What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

PObGnxl.jpg


'সুতরাং' দিয়ে শুরু হয়েছিল। তারপর একে একে 'ময়নামতি', 'তিতাস একটি নদীর নাম', 'সারেং বৌ', 'নীল আকাশের নীচে', 'সুজন সখী'র মতো ছবির মাধ্যমে দর্শক অবাক বিস্ময়ে দেখেছেন অসামান্য এক অভিনেত্রী হয়ে ওঠা। অভিনয়ে, প্রযোজনায়, পরিচালনায় সাত দশকের জীবনটা এক আশ্চর্য সফলতার গল্প। আজ জন্মদিনে সারাহ বেগম কবরীকে স্মরণ করে আবার শুনি তাঁর জানা–অজানা কিছু কথা।

Pm8TFdC.jpg


মাত্র ১৩ বছর বয়সে 'সুতরাং' ছবিতে কাজ করেছিলেন কবরী

বয়স তখন ১৩

'সুতরাং' ছবির 'জরিনা' চরিত্রের জন্য একটি মেয়ে খুঁজছিলেন সুভাষ দত্ত। কবরীর সন্ধান দিলেন ছবির সংগীত পরিচালক সত্য সাহা। কিন্তু কবরীর মা রাজি নন। প্রথম আলোর কাছে স্মৃতিচারণায় কবরী বলেন, 'মা কান্নাকাটি করে বাবাকে বললেন, "আমার দুধের শিশুকে আমি দেব না।" আমারও মা-ভাই-বোনদের ছেড়ে ঢাকায় আসতে ভালো লাগছিল না। মায়ের কান্না দেখে আমিও কাঁদতে শুরু করলাম। বাবা বুঝিয়ে বললেন, "ওরা ডেকেছে। আগে মিনা যাক। যদি ভালো না লাগে, তাহলে চলে আসবে।" এই বলে বাবা আমাকে নিয়ে বাড়ি থেকে রওনা হলেন।' তখন কবরীর বয়স সম্ভবত ১৩।

0Qq3wuk.jpg


'তিতাস একটি নদীর নাম' সিনেমায় কবরী

প্রথম টুথপেস্ট

চলচ্চিত্রের কারণে প্রথমবার ঢাকায় এসে নতুন নতুন অভিজ্ঞতা। ট্রেনে করে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় এসে উঠলেন পুরান ঢাকার বিউটি বোর্ডিংয়ে। ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রকাশিত কবরীর লেখা স্মৃতিচারণামূলক গ্রন্থ 'স্মৃতিটুকু থাক'-এ লিখেছেন, 'ঢাকায় এসে প্রথম টুথপেস্ট দিয়ে দাঁত মাজি। প্রথম ব্রা পরি।'

করবী না কবরী

চলচ্চিত্রে চূড়ান্ত হওয়ার পর শুরু হলো নাম নিয়ে গবেষণা। সুভাষ দত্ত লেখক সৈয়দ শামসুল হককে অনুরোধ করছেন একটা নাম ঠিক করে দেওয়ার জন্য। যে নামেরই প্রস্তাব আসে, দেখা যায় এই নামে কেউ না কেউ আছেন। একবার ঠিক হলো করবী। কেউ আবার বললেন, না, কবরী। দুটি নাম নিয়ে ভোটাভুটি হলো। শেষ পর্যন্ত কবরীই টিকে গেল। মিনা পাল থেকে হয়ে গেলেন কবরী।

4ZN43AM.jpg


সুতরাং ছবিতে সুভাষ দত্তের সঙ্গে কবরী।

বালিকা যখন নায়িকা

'সুতরাং' দেখে যে কেউ বলবেন, নায়িকা একটি বালিকা। যদিও ছবিতে তাঁকে একপর্যায়ে 'অন্তঃসত্ত্বা' হতে হয়। এমনকি এই ছবিতে সন্তান জন্মদানের দৃশ্যও ছিল। 'স্মৃতিটুকু থাক' গ্রন্থে লিখেছেন, 'গামছার মধ্যে তুলো ভরে পেটের ওপর লাগিয়ে শাড়ি পরিয়ে দিয়েছিল, পেট যেন বড় দেখায়।' এই ছবির জন্য সাইনিং মানি পেয়েছিলেন এক হাজার এগারো টাকা। এটাই কবরীর জীবনের প্রথম রোজগার।

রাজ্জাকের সঙ্গে জুটি

রাজ্জাকের সঙ্গে কবরীর জুটি এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের অন্যতম জনপ্রিয় এবং আলোচিত জুটি। বিবিসি বাংলাকে এক সাক্ষাৎকারে কবরী বলেছিলেন, 'আমার অল্প বয়সে বিয়ে হয়ে যায়। প্রেম করা হয়ে ওঠেনি। কিন্তু রাজ্জাকের সঙ্গে অভিনয় করার সময় একধরনের রোমাঞ্চ অনুভব করতাম।'

PrYb68Z.jpg


তুমুল জনপ্রিয় রাজ্জাক–কবরী জুটি, রংবাজ ছবিতে, ১৯৭৩

চলচ্চিত্র গবেষক অনুপম হায়াৎ লিখেছেন, 'মুক্তিযুদ্ধের পূর্ববর্তী বা পরবর্তী উত্তাল সময়গুলোতে রাজ্জাক-কবরী জুটি তৎকালীন প্রেক্ষাপটে সমাজের সাধারণ মানুষের চিন্তাধারার প্রতিনিধিত্ব করত এবং মানুষকে মানসিকভাবে স্বস্তি দিয়েছিল বলে এই জুটি মানুষের মধ্যে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে।'

প্রথম পরিচয়েই ভয় পাইয়ে দিতেন

প্রথম পরিচয়ে মানুষকে খুব ভয় পাইয়ে দিতেন কবরী। অনেক ধরনের প্রশ্ন করতেন। বোঝার চেষ্টা করতেন, মানুষটি কেমন? তাঁর চিন্তাভাবনা কেমন? সেভাবেই সেই ব্যক্তির সঙ্গে আচরণ করতেন, আপন করে নিতেন। যদিও প্রথমে তাঁকে একটু রাগী মানুষ মনে হতে পারে, কিন্তু আসলে তিনি ছিলেন খুব নরম মনের মানুষ। এই তথ্য দিয়েছেন কবরী পরিচালিত 'এই তুমি সেই তুমি'র নায়ক রিয়াদ রায়হান।

ldmuPbn.jpg


২০১৮-১৯ অর্থবছরে অনুদান পাওয়া 'এই তুমি সেই তুমি' ছবির শুটিংয়ে পরিচালক সারাহ বেগম কবরী, সংগৃহীত

গত মে মাসে প্রথম আলোর নকশায় রিয়াদ রায়হান লিখেছেন, 'কাজের সময়ে বা তার বাইরেও ম্যাম মিষ্টি হাসি দিয়ে সবার মন জয় করে নিতেন। তাঁর হাসি শুধু সৌন্দর্যের বহিঃপ্রকাশ ছিল না। আমি দেখেছি, তাঁর কাছের মানুষদের সঙ্গে হাসতে হাসতে অনেক বেশি প্রাণবন্ত হয়ে উঠতেন। তাঁর মনের সৌন্দর্যের প্রকাশ পেত যেন এই মিষ্টি হাসিতেই।'

AF9QRYp.jpg


কবরী অভিনীত 'দেবদাস' ছবির দৃশ্য

'মিষ্টি মেয়ে' খ্যাতি

১৯৬৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম ছবি 'সুতরাং' দিয়েই 'মিষ্টি মেয়ে' হয়ে ওঠেন কবরী। বছরের পর বছর ঢাকার চলচ্চিত্রাঙ্গনে 'মিষ্টি মেয়ে' বলে খ্যাত ছিলেন কবরী।

5gOlvHF.jpg


কবরীর চলচ্চিত্রপঞ্জিতে নারী চরিত্রপ্রধান 'সারেং বৌ' একটি গুরুত্বপূর্ণ ছবি, সংগৃহীত

'কবরী' হয়ে ওঠা

কবরীর চলচ্চিত্রপঞ্জিতে নারী চরিত্রপ্রধান 'সারেং বৌ' একটি গুরুত্বপূর্ণ ছবি। ১৯৭৮ সালে মুক্তি পাওয়া এ ছবিতে উঠে এসেছে বাংলাদেশের গ্রামীণ নারীর সংগ্রাম। সার্থকভাবে চরিত্রটি ফুটিয়ে তোলেন কবরী। নোয়াখালীর উপকূলীয় অঞ্চলের একটি গ্রামের সহজ–সরল মেয়ে নবিতুনকে নিয়ে ছবির গল্প। চরিত্রটি করেই জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান কবরী। 'অভিনেত্রী' হিসেবে এটাই তাঁর একমাত্র জাতীয় পুরস্কার। আবদুল্লাহ আল মামুন পরিচালিত এ ছবিতে কবরীর নায়ক ছিলেন ফারুক।

নামটি ছিল চলচ্চিত্রের

১৯৭১ সালের জানুয়ারিতে মুক্তি পায় আলমগীর কুমকুম পরিচালিত 'স্মৃতিটুকু থাক'। ছবিটির নায়িকা ছিলেন কবরী। ২০১৭ সালে প্রকাশিত আত্মজীবনীর নামও রাখেন 'স্মৃতিটুকু থাক'।

sDw7J0U.jpg


সাবিনা ইয়াসমিন ও সারাহ বেগম কবরী, সংগৃহীত

পরিচালক এবং গীতিকার কবরী

২০০৬ সালে চলচ্চিত্র পরিচালনায় নামেন কবরী। 'আয়না' নামের ছবিটি সাড়া ফেললেও বাণিজ্যিকভাবে খুব একটা সফল হতে পারেনি। ছবিতে ফেরদৌসের বিপরীতে অভিনেত্রী সোহানা সাবাকে প্রথম বড় পর্দায় তুলে ধরেন। প্রায় ১৫ বছর পর ২০২০ সালে আবার ছবি নির্মাণের উদ্যোগ নেন। নাম 'এই তুমি সেই তুমি'। এখানেও নতুন মুখ সালওয়াকে তুলে ধরেন কবরী। পরিচালনার পাশাপাশি এ ছবির জন্য গানও লিখেছেন কবরী। 'তুমি সত্যি করে বলো, বলো তো' গানটির মাধ্যমে সুরকার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন সাবিনা ইয়াসমিন।
 
These are the rules that are to be followed throughout the entire site. Please ensure you follow them when you post. Those who violate the rules may be punished including possibly having their account suspended.

যারা কমেন্ট করবেন, দয়া করে বানান ঠিক রাখুন। উত্তেজিত অবস্থায় দ্রুত কমেন্ট করতে গিয়ে বানান ভুল করবেন না। আমরা যারা কমেন্ট পড়তে আসি, আমাদের কমেন্ট পড়তে অনেক অসুবিধা হয়।

Users who are viewing this thread

Back
Top