What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

হাঁটুর বাতরোগে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসার গুরুত্ব (1 Viewer)

ox5KsZm.jpg


মাসিক পরবর্তী ইস্ট্রোজেন হরমোনের অভাবে নারীদের অস্টিওপোরোসিস নামক একটি হাড়ক্ষয় রোগ হয়, যা নারীদের ক্ষেত্রে এ রোগের অন্যতম কারণ। এ ছাড়া যাঁদের বিএমআই (বডি মাস ইনডেক্স) বেশি, তাঁদের হাঁটুব্যথার ঝুঁকি রয়েছে।

হাঁটুর ব্যথার ক্ষেত্রে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত একটি র্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন স্বতন্ত্র চিকিৎসাপদ্ধতি হিসেবে। হাঁটুর ব্যথার বিভিন্ন কারণ আছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে হাঁটুর বাত বা অস্টিওআর্থ্রাইটিস। গবেষণা মতে, হাঁটুর ব্যথায় বিভিন্ন চিকিৎসাপদ্ধতি যেমন—ওষুধ, সার্জারি ইত্যাদি প্রয়োগ করা হয়ে থাকলেও এসব রোগীর ২৫-৩০ শতাংশ ও বয়স্ক জনগোষ্ঠীর ৮০ শতাংশ মানুষ হাঁটুর ব্যথা নিয়েই থাকেন। ৯০ শতাংশ রোগী ব্যথানাশক ওষুধ খান, যার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের ক্ষতি হয়।

হাঁটুব্যথার কারণ

গবেষণায় দেখা যায়, পুরো পৃথিবীতে ৫৫ বছরের ওপরে ১৫ শতাংশ পুরুষ ও নারী ভীষণভাবে হাঁটুর অস্টিওআর্থ্রাইটিস বা বাতরোগে ভুগে থাকেন। মাসিকপরবর্তী ইস্ট্রোজেন হরমোনের অভাবে নারীদের অস্টিওপোরোসিস নামক একটি হাড়ক্ষয় রোগ হয়, যা নারীদের ক্ষেত্রে এ রোগের অন্যতম কারণ। এ ছাড়া যাঁদের বিএমআই (বডি মাস ইনডেক্স) বেশি, তাঁদের হাঁটুব্যথার ঝুঁকি রয়েছে।

প্রচলিত চিকিৎসা ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

অস্টিওআর্থ্রাইটিস চিকিৎসার ক্ষেত্রে একটি সমন্বিত চিকিৎসাব্যবস্থা প্রয়োজন, যেখানে একজন ডাক্তার এবং ফিজিওথেরাপিস্ট রোগীর প্রয়োজন অনুসারে চিকিৎসাসেবার পরিকল্পনা করবেন।

গবেষণা মতে, এখন পর্যন্ত হাঁটুর বাত রোগের চিকিৎসায় যত পদ্ধতিই ব্যবহার করা হয়েছে, দুর্ভাগ্যবশত সেসব চিকিৎসাব্যবস্থার বেশির ভাগই ব্যর্থ হয়েছে। সার্জারিকে হাঁটুর বাত বা অস্টিওআর্থ্রাইটিস রোগের সর্বশেষ চিকিৎসা মনে করা হলেও এর কার্যকারিতা প্রশ্নমুখী এবং এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ব্যাপক।

অস্টিওআর্থ্রাইটিস চিকিৎসার ক্ষেত্রে একটি সমন্বিত চিকিৎসাব্যবস্থা প্রয়োজন, যেখানে একজন ডাক্তার এবং ফিজিওথেরাপিস্ট রোগীর প্রয়োজন অনুসারে চিকিৎসাসেবার পরিকল্পনা করবেন। যদি ৫৫-৬০ বছর বয়সের কোনো রোগীর অস্টিওআর্থ্রাইটিস নির্ণয় করা যায়, তাহলে হায়ালুরোনিক অ্যাসিডের ইনজেকশনের মাধ্যমে জয়েন্টের ভেতর লুব্রিকেশন করা সম্ভব। গবেষণা মতে, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জয়েন্টের সায়নোভিয়াল ফ্লুইডে হায়ালুরোনিক অ্যাসিডের পরিমাণ কমে গিয়ে সঞ্চালনে ব্যথার সৃষ্টি করে। বাস্তব অভিজ্ঞতায় দেখা যায়, হায়ালুরোনিক অ্যাসিড ইনজেকশনের পর ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা নিশ্চিত করা গেলে সার্জারি প্রতিহত করা সম্ভব।

৭০ বছরের বেশি কোনো ব্যক্তি সার্জারির ধকল অনেকাংশে সহ্য করতে পারেন না এবং সার্জারিপরবর্তী বিভিন্ন জটিলতা দেখা দেয়, যা মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়াতে পারে। দেহের ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে সার্জারি ছাড়াও হাঁটুর বাত বা অস্টিওআর্থ্রাইটিসের ব্যথা নিরাময় করা সম্ভব।

হাঁটুর ব্যথায় করণীয়

FY5xoj0.jpg


হাঁটুর ওপরের মাংসপেশির শক্তি বাড়ানোর জন্য তিন কেজি ওজনের বালির ব্যাগ পায়ের গোড়ালির সামনে বেঁধে চেয়ারে বসে পা সোজা এবং ভাঁজ করতে হবে

  • অভিজ্ঞ ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের সঙ্গে আলোচনা করে পরামর্শ নিতে হবে।
  • তীব্র হাঁটুব্যথা হলে দুই-তিন দিনের জন্য পূর্ণ বা আংশিক বিশ্রাম নিতে পারেন।
  • যেসব ক্ষেত্রে ব্যথা বাড়ে, যেমন সিঁড়ি দিয়ে ওঠা-নামা করা, লো কমোডে বসা, লম্বা সময় ধরে দাঁড়িয়ে থাকা ইত্যাদি পরিহার করতে হবে।
  • ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যথা কমার জন্য প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ২০ মিনিট গরম বা ৫ অথবা ১৫ মিনিট বরফের ঠান্ডা সেঁক নিতে পারেন।
  • পায়ের সম্মুখ দিকের মাংসপেশি, যেমন কোয়াড্রিসেপস, পেছনের হ্যামস্ট্রিং, সোলিয়াস, গ্যাস্ট্রোকনেমিয়াস, টেন্ডো-আকিলিস ইত্যাদি সফট টিস্যুর স্ট্রেচিং করতে হবে।
  • হাঁটুর ওপরের মাংসপেশির শক্তি বাড়ানোর জন্য তিন কেজি ওজনের বালির ব্যাগ পায়ের গোড়ালির সামনে বেঁধে চেয়ারে বসে পা সোজা এবং ভাঁজ করতে হবে , এটি ১০-১৫ বার করে দৈনিক ৩-৪ বেলা করা উচিত।
cUGB4ey.jpg

  • পায়ে ভারী বস্তু বেঁধে উপুড় হয়ে শুয়ে হাঁটু ভাঁজ করতে হবে। আগের ব্যয়ামের মতো দিনে তিন-চার বেলা করতে হবে।
  • যতটা সম্ভব স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে হবে।
  • প্রতিদিন ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়তে হবে (ব্যথা কমে গেলে সিজদাহ এবং হাঁটু ভাঁজ করে নামাজ পড়া যেতে পারে)। নামাজে ওঠাবসা ও রুকুতে হাঁটুর অনেক থেরাপিউটিক ব্যায়াম হয়ে যায়।
  • সুষম ও অ্যান্টিটক্সিক খাবার গ্রহণ করতে হবে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
  • সুনির্দিষ্ট থেরাপিউটিক ব্যায়ামগুলো (চিত্র-০৩) ভালোভাবে বোঝার জন্য একজন ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন এবং তাঁর তত্ত্বাবধানে সঠিকভাবে নিয়মিত সেগুলো করতে পারেন। ভুলভাবে করলে ব্যথা বেড়ে যেতে পারে।

* লেখক: এহসানুর রহমান | সহযোগী অধ্যাপক, বাংলাদেশ হেলথ প্রফেশনস ইনস্টিটিউট, সিআরপি, সাভার, ঢাকা।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top