What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Review গৌতম ঘোষের ‘শঙ্খচিল’ দর্শন (1 Viewer)

Nagar Baul

Board Senior Member
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
1,152
Messages
13,339
Credits
547,766
Pen edit
Sailboat
Profile Music
hzpLn6d.png


গৌতম ঘোষ পরিচালিত শঙ্খচিল-এর শুরুতে দেখা যায়, বিজিবি কর্মকর্তার সঙ্গে এক সাংবাদিক ভারত-বাংলাদেশের সীমানা নিয়ে ঠাট্টা করছেন। বিএসএফের গুলিতে নিহত কাঁটাতারে ঝুলতে থাকা বাংলাদেশির খবর সংগ্রহে এসেছেন সাংবাদিক। বিএসএফ কর্মকর্তার জবানিতে এ হত্যাকান্ডের কারণ হলো 'ব্লাডি হিস্ট্রি', মানে ব্রিটিশ ইন্ডিয়ার ভাগাভাগি। এটাও কি সম্ভব?

মুক্তির আগেই সেরা আঞ্চলিক সিনেমা (বাংলা) বিভাগে ভারতের জাতীয় পুরস্কার অর্জন করা এ সিনেমাটির সহপ্রযোজক বাংলাদেশের ইমপ্রেস টেলিফিল্ম ও আশীর্বাদ চলচ্চিত্র। শঙ্খচিল-এ দুটি মৃত্যুর দৃশ্য দেখানো হয়। একটি অসংস্কৃত গরিবের সন্তানের কাঁটাতারে ঝুলে মরা। অন্যটি বিনা ভিসায় ভারতে চিকিৎসা নিতে যাওয়া সংস্কৃতিমান মানুষের কন্যার মৃত্যু।

শঙ্খচিল বলছে, দুই মৃত্যুর কারণ ব্রিটিশ ইন্ডিয়ার ভাগাভাগি। কখন বলছে? যখন ভারত-পাকিস্তানের ৬৯ ও বাংলাদেশের জন্মের ৪৫ বছর। যখন বাংলাদেশিরা নির্বিচারে বিএসএফের গুলিতে মরে। উল্লেখ্য, শঙ্খচিল মুক্তির চতুর্থ দিনে কুড়িগ্রাম সীমান্তে একজন নিহত হন। এ চলচ্চিত্র নিহত ওই ব্যক্তির জন্য নয়, বরং ব্রিটিশ ইন্ডিয়া না থাকার বাস্তবতায় যাঁরা বাংলাদেশকে দেখেন, তাঁদের জন্য। ৬৯ বছর পরও যাঁরা তাদের জন্য নদীর ওই পাড়ে তাকিয়ে থাকেন। আর যাঁরা বিএসএফকে দায়মুক্তি দেন।

স্কুলমাস্টার মুনতাসীর চৌধুরী বাদল সিনেমাটির মূল চরিত্র। এ চরিত্রে অভিনয় করেন কলকাতার জনপ্রিয় নায়ক প্রসেনজিৎ। যিনি বাংলাদেশ-ভারতের ম্যাপ ঠিকঠাক আঁকতে না পারলেও অসাধারণ দক্ষতায় পাখির ছবি আঁকেন। কারণ পাখি সীমানা মানে না! অবশ্য এখানে গৌতমের দর্শন স্পষ্ট নয়। বরং তাঁর চাওয়া পুরোটাই আড়াল থাকে। যেভাবে অনেক কিছুই আড়াল করে বিএসএফ জওয়ানের সঙ্গে বাদলের মেয়ের বন্ধুত্ব।

বাদল সংস্কৃতিমান, তাঁর স্ত্রী-কন্যাও। হুটহাট রবীন্দ্রনাথ গাইতে থাকেন সপরিবারে। ভারতে গেলে সুদীপ্ত নামে একজনের আশ্রয় লাভ করেন বাদল। ভাঙা জমিদার বাড়িতে থাকা সুদীপ্তও দুঃখী। গান-বাজনা ও মদে কাটে দিন। কিন্তু কেন? জমিদারি নেই বলে!

PnkYGrM.jpg


ঢাকার সাংস্কৃতিক বলয়ের দিকে তাকানো যাক। কারা ব্রিটিশ ইন্ডিয়া নিয়ে হায় হায় করেন। বর্তমানের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক কী! এমনকি সংস্কৃতিকে তারা ঠিকঠাকমতো সংজ্ঞায়িত করতে পারেন না কলকাতা ছাড়া। এ দীর্ঘশ্বাসের পুনরুত্থান হলো শঙ্খচিল। যার লেখক ও নির্মাতা কলকাতার। এ সিনেমা ফেলানীর কথা বলে না। যৌথ প্রযোজনায় তাকে মাটিচাপা দেওয়া গেলেও রূপসাকে সম্ভব নয়।

বিচ্ছেদি রাজনীতির ভেতর ভারতে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশকারী বলেই হিন্দু সাজতে বাধ্য হয় শিক্ষক পরিবার। মুনতাসীর চৌধুরী বাদল বনে যান বাদল চৌধুরী, লায়লা চৌধুরী থেকে লীলা চৌধুরী আর রূপসা চৌধুরীর নাম বদলানোর দরকার পড়ে না। কারণ এ নামে বাঙালির সিলমারা আছে। রূপসা আবার মাছ-মাংস খেতে চায় না, নিখাদ নিরামিষভোজী। মুসলমানের ঘরে অন্য রকম সন্তানের জন্ম। তার মৃত্যুরই সুযোগ নিলেন গৌতম।

মুক্তিযুদ্ধকে বলিউড বলে ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধ। এ সিনেমাতে মানবিকতা-বাঙালিত্বের দোহাইয়ে বাদলের শেষরক্ষা হয় না কেন? কারণ, এ সিনেমা বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্কের ভারসাম্যহীনতাকে দেখায়। তাই দাঙ্গা মানে নিষ্ঠুর মুসলমান; এমনকি কলকাতায় যে লোক 'বাংলাদেশি চোর' বলে বাদলকে গালি দিচ্ছেন, তিনিও মুসলমান।

না মেনে উপায় নেই ব্রিটিশ ইন্ডিয়া ভাগে ধর্মের একটা ভূমিকা আছে। সবটাই কি তা-ই! বরাবরের মতো শঙ্খচিল-এর অর্থনৈতিক রাজনীতিকে আড়াল করে। তারপরও ওই পাড়ে সুদীপ্তর ভাঙা জমিদারি তা উদাম করে দেয়।

কয়েক বছরে বেশ কয়েকবার বাংলাদেশের বাজারে কলকাতার সিনেমা প্রদর্শনে প্রকাশ্য-গোপন বৈঠক করেন প্রসেনজিৎ-গৌতম ঘোষসহ অনেকে। তাঁদের অতিপরিচিত দাদাগিরিও দুই বাংলায় ফারাক দেখে না। উদাহরণ হিসেবে দেখাতে চান মনের মানুষ ও শঙ্খচিল। কিন্তু এমন কাহিনির কেন দরকার বাংলাদেশের? এগুলো তো বাংলাদেশের কাহিনি নয়।

কলকাতার এ সুনির্মাণ নিয়ে একটা ইঙ্গিত দিয়েই শেষ করি। লালন সাঁইজিকে বিকৃত করে গৌতম ঘোষ বানালেন মনের মানুষ। তারই ধারাবাহিকতা যেন অমিতাভ চক্রবর্তীর কসমিক সেক্স। শঙ্খচিল-এর ধারাবাহিকতা দেখারও অপেক্ষায় থাকলাম!
 

Users who are viewing this thread

Back
Top