সময় কাটে ফোনে, নয়তো ল্যাপটপ বা ডেস্কটপের সামনে। দৈনিক পাঁচ-সাত ঘণ্টা ডেস্কটপ লাইফের কারণে হয়ে থাকে ডাবল চিন, ফোলা চোখ, টার্কি নেকের মতো সমস্যা। এসব সমস্যারও সমাধান আছে ফেস ইয়োগাতে।

ফেস ইয়োগা শুরুর আগে করণীয়

oFJMyMD.jpg


ফেস ইয়োগা করার জন্য নির্দিষ্ট কোনো সময় নেই। দিনে অন্তত একবার ৫-১০ মিনিটের জন্য আপনি যখন খুশি, বিশেষ করে ড্রাইভিং করার সময়, পড়ার সময়, রান্না বা হাঁটার সময় করতে পারেন। কিন্তু ফেস ইয়োগার পূর্বশর্ত হলো রিলাক্সড ও ময়েশ্চারাইজিং ফেস।

মুখের মাংসপেশি রিলাক্সড না থাকলে ত্বকের টিস্যুগুলো সংকুচিত ও শক্ত হয়ে যায়। আবার দুশ্চিন্তা ও অতিরিক্ত টেনশনের কারণে মুখে বয়সের ছাপ অতি তাড়াতাড়ি চলে আসে। কারণ, ফেসিয়াল টিস্যুগুলো ব্রেন টিস্যুর সঙ্গে গভীরভাবে সংযোজিত। দ্বিতীয় শর্ত হলো ফেস ইয়োগার আগে মুখ ভালো করে পরিষ্কার করে ময়েশ্চারাইজার লাগানো।

কিছু সহজ ফেস ইয়োগা স্টাইল

চোখের ভ্রু টান টান রাখার জন্য: প্রথমে মুচকি হেসে দুই হাতের তিনটি করে ফিঙ্গার টিপস ব্যবহার করে দুই ভ্রু ওপরের দিকে ধরে রাখতে হবে এবং চোখের পাতা নিচের দিকে নামানোর চেষ্টা করতে হবে। সেই সঙ্গে চোখের মণি ঘোরানোর চেষ্টা করতে হবে। এভাবে ২০ সেকেন্ড সময় ধরে করে খানিক বিরতিসহ তিনবার করতে হবে। চোখের আশপাশের টিস্যু যেহেতু অনেক নরম থাকে, তাই সব সময় আলতোভাবে যত্নের সঙ্গে চাপ বা টান দিতে হবে।

4uTfEO5.png


ঘাড় ও চোয়ালের টোনিংয়ের জন্য: আমাদের শরীরের ঘাড় ও চোয়াল প্লাটিসমা মাংসপেশি দ্বারা সংযুক্ত। এই ইয়োগার জন্য প্রথমে কাঁধ রিলাক্স রাখতে হবে। ৪৫ ডিগ্রি কোণে একপাশে থুতনি রেখে ঠোঁট কিছুটা উঁচুতে নিয়ে শূন্যে চুমু দেওয়ার মতো রাখতে হবে। ১০ সেকেন্ড রেখে রিলাক্স করে সাইড পরিবর্তন করে নিয়ে আবার ১০ সেকেন্ডের জন্য করতে হবে ৩ বার।

ফোলা চোখ, আইসব্যাগ ও ডার্ক সার্কেল দূর করার জন্য: দুই হাতের মধ্যমাকে যথাক্রমে ডান ও বাঁ চোখ ও নাকের কোনায় এবং তর্জনীকে চোখের বাইরের দিকের কোনায় আলতোভাবে রাখতে হবে। এতে একটা ইংরেজি বড়হাতের 'ভি' শেপ তৈরি হবে। এবার মুখইংরেজি বড়হাতের 'ও' শেপে রাখতে হবে, অর্থাৎ ঠোঁট থাকবে ভেতরের দিকে। এরপর আঙুলগুলোতে আলতো করে চাপ দিয়ে শুধু চোখ ওপরের দিকে তুলতে হবে। মনে রাখতে হবে, এ সময় কপালে ভাঁজ পড়া যাবে না। এভাবে ১০ সেকেন্ড থাকতে হবে। তারপর বিরতি দিয়ে আরও দুবার করতে হবে।

BsWiZbp.png


ফেস কনটুরিং ও গালের অতিরিক্ত ফ্যাট কমানোর জন্য: এই ইয়োগা পদ্ধতিগুলো অনেক সহজ এবং যেকোনো সময় করার মতো। মুখভর্তি বাতাস নিয়ে ২০ সেকেন্ড রেখে ছেড়ে দিতে হবে। এভাবে আরও দুবার করতে হবে। তারপর এক পাশের গাল বাতাস দিয়ে ফুলিয়ে ১০ সেকেন্ড সেভাবেই রেখে ১০ সেকেন্ড পর অপর পাশের গালে বাতাস নিয়ে মুখ ফুলাতে হবে। বিরতিসহ তিনবার করে করতে হবে। শূন্যে চুমু দেওয়া এবং মাছের মতো ঠোঁট করেও ফেসের স্লিপিং টিস্যুকে জাগ্রত করা যায়। এসব আবার প্রাকৃতিক টোনিংয়েরও কাজ করে।

লাফলাইন দূর করতে: অনেকেই মনে করেন, লাফলাইন হয়তো আমাদের হাসির কারণেই তৈরি হয়। এটা আসলে সত্য নয়। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যখন গালের মাংসপেশি ফ্যাট চোয়ালের চেয়ে বেশি হয়, তখন একধরনের বলিরেখা দৃশ্যমান হয়। এটি দূর করতে মুখভর্তি বাতাস নিয়ে ঠোঁট বাইরের দিকে ইংরেজি বড়হাতের 'ও' শেপ করে একটু একটু করে বাতাস বের করতে হবে। এ ক্ষেত্রে ওপরের ঠোঁট নিচে আনা যাবে না।

ee3xbJw.png


ফেস ইয়োগা একটি প্রাকৃতিক পদ্ধতি। ধারাবাহিকতায় সাফল্য লাভ—এই কথা ফেস ইয়োগার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। আর বয়সের ছাপের সঙ্গে লড়াই করে পুনরায় লাবণ্যময় ও সিমেট্রিক ফেস গঠনে ফেস ইয়োগা পরীক্ষিত।

ছবি: ফুমিকো তাকাতসুর ও ফেস ইয়োগা মোনার ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডল
 

Users who are viewing this thread

Back
Top