ভুতুড়ে স্থান, ভুতুড়ে বাড়ি কিংবা ভুতুড়ে রাস্তার কথা তো অনেক শুনেছেন। কিন্তু ভুতুড়ে আয়নার কথা শুনেছেন কি? না, আমি কোন মুভি বা নাটকের ভুতুড়ে আয়নার কথা বলছি না। আমি আজ এমন এক অভিশপ্ত আয়না এর কথা বলবো যা বর্তমান পৃথিবীতে রয়েছে এবং মানুষের ধারণা সেই আয়নার ভেতর ১০ রকমের প্রেতাত্মা বাস করে থাকে। রহস্যময় সেই আয়নাটি হচ্ছে মির্টলেস প্ল্যান্টেসন এর আয়না। তাহলে আর দেরি কেন? সবাই নড়ে চড়ে বসুন গা শিউরানো এক সত্যিকারের ভুতুড়ে গল্প শোনার জন্য!
মির্টলেস প্ল্যান্টেসন এর অভিশপ্ত আয়না কোথায়?
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লুইজিয়ানার সেন্ট ফ্রান্সভিলের মির্টলেস প্ল্যান্টেসন বাড়িটির এমনিতেই খ্যাতি রয়েছে ভূতুড়ে বাড়ি হিসেবে। তার উপরে এই বাড়ির ভুতুড়ে কর্মকাণ্ডের বদনাম বিশেষভাবে ছড়িয়েছে একটি বিশেষ আয়নার জন্য। সাধারন মানুষের বিশ্বাস যে, এই আয়নায় কম করে হলেও ১০টি প্রেতাত্মা বসবাস করে থাকে।
আয়নাটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানার পুর্বে চলুন জেনে নেই এই ভুতুরে বাড়িটির প্রাচীন ইতিহাস! ১৭৯৬ সালে মার্কিন গৃহযুদ্ধের বহু আগেই এই খামারবাড়িটি তৈরি করেন জেনারেল ডেভিজ ব্র্যাডফোর্ড। কথিত রয়েছে, এই খামারটি আসলে এক রেড ইন্ডিয়ান গোরস্থানের উপরে তৈরি। তার উপরে নাকি অন্ততপক্ষে ১০টি হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয় এই বাড়িতে। কিন্তু সত্যি বলতে খোঁজ মেলে একটি মাত্র খুনের। উইলিয়াম উইন্টার নামের এক প্ল্যান্টার খুন হন এই বাড়ির সিঁড়ির ১৭ নম্বর ধাপে। তার পর থেকে নাকি এই ধাপটিতে উইলিয়ামের আবছা প্রেতাত্মাকে দেখা যায়।
খামারবাড়ির অভিশপ্ত আয়না
তবে মির্টলেস প্ল্যান্টেসন এর অভিশপ্ত আয়না এর ভুতুড়ে ঘটনাকে ছাপিয়ে গেছে খামারবাড়ির রহস্যময় সেই আয়নার আরেকটি ঘটনা। আজ পর্যন্ত বাড়ির সেই আয়নাটিকে নাকি ঢেকে রাখা যায়নি। যা কিছু দিয়েই ঢাকা হোক না কেন, কোন না কোন ভাবে আয়নাটি ঢাকা অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসে। মানুষের ধারণা এই আয়নার ভেতরেই রয়েছে কম করে ১০টি প্রেতাত্মার বাস। সময় ও সুযোগ বুঝে তারা বেরিয়ে আসে। শোনা যায়, বাড়িটিতে বেড়াতে যাওয়া অনেক দর্শকই নাকি এই আয়না-ভূতের খপ্পরে পড়েছেন। অন্য মত অনুযায়ী, এই আয়নার বাসিন্দা সারা উড্রফ নামের এক মহিলা এবং তাঁর দুই শিশুসন্তানের। উড্রফদের মৃত্যুর পরে আয়না ঢেকে না রাখাতেই নাকি এউ বিপত্তি। তার পর থেকে খোলা পড়ে থাকা আয়না থেকে ভেসে আসে সারা ও তাঁর বাচ্চাদের আর্তি। মাঝে মাঝেই দেখা যায় ওই আয়নায় ছোট শিশুর হাতের ছাপ। ভেসে ওঠে কোন অচেনা বৃদ্ধ মহিলার চেহারা।
২০১৩ সালে এই আয়না থেকে অনুপ্রানিত হয়ে হলিউডে নির্মান করা হয় ওকুলাস নামে একটি হরর মুভি। বাস্তব ঘটনার সাথে মিল রেখে নির্মিত বলে মুভিটি ব্যাপক দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছে। শত বেদনা, বহু কষ্টের কাহিনি আজও জড়িয়ে আছে এই মির্টলেস প্ল্যান্টেসন-কে ঘিরে। তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে এই বাড়ির ভুতুড়ে কর্মকাণ্ডের যতই বদনাম ছড়াক না কেন, প্রচুর এডভেঞ্চার প্রিয় ভ্রমনকারি মানুশেরা বাড়িটিতে ঘুরতে গিয়ে থাকেন। তাদের মধ্যে কেউ সত্যিকারের ভুতের দেখা পেয়েছেন কি না তা আমাদের জানা নেই!