What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Other আপনার-আমার চেনা ডলি জহুর (1 Viewer)

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,649
Messages
117,051
Credits
1,241,096
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
ebl3bqJ.jpg


মায়ের ভূমিকায় একজন ডলি জহুর দেশীয় চলচ্চিত্রের অসাধারণ আবিষ্কার। মায়ের চরিত্রে মিশে গিয়ে তিনি পর্দায় দর্শককে হাসাতে, কাঁদাতে পারেন।

একবার ভাবুন তো 'বাবা কেন চাকর' ছবির কথা। বাপ্পারাজকে যখন অন্যায়ভাবে বড়ভাই মিঠুন কোমরের বেল্ট দিয়ে পেটাচ্ছে ততক্ষণে প্যারালাইস্ট ডলি জহুর বিছানা থেকে পড়ে গিয়ে গড়াতে গড়াতে বলতে থাকে-'তোমরা আমার ছেলেকে মেরো না।' সংলাপটা সামান্য কিন্তু অভিনয়টা টাচি। তাঁর কান্না দেখলে বাস্তবের কান্না মনে হয়। তাঁর কান্না দেখলে আপনার আমারও কান্না পায়।

খলনায়ক যখন মায়ের চোখের সামনে নায়ককে মারতে থাকে মা ডলি জহুরের আর্তনাদ 'আমার খোকাকে তোমরা মেরো না' এই সিম্পল ডায়লগেও তার অভিনয় দর্শকের জায়গায় আপনার মন খারাপ করে দেবে। 'খোকা' শব্দের প্রতি মায়ের প্রতি চিরন্তন ভালোবাসা ডলি জহুরের মুখে এ ডাক যেন শৈল্পিক। তিনি পর্দায় মা, ভাবী, স্ত্রী, বোনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন যারা আপনার আমার চারপাশের আপন মানুষগুলোর মতো। তাই পর্দায় তিনি আপনার আমার চেনা ডলি জহুর হয়ে আসেন সেইসব নারীদের মাধ্যমে।

QOlxCZd.jpg


মূল নাম হামিদা বানু। অভিনয়জগতে এসে নাম দেন ডলি জহুর। তাঁর স্বামী অভিনেতা জহুরুল ইসলামের বন্ধু প্রযোজক আলিমুজ্জামান নাম পরিবর্তনের পরামর্শ দেন এবং তিনি পরিবর্তন করেন। এ নামই এখন তাঁর সর্বজনীন পরিচয় হয়ে গেছে।

জন্ম ১৭ জুলাই ১৯৫৩। তিনি একাধারে মঞ্চ, বেতার, টিভি ও চলচ্চিত্র অভিনেত্রী। নাটকের স্ক্রিপ্টও করেছেন। বাংলাদেশ বেতার ও বিটিভির তালিকাভুক্ত অভিনয়শিল্পী হয়ে নাম করেছেন। তাঁর স্বামী জহুরুল ইসলামও একজন অভিনেতা। তিনি নাটক ও বিজ্ঞাপনে নিয়মিত ছিলেন। তাঁদের একমাত্র ছেলে রিয়াসাত এখন অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী। স্বামী ২০০৬ সালে মারা যান।

পড়শোনা যথাক্রমে ম্যাট্রিকুলেশন সম্পন্ন করেছেন আজিমপুর সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে, ইডেন কলেজ থেকে এইচএসসি এবং সমাজবিজ্ঞানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর।

CWbTKwZ.jpg


মঞ্চে তিনি জহির রায়হানের 'লেট দেয়ার বি লাইট', মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'প্রাগৈতিহাসিক', মামুনুর রশীদের 'মানুষ' এর মতো নাটকে কাজ করেছেন। টিভিতে হুমায়ূন আহমেদের 'এইসব দিনরাত্রি' নাটকের নীলুভাবীর চরিত্রটি তাঁকে ব্যাপক জনপ্রিয়তা এনে দেয়। এছাড়া আতিকুল হক চৌধুরী পরিচালিত 'সুখের উপমা' নাটকটি তাঁর ক্যারিয়ারে খুব প্রশংসিত ছিল এমনকি এ নাটকটি কলকাতাতেও প্রশংসিত ছিল। হুমায়ূন আহমেদের 'জননী' নাটকে শাওনের মায়ের চরিত্রেও প্রশংসিত হন। নব্বই দশকের ক্রেজ সালমান শাহ-র নাটক 'নয়ন'-এ তাঁর মায়ের চরিত্রটিও খুব জনপ্রিয় হয়। এছাড়া তিনি অসংখ্য নাটকে অভিনয় করেছেন। তাঁর অভিনীত ছবি ১৫০ টির বেশি।প্রথম অভিনীত ছবি 'অসাধারণ'।

V6bshBL.jpg


উল্লেখযোগ্য ছবি : আগুনের পরশমনি, শঙ্খনীল কারাগার, বিক্ষোভ, দেশপ্রেমিক, দেশদ্রোহী, লাভস্টোরি, দেশপ্রেমিক, শেষ সংগ্রাম, স্বপ্নের ঠিকানা, স্বপ্নের নায়ক, প্রিয়জন, আনন্দ অশ্রু, বিচার হবে, প্রেমশক্তি, চাওয়া থেকে পাওয়া, শুধু তুমি, অন্ধ ভালোবাসা, আমি এক অমানুষ, স্নেহের প্রতিদান, আদরের সন্তান, আসামী গ্রেফতার, বুক ভরা ভালোবাসা, খলনায়ক, আত্মবিশ্বাস, পাগলীর প্রেম, আজ গায়ে হলুদ, অবুঝ দুটি মন, টাকার অহংকার, অন্ধ প্রেম, নয়নের নয়ন, মনে রেখ পৃথিবী, বাবা কেন চাকর, সন্তান যখন শত্রু, মৃত্যু কত ভয়ঙ্কর, সাথী তুমি কার, টপ টেরর, টপ সম্রাট, অনন্ত ভালোবাসা, মিলন হবে কত দিনে, শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ, মেঘলা আকাশ, নিরন্তর, রং নাম্বার, সমাজকে বদলে দাও, বাস্তব, মরণ নিয়ে খেলা।

ডলি জহুর অনেক ধরণের চরিত্রে চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন। এর মধ্যে মায়ের চরিত্রে সবচেয়ে বেশি। কিছু ছবিতে মায়ের পাশাপাশি ভাবী, বোনের চরিত্রেও দেখা গেছে। ইলিয়াস কাঞ্চন, সালমান শাহ, মান্না, ওমর সানী থেকে শুরু করে রিয়াজ, শাকিল খান, শাকিব খান পর্যন্ত মায়ের ভূমিকায় তাঁকে দেখা গেছে। সালমান শাহ-র প্রায় ছবিতেই মায়ের চরিত্রে ছিলেন তিনি এবং অসাধারণ ছিল মা-ছেলের রসায়ন। স্ত্রীর ভূমিকায় রাজ্জাক, রাজিব, হুমায়ুন ফরীদি তাঁদের বিপরীতে তিনি অনবদ্য। 'রং নাম্বার' ছবিতে শ্রাবন্তীর খালার চরিত্রটি ছিল বিশেষ কিছু। শ্রাবন্তী তাঁর কাছে রিয়াজকে ভালোবাসার কথা জানায় বিয়ের আগে তখন ডলি জহুর শ্রাবন্তীকে সান্ত্বনা জানায়। এমনকি শ্রাবন্তী বিয়ের পর যখন ডিভোর্সের পরিকল্পনা করছিলো তখন ডলি জহুরের চিঠি পড়েই তার বিবেক দংশিত হয়।

FyRHNz7.jpg


ডলি জহুরের লিপে গান তেমন নেই চলচ্চিত্রে। 'শেষ ঠিকানা' ছবিতে 'আদম হইল বিশ্বপিতা' গানটি অসাধারণ। 'স্নেহের প্রতিদান' ছবিতে ডলি জহুর ও রাজিব থাকে ইলিয়াস কাঞ্চন-দিতির ভাইভাবী। তারা ভাইভাবীকে নিয়ে গান ধরে-'ভাবী যেন ভাবী নয় আমাদের মা।' ডলি জহুরের ক্যারিয়ারে চরিত্রের দিক থেকে উল্লেখযোগ্য দুটি ছবি 'বাবা কেন চাকর' এবং 'সন্তান যখন শত্রু।'
তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান ২ বার : শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী – শঙ্খনীল কারাগার (১৯৯২) ও শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী – ঘানি (২০০৬)

ডলি জহুর আমাদের অভিনয়জগতে আমাদের চেনা মানুষগুলোর প্রতিনিধি। তিনি নারীদের তুলে ধরেছেন অভিনয়ের শৈল্পিকতায়, জয় করেছেন মানুষের মন। এমন অভিনেত্রীকে নিয়ে আমরা গর্বিত।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top