What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

কী ধরনের পরিবর্তন আসছে ভবিষ্যতের পেশায় (1 Viewer)

1ohPwuT.jpg


করোনাকাল শেষেও পৃথিবীর অনেক প্রতিষ্ঠান হয়তো আর কখনোই অফিসে ফিরে যাবে না। 'ওয়ার্ক ফ্রম হোম' পদ্ধতিতে বাড়িতে বসেই যে কাজ করা যায়, সেটা করোনাকালে আমাদের জানা হয়ে গেছে। ভবিষ্যতে এমন আরও বেশ কিছু পরিবর্তন আসছে কাজের ধরনে। মূলত প্রযুক্তির উন্নয়নই এর পেছনের কারণ।

ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ভাষ্য, এতে যেমন পুরোনো কিছু 'পদ-পদবি' বিলুপ্ত হবে, তেমনি তৈরি হবে অনেক নতুন সুযোগও। তাদের জরিপ অনুযায়ী, পুরোনো পদবিগুলোর মধ্যে ৬.৪ শতাংশ হারিয়ে যাবে। আর নতুন পদবি বা কাজের সুযোগ তৈরি হবে ৫.৭ শতাংশ। এক হিসাবে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালে বিশ্বব্যাপী সাড়ে ৮ কোটি চাকরি হারিয়ে যেতে পারে। সেখানে মানুষ, মেশিন ও অ্যালগরিদমের সমন্বয়ে প্রায় ৯ কোটি ৭০ লাখ নতুন কাজের সুযোগ তৈরি হবে। ক্লাউড কম্পিউটিং, বিগ ডেটা, ইন্টারনেট অব থিংস, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ব্লকচেইনের মতো প্রযুক্তি সব ধরনের কাজ ও পেশায় পরিবর্তন আনবে।

কোনো প্রতিষ্ঠান হয়তো একটু আগেভাগেই 'প্রযুক্তিময়' হবে, কেউবা একটু দেরিতে। তবে পরিবর্তনের ধাক্কা যে অনিবার্য, সেটা করোনাকালে আরও স্পষ্ট হয়েছে। পরিবর্তন বা নতুন নতুন পেশার আগমনের পর নিজেকে তৈরি করার চেয়ে, আগে থেকেই নতুন চ্যালেঞ্জের জন্য তৈরি হতে হবে। কী কী পরিবর্তন আসতে পারে, সে সম্পর্কেও একটা ধারণা দিয়েছে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম।

যেকোনো জায়গা থেকে কাজের সুযোগ

ভবিষ্যতে যেকোনো জায়গা থেকেই কর্মীদের কাজ, প্রকল্প জমা দেওয়ার চল আরও বাড়বে। এক দশক আগেও কাজের জন্য অফিস-টেবিল-মিটিংরুমের প্রয়োজন ছিল ব্যাপকভাবে। বিশ্বব্যাপী স্বাধীন পেশাজীবীর সংখ্যা বাড়ার কারণে অনেক প্রতিষ্ঠান স্থায়ী কর্মীর সংখ্যা কমিয়ে দিয়েছে। ওয়ার্ডপ্রেস পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান অটোমেটিক, প্রশ্নোত্তরের সামাজিক সাইট কোরা, নারীদের বৈশ্বিক সামাজিক প্ল্যাটফর্ম বাম্বল, উইকিমিডিয়া ফাউন্ডেশন এরই মধ্যে যেকোনো জায়গা থেকে কাজ করতে কর্মীদের উৎসাহ দিচ্ছে। এই পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মেলাতে প্রযুক্তিগত ও অ্যানালিটিক্যাল দক্ষতার প্রয়োজন হবে। মাইক্রোসফট এক্সেল, পাওয়ারপয়েন্টসহ সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা করে এমন টুলস, সফটওয়্যারের ব্যবহার জানতে হবে। এ ছাড়া অনলাইনে যোগাযোগ বা দলীয় কাজের জন্য জুম, স্ল্যাক-ট্রেলোর মতো মাধ্যমের ব্যবহার বাড়বে।

নমনীয় কাজের ধরন ও প্রতিষ্ঠানের বিকাশ

এখন শহর বা দেশনির্ভর বিশেষ বিশেষ কাজ বা পেশার বিকাশ ঘটতে দেখা যায়। ভবিষ্যতে আরও বড় আকারে বিভিন্ন অঞ্চল বা এলাকার পরিবেশ ও জনগোষ্ঠীর দক্ষতার ওপর নির্ভর করে কাজ ও পেশার বিকাশ ঘটবে। যুক্তরাষ্ট্রে আমাজনের মতো প্রতিষ্ঠান এ রকম এলাকাভিত্তিক কর্মীদের কাজের সুযোগ তৈরি করছে। যুক্তরাজ্যে ইউনিলিভারসহ অনেক প্রতিষ্ঠান সপ্তাহে '৪০ ঘণ্টা কাজ'-এর ধারণা থেকে বেরিয়ে আসার কথা ভাবছে। ভবিষ্যতে কর্মীদের উপস্থিতির চেয়ে কাজের গুণগত মানের দিকেই বেশি খেয়াল রাখা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কোলগেট-পালমোলিভ বিশ্বের ২০০ দেশ ও অঞ্চলজুড়ে বিস্তৃত। প্রতিষ্ঠানটি কর্মীদের নমনীয় কর্মঘণ্টার দিকে ঝুঁকেছে বেশ আগে থেকেই। কর্মীদের মানসিক স্বাস্থ্য কাজের মানের ওপর প্রভাব তৈরি করে বলে কোলগেট-পালমোলিভ নমনীয়ভাবে কাজের সুযোগ দিয়েছে। ইলেকট্রনিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলা ২০২০ সাল থেকে ঘরে বসে কাজের জন্য কর্মী নিয়োগ দিচ্ছে।

এই পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হলে যেসব দক্ষতা প্রয়োজন তা হলো—

ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্সসহ বড় দলের অংশ হিসেবে কাজের দায়িত্ব নেওয়া জানতে হবে। তথ্য বিশ্লেষণ, গ্রাহকসেবা, বিপণন, সাপ্লাই চেইন, প্রকল্প ব্যবস্থাপনাসহ নানা বিষয় সম্পর্কে জানতে হবে।

স্বেচ্ছায় কাজের সুযোগ

মুক্ত পেশাজীবী বা ফ্রিল্যান্সাররা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বড় বড় কাজের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন। স্বল্পমেয়াদি কাজ, অন ডিমান্ড পজিশনের জন্য কর্মী নিয়োগ বাড়বে আরও। এভাবে কাজের কারণে কর্মীরা নিজেদের সুবিধা অনুযায়ী কাজ বাছাইয়ের সুযোগ পাবেন। প্রতিষ্ঠানগুলোও কাজের পরিমাণ ও দক্ষতা অনুসারে কর্মী নিয়োগের সুযোগ পাবে। অ্যাডোবি, উবার, ডেলের মতো প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানে এমন ধরনের কাজের সুযোগ ধীরে ধীরে বাড়ছে।

'স্মার্ট' কাজ

ভবিষ্যতে নানা ধরনের 'স্মার্ট' কাজের সংখ্যা ও পরিধি বাড়বে। একদিকে যেমন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর কাজের ধরন বাড়বে, তেমনি মানুষ ও যন্ত্রের সংযোগে নতুন নতুন কাজ তৈরি হবে। প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের নির্বাহী ও কর্মীদের আরও বেশি সৃজনশীল কাজে যুক্ত করবে। রোবটিকস ও অটোমেশনের কারণে ঝুঁকিপূর্ণ কাজ থেকে মানুষের অংশগ্রহণ কমে আসবে। প্রযুক্তির কল্যাণে আরও নানা ধরনের পেশা ও কাজ সৃষ্টি হবে। প্রযুক্তিনির্ভর উদ্ভাবনী প্রতিষ্ঠানগুলো নতুন নামে নতুন পদে কর্মী নিয়োগ দেবে। হিল্টন হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টস, জেরোক্স, সেলস ফোর্সসহ বিভিন্ন বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন কাজের জন্য কর্মীদের উদ্ভাবনী দক্ষতা ও সৃজনশীলতাকে গুরুত্ব দিচ্ছে।

টেকসই কাজ ও মানবিক কর্মক্ষেত্র

পশ্চিমা দুনিয়ায় অনেক দিন ধরেই কাজ ও জীবনের মধ্যে ভারসাম্য নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। ভবিষ্যতে কর্মী ও পরিবেশের কথা বিবেচনা করে কাজের প্রকৃতিতে পরিবর্তন আনবে প্রতিষ্ঠানগুলো। জলবায়ু পরিবর্তন, সাম্য-বৈষম্যহীন সমাজের ধারণা কর্মস্থলের পরিবেশ ও কাজের ধরনে পরিবর্তন আনবে। ব্যক্তিগত বৈশিষ্ট্য যেমন সততা, দায়িত্বশীলতা, অন্য দেশ, জাতি-বর্ণের মানুষের প্রতি সম্মান, প্রতিষ্ঠানের তথ্যের নিরাপত্তা-গোপনীয়তা রক্ষায় প্রতিশ্রুতিশীল আচরণ আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হবে নিয়োগের ক্ষেত্রে।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top