What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Other বাংলার সেরা ব্যর্থ প্রেমিক তিনি (1 Viewer)

JYc2UfA.jpg


১৯৯৬ সালে মুক্তি পায় ইফতেখার জাহানের 'প্রেমের সমাধি'। দেলোয়ার জাহান ঝন্টুর লেখা এই গল্পে এক নিঃস্বার্থ প্রেমিকের ভালোবাসার নিদর্শনের দেখা মেলে। সেই সিনেমার জনপ্রিয়তা দিন দিন বেড়েছে। তবে এই সিনেমার একটি বিশেষ দিক হলো, এই চরিত্রে অভিনয়ের পরপরই নায়কের একই ধারার ছবির অফার পেতে থাকেন, তিনিও গ্রহণ করেন। তার অন্যান্য ছবিগুলোর চেয়ে এই ছবিগুলোই যেন দর্শকদের বেশি মনে ধরেছিল, দর্শকদের কাছে তিনি খেতাব পাওয়া বাংলা চলচ্চিত্রের সেরা ব্যর্থ প্রেমিক, তিনি 'বাপ্পারাজ'।

১৯৮৬ সাল, শাবানাকে কেন্দ্র করে রাজ্জাক বানালেন তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপন্যাস অবলম্বনে 'চাঁপাডাঙার বউ', সিনেমার মুখ্য অভিনেতা চরিত্রে নায়করাজেরই অভিনয়ের কথা ছিল, কিন্তু শাবানার পুত্রসম দেবরের চরিত্রে অভিনয় করতে হবে বলে অন্যদের অনুরোধে পিছপা হন। অবশেষে সেই 'মহাতাব' চরিত্রে অভিষেক করান নিজের জ্যেষ্ঠপুত্র রেজাউল করিম বাপ্পাকে, দর্শকদের কাছে পরিচিতি হন 'বাপ্পারাজ' নামে।

'চাঁপাডাঙার বউ' সাহিত্যভিত্তিক সিনেমায় উজ্জ্বল উদাহরণ, দক্ষ অভিনয় শিল্পীর সঙ্গে পর্দা ভাগ করে দারুণ অভিনয়ের সূচনা করেছিলেন তিনি। দর্শকেরা বুঝলেন বাবার মতো ছেলেও একজন দারুণ অভিনেতা, যার প্রমাণ মিলে 'জ্বীনের বাদশা' ছবিতেও। গ্রাম্য মোড়লের বিপক্ষে প্রতিবাদী এই চরিত্রটিও দর্শকদের খুব পছন্দের। 'পাথরের পৃথিবীতে কাচের হৃদয়'র মতো সুমধুর রোমান্টিক গানের ছবি 'ঢাকা ৮৬' তেও তিনি নায়ক। তবে আশির দশকে বাবার সিনেমার বাইরে সেভাবে অভিনয় করেননি। 'আজকের হাঙ্গামা'র মতো ব্যবসাসফল ছবির একজন নায়ক তিনি; প্রেমশক্তি, প্রেমগীত, প্রফেসর, স্বাক্ষর ছবিতেও ছিলেন।

নব্বইয়ের মাঝামাঝিতে এসে দেলোয়ার জাহান ঝন্টু একই বছরে তাকে দিলেন ক্যারিয়ারের দুই সেরা চরিত্র। দুটো চরিত্রই পুরো আলাদা, প্রথমটি 'হারানো প্রেম', নায়ককে ম্লান করে এন্টিহিরো রূপে অভিনয় করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন, অন্যটি 'প্রেমের সমাধি', এর গল্প তো সবার জানা, পরে কলকাতাতেও রিমেক হয়। এরপর তিনি হয়ে ওঠেন ব্যর্থ প্রেমিকের প্রতিমূর্তি, এক শাবনূরের সঙ্গে ছবিতেই তিনি এই চরিত্রে অভিনয় করেন; 'আমার অন্তরে তুমি' থেকে 'বুক ভরা ভালোবাসা', 'পাগলীর প্রেম'সহ বেশ কয়েকটি ছবিয়ে।

DIlhyrx.jpg


অবশেষে অনেক বছর পর শাবনূরকে তিনি পান 'মা আমার চোখের মনি' নামক একটি ছবিতে, একই চরিত্র তিনি করেছেন মৌসুমী, পূর্ণিমাদের সিনেমাতেও। সিনেমার দুই নায়কের একজন থাকলেই দর্শকেরা ধরে তিনি তিনিই ব্যর্থ হবেন। ব্যর্থ নায়ক মানেই পার্শ্ব চরিত্র এমন নয় বরং এইধারার সব ছবিতেই বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছেন।

১৯৯৭ সালে রাজ্জাকের প্রত্যাবর্তন ছবি দারুণ ব্যবসাসফল 'বাবা কেন চাকর'। এরপর ক্যারিয়ারের সেরা অভিনয় করেন 'সন্তান যখন শত্রু' ছবিতে। এটি ছিল সৎ ভাইয়ের রিমেক,বাবার করা এই চরিত্রটি তিনি নিজের করে নিয়েছিলেন,এই ছবিতে তার অভিনয়ে এখনো অশ্রুসজল হয়ে ওঠেন,একই কাজ করেছিলেন 'প্রেমের নাম বেদনা' ছবিতে। এক সময় অশ্লীলতার ভয়াবহতায় অনিয়মিত হয়ে যান। সর্বশেষ অভিনয় করেছেন 'পোড়ামন ২',বছর কয়েক আগে বানিয়েছিলেন নিজের নির্মিত প্রথম সিনেমা 'কার্তুজ'!

অভিনেতা হিসেবে তার গুণমুগ্ধ প্রশংসা করেন, তবে নায়করাজের ছেলে এই পরিচয়টা যেমন সুযোগ করে দিয়েছে তেমনি ক্যারিয়ার গঠনে চাপেও ফেলেছে। যার কারণে তিনি সেভাবে জনপ্রিয় নায়ক হয়ে উঠতে পারেননি, আরেকটি বড় কারণ একজন নায়ক হিসেবে সিনেমা নির্বাচনে অসচেতনতা। তবে তিনি সময় অভিনেতা হতে চেয়েছিলেন, সেই দিকে তিনি সফল। জাতীয় পুরস্কার পেতে পারতেন অনেক ছবিতেই, কিন্তু এড়িয়ে গেছেন জুরি বোর্ডের সদস্যরা, তাই আজও অর্জন করতে পারেননি এই পুরস্কার।

* লিখেছেন: হৃদয় সাহা
 

Users who are viewing this thread

Back
Top