বিনোদন অঙ্গনে আলো ছড়ানো অনেক তারকার রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক বিকাশে বড় ভূমিকা রেখেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। তাঁরা সেরা শিক্ষকের সান্নিধ্য যেমন পেয়েছেন, তেমনি পেয়েছেন অসাধারণ সব বন্ধুর সাহচর্য। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ উপলক্ষে স্মৃতির ঝাঁপি খুলে বসলেন সুবর্ণা মুস্তাফা ...
স্কুলজীবন থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আমার যোগ। ১৯৭৫ সালে ঢাকা থিয়েটারে যখন ভর্তি হই, তখন টিএসসিতে রিহার্সাল হতো। এ অনুষ্ঠান সেই অনুষ্ঠানে বোবা (বাবা গোলাম মুস্তাফা) আবৃত্তি করতেন, দেখতে যেতাম। পরে তো ভর্তিই হলাম। আমাদের সময় তো ইউনিট ছিল না। যে বিভাগে পড়ব, সে বিভাগে পরীক্ষা দিতে হতো। আমি একটা বিভাগে পরীক্ষা দিয়েছিলাম, ইংরেজি।
বিশ্ববিদ্যালয়জীবন আমার জীবনের সেরা সময়। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনসহ অনেক ধরনের আন্দোলনে ক্যাম্পাস তখন মুখর।
'ঘুড্ডি' সিনেমায় সুবর্ণা মুস্তাফা, ছবি : সংগৃহীত
ফলে সমাজ, দেশ, রাজনীতি—সবকিছুর সঙ্গেই একটা সম্পৃক্ততা তৈরি হয়ে যায়। আর সব বিভাগেই একেকজন দিকপাল শিক্ষক। আমাদের বিভাগে সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী থাকলে বাংলায় আছেন আনিসুজ্জামান—তাঁদের দেখেই বড় হওয়া। কবীর চৌধুরী, খান সারওয়ার মুরশিদ, সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম—তাঁদের সঙ্গে সরাসরি কাজ। যে গ্রহণে সক্ষম, সে অনেক কিছুই গ্রহণ করতে পারে।
আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থানটাই এমন দারুণ, ছাত্রজীবনটাকে ফুলফিল করার জন্য যা কিছু দরকার, সবকিছুই আশপাশে আছে। আর্ট কলেজ, টিএসসি, বলাকা, নিউমার্কেট, নীলক্ষেত। পুরোনো বইয়ের জন্য এই নীলক্ষেত আমার সেকেন্ড হোম, কারণ তখন আমাদের নতুন বই কেনার মতো অত টাকা থাকত না।
নাটকের দৃশ্যে হুমায়ুন ফরীদি ও সুবর্ণা মুস্তাফা
আমার তখন টেলিভিশনে নাটক হচ্ছে। বলাকায় নয়নের আলো চলছে, অন্য বিভাগের শিক্ষার্থীরা এসে বলে যাচ্ছে, তোমার সিনেমা সুপার হিট চলছে, এত ভালো অভিনয় করেছ। এখন শুনি যে অন্য বিভাগ থেকেও আমাকে দেখতে আসত। আমি কিন্তু আর দশজন শিক্ষার্থীর মতোই ছিলাম।