What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

স্বাস্থ্যকর জীবনের জন্য পরিচ্ছন্ন–সতেজ ওয়াশরুম (1 Viewer)

Welcome! You have been invited by নুরজাহান পঙ্কজ 57 to join our community. Please click here to register.
o4KzWsm.jpg


শুদ্ধ বাংলায় হঠাৎ 'প্রক্ষালনকক্ষ' শব্দটি বললে একটু চমকে ওঠার আশঙ্কা আছে। আসলে বাড়ির অপরিহার্য এই স্থান সবার কাছে বাথরুম, টয়লেট বা ওয়াশরুম নামেই বহুল পরিচিত এ দেশে। প্রথিতযশা কথাসাহিত্যিক ও সমাজসংস্কারক রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন একবার তাঁর এক প্রবন্ধে বলেছিলেন, কোনো বাসাবাড়ির সবার রুচিবোধ আর সভ্যতার পর্যায় সম্পর্কে ধারণা পেতে হলে রান্নাঘর আর ওয়াশরুমের দিকে তাকানো উচিত।

এ দেশের বেশির ভাগ বাসাবাড়িতে ঝাঁ চকচকে আসবাব আর পরিপাটি ঘরদোর থাকলেও প্রায় সময়েই এই ওয়াশরুমের পরিচ্ছন্নতা নিয়ে খুবই উদাসীনতা দেখা যায়। অথচ একটি পরিবারের সুস্বাস্থ্য আর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, নীরোগ জীবনের জন্য এই বাথরুম বা ওয়াশরুমের দিকে বিশেষ মনোযোগ দেওয়া দরকার। শুনতে কঠিন মনে হলেও পরিবারের সবাই মিলে বা সাহায্যকারীর সহায়তায় কিছু বিষয়ের দিকে খেয়াল রাখলে আমরা সহজেই বাড়ির ওয়াশরুম পরিচ্ছন্ন ও সতেজ রাখতে পারি।

fcuPf87.jpg


ওয়াশরুম তৈরি করার সময় ডিজাইন ও স্থাপত্যের দিকে গুরুত্ব দিতে হবে

সঠিক ডিজাইন ও স্থাপত্য

নিজেদের বাড়ি হলে ওয়াশরুম তৈরি করার সময় এ ব্যাপারে গুরুত্ব দিতে হবে। ভাড়া বাড়ি বেছে নেওয়ার সময়েও দেখতে হবে যেন বাথরুমগুলো স্বাস্থ্যসম্মত হয়। প্রয়োজনে মেরামতি করিয়ে নিতে হবে যেন পানি পড়া, দেয়াল বা ছাদে নোনা ধরা, টয়লেটটি ভাঙা বা ত্রুটিপূর্ণ না হয়। পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের ব্যবস্থা থাকতে হবে। দরকার হলে এগজস্ট ফ্যান লাগিয়ে নিতে হবে।

পর্যাপ্ত স্টোরেজ সুবিধা

IuiQDJB.jpg


ওয়াশরুমে খোলা ও বন্ধ দু ধরনেরই স্টোরেজ সুবিধা থাকতে হবে

ওয়াশরুমে টুথব্রাশ, টুথপেস্ট, মাউথওয়াশ, সোপকেস, হ্যান্ডওয়াশ, শ্যাম্পু, ফেসওয়াশ—কত কিছুই না দরকার হয়। আবার কাপড় ধোয়ার গুঁড়ো সাবান, কাপড় কাচা সাবান এবং বাথরুম পরিষ্কার করার সামগ্রীও সেই বাথরুমেই রাখার প্রয়োজন হয়। সুবিধামতো বেসিনের ওপরে বা নিচে, পাশের দেয়ালে, ঝরনার এক পাশে খোলা ও বন্ধ দুই রকমেরই উপযুক্ত স্টোরেজের জায়গা থাকা উচিত। সুবিধামতো দেয়ালে হুক, টাওয়েল রেইল, তাক ঝুলিয়ে দেওয়া যায়। অনেক সময়ে বেসিনের আয়নাটি স্টোরেজ ক্যাবিনেটের দরজার ওপরেও বসানো থাকে। বন্ধ ক্যাবিনেটগুলো মাঝেমধ্যেই পরিষ্কার করে নেওয়া উচিত।

ওয়াশরুমে কোনো রকম ময়লা না ফেলা

ওয়াশরুমের ভেতরে বা তা সম্ভব না হলে একেবারে দরজার বাইরেই ময়লা ফেলার ঝুড়ি থাকা উচিত। সাবান–শ্যাম্পুর খালি প্যাকেট বা বোতল, টুথপেস্টের খালি টিউব ইত্যাদি ওয়াশরুমে জমা হতে থাকলে তা অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরি করতে পারে। বেসিনে, মেঝের ড্রেনেজের ফুটোয় যেন চুল বা অন্যান্য ময়লা না জমে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। টয়লেটের কমোডে কোনো রকম অযাচিত আবর্জনা ফেলা যাবে না।

ওয়াশরুম জীবাণুমুক্তকরণ

মহামারির এই সময়ে আমরা নিজের হাত ধোয়া, বাইরের কাপড় ধোয়া, যেকোনো রকমের জীবাণুমুক্ত করার কাজগুলো সব ওয়াশরুমেই সারছি। তাই সেখানকার মেঝে, ট্যাপ, সিংক, কমোড ভালোভাবে ডিশ ইনফেক্ট করার প্রয়োজনীয়তা এখন আরও বেশি। ডিটারজেন্ট পাউডারের পাশাপাশি বিভিন্ন উপযোগী জীবাণুনাশক দিয়ে ওয়াশরুমটি প্রায়ই পরিষ্কার করে নিতে হবে। কোনায় কোনায় বা কমোডের পেছনে, সিংকের নিচে যেন শেওলা, ছত্রাক না পড়ে, তা খেয়াল করতে হবে।

মাকড়সা, তেলাপোকা ইত্যাদির উপদ্রব হলেও রোগ–জীবাণু ছড়ানোর আশঙ্কা থাকে। তাই এ ব্যাপারেও ব্যবস্থা নিতে হবে। ব্লিচিং পাউডার বা ঘরোয়া ব্লিচিং সলিউশন ব্যবহার করলে নিয়ম অনুযায়ী সঠিকভাবে পানিতে মিশিয়ে ব্যবহার করতে হবে।

GDpSsO5.jpg


ওয়াশরুম জীবাণুমুক্ত রাখতে হবে সবসময়

ওয়াশরুম শুষ্ক রাখা

আলো–বাতাসের ব্যবস্থা থাকলে সহজেই ওয়াশরুমটি শুকনো রাখা যায়। এগজস্ট ফ্যানের সাহায্যও নেওয়া যায়। এতে ওয়াশরুমে পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা সহজ হয়। প্রয়োজনে ঘর মোছার মপ দিয়ে অতিরিক্ত পানি মুছে নিতে হবে। বাথরুমের কোথাও পানি জমতে দেওয়া যাবে না। বাথরুমের পর্দা পানিনিরোধক বা দ্রুত শুকিয়ে যায়—এমন উপকরণ দিয়ে তৈরি করতে হবে। পানি ধরে রাখার দরকার পড়লে ঢাকনাযুক্ত বালতি ব্যবহার করতে হবে। এতে ডেঙ্গু হওয়ার আশঙ্কাও কমে যাবে। কালেভদ্রে ব্যবহৃত বাথরুমটির হাইকমোড মাঝেমধ্যে ফ্লাশ করে দিলে সেখানকার পানিতে মশা বা পোকামাকড়, শেওলা ইত্যাদি জন্মাবে না।

ওয়াশরুমে শৌখিন সজ্জা

bvTy9I5.jpg


দৃষ্টিনন্দন টাইলস, পেইন্টের সুচিন্তিত ব্যবহার করলে বাসার ওয়াশরুমটি আভিজাত্য আর সুরুচির পরিচয় তুলে ধরতে পারে

বিদেশের মতো ওয়াশরুমে ম্যাগাজিন, পত্রিকা পড়ার ব্যবস্থা বা নিজস্ব মিউজিক সিস্টেম রাখা এ দেশে খুব উপযোগী না হলেও দু–একটা সুগন্ধি মোমবাতি, কিছু ইনডোর প্ল্যান্ট রাখা যাতে পারে। সোপকেস, টুথব্রাশ হোল্ডার ইত্যাদি একটু মিলিয়ে সুন্দর ডিজাইন দেখে কিনলে নিত্যদিনের আটপৌরে ওয়াশরুমটিকেই সুন্দর মনে হবে। দৃষ্টিনন্দন টাইলস, পেইন্টের সুচিন্তিত ব্যবহার করলে বাসার ওয়াশরুমটি আভিজাত্য আর সুরুচির পরিচয় তুলে ধরতে পারে। লাইটিংয়েও কিছুটা বৈচিত্র্য আনা যেতে পারে। দু–একটি ওয়ালপিস, ফুলদানিতে একঘেয়ে ওয়াশরুমটি নতুনভাবে সাজিয়ে নেওয়া যায়।

NWAJfuv.jpg


পরিচ্ছন্ন, সতেজ, সুন্দর ওয়াশরুম আমাদের সুস্থ রাখতে পারে

অনেকে হয়তো মনে করবেন, ওয়াশরুম নিয়ে আবার এত আদিখ্যেতা করে কী লাভ! কিন্তু আমরা দিনের বেশ কিছুটা সময় ওয়াশরুমে কাটাই। পরিচ্ছন্ন, সতেজ, সুন্দর ওয়াশরুম আমাদের দিনের শুরুর দাঁত ব্রাশ বা রাতে ঘরে ফিরে গোসল করার সময়গুলোকে সুখকর করে তুলতে পারে। স্বাস্থ্যকর জীবনের জন্য তাই আমাদের ওয়াশরুমের সাজ সজ্জা ও পরিষ্কার–পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে একদম উদাসীন হওয়া চলবে না।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top