ঈদের দুপুরে খাওয়া হতে পারে কিছুটা ভারী। পরিবারের সবাইকে নিয়ে যখন খাওয়া, রান্নায় চলে আসুক বিশেষ স্বাদ। রেসিপি দিয়েছেন ফারাহ্ সুবর্ণা।
গরু শর্ষে
উপকরণ
গরুর মাংস ১ কেজি, পেঁয়াজকুচি দেড় কাপ, আদাবাটা ১ টেবিল চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, শর্ষেবাটা ২ চা-চামচ, রসুনকুচি ১ চা-চামচ, হলুদগুঁড়া ১ চা-চামচ, শুকনা মরিচগুঁড়া স্বাদমতো, কাশ্মীরি মরিচগুঁড়া ১ চা-চামচ, জিরাগুঁড়া ১ চা-চামচ, আস্ত শুকনা মরিচ ৪টি, তেজপাতা ৪টি, লবণ স্বাদমতো, শর্ষের তেল ১ কাপ।
প্রণালি
একটা হাঁড়িতে রসুনকুচি, শর্ষেবাটা, আস্ত শুকনা মরিচ ও তেল বাদে বাকি উপকরণ নিয়ে খুব ভালোভাবে মেখে আধা ঘণ্টা রেখে দিন। তারপর কম আঁচে চুলায় জ্বালে বসিয়ে মাংস কষিয়ে নিন। কষানো শেষে পানি শুকিয়ে গেলে অল্প গরম পানি দিয়ে ঢেকে দিন। মাংস সেদ্ধ হওয়া পর্যন্ত রান্না করে চুলা থেকে নামিয়ে রাখুন। তারপর অন্য একটা প্যানে তেল গরম করে নিন। আস্ত শুকনা মরিচ ও রসুন ফোড়ন দিতে হবে। শর্ষেবাটা দিয়ে অল্প ভেজে রান্না করে নিন। মাংসের সঙ্গে মিশিয়ে আবারও মাংস মিনিট দশেক রান্না করুন। তেল ওপরে উঠে এলে নামিয়ে নিন।
লেবু, রসুনের মুরগি
উপকরণ
হাড় ছাড়া মুরগির বুকের মাংস ৪ টুকরা (ছোট আকারের), ময়দা ৩ টেবিল চামচ, গোলমরিচগুঁড়া স্বাদমতো, রসুন কিমা ১ টেবিল চামচ, লেবু ৪টি, লেবুর খোসা, লবণ স্বাদমতো, মাখন ৪ টেবিল চামচ, পার্সলেপাতার কুচি ১ চা-চামচ (যদি পাওয়া যায়)।
প্রণালি
হাড় ছাড়া মুরগির বুকের মাংস হালকা থেঁতো করে একটু পাতলা করে নিন।তারপর তাতে ২ টেবিল চামচ লেবুর রস, আধা চা-চামচ গোলমরিচ গুঁড়া ও স্বাদমতো লবণ মেখে ১০ মিনিটের জন্য মেরিনেট করে রাখুন।মেরিনেট করা মুরগি শুকনা ময়দায় গড়িয়ে নিন।তারপর ফ্রাইপ্যানে ২ টেবিল চামচ মাখন গরম করে মেরিনেট করা মুরগি হালকা সোনালি করে ভেজে তুলে নিন।প্রতিপাশ ৩-৪ মিনিট করে ভাজলেই হবে।সেই প্যানেই বাকি মাখন দিয়ে দিন।তাতে রসুন কিমা, পরিমাণমতো লেবুর রস, গোলমরিচ গুঁড়া ও অল্প লবণ দিয়ে মিনিট দুয়েক নেড়ে নামিয়ে নিন।পরিবেশন পাত্রে ভেজে রাখা মুরগি পাতলা স্লাইস করে কেটে ওপরে লেবু, রসুন, মাখনের সস ও পার্সলে কুচি ছড়িয়ে দিন।
চিংড়ি কোফতা পোলাও
উপকরণ
কালিজিরা চাল ২ কাপ, মাথা বাদ দিয়ে বেটে নেওয়া চিংড়ি দেড় কাপ, কর্নফ্লাওয়ার ১ চা-চামচ, মিহি পেঁয়াজকুচি ১ কাপ, পেঁয়াজবাটা আধা কাপ, আদাবাটা দেড় চা-চামচ, রসুনবাটা দেড় চা-চামচ, হলুদগুঁড়া ১ চা-চামচের চার ভাগের তিন ভাগ অংশ, শুকনা মরিচগুঁড়া আধা চা-চামচ, কাশ্মীরি মরিচগুঁড়া ১ চা-চামচ, জিরাগুঁড়া ১ চা-চামচ, গরমমসলাগুঁড়া ১ চা-চামচ, আস্ত গরমমসলা, দারুচিনি, এলাচি, লবঙ্গ প্রতিটি ৩টি করে (আস্ত), তেজপাতা ২–৩টি, নারকেলের ঘন দুধ ২ কাপ, আস্ত কাঁচা মরিচ ১০–১২টি, চিনি আধা চা-চামচ, লবণ স্বাদমতো, তেল ১ কাপের তিন ভাগের এক ভাগ অংশ, ঘি আধা কাপ, পানি প্রয়োজনমতো।
প্রণালি
বাটা চিংড়ির সঙ্গে অল্প হলুদ, মরিচগুঁড়া, আদা-রসুনবাটা, পেঁয়াজকুচি, কর্নফ্লাওয়ার ও পরিমাণমতো লবণ দিয়ে ভালো করে মেখে রাখুন। প্যানে তেল গরম করে তাতে পেঁয়াজ-আদা-রসুনবাটা দিয়ে একটু ভেজে দুই রকমের মরিচগুঁড়া, হলুদগুঁড়া, জিরাগুঁড়া, স্বাদমতো লবণ আর অল্প পানি দিয়ে কষিয়ে নিন। কষানো হয়ে গেলে ২ কাপ ঘন নারকেল দুধ মিশিয়ে দিয়ে ফুটতে দিন। ভালো করে ফুটে উঠলে মেখে রাখা চিংড়ি কিমা থেকে ছোট ছোট বল বানিয়ে প্যানে ছাড়তে হবে। সব বল ছাড়া হয়ে গেলে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রান্না করুন এবং কিছুক্ষণ পর নেড়ে দিন। ঝোল ঘন হয়ে এলে আস্ত কাঁচা মরিচ ও গরমমসলাগুঁড়া দিয়ে নামিয়ে নিন। ঝোল পুরো শুকিয়ে ফেলবেন না। কেননা, আমরা এই ঝোল পোলাও রান্নায় ব্যবহার করব। চাল ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। তারপর প্যানে ঘি গরম করে মিহি করে কাটা পেঁয়াজ ভেজে বেরেস্তা করে তুলে রাখুন। সেই ঘিতেই আস্ত গরমমসলা আর তেজপাতার ফোড়ন দিয়ে দিন। এটা থেকে সুঘ্রাণ ছড়ালে পানি ঝরানো চাল দিয়ে ৪ থেকে ৫ মিনিট ভাজতে হবে। ভাজা হয়ে গেলে কোফতা আলাদা করে তুলে রেখে দিন। তার ঝোল, প্রয়োজনমতো ফুটন্ত গরম পানি, চিনি আর লবণ দিয়ে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। পানি আর চাল এক সমান হয়ে এলে প্যানের নিচে তাওয়া দিয়ে পোলাও দমে বসিয়ে দিন। পোলাও রান্না হয়ে গেলে চিংড়ির কোফতা আর বেরেস্তা দিয়ে হালকা হাতে নেড়ে পোলাওয়ের সঙ্গে মিশিয়ে নিয়ে গরম-গরম পরিবেশন করুন।
দই পুডিং
উপকরণ
ডিম ৬টি, টক দই ১ কাপ, তরল দুধ পৌনে ১ কাপ, গুঁড়ো দুধ ৪ টেবিল চামচ, কমরেড মিল্ক ১ কাপ, চিনি ৩ টেবিল চামচ, আস্ত এলাচি ৪টি।
প্রণালি
আস্ত এলাচি দিয়ে এক কাপ দুধকে জ্বালে বসিয়ে দিন। এতে মিশিয়ে নিন গুঁড়ো দুধ। ফুটে উঠলে নেড়ে ঠান্ডা করে নিন। এলাচিগুলো তুলে ফেলে দিন। এবার চিনি বাদে বাকি সব উপকরণ ভালোভাবে ফেটিয়ে নিন। চাইলে ছেঁকেও নিতে পারেন। যে পাত্রে পুডিং বসাবেন সে পাত্রে চিনি ছড়িয়ে দিয়ে চুলায় বসিয়ে ক্যারামেল তৈরি করে নিন। ক্যারামেল ঠান্ডা হয়ে গেলে এর ওপর তৈরি করে রাখা মিশ্রণটা ঢেলে দিন। পাত্রটি ঢাকনা দিয়ে ঢেকে গরম পানির মধ্যে বসিয়ে ওপরে ভারী কিছু চাপা দিয়ে দিন। পানি ফুটে উঠলে পাত্র নড়ে না যায়। মাঝারি আঁচে ১ থেকে সোয়া ১ ঘণ্টা পুডিংটা ভাপে হতে দিন। খেয়াল রাখবেন যাতে পানি শুকিয়ে না যায়। পুডিং হয়ে গেলে ঢাকনা সরিয়ে ঠান্ডা হতে দিন। তারপর ফ্রিজে ঘণ্টা চারেক রেখে দিন। ঠান্ডা করে পাত্র থেকে নামিয়ে পছন্দ অনুযায়ী কেটে পরিবেশন করুন। যাঁরা পুডিংয়ে এলাচির গন্ধ পছন্দ করেন না, তাঁরা ভ্যানিলা এসেন্স ব্যবহার করতে পারেন।
ভার্জিন পাইন অ্যাপল মোহিতো
উপকরণ
আনারসের জুস ২ কাপ, সোডা পানি ১ কাপ, আস্ত পুদিনাপাতা ২০টি, পাতলা গোল করে কাটা লেবু আধা কাপ, লেবুর রস ১ টেবিল চামচ, চিনি স্বাদমতো, বরফ পছন্দমতো, আনারসের টুকরা সাজানোর জন্য।
প্রণালি
একটা পাত্রে পুদিনাপাতা, গোল করে কাটা লেবু, লেবুর রস আর চিনি নিন। ডাল ঘুটনির পেছন দিক বা কাঠের চামচ দিয়ে থেঁতলে নিন। তারপর সেই থেঁতলানো পুদিনা, লেবু গ্লাসে নিয়ে নিন। আনারসের জুস, সোডা আর বরফ মিশিয়ে নিন। এক টুকরা আনারস দিয়ে সাজিয়ে ঠান্ডা পরিবেশন করুন।